BNP আওয়ামীলীগ কি সত্যিই একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ ?
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১১ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৯:১০:৫৫ রাত
বাংলা সব সময়ই স্বাধীন ছিল। মুসলিম শাসনামলেও বাংলা কখনো দিল্লীর অধীনতা মেনে নেয় নাই। বাংলা বারবার দিল্লীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করত। এই বিদ্রোহের কারনেই দিল্লীর শাসকরা বাংলাকে বিদ্রোহের রাজধানী নাম দিয়েছিল। দিল্লীর অধীনতা মানব না এই নীতির কারনেই বাংলায় সুলতানী শাসনামল গড়ে উঠেছিল। সুলতানী আমলে বাংলা ছিল ধন সম্পদের দিক থেকে সারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নগরী। মোঘল আমলেও বাংলায় বার ভূইয়ার শাসন পরিচালিত হয়েছিল। দিল্লীর শাসকরা মসনদে বসে প্রথমেই চিন্তা করত যে কোনদিন আমি বাংলাকে নিজের বশ্যতায় নিয়ে আসতে পারব। এই বাংলার দখল নিয়েই মোঘল আরব তুর্কী আফগানদের অনেক যুদ্ধ হয়েছে। শের শাহ ছিলেন আফগান আবার ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজী ছিলেন জাতিতে তুর্কী। আফগান আরব তুর্কী মোঘল উনারা সবাই মুসলমান হলেও বাংলার দখল নিয়ে উনাদের মাঝে বারবার যুদ্ধ হয়েছে। সারা ভারতবর্ষ জানত যে বাঙ্গালী মুসলিম হল একটি স্বাধীনচেতা জাতি যারা দিল্লীতে ট্যাক্স দিতে ইচ্ছুক না। বাঙ্গালী জাতি এখন তার একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশের জনগণের কাঁধে এখন জগদ্দল পাথরের মত যেই মহিলা বসে আছে সে হল একজন স্বঘোষিত ডাইনী বুড়ি। ডাইনী বুড়ি যেমন রক্ত ছাড়া আর কিছু খায় না ঠিক তেমনি শেখ হাসিনাও মানুষের রক্ত ছাড়া আর কোন কিছুতেই তৃপ্ত হয় না। মানুষ না মরা পর্যন্ত শেখ হাসিনার মনে কোন শান্তি আসে না। এই ডাইনী বুড়ি বর্তমানে দানবের মত আমাদের কাঁধে চেপে বসেছে। বর্তমানে প্রত্যেক বাংলাদেশীর ফরজ হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানো।
অনেক Islamist ভাইকে বলতে দেখি বিএনপি আর আওয়ামী লীগ একই জিনিস, একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। ভাই এইভাবে বলবেন না। বিএনপি কোন ইসলামী দল না এটা আমিও জানি কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দেশের ইসলামী দলগুলি শান্তিতে তাদের কাজ করতে পারে। এমনকি বিএনপির সরলতার সুযোগ নিয়ে সেই সময় জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদও সারাদেশে ত্রাস চালিয়েছিল। আর এখন আওয়ামী লীগের শাসনামলে আমরা অনলাইনেই ইসলামের কথা বলতে পারি না, আর প্রকাশ্যে ইসলামের কাজ করতে পারা তো দূরের কথা। জামাতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনে একটি নিবন্ধিত দল। জামাত শিবির এগুলা কোনটাই নিষিদ্ধ কোন দল না। কিন্তু সারাদেশে জামাতের একটা অফিসও খুলা নাই। সরকারের খাতায় হিযবুত তাহরীর যেমন নিষিদ্ধ ঠিক তেমনি জামাতে ইসলামী দলটাও একটা নিষিদ্ধ দল। কিন্তু সংবিধান মতে জামাতে ইসলামী একটি গনতান্ত্রিক দল। কিন্তু শুধুমাত্র ইসলামের কথা বলার জন্য জামাতে ইসলামীর কপাল পুড়ল। হেফাযতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। কিন্তু সরকারের নাস্তিক তোষণের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য ৫ই মে রাতে হেফাযতে ইসলামের বহু লোক মারা গেছে। মাহমুদুর রহমান স্যার থাবা বাবা আসিফ মহিউদ্দীনেরর লেখা গুলি প্রচার করার কারনে এখনো জেলে পচে মরছে। আর দেশের অর্থনীতির কথা আর কি বলব। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ২৯ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে ভারতে। প্রতি বছর যে টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে সেটা বাংলাদেশের প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্য থেকেও বেশী। সিডিপির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যই বলেছেন ভারত হচ্ছে এখন বাংলাদেশের Second Home. [তথ্যসূত্র]
সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত আর আমেরিকা এরপরেই বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশী রেমিটেন্স পায় ভারত। তো বুঝুন কতগুলি ভারতীয় এখন বাংলাদেশে চাকুরি করছে। আমরা চাকুরি পাই না কিন্তু প্রচুর ভারতীয় নাগরিক এখন বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে চাকুরি করে। আর এরা এদের উপর্জিত সব অর্থ ভারতে পাঠায়। আর বাংলাদেশের হিন্দুদের কথা আর কি বলব। বাংলাদেশের হিন্দুরা তো আজ পর্যন্ত কোন দামী রেস্টুরেন্টে খেয়েও দেখে নাই। হিন্দুরা এদের বাড়িঘরও সংস্কার করে না সব টাকা এরা ভারত পাঠায়। বাংলাদেশের চাকুরি বাকুরি ব্যবসা বাণিজ্য এখন সব ভারতের দখলে। আগে দেশের সব বড় বড় কাজ গুলি চীন পেত তাও তাদের নিজ কারিগরী যোগ্যতায় আর এখন দেশের সব বড় বড় কাজ গুলি ভারত পায় কোন যোগ্যতা ছাড়াই। এমনকি দেশে একটি উন্নতমানের মুদ্রন শিল্প থাকার পরেও স্কুল কলেজের বইগুলি শিক্ষামন্ত্রী সব ভারত থেকে ছাপিয়ে নিয়ে আসে। তো বুঝুন বাংলাদেশ এখন কতটা ভারতের করদ রাজ্য। এই কিছুদিন আগে ৬৭ জন সহকারী জজ নিয়োগ দেয়া হয়েছ এদের মাঝে ২৭ জনই হল হিন্দু। কিন্তু হিন্দুরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ৭ ভাগ। তাইলে তারা এত সরকারী চাকুরি পাবে কিভাবে ? আর গড়পড়তার দিক থেকে হিন্দু ছেলেরা তো আহামরি কোন মেধাবী না। তাইলে হঠাৎ হিন্দুদের এত সরকারী চাকুরি পাবার রহস্য কি ? ভারতের মুসলমানরা জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ হলেও সরকারি চাকুরিতে ভারতের মুসলমানদের হার শতকরা ২ ভাগও না। ভারতের ২০ টা সরকারি অফিস আদালত ঘুরলেও একটা মুসলমানও পাওয়া যায় না। সাচার কমিটির রিপোর্ট পড়লেই বুঝা যায় ভারতের মুসলমানরা কতটুকু দরিদ্র আছে। আর বাংলাদেশের প্রত্যেক থানাতেই এখন ২/৩ টা হিন্দু এস আই দেখা যায়। হিন্দুরা বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে সরকারি চাকুরি পেতেই পারে। কিন্তু তারা যদি তাদের মেধাকে টপকিয়ে খালি আমি মূর্তিপূজা করি এই অছিলায় সরকারী চাকুরির শতকরা ২৫ ভাগ দখল করে ফেলে তাইলে তো সমস্যা। তারপর দেখা যায় এই হিন্দুরা ব্যাংকে কোন FDR করে না, কোন ফ্ল্যাট বাড়ি ঘর কিনে না। সব টাকা তারা ভারতে পাঠায়।
৭১ সালে আমাদের কে হত্যা করত পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আর এখন আমাদের কে হত্যা গুম করে পুলিশ, Rab. পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু বলতে যাবেন সাথে সাথে তারা আপনার পায়ে গুলি করে আপনাকে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু বানিয়ে দিবে। একটা বর্বর বাহিনীতে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ।
শামসুর রহমান বলছিলেন অদ্ভুদ উটের পিঠে চলছে এই দেশ। আর আমি কথাটা একটু ঘুরিয়ে বললাম অদ্ভুদ শুকরণীর পিঠে চলছে এই দেশ। শেখ হাসিনাকে এখন দেশের মানুষ শুকরের মত ঘৃণা করে। একটা জগদ্দল পাথরের মত শেখ হাসিনা জাতির উপর চেপে বসে আছে। দেশের প্রত্যেকটা মানুষ এখন এই কথাটা শুনতে চায় যে শেখ হাসিনাও তার পিতার মত রাতের বেলায় মারা গেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে কোন মতপ্রকাশের অধিকার নাই, সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই সাথে সাথে আপনাকে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করা হবে। কুত্তা মার্কা এক নির্বাচন দিয়ে এখন শেখ হাসিনা সারা জীবনের জন্য বাংলাদেশ চালাতে চাচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই আপনাকে সাথে সাথে স্বাধীনতা বিরোধী, জামাত শিবির বলে আখ্যায়িত করা হবে, যদিও আপনার ১৪ গোষ্ঠীতে কেউ কোনদিন জামাত শিবির করে নাই। মুক্তিযুদ্ধার সময়েও মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত কথা হয় নাই এখন যত কথা মুক্তিযুদ্ধার নিয়ে হচ্ছে। ঐ খালি কথাই হয়, বহু মুক্তিযুদ্ধা এখনো চা বিক্রি করে, ঠেলা গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। মুক্তিযুদ্ধার চেতনার ধারক বাহক আওয়ামী লীগ একবার ফিরেও তাকায়নি অভাবী পঙ্গু মুক্তিযুদ্ধাদের প্রতি। কারন মুক্তিযুদ্ধাদের পুনর্বাসন করা তো শেখ হাসিনার লক্ষ্য না শেখ হাসিনার লক্ষ্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি করা যেন এই মুক্তিযুদ্ধের অছিলায় হাসিনা দিনের পর দিন ক্ষমতায় থাকতে পারে।
বহু islamist পরিবার পথে বসেছে শেখ হাসিনার এই জেল জুলুমের রাজনীতির কারনে। কারাগার গুলিতে যেয়ে দেখেন খালি শিবির শিবির। যেন দেশের সব অপরাধ জামাত শিবির করে। শুধু জামাত শিবির না হিযবুত তাহরীরের প্রচুর ছেলেও এখন জেলে। জামাত শিবিরের লোকেরা তো ৩ মাসের মধ্যেই জামিন পায় কিন্তু হিযবুত তাহরীরের ছেলেরা ১ বছরের আগে কোন জামিন পায় না। বাংলাদেশের শহর এলাকায় প্রত্যেক পাড়ায় মনে হয় এক না একটা ছেলে জেল খাটছে এই শেখ হাসিনার আমলে। ব্রিটিশ আমলেও এত বাঙ্গালী জেল খাটে নাই এই শেখ হাসিনার আমলে যত গুলা ছেলে জেল খাটছে। আমি নিজেও হাসিনার আমলে ২ বার জেল খাটছি। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় আমাকে এখনো ঢাকার জর্জকোর্টে হাজিরা দিতে হয়। আমার Next হাজিরা ২১ জানুয়ারী। শুধু আমি না দেশের সকল আদালত গুলিই এখন সকাল বেলাতেই জামাত শিবির আর হিযবুত তাহরীরের কলরবে জেগে উঠে। আপনি যদি কোন আদালতে যান তাইলে আপনার মনে হবে দেশের সব ফৌজদারী অপরাধ মনে হয় জামাত শিবির আর হিযবুত তাহরীরের ছেলেরা করে। আমি নিজেও বিএনপির ক্ষমতায় আসার অপেক্ষায় আছি কারন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমি আমার তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় খালাস পাবো। শুধু আমি না রাজীব/থাবা বাবা হত্যা মামলার আসামী নর্থ সাউথের ৬ জন ছাত্র অনিক দ্বীপ রুম্মান নাফিস ইরাদ সাদমান থেকে শুরু করে প্রত্যেক islamist ই এই আশায় আছে যে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমরা আবার একজন স্বাধীন মানুষের মর্যাদা পাবো, আমাদের কে আর আদালত পাড়ায় উকিলের পিছে পিছে দৌড়াতে হবে না। তাই islamist ভাইদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি দয়া করে বিএনপি আওয়ামী লীগ কে এক কাতারে মাপবেন না। যে ভালো তাকে ভালো বলবেন তা না হলে একসময় আপনাদের ভাল কথা গুলোও মানুষ আর শুনবে না।
বিষয়: রাজনীতি
২১১৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এমনিতেই টুমরো ব্লগ আছে ব্যানের তীরের সামনে , টেকনিক্যাল সমস্যা তো প্রতিদিনই হয় । তার উপর আছে আপনাদের মত Outrageous কিছু ব্লগার ।
এমন কিছু করা উচিত না যাতে ব্লগের অন্যান্য ব্লগাররা একটা প্ল্যাটফর্ম হারিয়ে ফেলে।
পোস্ট রিপোর্টেড করলাম জননেত্রীর নামে নোংরা কথা বলার কারণে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন