তসলিমা নাসরিন কি সত্যিই একজন Free Thinker ?
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১২ আগস্ট, ২০১৪, ১১:৩১:৫২ রাত
এখন তো ২০১৪ সাল। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হিন্দু মেয়েরা বাপ মা স্বামীর কোন সম্পত্তি পায় না, হিন্দু মেয়েরা দেনমোহর পায় না এমনকি হিন্দু মেয়েরা স্বামীকে তালাকও দিতে পারে না। বাংলাদেশে শুধু হিন্দু মেয়েরা নয় বাংলাদেশে বৌদ্ধ মেয়েরাও তাদের বাপ মা স্বামীর কোন সম্পত্তি পায় না। হিন্দু পারিবারিক আইন অনুসারেই বৌদ্ধরা চলে। বৌদ্ধ ধর্ম হিন্দু ধর্মেরই একটি শাখা। বাংলাদেশে কোন হিন্দু বিবাহ আইন নাই। এই দেশে হিন্দুদের মাঝে বিবাহ রেজিস্ট্রি বলতে কিছু নাই। হিন্দু ধর্মে বিয়ে কোন চুক্তি না just একটা সামাজিক অনুষ্ঠান। হিন্দু ছেলেরা লম্পট, চরিত্রহীন হয়। তারা মেয়ে শিশুদের কে ভ্রুন অবস্থায় হত্যা করে, মেয়েদের বাপের সম্পত্তির কোন ভাগ দেয়না, বিয়ে রেজিস্ট্রি করেনা, যত অত্যাচারী লম্পট স্বামীই হোক তালাকের কোন উপায় ধর্মমতে নাই। অথচ কোন নাস্তিক মালাউনরা এইসব বিষয় নিয়ে কথা বলে না। মুসলমানের স্ত্রীরা বড় অংকের দেনমোহর পায় এজন্য হিন্দুরা তাদেরকে বেশ্যা বলে! আসলে সকল হিন্দু, নাস্তিক এরা মানবতাহীন বর্বর। আমার কথা না, উচ্চ শিক্ষিত প্রতিষ্ঠিত হিন্দু মহিলার অতি দু:খের সাথে স্বীকারোক্তি হল এগুলি। ব্যাভিচার, অন্যায়, অত্যাচার, মেয়েদের অধিকারহীন দাসী বানিয়ে অত্যাচার করার নামই হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। একজন উচ্চ শিক্ষিত PHD Holder এক হিন্দু মহিলার মুখেই আপনারা শুনুন যে হিন্দু ধর্মে নারীদের কে কি কি অধিকার দেয়া হয়েছে। হিন্দু মেয়েরা বাপ মা স্বামীর কোন সম্পত্তি পায় না, হিন্দু মেয়েরা দেনমোহর পায় না এমনকি হিন্দু মেয়েরা স্বামীকে তালাকও দিতে পারে না। সবচেয়ে বিশ্রী জিনিসটা হল এই যে হিন্দু মেয়েদের বিয়েতে কোন সাক্ষী থাকে না। যদি হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন বাধ্যতামূলক না করা হয় তাইলে দলে দলে উচ্চ শিক্ষিত হিন্দু মেয়েরা মুসলমান ছেলেদের কে বিয়ে করবে। বাংলাদেশের একদম প্রথম শ্রেণীর পত্রিকা The Daily Star এ হিন্দু ধর্মে নারীদের এই দূর্দশার কথা লিখা হয়েছে।
http://www.thedailystar.net/op-ed/plight-of-hindu-women-in-bangladesh-9973
শেখ হাসিনা ২০১২ সালে ভারতের মত বাংলাদেশেও হিন্দু বিবাহ আইন করতে চেয়েছিল। কিন্তু হিন্দু ছেলেদের জন্য পারে নাই। বাংলাদেশের এক হিন্দু নেতার কথা শুনুন-“ আমরা ঐচ্ছিক বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন মানতে রাজী আছি কিন্তু বাধ্যতামূলক বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন, তালাক ও উত্তরাধিকার আইন মানতে রাজী নই কারন আমাদের হিন্দু ধর্ম এটা সমর্থন করে না। ”
তসলিমা নাসরিন কোনদিনও এই হিন্দু পারিবারিক আইন সংস্কার করা নিয়ে কিছু বলেন নাই। কিন্তু মুসলমান মেয়েরা কেন ভাইয়ের অর্ধেক সম্পত্তি পায় এই নিয়ে তসলিমা নাসরিনের প্রশ্নের শেষ নাই। তাইলে এই তসলিমা নাসরিন কিভাবে একজন Free Thinker হল ? ভারত উপমহাদেশের একজন মুক্তমনা হিসাবে হিন্দু ধর্মে নারীর অধিকার নিয়ে তসলীমা নাসরীনের অবশ্যই কিছু কথা বলা উচিত ছিল। নাকি একজন Free Thinker এর বৈশিষ্ট্য হল এটাই যে কখনোই হিন্দু ধর্ম বা খৃষ্টান ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না !
বাংলা অনলাইন জগতে আসলে কোন নাস্তিক নাই। যা আছে সব নিচু জাতের হিন্দু। বাংলাদেশের হিন্দু মেয়েরা যে বাপ মা স্বামীর কোন সম্পত্তি পায় না এটা নিয়ে কখনোই এই অনলাইনের নাস্তিকরা কিছু লিখে নাই। মুক্তমনার অভিজিত্ রায় আজ ১ যুগ ধরে ইসলাম ধর্মে নাকি নারীর কোন অধিকার নাই এই বিষয় নিয়ে লিখছে। কিন্তু হিন্দু মেয়েদের বিয়ের সময় যে কোন সাক্ষী থাকে না, অগ্নিকে সাক্ষী করে হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হয়, হিন্দু মেয়েরা যে এক টাকাও দেন মোহর পায় না এটা নিয়ে অভিজিত্ রায়ের কোন লিখা নাই। মুসলমান মেয়েরা কেন ভাইয়ের অর্ধেক সম্পত্তি পায় এটা নিয়ে কত ব্লগই না লিখা হল বাংলা অনলাইনে কিন্তু হিন্দু ধর্ম অনুসারে একটা মেয়ে স্বামী পিতা মাতার কতটুকু সম্পত্তি পায়, হিন্দু ধর্ম একটা মেয়েকে কি কি অধিকার দিয়েছে এটা নিয়ে আজ পর্যন্ত নাস্তিকদের কোন ব্লগ বা Status আমার চোখে পরল না। ল্যাজ্ঞা ইস ভেরী ডিফিকাল্ট টু হাইড। আমাদের তসলিমা নাসরিনও হল সেই হিন্দু গোত্রের লোক।
বিজেপী নাকি তসলিমা নাসরিনের রেসিডেন্ট পারমিট বাতিল করছে। এই নিয়া ব্লগে আর ফেইসবুকে হিন্দুদের কি কান্নাকাটি যেন তসলিমা নাসরিন তাদের আপন মায়ের পেটের বোন ! অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তসলিমা নাসরিনের জন্ম কর্ম সব ভারতে তাই ভারত সরকার কখনোই তসলিমা নাসরিনের ভিসা বাতিল করতে পারবে না।
২০০২ সালে গুজরাটে যখন মুসলিম নিধন চলছে তখন অরুন্ধতি রায় একাই ভারতের মুসলমানদের পক্ষে লড়ে গেছেন। নন্দিতা দাশ একাই “ফিরাক” ছবিটি তৈরি করে ভারতের হিন্দুদের বর্বরতা কে তুলে ধরেছিলেন। আমাদের তসলিমা নাসরিনও কিন্তু সেই সময় ভারতে অবস্থান করছিলেন। আপনি শুনলে অবাক হবেন তসলিমা নাসরিন ২০০২ সালে এই গুজরাটের মুসলিম নিধন নিয়ে একটি কথাও বলেন নি। যেখানে অরুন্ধতি রায় কলামের পর কলাম লিখে গেছেন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সেখানে আমাদের তসলিমা নাসরিন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে একটা tweet ও করে নি। যারা ২০০২ সালের গুজরাটের দাঙ্গা নিয়ে পড়াশুনা করেছেন তারা জানেন যে অরুন্ধতি রায়, নন্দিতা দাশ উনারা একাই বজরঙ্গী শিবসেনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল আর আমাদের তসলিমা নাসরিন সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করেছিল। আর এই তসলিমা নাসরিন ই কিনা পৃথিবীর মানুষের কাছে একজন প্রথম শ্রেণীর মুক্তমনা ! শিক্ষা দীক্ষা সাহিত্য চর্চার মানের দিক থেকে অরুন্ধতি রায় তসলিমা নাসরিনের থেকে বহু বহু গুন এগিয়ে। কিন্তু যেহেতু অরুন্ধতি রায় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে গালিগালাজ করেন না তাই অরুন্ধতি রায়ের কপালে সুইডেন আমেরিকায় বাড়ি জুটে নাই। সুইডেন আমেরিকায় বাড়ি জুটতে হলে আপনাকে অবশ্যই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে গালিগালাজ করতে হবে।
আমার কথা হইলো অরুন্ধতি রায়, নন্দিতা দাশ উনারা যদি গুজরাট নিয়ে কথা বলতে পারেন তাইলে তসলিমা নাসরিন কেন গুজরাট নিয়ে কথা বলতে পারবে না ? গুজরাট দাংগার পিছে তসলিমার ভুমিকা আছে| তসলিমা নাসরিনের “লজ্জা” নামক রুপকথায় বাংলাদেশের যে কথিত হিন্দু নির্যাতনের কাহিনী চিত্রিত করেছেন সেই কাহিনি নরেন্দ্র মোদি গং ভারতের প্রায় সব ভাষায় অনুবাদ করে হিন্দুত্ব জাগ্রত করে মুসলিম জেনোসাইডের পায়তারা করেছে| সত্যিকথা বলতে কি তসলিমা তো হিন্দুত্ববাদেরই প্রোডাক্ট| ভারত যেমন বাংলাদেশের চোর ছ্যাচড়দের আশ্রয় দিয়ে এই দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়্, তসলিমাও সেইসব চোর ছ্যাচড়দের একজনই আর কি| তসলিমা নাসরিনের লজ্জা লেখার পর ভারতের মুসলমানদের অনেক সমস্যা হয়েছে। লজ্জায় তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের যের কাল্পনিক চিত্র চিত্রায়িত করছে তার কারনে ভারতে অনেক গুলি মুসলিম গণহত্যা হয়েছে।
৯০ এর দশকে এক ডাক্তার মহিলা কোরআন কে সংশোধন করতে হবে, মেয়েরা কেন একের অধিক স্বামী রাখতে পারবে না ইসলামের এই নিয়মটা ভুল এইসব আজগুবি কথা বলে সে সারাজীবনের জন্য ইউরোপ আমেরিকায় ফ্রীতে থাকা খাওয়ার সুযোগ সুবিধা পায়। এই তসলিমা নাসরিনের সুইডেনে একটা বাড়ি আছে, আমেরিকায় একটা বাড়ি আছে। তসলিমা নাসরিন কোন কাজকর্মও করেন না তাও কিভাবে উনি এত বিলাস বহুল ভাবে চলেন, এত দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ান সেটা আমাদের সবার কাছেই একটা প্রশ্ন। মুসলমানদের হজ্জ কুরবানী আসলে এই তসলিমা নাসরিন এগুলিকে অর্থের অপচয় বলেন কিন্তু হিন্দুদের দূর্গা পূজার সময় মা দূর্গা কে যে ৩ দিন পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয় সেটা তসলিমা নাসরিনের কাছে কোন অপচয় না। হিন্দুধর্মের বর্ণপ্রথার কারনে একটা দাস পরিবারের ছেলে যে কখনোই চক্রবর্তী পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে না সেটা নিয়ে কখনোই তসলিমা নাসরিন কিছু বলেন নাই। বাংলাদেশে নাকি অনেক হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে কিন্তু কাশ্মীর যে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সেনা অধ্যুষিত এলাকা কাশ্মীরে যে আজ পর্যন্ত ১ লাখ মুসলিম নারী ভারতের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছে এটা নিয়েও তসলিমা নাসরিনের কোন tweet নেই। পাশের দেশ বার্মায় গৌতম বুদ্ধের অনুসারীদের দ্বারা যে রোহিঙ্গা নির্যাতন হচ্ছে খোদ বাংলাদেশেই ২ লাখ রোহিঙ্গা উদ্ববাস্তু হিসাবে বসবাস করছে সেই রোহিঙ্গাদের দূর্দশা নিয়েও তসলিমা নাসরিনের কোন tweet নেই। তসলিমা নাসরিনের চোখে মুসলমানরা কোন মানুষের সংজ্ঞায় পরে না। আর সেইজন্য তসলিমা নাসরিন কখনোই কাশ্মীর, রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে কোন tweet করেন নি। আমরা সেইজন্য তসলিমা নাসরিন কে নাস্তিক বলি না আমরা তসলিমা নাসরিনকে একজন ইসলাম বিদ্বেষী বলি।
বিষয়: বিবিধ
৩৭৬৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
না, কথাটা ঠিক না। বরংচ বাংলা অনলাইন জগতে যে মুমিনরা আছেন তাদের সবাই তিন পুরুষ আগের মনশুদ্র হিন্দু। খোঁজ নিয়ে দেখেন, আপনার মত বাগদাদী মুমিনদের দাদার নাম কানু মন্ডল, শানু মন্ডল, বর্মন...........
মারিয়া
পরীবানু
মরুর মুসাফির
পরীবানু ,সততার আলো
অশ্বথমা
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক
পরমা ,নীলমণীলতা
বিলকিস লায়লা
দস্তার
রুপবান
মুক্তিযুদ্ধ ৭১
দ্রাবীড় বাঙাল
লেয়লা ইসলাম
বিলকিস
বাংলা ৭১
ভিক্টোরিয়া
হেলেনা
পল্লব প্রভাতে
খালেদ
রুশো তামজিদ
বারাংগনা
মধুবালা
সখি
ফয়সাল১
মাঝি-মাল্লা, ,
লায়লার
লায়লা০০৭
রাতুল দাস
চকো চকো
সায়েদ-রিয়াদ
বিভ্রান্ত নাবিক
ফাজিল
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক
মুক্তিযুদ্ধ ৭২
দ্রাবীড় বাঙাল
পিচ্চি পোলা
কাওসাইন হক
চাষা
jahed_ullah
নীরু
সাদা মন
সাদা মন
চোথাবাজ
আমি বিপ্লবী
সততার আলো সকাল সন্ধ্যা
এই নেরিকুত্তার এত নিক
নারীর অধিকার বেশী তাই মনশুদ্ররা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল।সামনে আপনাকেও করতে হতে পারে।
উত্তরাধিকার আইনের ব্যাপারে আমি যতটুক জানি। বৃটেনে এখনও কেউ মৃত্যবরন করলে তার সম্পদ এর প্রধান অংশ এবং পারিবারিক টাইটেল তথা স্যার,লর্ড,আর্ল ইত্যাদির উত্তরাধিকারি হয় কেবল মাত্র বড় পুত্র সন্তান। যদি আইনত সন্তান না থাকে সেক্ষেত্রে অবৈধ সন্তান। তাও না থাকলে ভাই কিংবা ভাই এর বৈধ বা অবৈধ সন্তান। তাও নাথাকলেই কেবল মেয়েরা উত্তরাধিকারি হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন