বগুড়ায় পুলিশের গুলীতে নিহত শিবির নেতার পিতাকে চাপ দিয়ে মামলা প্রত্যাহার!

লিখেছেন লিখেছেন তিতা করল্লা ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৩৭:০৬ রাত

বগুড়ায় পুলিশের গুলীতে নিহত শিবির নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন খুনের ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জোরপূর্বক মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে পুলিশ। মামলার বাদী নিহত আব্দুল্লাহ আল মামুনের পিতা জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আদর্শপাড়ার আবু আখের মঙ্গলবার বগুড়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। রাতেই কালাই থানার পুলিশ মামলার বাদীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং গতকাল বুধবার সকালে আদালতে হাজির করে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত আব্দুল্লাহ আল মামুনের পিতার দায়ের করা মামলায় বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলরাজী জুয়েলসহ ছাত্রলীগের ১৩ নেতা-কর্মী এবং বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম, সদর থানার ওসি সৈয়দ শহিদ আলম, পরিদর্শক (তদন্ত) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, সদর থানার ওসি সহিদ আলম, শাজাহানপুর থানার ওসি মাহমুদুল আলমসহ ২৩ জনকে আসামী করা হয়। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ৩১ জানুয়ারি বগুড়া শহরের জামিলনগর চৌরাস্তায় মসজিদের সামনে বিকেল সোয়া ৪টায় আসামী একদল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে রাইফেল, পিস্তল, ককটেলসহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র‌্যাব ও পুলিশের সহায়তায় তার পুত্র আব্দুল্লাহসহ সাক্ষীদের মেসে জামায়াত-শিবির নিশ্চিহ্ন করার লক্ষে বিনা উস্কানিতে ঠান্ডা মাথায় বেপরোয়া গুলী চালায়। এতে আব্দুল্লাহর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলীবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় আসামীরা পুলিশের গাড়িতে উঠে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে চলে যায়। এরপর শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন। এমতাবস্থায় পুলিশ কর্মকর্তারা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের ওপর দোষ চাপানোর জন্য নিহতের আত্মীয়-স্বজনকে আটক করে। বাদী পরে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। তাই বাদী গত মঙ্গলবার বগুড়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আদেশের অপেক্ষায় রাখেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। মঙ্গলবার রাতে জয়পুরহাটের কালাই থানার পুলিশ বাদীকে তার বাড়ি থেকে তুলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখান থেকে গতকাল বুধবার সকালে বগুড়ার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে দিয়ে আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করানো হয়। ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সেক্রেটারি রেজাউল করিম জানান, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে পুলিশ শহীদ আব্দুল্লাহর পিতাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে। মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করে খুনিদের বাঁচানো যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিষয়: রাজনীতি

১১৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File