ফরাসীরা আর কত ব্যঙ্গ করবে আল্লাহর রাসূলকে ?
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২৭ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:০৪:৪২ সকাল
শার্লী হেবদো পত্রিকা রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন একেঁছে এটা আমরা সবাই জানি কিন্তু আমরা কি এটা জানি শার্লী হেবদো পত্রিকা রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে বহু কার্টুন এঁকেছে যেখানে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে উলঙ্গ হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় শার্লী হেবদো পত্রিকা আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে এমনসব কার্টুন এঁকেছে যেখানে দেখানো হয়েছে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সী বিচে উলঙ্গ অবস্থায় মেয়েদের কে নিয়ে শুয়ে আছে। নাউযুবিল্লাহ আমার কথা বিশ্বাস না হলে আপনি Google এ charlie hebdo muhammad cartoon লিখে সার্চ দেন। তাইলেই আমার কথার সত্যতা খুঁজে পাবেন। আমরা কি শার্লী হেবদোর পাকা ধানে মই দিয়েছিলাম যে শার্লী হেবদো পত্রিকা রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে এত এত অশ্লীল কার্টুন আকঁল ? একটা মানুষ কতটুকু খারাপ হলে একজন Prophet কে নিয়ে এত অশ্লীল ছবি আঁকতে পারে ? মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে কি এটাই যে একজন ধর্মাবতার কে নিয়ে উলঙ্গ ছবি আঁকা ? ফরাসীরা আর কত ব্যঙ্গ করবে আল্লাহর রাসূলকে ? ক্রুসেড যুদ্ধের সময় থেকেই ফ্রান্স ইসলামের বিরুদ্ধে লড়ছে। ক্রুসেড যুদ্ধে ফ্রান্সের সামন্ত প্রভুরা সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। কারো উলঙ্গ ছবি না এঁকেও তার সমালোচনা করা যায়। আমরা মুসলমানরা কি এতই দূর্বল হয়ে পরলাম আজ রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে এতগুলি উলঙ্গ ছবি আকঁল শার্লী হেবদো পত্রিকা কিন্তু আমরা কেউই ফ্রান্সের দূতাবাসের অভিমুখে একটা মিছিল করতে পারলাম না। ঢাকা শহরে না কত ক্যাডার, তো তারা কি পারে না গুলশানে ফ্রান্সের যে দূতাবাস আছে সেখানে কয়েকটা গুলি করে কয়েকটা ফরাসি মারতে। ফ্রান্সে না মুসলমানরা সংখ্যালঘু কিন্তু বাংলাদেশে তো মুসলমানরা সংখ্যালঘু না। তাই মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ গুলির অবশ্যই এই ঘটনার একটা প্রতিশোধ নেয়া উচিত। বাংলাদেশের মানুষ সামান্য কিছু টাকার জন্য একজন আরেকজন কে খুন করে ফেলে আর এখন ফ্রান্সের দূতাবাসে আক্রমণ করার জন্য কেউ নাই। পাকিস্তানে না কত তালেবান আছে। তো তারা পারে না কিছু করতে। শার্লী হেবদো পত্রিকা তার সব অপকর্ম জায়েজ করে ফেলেছে একটা সাজানো নাটক করে তাদের ১২ জন লোক নিহত করার মাধ্যমে। কই রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে এতগুলি উলঙ্গ ছবি আঁকার কারনে শার্লী হেবদো আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে তা না হয়ে সবাই এখন বলছে আমিই শার্লী !
শার্লী হেবদোর ঘটনাটা যখন ঘটল তখনই আমি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ফেইসবুক পেইজে ফরাসীরা এই ঘটনাটাকে কিভাবে দেখে তা খুঁজে বের করতে চেয়েছিলাম। তখন আমি দেখলাম বেশীরভাগ ফরাসীই এই ঘটনাটাকে ভালভাবে নিচ্ছে না। বেশীরভাগ ফরাসীই বলছে এইসব ছবি আঁকার কোন দরকার ছিল না আমরা তা support করি না। অনেক ফরাসীই বলছিল শার্লী হেবদো নাম কামানোর জন্যই মুসলমানদের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে এইসব আজেবাজে কার্টুন ছেপেছে। আমরা এগুলি পছন্দ করি না। আর এখন তো জরিপের মাধ্যমেই প্রকাশ পেল অর্ধেকের বেশী ফরাসী শার্লী হেবদোর বিরুদ্ধে। আসলে আপনারা একটু চিন্তা করেন ৮/১০ টা মানুষের মতই সাধারন ফরাসীদের জীবন যাপন কিন্তু একটু ভাল থাকা, ভাল খাওয়া, স্বাস্থ্য বীমার টাকাটা ঠিক ভাবে পাওয়া এইসব নিয়ে সংগ্রাম করা। ফরাসী মেয়েদের মূল চিন্তা হল আমার Boy Friend যেন আমাকে ছেড়ে না চলে যায়। কোন ফরাসি মেয়ের Break up হলে সে কিন্তু অন্য দশটা সাধারন মেয়ের মতই বালিশে মুখ বুজে কেঁদেকেটে বলে আমার কি দোষ ছিল সে যে আমাকে পরিত্যাগ করল। অর্থ্যাৎ ফরাসীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে একবারও চিন্তা করে না। রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালবাসা বা ঘৃণা কোনটাই সাধারন ফরাসীদের নেই। তাই শার্লী হেবদো পত্রিকা যে মূলধারার ফরাসীদের প্রতিনিধিত্ব করছে না সেটা খুব সহজেই বুঝা যাচ্ছে। শার্লী হেবদোর এই ঘটনার সাথে আমি গনজাগরন মঞ্চের মিল খুঁজে পেয়েছি। বাংলাদেশের মিডিয়ায় গনজাগরন মঞ্চের পক্ষে অনেক লেখালেখি হলেও সাধারন বাংলাদেশীরা কিন্তু গনজাগরন মঞ্চের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে নি। কারন গনজাগরন মঞ্চ মুক্তিযুদ্ধার চেতনার কথা বলে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে গালিগালাজ করা জায়েজ করতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয় উম্মুল মুমেনীনদের কে নিয়ে রাজীব/থাবা বাবার অশ্লীল লেখালেখি গুলি গনজাগরন মঞ্চ মুক্তিযুদ্ধার চেতনার কথা বলে বৈধ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের মিডিয়া গনজাগরন মঞ্চের পক্ষে কথা বলা যেমন সাধারন বাংলাদেশীদের মনমানসিকতাকে বুঝায় না ঠিক তেমনি বিশ্ব মিডিয়া শার্লী হেবদোর পক্ষে কথা বলা মানে এই নয় যে ফ্রান্সের জনগন মনেপ্রানে শার্লী হেবদোর পক্ষে আছে।
ইসরাঈলের প্রেসিডেন্ট নেতানিহায়ুর কিন্তু ফ্রান্সে আসার কোন কথা ছিল না। কারন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ নেতানিহায়ুকে কোন আমন্ত্রনপ্ত্র পাঠায় নি। কিন্তু নেতানিহায়ু ছেঁচড়ার মত ফ্রান্সে চলে এসেছে। ইহুদীরা আসলে ছ্যাঁচড়াই হয়। তারা নির্লজ্জের মত হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লামের কাছে একটার পর একটা আবদার করত। কাজ করে খাব না আল্লাহ আমাদের জন্য জান্নাত থেকে মান্না সালওয়া পাঠাবে এটাই ছিল ইহুদীদের মনমানসিকতা। এই ইহুদীরা হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লাম কে এত বিরক্ত করেছে যে শেষ জীবনে হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লাম পাহাড়ের গুহায় চলে গিয়েছিল। ইহুদীদের যন্ত্রনার কারনেই হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লামের মৃত্যু একাকী হয়েছে। বিশ্ব নেতাদের র্যালীতে ইসরাঈলের প্রেসিডেন্ট নেতানিহায়ুকে আপনারা সামনের সারিতে দেখেছেন। কিন্তু ইসরাঈলের প্রেসিডেন্ট নেতানিহায়ুর সামনের সারিতে থাকার কথা ছিল না। উনার থাকার কথা ছিল ২য় সারীতে। কিন্তু নেতানিহায়ু সবাইকে ধাক্কা মেরে কৌশলে সামনের সারিতে এসে পরেছিল। অর্থ্যাৎ ছেঁচড়া বলতে যা বুঝায় আর কি। আর এইসব দেখেই নেতানিহায়ুর বক্তৃতা দেবার আগেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছিল। ওঁলাদের মুখটা কিন্তু একদম শুঁকায় গেছে কারন উনি ভাল করেই বুঝতে পেরেছেন শার্লী হেবদোর হত্যাকান্ডটা কোন মুসলমান করেনি। এটা CIA ও মোসাদের সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের ফল। এখন থেকে ফ্রান্স কে আমেরিকার কথায় উঠতে আর বসতে হবে। কিন্তু আফসোস ওঁলাদের পক্ষে এই কথা ঘুণাক্ষরেও বলা সম্ভব না যে শার্লী হেবদোর হত্যাকান্ডটি ইসরাঈল করেছে। কারন ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই ওঁলাদের বিরুদ্ধে এন্টি সেমিটিসমের মামলা হয়ে যাবে।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
মন্তব্য করতে লগইন করুন