মেয়েদের খৎনা করাটা কতটুকু ইসলাম সম্মত ?
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২৮ জুলাই, ২০১৪, ১১:৩২:২৪ রাত
মেয়েদের খৎনা করা এটা শুধু শাফেয়ী ও হামবলী মাযহাবে আছে তাও তাদের মাযহাবে সেটা সুন্নত। তবে আমরা মেয়েদের খৎনা করাটা অস্বীকার করি কারন সাহাবীরা এটা করেন নি। এটা মূলত বেদুঈনদের রীতি তবে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটাকে জায়েজ বলেছেন। এক বেদুঈন মহিলার প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহর রাসূল মেয়েদের খতনা করাকে জায়েজ বলেছেন অল্প করে কাটবে এই কথাটা বলে। কিন্তু মেয়েদের খতনা করার ব্যাপারে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতকে কোন সরাসরি নির্দেশ দেন নি। তাই হানাফী মাযহাবে মেয়েদের খৎনা করার কোন বিধান নাই। আর মেয়েদের খৎনা করা জায়েজ এই সম্পর্কিত যেই ২ টা হাদীস এসেছে তা দূর্বল হাদীস ও এই ২ টা হাদীসের সনদের কোন ধারাবাহিকতা নেই। তাই এই ২ টা হাদীস ফিকাহ শাস্ত্রে ধর্তব্য নয় কারন হাদীস ২ টার সনদ ঠিক নাই। মেয়েদের খতনা আফ্রিকা মহাদেশের খৃষ্টান ও উপজাতিরাও করে। এটা বহু আগে থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। এটা মূলত একটা আঞ্চলিক রীতি। আফ্রিকা মহাদেশের সেইসব এলাকায় মেয়েদের খৎনা না করা হলে তাদের বিয়ে হয় না। কিন্তু ইসলামে এমন কোন কথা বলা নাই যে খৎনা না হলে তার বিয়ে দেওয়া যাবে না। সাহাবীরা এই আমলটি করেন নাই। উমাইয়া আব্বাসীয় উসমানীয় কোন খিলাফত কালেই মেয়েদের খতনা করার ব্যাপারে কোন নির্দেশ ছিল না। আর হানাফী মাযহাবে মেয়েদের খৎনা করার ব্যাপারে কোন নির্দেশ নাই। হানাফী মাযহাবে মেয়েদের খৎনা করাটা হচ্ছে মুবাহ।
আল্লাহর রাসূলের হাদীস আছে প্রায় ১ লাখের মত। এর মাঝে অনেক হাদীস মানসুখ হয়ে গেছে, অনেক হাদীসের বক্তব্য শুধু ঐ ব্যক্তি বা একটি নির্দিষ্ট গোত্র কেন্দ্রিক। যেমন এক বেদুঈন গোত্র রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলে মরুভূমির আবহাওয়ায় তাদের মাঝে পাগলামি রোগ, মাথা ঘুরানোর রোগ হয়। তো এই রোগ থেকে তারা কিভাবে বাঁচবে। তখন রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের কে ঔষুধ হিসাবে উটের মূত্র ও উটের দুধ পান করতে বলেন। এখানে উটের মূত্র পান করার নির্দেশটা কিন্তু শুধু ঐ বেদুঈন গোত্রের জন্যই ছিল। আর কারো জন্য এই উটের মূত্র পান করা জায়েজ হবে না। আবার সাহলা বিনতে সুহাইল নামক এক মহিলা সাহাবীর সেলিম নামক একজন পালক পুত্র ছিল আর যখন ইসলামে এটা বলা হয় যে পালক পুত্র রাখা হারাম তখন সেলিমকে সাহলা নিজেদের ঘরে আসার অথবা চলাচল করার ক্ষেত্রে অস্বস্তিতে থাকেন অথবা বাধা প্রদান করতে থাকেন। সাহলার এই সমস্যা দূর করার জন্য রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহলাকে তার বুকের দুধ একটি পাত্রে নিয়ে পরপর ৫ দিন সেলিমকে খাওয়াতে বলে যেন সেলিম সাহলার দুগ্ধপূত্র হয়ে যায়। এইজন্য দুগ্ধপান সম্পর্কিত হাদিসটি শুধুমাত্র পালক পুত্রদের বৈধতা দানের ক্ষেত্রে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। অন্য কারো ক্ষেত্রে এটা জায়েজ হবে না কেননা আল কোরআনেই বলা হয়েছে ২ বছরের পর শিশুকে আর বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে না।
অনেক হাদীসের আদেশ হচ্ছে নফল বা মুস্তাহাব টাইপের। যেমন রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুমারী মেয়েকে বিয়ে করতে উৎসাহ দিয়েছেন। কিন্তু কুমারী মেয়েকে বিয়ে করা ফরজ না। আপনি আপনার ইচ্ছামত বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা নারীকেও বিয়ে করতে পারবেন। আবার অনেক হাদীসের নিষেধ হচ্ছে মাকরুহ টাইপের। যেমন রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষদের ক্ষেত্রে লাল রঙের পোশাক পড়তে নিষেধ করেছেন। কিন্তু কোন পুরুষ লাল রঙের পোশাক পড়লে কোন গুনাহ হবে না। সর্বোচ্চ মাকরুহ হবে।
কোন হাদীসের আমল কিভাবে করতে হবে বা সাহাবীরা এই হাদীসের উপর আমল করেছে কিনা এগুলি তো সাধারন লোক জানবে না। আর নাস্তিকরা ঠিক এই সুযোগ টাই নেয়। হঠাৎ করে একটা হাদীসের আমল দেখিয়ে নাস্তিকরা সাধারন মানুষ কে বিভ্রান্ত করে।
যেখানে ছেলেদের মুসলমানি করাই হচ্ছে সুন্নত সেখানে মেয়েদের খৎনা আবার কি ? আর মুসলমানী করার এই নিয়ম হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সাল্লাম থেকে চলে আসছে। কিন্তু হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সাল্লামের ক্বওমের মাঝে মেয়েদের খৎনা করার কোন নিয়ম ছিল না। আর খৎনা করার সম্পর্কিত যেই হাদীসগুলি আসছে তা শুধু ছেলেদের খৎনাই বুঝিয়েছে। কারন সেইসব হাদিসে দাড়ি বড় করা, গোফ ছোট করার কথা বলা হয়েছে। আর আমরা জানি মেয়েদের দাড়ি গোফ উঠে না। তাই মেয়েদের খৎনা করার নির্দেশ দিয়ে কোন হাদীসই ইসলামে নাই। তাই মেয়েদের খৎনা করার ব্যাপারটা কোন ইসলামী রীতি না এটা হচ্ছে একটা আঞ্চলিক রীতি।
১৪০০ বছর ধরে ইসলামও কখনো মেয়েদের খতনা করায় নাই। আর মেয়েদের খতনা নিষ্ঠুর বলেই আল্লাহর রাসূল বলেছিলেন অল্প করে কাটো। ইসলামে মেয়েদের খতনা করা জায়েজ হলে হযরত আবু বকর ওমরের সময় থেকেই ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও খতনা করানো হত। আর এই মেয়েদের খতনা যেইসব জায়গায় হত তা ছিল তাদের আঞ্ঝলিক রীতি। এর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই। নারী খৎনাটা শাফেয়ী ও হাম্বলী মাহযাবের ঐ সকল নারীদের জন্য জায়েজ যারা শারীরিক ভাবে অসুস্থ। এটা যে সবার জন্য বাধ্যতামূলক নয় এর জন্য হাদীস শরীফ আছে: ১) হযরত আতিয়া আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্ণিত, এক মহিলার মদীনা শরীফে খতনা হয়েছিল। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, নিজেকে কষ্ট দিও না। কারণ খতনা পুরুষের জন্য সন্তুষ্টিদায়ক, কিন্তু নারীর জন্য বেদনাদায়ক।(আবু দাউদ) ২) হযরত আবু মালিহ হতে বর্ণিত, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খতনা পুরুষের জন্য সুন্নত, নারীদের জন্য নফল। মুসনাদে আহমদ।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৮৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইরাকের যৌন জিহাদী-দের সম্পর্কে কিছু লিখুন ।
ইরাকে তো খিলাফত কায়েম হয়েছে । এটা কি আপনার কথিত স্বপ্ন রাজ্য বা খিলাফাত রাষ্ট্র ?
ফেসবুকে দুর্বা জাহান নামক এক অপবিত্র মেয়ের সাথে জড়িয়ে আপনাকে অনেক আজে বাজে কথা বলা হচ্ছে ।
অনেক আগে আপনি শর্মি আমিন নামক এক নাস্তিক মেয়ের প্রশংসা করে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন এবং তার সাথে ছবি তুলেছিলেন ।
দয়া করে বলবেন কি অপবিত্রা মেয়েদের সাথে আপনার কি এমন সম্পর্ক ?
আপনার কি শীগ্র বিয়ে করার প্রয়োজন ?
তাহলে এই পেজ ভিজিট করে আজই সিদ্ধান্ত নিন : https://www.facebook.com/WeWillMarryEarly
আমনে যেইভাবে অন্যের পিটে চুলকাইয়া ঘা করেন, সামনে দিনে আমনের পাছার ঘা জনগন দেখিবে। কাউরে উসকাইয়া দেওন, চুলকাইয়া উত্তেজিত করন ইসলামের কুন কেতাবে আমনে পাইছেন আমি জানিনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন