জিহাদের মৃত্যুর জন্য কে দায়ী ?
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১০ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৯:২৬:২০ রাত
ফায়ার বিগ্রেডের অত্যাধুনিক ক্যামেরা পাইপের মুখে ঢুকলো, টিভি মনিটরে আমরা জিহাদের জুতা, কাপড় চোপড়, চটের বস্তাও দেখলাম কিন্তু ফায়ার বিগ্রেড এতটুকু দেখেই সন্তুষ্ট হয়ে গেল। তারা যদি গর্তের আরো একটু নিচে যেত তাইলে তখনই জিহাদের লাশ পাওয়া যেত। তাদের কে একটুও মনে হল না আমরা কাপড় চোপড়, চটের ব্যাগ সরিয়ে আরেকটু নিচে যা তাইলেই হয়ত জিহাদের লাশ পাওয়া যাবে। হায় ফায়ার বিগ্রেড ! তোমাদের এত ইঞ্জিনিয়ার প্রকৌশলী কেউই একটা আংটার মত যন্ত্র লাগিয়ে গর্তের শেষটা দেখতে পারল না। আর এই কাজটাই নাকি করল বেশ কিছু সাধারন মানুষ তাও নিজেদের বানানো একটা দেশীয় যন্ত্র দিয়ে। যেই ছেলেগুলি জিহাদকে উদ্ধার করল তারা দেশের স্টার হল না কিন্তু লাক্স চ্যানেল আইতে যেই মেয়েগুলি ভাল পারফরমেন্স করবে তারাই হবে দেশের সুপারস্টার। তাদের কে নগদ টাকা বাড়ি গাড়ি সবই দেয়া হবে। পুরা উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী একবারও আসল না। কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যখন এইরকম ঘটনা ঘটে তখন প্রথমেই সেনাবাহিনী এই জাতীয় উদ্ধারকাজে নেতৃত্ত্ব দেয়। কিন্তু হায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখন একটা শ্বেত হস্তীতে পরিনত হয়েছে। থাইল্যান্ডের রাজার সাদা হাতির ন্যায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখন খালি বসে বসে খায় আর শান্তি মিশনে যাওয়ার ফর্ম পূরন করে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সব কর্ম তৎপরতা মনে হয় আফ্রিকার কালো লোকদের জন্য বরাদ্দ। কারন আফ্রিকার কালো লোকদের জন্য কাজ করলে তারা জাতিসংঘ থেকে ইউরো ডলার পাবে। তবে সেনাবাহিনীকে দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। ভারতের নির্দেশে শেখ হাসিনা অনেক আগেই পিলখানার নাটক ঘটিয়ে দেশ প্রেমিক সব সেনা অফিসার কে হত্যা করে ফেলেছে।
সবচেয়ে কষ্ট লাগল জিহাদের লাশ যখন উদ্ধার করা হচ্ছে তখন পুলিশ জিহাদের বাবা নাসিরকে গ্রেফতার করে থানায় আটকে রেখে মারধর করে। বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী এখন কতটা নিকৃষ্ট হয়েছে যে ছেলে হারানোর শোকে এক পিতার গায়ে তারা হাত দেয়। এই গোপালগঞ্জ পুলিশের মুখে এখন থুথু মারতেও আমার ঘিন্না হয়। একটানা ১২ ঘণ্টা গোপালগঞ্জ পুলিশ জিহাদের বাবাকে আটকে রাখল, উনাকে মাইরধর করল, এই ১২ ঘণ্টা তারা জিহাদের বাবাকে এক ফোটা পানিও খেতে দিল না। যেই শিশু গুলি জিহাদ কে পাইপের নিচে পরে যেতে দেখেছিল গোপালগঞ্জ পুলিশ তাদেরকেও বকাঝকা দিয়েছে যেন তারা অস্বীকার করে জিহাদ পাইপের নিচে পরে নাই। বাচ্চাগুলি পুলিশের জেরার মুখে এত ভয় পেয়েছে যে এখনো তারা স্বাভাবিক হতে পারে নাই। একটা বর্বর বাহিনীতে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ।
জিহাদের মৃত্যুর জন্য কে দায়ী ? আমি বলব এর জন্য দায়ী হচ্ছে আওয়ামী লীগের গোপালগঞ্জ জেলা প্রীতি। ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলিতে গোপালগঞ্জ, মুক্তিযুদ্ধা কোটা আর হিন্দুতে ভর্তি হয়ে গেছে। যেই BCS ক্যাডারের থাকার কথা ঢাকা মহানগরীতে তাকে পোস্টিং দেয়া হচ্ছে কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা ঠাকুরগাঁও বা মেহেরপুরে। নিয়ম তো এটাই ছিল চৌকস কর্মকর্তাদের কে দেশের মহানগরী গুলিতে রাখা হবে কারন এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশী। কিন্তু এখন ব্যাপারটা হচ্ছে উল্টা। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এক এস আই তার বাড়ি যদি গোপালগঞ্জ জেলায় হয় তাইলে ট্রেনিং শেষেই তাকে ঢাকার কোন এক থানায় নিয়োগ দেওয়া হবে। আর ট্রেনিং এ ভাল করা এক এস আই কে নিয়োগ দেয়া হবে নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর থানায়। যদিও বাংলাদেশে এখন গোপালগঞ্জ, মুক্তিযুদ্ধা কোটা, ছাত্রলীগ আর হিন্দু ছাড়া আর কারো কোন সরকারী চাকুরি হয় না। সেদিন প্রথম আলোতে পড়লাম BCS পরীক্ষায় First হওয়া এক ছেলের চাকুরি হয় নাই। তো চিন্তা করে দেখুন PSC এখন কতটা দূর্ণীতিগ্রস্থ। ঢাবির জগন্নাথ হল থেকে এখন সবচেয়ে বেশী BCS হয় কারন একটাই জগন্নাথ হলে সব হিন্দু ছাত্র থাকে। হিন্দু মানেই এখন সরকারী চাকুরি। এই কিছুদিন আগে ৬৭ জন সহকারী জজ নিয়োগ দেয়া হয়েছ এদের মাঝে ২৭ জনই হল হিন্দু। শামসুর রহমান বলছিলেন অদ্ভুদ উটের পিঠে চলছে এই দেশ। আর আমি কথাটা একটু ঘুরিয়ে বললাম অদ্ভুদ শুকরণীর পিঠে চলছে এই দেশ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যে দেশে গুনির কদর হয় না , সে দেশে গুনী জন্মায় না
মন্তব্য করতে লগইন করুন