এক নাস্তিক কর্তৃক ৩ মুসলিম শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় মুক্তমনারা চুপ কেন ?
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১০:৪৫:৩৮ রাত
আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন মুসলিম শিক্ষার্থীকে ক্রেইগ হিকস নামক এক নাস্তিক গুলি করে হত্যা করেছে এটা হয়ত আপনারা সবাই জানেন। প্রথমে আমরা সবাই ভাবছি যে ক্রেইগ হিকস হয়ত কোন কট্টর খৃস্টান কিন্তু পরবর্তীতে The New York Times ক্রেইগ হিকসের স্ত্রী কারেন হিকসের বরাত দিলে বলল যে উনার স্বামী একজন কট্টর নাস্তিক যিনি সবসময় সমকামিতা ও গর্ভপাতের পক্ষে কথা বলেছেন এবং কেউ যদি কোন অদৃশ্য শক্তির আরাধনা করত তাইলে নাকি ক্রেইগ হিকস তার উপর খেপত। তো আমার কথা হল ক্রেইগ হিকস যদি সত্যি নাস্তিকই হন এবং মানুষের ধর্মচর্চা করা যদি ক্রেইগ হিকস অপছন্দ করেন তাইলে উনি কেন আগে গোটা কয়েক ক্যাথলিক খৃষ্টানকে খুন করল না। কারন প্রতি রবিবারে আমেরিকান খৃষ্টানরা দল বেধে চার্চে যায়। ক্রেইগ হিকসের সাথে আগে কখনো কোন ইহুদী খৃষ্টানের ঝামেলা হয়েছে এরকম কোন প্রমান কিন্তু উনার স্ত্রী দেখাতে পারে নাই। তাইলে বুঝাই যাচ্ছে ক্রেইগ হিকস হচ্ছে তসলিমা অভিজিত্ রায় টাইপ নাস্তিক। কোন মুসলমান ছেলে যদি নামায পড়ে বা কোন মুসলমান মেয়ে যদি হিজাব পরে তাইলেই তসলিমা গংদের গাত্রদহ শুরু হয়ে যায়। সাথে সাথে ঐ মুসলমান ছেলে কে তারা ছাগু, ধর্মান্ধ, মধ্যযুগী বলে গালি দেয়। কিন্তু একটা হিন্দু মেয়ে যখন শিব লিঙ্গ/শিবের Penis পূজা করে, তার চুল দিয়ে শিবের লিঙ্গরুপী কাল পাথর কে মুছে দেয় তখন ঐ হিন্দু মেয়ের কোন দোষ তসলিমা অভিজিত্ রায়রা দেখতে পায় না। ঠিক সেইরকম ভাবে ক্রেইগ হিকস তার নাস্তিকতা শুধুমাত্র এই ৩ মুসলিম শিক্ষার্থীই উপরই ঝাড়ল। ক্রেইগ হিকস যে একজন নাস্তিক এটা The New York Times এর এই খবরে বলা হয়েছে http://www.nytimes.com/2015/02/12/us/muslim-student-shootings-north-carolina.html?_r=0
এতবড় নামকরা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষার্থী কে হত্যা করা হল যাদের ২ জন Dental বিভাগে পড়ত আর আরেকজন স্থাপত্য বিভাগে পড়ত কিন্তু বারাক ওবামা এই হত্যাকান্ড নিয়ে এখন পর্যন্ত একটা কথাও বলল না। কিন্তু এই ৩ জনই Born By American যাদের পিতামাতাও অনেক আগে থেকেই আমেরিকায় বসবাস করে। এদের মাঝে শ্যাডি বারাকাত একজন ধর্মান্তরিত মুসলমান। উনি সিরিয়ান বংশোদ্ভত নয়। উনি একজন খাটি আমেরিকান মুসলমান। তবে শ্যাডি বারাকাতের স্ত্রী ইউসোর আবু সালহা ও তার স্ত্রীর বোন রাজন আবু সালহা এই ২ জন আরব আমেরিকান মুসলিম। শ্যাডি বারাকাত অনেক আগে থেকেই সিরিয়ার উদ্বাস্তু মুসলমানদের জন্য কাজ করছে। উনারা তুরস্কেও গিয়েছিলেন সিরিয়ার উদ্বাস্তু মুসলমানদের কে সাহায্য করতে। ২ বোন ও রাজন আবু সালহার বোনের Husband শ্যাডি বারাকাত এই ৩ জন একই এপার্টমেন্টে থাকতেন। হিজাব, মসজিদে যেয়ে সালাত আদায় এসকল কারনে উনারা অনেক আগে থেকেই চ্যাপেল হিলে পরিচিত ছিলেন। রাজন আবু সালহার ফেইসবুক আইডিতে দেখা যায় উনি উনার অনেক বান্ধবীকেও মুসলমান বানিয়েছেন এবং অনেক আমেরিকার মেয়েকে উনি ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। রাজন আবু সালহার ফেইসবুক আইডির লিংকটা হল এটা https://www.facebook.com/razan.abusalha গত বছর ডিসেম্বরের ২৭ তারিখে ইউসোর আবু সালহা শ্যাডি বারাকাত কে বিয়ে করেছিলেন যেটা এখনো উনার ফেইসবুক প্রফোইলে জ্বলজ্বল করছে। ইউসোর আবু সালহার ফেইসবুক আইডির লিংকটা হল এটা https://www.facebook.com/yabusalha যেইসব হিন্দু বৌদ্ধ মেয়ে সারাদিন হিজাবের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের কে অনুরোধ করছি রাজন আবু সালহা আর ইউসোর আবু সালহার ফেইসবুক আইডিতে একটু চোখ বুলাতে।
ক্রেইগ হিকসের স্ত্রী কারেন হিকস বলেছেন গাড়ি পার্কিং নিয়ে ঝামেলার কারনে নাকি ক্রেইগ হিকস এই ৩ জনকে হত্যা করেছে। কিন্তু এই ২ বোনের পিতা ইউসুফ আবু সালহা বলেছেন তার মেয়ের Husband কে অনেক আগে থেকেই ক্রেইগ হিকস বন্দুক উঁচিয়ে হুমকি দিয়েছিল। হত্যাকান্ডটা ঘটেছে বিকাল ৫ টায় তাদের নিজ এপার্টমেন্টে। তাই তারা ডাকাতি করতে ক্রেইক হিগসের বাসায় গেছিল এরকম উদ্ভট দাবী জুরি বোর্ড করতে পারবে না। ক্রেইক হিকসের এই পোস্ট টা দেখুন যেখানে সে অস্ত্র কিনে প্রকাশ্যে ঘোষনা দিচ্ছে মুসলিম হত্যার। https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10206045860253689&set=a.10205774630513115.1073741826.1477072252&type=1
ইউরোপ আমেরিকার শিক্ষিত মেয়েরা ইসলামে ঝুকছে এটা আমরা অনেক আগে থেকেই শুনছি কিন্তু রাজন আর ইউসোরারের মৃত্যুর পর আমরা জানতে পারলাম ইসলাম কত গভীরভাবে আমেরিকানদের হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছে। আজকে ইউরোপ আমেরিকায় যারা মুসলমান হচ্ছে এই চাঁড়াল হিন্দু বৌদ্ধরা এদের মুখের থুথুর সমানও যোগ্য না।
আপনারা কিছুদিন পর দেখবেন মার্কিন জুরি বোর্ড ক্রেইগ হিকস কে একজন মানসিক অসুস্থ বলে এই মামলা থেকে খালাস দিয়ে দিবে। ক্রেইগ হিকস আবার নিউইয়র্কের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সমকামিতার পক্ষে র্যা লি করবে। যেহেতু এই ৩ আমেরিকান মুসলমান তাই BBC, CNN কেউই এই খুনের ঘটনা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করবে না। আমেরিকা এই ইসলামের অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতেই টুইন টাওয়ারের মত একটা সাজানো নাটক করেছিল। ইমিগ্রেশন ভিসা কঠিন করে না হয় মুসলমানদের আমেরিকা আসা তারা বন্ধ করল কিন্তু আমেরিকার ভিতরেই যে তাদের দেশের নাগরিকরা মুসলমান হয়ে যাচ্ছে সেটা হোয়াইট হাউস কিভাবে থামাবে ? তাই তারা 9/11 এর মত একটা সাজানো নাটক মঞ্চায়িত করল। এর দ্বারা দীর্ঘদিন তারা আমেরিকার মানুষকে মুসলমান বানানো ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে। আল কোরআনে নিসা নামক একটা সূরা আছে নিসা অর্থ হল স্ত্রীলোক। মেয়েদের সম্পর্কে অনেক কিছুই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এই সূরা নিসায় আলোচনা করেছেন। বহু আমেরিকান নারীবাদী এই সূরা নিসার তাফসীর পড়েই মুসলমান হয়েছে। আল কোরআনে মরিয়ম নামে একটি সূরা আছে। হযরত মরিয়ম হলেন যীশু/হযরত ঈসার মা। বাইবেলেও মরিয়ম নামে কোন অনুচ্ছেদ নাই। বহু নান এই সূরা মরিয়ম পড়েই এখন মুসলমানের খাতায় নাম লিখিয়েছে। শিক্ষিত বিবেকবান আমেরিকানদের কে মুসলমান বানানো কোন কঠিন জিনিস না। কারন খৃষ্টানদের যীশুই হল আমাদের হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম যার নামটা আল কোরআনে মোট ২৫ বার এসেছে। একজন হিন্দু বৌদ্ধ নবী রাসূলদের সম্পর্কে কিছুই জানে না কিন্তু একটা খৃষ্টান ছেলে ইউসুফ ইসহাক ইব্রাহিম এইসব নবী রাসূলদের নাম ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছে। তাই ধর্ম নিয়ে আলোচনা শুরু হলে একজন খৃস্টান আর একজন মুসলমান খুব কাছাকাছি এসে পরে। আর এই কাছাকাছি এসে পরেটাকেই এখন হোয়াইট হাউস এত ভয় পাচ্ছে। চ্যাপেল হিলের এই ঘটনার পর অনেক আমেরিকান মুসলমান এখন খুব ভয়ে আছে। কারন ক্রেইগ হিকসের মত কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক আমেরিকার অলিতে গলিতে পাওয়া যায়। আর ক্রেইগ হিকসরা তো জানেই আমরা কয়েক বছর জেল খাটার পরেই মার্কিন বিচার বিভাগ আমাদের কে মানসিক রোগী বলে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে দিবে। তাই যত ইচ্ছা আমেরিকান মুসলিম হত্যা কর যেন এই আমেরিকা আর কখনো মুসলিম স্পেন হতে না পারে। ঘটনাটা যদি উল্টো হতো, অর্থাত একজন মুসলমান যদি ৩ জন খ্রীষ্টান কে মেরে ফেলতো তখন সেই ঘটনাকে কেউ কি বিছিন্ন ঘটনা বলতো? উল্টো আমাদেরকে জঙ্গী বলা হতো, এমনকি BBC CNN এ আমাদেরকে নিয়ে ২৪ ঘন্টা অপপ্রচার চালানো হতো, ইউরোপের রাস্তায় রাস্তায় ইসলাম বিরোধী মিছিল বের করা হতো, মসজিদে মসজিদে গ্রেনেড মারা হতো, কোরআন শরীফ পোড়ানো হতো, এবং আমেরিকার আদালত অল্পদিনের মধ্যেই শাস্তির রায় ঘোষনা করতো।
এই ৩ শহীদ ভাইবোনের স্মরনে Our Three Winners নামে একটি পেইজ খুলা হয়েছে। এই পেইজে আপনারা আমেরিকান মুসলমানদের দাওয়াতী কাজ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তসলিমা নাসরিনও এই ঘটনাকে উল্লেখ করে কোন tweet করবে না অভিজিৎ রায়ও এটা নিয়ে অবিশ্বাসের ভাইরাস টাইপ কোন ব্লগ লিখবে না। যদি এই হত্যাকান্ড কোন মুসলমান করত তাইলে এতক্ষনে ফেইসবুকে হাজার হাজার Status লিখা হয়ে যেত। যেহেতু ক্রেইক হিকস একজন নাস্তিক তাই কোন মুক্তমনাই এই ঘটনা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করছে না।
বিষয়: বিবিধ
২৪৭৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মারিয়া
পরীবানু
মরুর মুসাফির
পরীবানু ,সততার আলো
অশ্বথমা
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক
পরমা ,নীলমণীলতা
বিলকিস লায়লা
দস্তার
রুপবান
মুক্তিযুদ্ধ ৭১
দ্রাবীড় বাঙাল
লেয়লা ইসলাম
বিলকিস
বাংলা ৭১
ভিক্টোরিয়া
হেলেনা
পল্লব প্রভাতে
খালেদ
রুশো তামজিদ
বারাংগনা
মধুবালা
সখি
ফয়সাল১
মাঝি-মাল্লা, ,
লায়লার
লায়লা০০৭
রাতুল দাস
চকো চকো
সায়েদ-রিয়াদ
বিভ্রান্ত নাবিক
ফাজিল
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক
মুক্তিযুদ্ধ ৭২
দ্রাবীড় বাঙাল
পিচ্চি পোলা
কাওসাইন হক
চাষা
jahed_ullah
নীরু
সাদা মন
সাদা মন
চোথাবাজ
আমি বিপ্লবী
সততার আলো সকাল সন্ধ্যা
এই নেরিকুত্তাকে বেন করা হোক। যার এত নিক ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন