ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা এবার ভাইভা বোর্ডে!

লিখেছেন লিখেছেন তিতা করল্লা ১৫ জানুয়ারি, ২০১৩, ১২:৩০:৩৯ দুপুর

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার (ভাইভা বোর্ড) কক্ষে এবার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উপস্থিত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি ছাড়াও সেখানে ছিল কমপক্ষে ১৫ জন নেতা-কর্মী। ভর্তীচ্ছু বিষয় বণ্টনে ব্যাপক অনিয়মের ব্যাপারে গতকাল সোমবার খোঁজ নিতে গেলে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত থাকার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন জবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি এফ এম শরীফুল ইসলাম।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ইউনিটের অধীনে ছয়টি অনুষদের ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু হয় গত রবিবার। এ, বি, সি ও ডি ইউনিটের এই সাক্ষাৎকারে কলা অনুষদভুক্ত 'বি' ইউনিটের সাক্ষাৎকারে বিষয় বণ্টনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলেন ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষায় 'বি' ইউনিটে মেধাক্রম পঞ্চম, ৪১তম, ৪৩তম, ৪৮তম, ৯৩তম ও ১০৬তম স্থান অধিকারীদের আইন বিষয় পাওয়ার কথা থাকলেও তাঁদেরকে কাঙ্ক্ষিত বিষয় দেওয়া হয়নি। যোগ্যতার সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে এভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। আবার মেধা তালিকায় পেছনে থাকলেও অনেক অযোগ্য প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছে ভালো বিষয়।

সাক্ষাৎকারের প্রথম দিনে আটজন শিক্ষার্থীকে ইংরেজি বিষয় দেওয়া হলেও গতকাল তাঁদের বিষয় পাল্টে আবার বাংলা দেওয়া হয়। এসব অভিযোগকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক পর্যায়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তখন উপস্থিত সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট ডিনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে ভাইভা বোর্ড কক্ষের দরজা ঠেলে উঁকি দিতেই সেখানে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি এফ এম শরীফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে দেখতে পান। এ সময় শরীফুল ইসলাম ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গেই চেয়ারে বসে ছিলেন। তাঁর পাশে তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন ছাত্রলীগের কমপক্ষে ১৫ নেতা-কর্মী। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল ওদুদ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে বিষয়টিকে সম্পূর্ণ নিয়ম-বহির্ভূত বলে মন্তব্য করেন ভাইভা বোর্ডের একাধিক সদস্য।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শরীফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'ডিন অফিস থেকে এক ছাত্রীকে কাঙ্ক্ষিত বিষয় দেওয়া না হলে আমি বিষয়টি জানতে সেখানে গিয়েছিলাম।'

বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি বছর প্রকাশিত ভর্তির নির্দেশিকায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বাংলা ও ইংরেজি বিষয় পেতে হলে তাঁদের আলিমে (উচ্চ মাধ্যমিক) ২০০ নম্বরের ইংরেজি ও বাংলা পড়ে আসতে হবে। কিন্তু আইন, সাংবাদিকতা, অর্থনীতিসহ অন্য কোনো বিষয়ে এ শর্ত না থাকলেও ডিনের স্বেচ্ছাচারিতায় তাঁদের এসব ভালো কোনো বিষয় দেওয়া হয়নি। তাঁদেরকে শুধু ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়টি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভাইভা বোর্ডের কয়েকজন সদস্য পর্যন্ত এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলেও ডিন একক সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।

ভুুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমার মেধাক্রম ৪১তম, এইচএসসিতে ইংরেজিতে আমি 'এ' প্লাস, বাংলায় 'এ' মাইনাস পেয়েছি। আইন বিষয় পেতে আমার সব রকম যোগ্যতা থাকার পরও আমাকে তা না দিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ দেওয়া হয়েছে।'

কালের কন্ঠ, ১৪ জানুয়ারী ২০১৩

Click this link

বিষয়: রাজনীতি

১০৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File