যেখানে পর্নগ্রাফির চেয়ে তাহাজ্জুদ পড়ার শাস্তি বেশী
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২৭ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:২৪:৫৫ রাত
ঢাবির শামসুন্নাহার হলের ৪ ছাত্রীকে ফজরের নামায পড়ার অভিযোগে হল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে সেটা আপনারা সবাই জানেন। ঢাবির ঐ ৪ ছাত্রীকে শুধু হল থেকে বহিস্কারই নয় ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে শোকজও করেছে। শুধ তাই নয় এই ৪ ছাত্রীকে শাহবাগ থানায় রাত ১ টা পর্যন্ত রাখা হয়েছিল তাদের কাছ থেকে জঙ্গীবাদ সম্পর্কে তথ্য নেবার জন্য। শেখ হাসিনা মনে হচ্ছে দেশটাকে বার্ম বা গুজরাট না করা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছে না। বার্মা বা ভারতে যেরকম হিযাব পড়া মেয়েদের কে লাঞ্জিত করা হয় ঠিক তেমনি ঢাবির এই ৪ ছাত্রীকে রাত ১ টা পর্যন্ত শাহবাগ থানায় আটকে রেখে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কে বার্মার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অবাক লাগছে যেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামায পড়েন, প্রধানমন্ত্রীর চ্যালাপুলারা সব সময় গলা ফাটিয়ে বলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত তাহাজ্জুদ গুজারী আর সেই দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ফজরের নামায পড়ার অপরাধে ছাত্রীদের কে হল থেকে বহিস্কার করা হয়। তাইলে বুঝাই যাচ্ছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী আসলে তাহাজ্জুদ গুজারী না আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাহাজ্জুদ তো দূরের কথা এক ওয়াক্ত নামাযও পড়ে না। কারন দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিই তাহাজ্জুদের নামায পড়ত তাইলে ঢাবি প্রশাসন কখনোই এই সাহস পেত না ফজরের নামায পড়ার অপরাধে কোন ছাত্রীকে হল থেকে বহিস্কার করতে। আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আরেফিন সিদ্দিকও জানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটা মিথ্যাবাদী। শেখ হাসিনা জীবনেও এক ওয়াক্ত নামায পড়েনা। তাই ঢাবির ভিসি বিনা সংকোচেই ফজরের নামায পড়ার অপরাধে ৪ ছাত্রীকে হল থেকে বহিস্কার করে দিল। শেখ হাসিনা মুখে মুখে মদীনা সনদের নাম নেয় আবার কোন ছাত্রী যদি নিয়মিত ফজরের নামায বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে পড়ে তার ঘরে কোরআন হাদীসের বই রাখে তাইলে সেই ইসলামী বই রাখার অপরাধে সেই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল থেকে বহিস্কার করে দেয়। শেখ হাসিনার মত এতবড় মিথ্যাবাদী মনে হয় আর কোন দেশে নাই। কি সুন্দর এই মহিলা টিভি স্ক্রীনের সামনে নির্লজ্জের মত নিজের তাহাজ্জুদ নামাযের বিবরন দেয়, মদীনা সনদের মাধ্যমে দেশ চালানোর ইচ্ছা পোষন করে আবার কোন ছাত্রী ফজরের নামায পড়লে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ প্রশাসন সেই ছাত্রীকে হল থেকে বহিস্কার করে দেয়। ঢাবির প্রশাসন কি শেখ হাসিনার গন্ডির বাইরে ? ফজরের নামায পড়ার অপরাধে যে ৪ ছাত্রীকে হল থেকে বহিস্কার করা হল তা তো শেখ হাসিনার সম্মতিতেই হয়েছে। এই খবরটা তো সারা দেশের সব পত্রপত্রিকা অনলাইন মিডিয়ায় এসেছে। শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই এই খবরটা শুনেছে। কই শেখ হাসিনা তো ঢাবির প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় নি সেই মেয়েগুলাকে আবার হলে ফেরত নিতে। আসলে শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব তো এক হিন্দুর বীর্য থেকে জন্ম নিয়েছে। তাই শেখ হাসিনার দাদা যেহেতু একজন হিন্দু তাই শেখ হাসিনার শাসনামলে নামাযী মেয়েরা হল থেকে বহিস্কৃত হবে এতে আর অবাক হবার কি আছে।
ঢাবি প্রশাসন একবার বলছে তারা ছাত্রী সংস্থা করে আবার কিছুক্ষন পর বলছে তারা হিযবুত তাহরীর করে। কিন্তু ছাত্রী সংস্থা ও হিযবুত তাহরীর ২ টা পুরা ভিন্ন সংগঠন। কেউ যদি ছাত্রী সংস্থা করে তাইলে সে আবার কিভাবে হিযবুত তাহরীর করবে ? একটা ছেলে কি একই সাথে জামাত শিবির ও হিযবুত তাহরীর করতে পারে ? তাই খুব ভালভাবেই বুঝা যাচ্ছে ঐ ৪ ছাত্রী আসলে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত না। আজকে ইনকিলাব পত্রিকায় একটা রিপোর্টে বলা হয়েছে [http://www.dailyinqilab.com/2014/11/06/217142.php] ঐ ৪ ছাত্রীর কাছে কি কি বই পাওয়া গেছে। আসুন সঠিকভাবে রোজা পালন করি’, ‘বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা’ ‘নারী-পুরুষের পর্দা’ বুখারী শরীফের ২য় খন্ড, রিয়াদুস সালেহীন প্রভৃতি। এই ৪ ছাত্রীর কাছে একটাও মওদুদীর বই বা হিযবুত তাহরীরের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ তাকিউদ্দীন নাবহানীর কোন বই পাওয়া যায় নি। ভুক্তভোগী এক ছাত্রী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমার কাছে “নারী-পুরুষের পর্দা” নামে একটা বই ছিল। যেটা কোন জিহাদি বই নয়। আমি মনি করি আমার ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে। আমার এই বইটি দেখে শামসুন্নাহার হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে প্রথম সভাপতির রুমে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর শামসুন্নাহার হলের ছাত্রলীগের সভাপতি নিশিতা ইকবাল নদী ও সাধারণ সম্পাদক রওশন আর নিতুল আমাকে গালিগালাজ করে বলে তোর কাছে ইসলামী বই আছে, তুই জঙ্গি। ঐ ছত্রী অভিযোগ করে বলেন, ওই সময় ছাত্রলীগের হলের নেতারা আমাকে বলে তুই তো জঙ্গি, এখন তোর আল্লাহ কোথায়? ওই ছাত্রী প্রক্টর ও হল কর্তৃপক্ষের বিষয়ে বলেন, প্রশাসন আমার কোন কথায় শোনেনি ছাত্রলীগের নেতারা যা বলেছে তাই করেছে। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল থেকে ছাত্রী সংস্থা হিযবুত তাহরীর এরকম বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার মিথ্যা অভিযোগে ২০ ছাত্রীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল ঢাবি কর্তৃপক্ষ। সেই ২০ ছাত্রীকে হল ত্যাগ করার নির্দেশ সুফিয়া কামাল হলের নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি আকারেও টানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। [ তথ্যসূত্রঃ http://www.dailyinqilab.com/2014/11/06/217142.php]
বর্তমানে ঢাবির কোন ছাত্রী যদি নামায পড়ে হিযাব পরিধান করে তার রুমে কোন ইসলামী বইপত্র রাখে তাইলেই ঐ ছাত্রীকে জঙ্গী, আইএসএস, হিযবুত তাহরীর, ছাত্রী সংস্থা করে এরকম মিথ্যা অভিযোগ করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাকে হল থেকে বের করে দেয়। ঢাবির প্রশাসন আসলে চাইছে ঢাবির সব মেয়ে তসলিমা নাসরিন কে অনুসরণ করবে। তসলিমা নাসরিন যেমন একটা বেশ্যা হয়েছে ঠিক তেমন ভাবে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যা প্রতিষ্ঠানের সব মেয়ে বেশ্যা হবে। নামায রোযা এসব আবার কি ! ঘরে ঘরে তসলিমা নাসরিন বানানোর পরিকল্পনা এখন ঢাবি কর্তৃপক্ষ নিয়েছে। ফজরের নামায পড়ার অপরাধে ৪ ছাত্রীকে হল থেকে বহিস্কার এরই নমুনা।
আমি বুঝি না একটা মেয়ে ছাত্রী সংস্থা বা হিযবুত তাহরীর করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমস্যা কি ? ঢাবি ক্যাম্পাস কি আওয়ামী লীগের ব্যক্তি মালিকানাধীন যে প্রত্যেক ছাত্র কে বাধ্যতামূলক ভাবে লীগ করতে হবে। আমি তো এখানে শুধু মেয়েদের হলের কথা বলছি। কিন্তু ছেলেদের হলের অবস্থা তো আরো ভয়াবহ। তাবলীগ জামাত ছাড়া আর কোন ছেলে যদি হলের মসজিদে নিয়মিত নামায পড়ে তাইলে ছাত্রলীগ তাকে শিবির বা হিযবুত তাহরীর ঠেঙ্গিয়ে এমন মাইর দেয় যে সে আর কোনদিন হাটতে পারে না। তানভীর আহমেদ আরজেলের কথা কি আপনাদের মনে নাই। বর্তমানে এটা একটা হুজুগে পরিনত হয়েছে যে কেউ নামায পড়লেই তাকে কোন না কোন রাজনৈতিক দলের ট্যাগ দিয়ে দেওয়া হয়। যেন ছেলে মেয়েরা আর ভয়ে নামায না পড়ে। ঢাবিতেও ঠিক একই ভাবে হিযাবী মেয়েদের কে জঙ্গী বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। ঘরে ঘরে মদীনা সনদ আর কি !
আওয়ামী লীগ তো আর সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবে না তাই আজকে ঢাবির যেই কর্তা ব্যক্তিরা ঢাবির এই নামাযী মেয়েদের কে লাঞ্জিত করছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরলে এদের কে এমন শিক্ষা দেয়া হবে যেন এরা আর কোনদিন হাটতে না পারে। বাংলাদেশের মানুষ এখন মলমূত্রের ন্যায় শেখ হাসিনাকে ঘৃণা করে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন