ভারতের আযান আর বাংলাদেশের রথযাত্রা; একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২৪ জুলাই, ২০১৪, ১২:০৭:৫৭ রাত



সেদিন আম্মার সাথে সিলেটের রিকাবী বাজারে মাসিক বাজার করতে যেয়ে দেখি রিকাবী বাজারের রাস্তার পাশের খোলা জায়গায় যেখানে কাচাঁ বাজার বসে সেখানে একটা টং এর দোকানও নাই। খুব অবাক হলাম যে এত গুলি টং এর দোকান কই হাওয়া হয়ে গেল। পরে জানতে পারলাম রথযাত্রা উপলক্ষ্যে সেখানকার সব দোকান উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। রথযাত্রা যেহেতু রাস্তার পাশেই হয় তাই এই আওয়ামী হিন্দু সরকার রাস্তার পাশে কোন দোকান রাখে নাই যেন আমাদের হিন্দু বোনেরা সেই খোলা জায়গায় দাড়িয়ে রথযাত্রাটা উপভোগ করতে পারে। যারা সিলেট শহরে থাকেন তারা জানেন যে প্রতি বছর ইসকনের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রিকাবী বাজারের টং এর দোকান গুলি উঠিয়ে দেওয়া হয়। শুধু রিকাবিবাজার না রিকাবিবাজার থেকে চৌহাট্টা যাওয়ার পথে পুরো রাস্তায় প্রায় ৩০-৪০ জন সাইকেলের মেকানিক বসেন । হিন্দুদের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে তাদের সেখান থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে । শহিদ সামসুদ্দিন মেডিকেল ছাত্রাবাসের অপর পাশে ১৫-২০ টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান আছে তাও তুলে দেওয়া হয়েছে । সিলেটের লামাবাজার , মিরজাঙ্গাল রুটে আপনি পায়ে হেটেও চলতে পারবেন না । সব ভোজন কীর্তন একেবারে রাস্তার মাঝখানে । এখন যদি কেউ নগরীর অন্য কোনও প্রান্ত হতে ওসমানী মেডিকাল যেতে চায় তাও সম্ভব হবে না এই ভিড়ের কারনে । আচ্ছা আপনারাই বলেন যেখানে হিন্দুরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ৭ ভাগ সেই ৭ ভাগ হিন্দু জনসংখ্যার আবদারের কারণে সিলেট বিভাগীয় শহরের একটি বাজার বন্ধ হয়ে যায় এরপরেও যদি হিন্দুরা বলে তারা স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মকর্ম করতে পারছে না তাইলে এরচেয়ে বড় মিথ্যা কথা এই যুগে আর কি হতে পারে ? হিন্দুদের এত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরেও তাদের মন ভরছে না। একটা কথা আছে না ছোট লোকদের বসতে দিলে তারা শুইতে চায়। ঢাকার স্বামীবাগের হিন্দুদের ক্ষেত্রে ঠিক তাই হয়েছে। পুরান ঢাকার স্বামীবাগের হিন্দুরা এখন আবদার করছে মুসলমানরা তারাবীর নামায যেন রাত ১০ টার মাঝে শেষ করে যেন হিন্দুরা সারারাত তাদের ঢোল বাজনা বাজাতে পারে। আরে পূজা আর্চনা করার সাথে ঢোল বাদ্য বাজানোর সম্পর্কটা কি তাই তো আমার মাথায় ঢুকে না। হিন্দুরা সারাদিন স্বামীর পেটের উপর দাড়ানো কালো কুত্সি ত জিহ্ববা বের করা মা কালীর পূজা করুক বা ৪ টা মুখ ওয়ালা বিষ্ণু দেবতার পূজা করুক এতে আমাদের কোন যায় আসে না কিন্তু হিন্দুরা এই সব দুষ্ট মৃত জ্বীন পূজার সাথে সাথে ঢোল বাদ্য বাজিয়ে আমাদের নামাযের ব্যাঘাত ঘটাবে তা তো মেনে নেওয়া যায় না। তাই বিবেকবান হিন্দুদের কে আমি অনুরোধ করছি আপনারা সারাদিন প্যাগানদের মত দুষ্ট জ্বীনরুপী দূর্গা কালীর পূজা করুন এতে আমরা কোন বাধাই দিব না কিন্তু আপনারা এইসব মৃত জ্বীন পূজার নাম করে ঢোল বাদ্য বাজনা বাজিয়ে আমাদের তারাবীর নামাযে ব্যাঘাত ঘটাবেন আর আমরা চুপ করে বসে থাকবো তা তো হতে পারে না। আপনারাই বলেন কোন হিন্দু এস এই যদি বলে রাত ১০ টার মাঝে তারাবীর নামায শেষ করতে হবে তা না হলে মসজিদে তালা মারা হবে তাইলে কি মুসল্লীরা উত্তেজিত হবে না ? রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার এসআই অমল কৃষ্ণ স্বামীবাগ জামে মসজিদ কমিটির সদস্যদের কে এই বলে হুমকি দিয়েছে-“ তারাবির নামাজ রাত ১০টার মধ্যেই শেষ করতে করতে হবে। অন্যথায় মন্দিরের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার কারনে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। ” ঢাকার অনেক মসজিদেই তারাবী শুরু হয় রাত ৯ টায়। তাইলে কিভাবে তারা রাত সাড়ে দশটায় তারাবী শেষ করবে ? আর আমরা কি হিন্দুদের কোথায় এখন নামাযের সময় নির্ধারন করব। হাজার হাজার হিন্দু এস আই নিয়োগ দেবার ঠেলা জাতি এখন বুঝতে পারছে। প্রত্যেকটা থানার ভিতরেই এখন ৩/৪ টা হিন্দু এস আই এর দেখা পাওয়া যায়। এক হিন্দু এস আই তারাবির সময় -সীমা নির্ধারন করে দিয়ে এবং তা না মানার পরিণতিতে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে নিঃসন্দেহে হিন্দুরা মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করেছে।

বাবরি মসজিদ কিন্তু ভাঙা হয়েছিল আদভানির নেতৃত্বে রথযাত্রার মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের দ্বারাই। তাই হিন্দুদের এই রথযাত্রা নিছক কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান না। স্বামীবাগে ইসকনের সেই রথযাত্রা ৭ দিন ধরে চলে। সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১০ টা পর্যন্ত। মানুষ ঢোলের আওয়াজে স্বাভাবিক কাজকর্মও করতে পারছে না। আচ্ছা আপনারাই বলেন ৭ দিন ধরে রথযাত্রা চলার কি কোন দরকার আছে ?

হিন্দুরা প্রায়ই সারা রাত কীর্তন করে হিন্দুদের এইসব কীর্তনের চোটে আমরা রাতে ঘুমাইতে পারি না কই আমরা মুসলমানরা কি কখনো হিন্দুদের কে বলছি যে আপনারা সারা রাত কীর্তন করতে পারবেন না। তাইলে হিন্দুরা কেন আমাদের তারাবীর নামাযের সময় সীমা বেধে দিবে ? হিন্দুদের এই দুঃসাহসের উত্সা কি এটাই যে আমাদের তথাকথিত জাতির পিতা একজন লম্পট হিন্দু উকিলের ঔরসজাত সন্তান ? জনসংখ্যার মাত্র ৭ ভাগ হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান পুলিশ প্রশাসনের শতকরা ৩০ ভাগ অফিসারই এখন হিন্দু। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর যে গণহারে হিন্দুদের কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তা তো আমরা সবাই জানি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল থেকে যে পরিমান BCS হয় তা আর অন্য কোন হল থেকে হয় না।

পুরান ঢাকার স্বামীবাগের এক ভুক্তভোগীর কথা শুনুন ................

রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া থানায় স্বামীবাগ এলাকা পরছে। হ্যা এখানে মন্দির ও মসজিদ পাশাপাশি। তবে মসজিদটা অনেক পুরান, প্রায় ৫০০ বছর হবে। মসজিদটা বর্তমানে ভবন করা হচ্ছে, পাঁচতলা করা হবে। ইতিমধ্যে, ৪ তলা হয়ে গেছে, আরো এক তলা বাকি আছে।

দাড়ান, লোকেশনটা বলছি, এই মেইন রোড থেকে গলিতে ঢুকতে কিছুদূর পর বামে রয়েছে ইসকন মন্দির, আর গলি দিয়ে সামনে গেলে বামে গলির মাথায় হচ্ছে মসজিদ। মসজিদ-মন্দির বলতে গেলে প্রায় পাশাপাশি। কিন্তু জানেন ভাই, এই এলাকার মানুষরা না খুব কষ্টের মধ্যে আছে। চারালদের অত্যাচারে মানুষের স্বাভাবিক জীবন আর নাই। চারালরা সারাদিন পুরা এলাকা কাপাঁয় ঢোল-বাদ্য বাজায়। একেবারে ননস্টপ। ভোর ৪টা থেকে শুরু করে, রাত ১২টা পর্যন্ত চলে। শুধু ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময় তাদের ঢোল-বাদ্য বন্ধ রাখতে বহুবার তাদের নেতাদের বলা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয় নাই। নামাজের মধ্যে তাদের ঢোলের শব্দ শুনে শুনে সূরা পড়তে হয়। আর আমরা নাইলে বাইরে যাই, কিন্তু বাসার মহিলা-বাচ্চারা? তারাতো সারাদিন ঢোলের শব্দ শুনতে শুনতে অসুস্থ হয়ে গেছে। (বি: দ্র: স্বামীবাগের পাশে একটা মেথর পট্টি আছে, ঐ এলাকার হিন্দুরা মেথর পেশার সাথে জড়িত, তারা এলাকায় চারাল নামে পরিচিত)

ভারতে প্রায়ই মুসলিম হত্যা হয়। ভারতের মুসলিম হত্যা এখন ডালভাত হয়ে গেছে। এই কিছুদিন আগেই ভারতের মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে মহসিন সাদিক শেখ নামের এক মুসলিম প্রযুক্তিবিদকে শিবসেনার সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেছে কিন্তু বাংলাদেশে কখনোই কোন হিন্দুকে হত্যা করা হয় নি। হিন্দুদের সাথে আমাদের এই সৎ ব্যবহারের প্রতিদান হিন্দুরা এখন তারাবীর নামাযের সময় ঢাক ঢোল পিটিয়ে দিচ্ছে। হিন্দুরা মূর্তি পূজা করুক বা কুমারী মেয়েদের যোণী পূজা করুক এতে আমাদের কোন মাথাব্যথা নাই। কিন্তু হিন্দুদের ঢাক ঢোল বাজনা বাজানোর জন্য আমরা তারাবীর নামায পড়তে পারবো না তাতো মেনে নেয়া যায় না। এই ২০১৪ সালেও যে এত বিশাল সংখ্যক মানুষ একটা প্যাগান ধর্মের অনুসারী তা রথযাত্রা না দেখলে আমি বুঝতে পারতাম না। শুধু শুধুই কি অক্তাবিও পাজ লিখেছেনঃ- হিন্দুধর্মের অনুসারীরা প্যাগানদের মত ভূত পূজারী। তাদের ঈশ্বরকে খুশি রাখতে এই খারাপ মানুষগুলো নিজের সন্তানের গলা কাটে! কতটা নিষ্ঠুর ,দয়া মায়াহীন এই জাতি! -অক্তাবিও পাজ,দ্য লাইট অব ইন্ডিয়া

বিষয়: বিবিধ

২৭৬৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

247673
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১২:২৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : apnar likhar modde onek proshno jar uttor deoya onek kotin,,ekhon ja korar ta holo ei shoytan oboido sorkar k utakhat kora.
247684
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১২:৫২
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : এই সরকার হিন্দুত্ববাদীতাকেও হার মানিয়েছে।
আমি বুঝতে পারি না, আওয়ামী নেতারা মুসলিমের চেয়ে হিন্দুদেরকে বিশ্বাস করে বেশী। আমার জানা মতে বেশ কয়েকজন বড় আওয়ামী নেতার সম্পত্বির পাওয়ার অব এটর্নি দেয়া আছে হিন্দু কর্মচারীর নামে।
247685
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১২:৫৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সিলেটের রথযাত্রার আমি একবার দেখেছি। কিন্তু তখন এতটা রাস্তা বন্ধ হতোনা। তবে ভিড় হযেছিল। আর সিলেটের ঢাকা দক্ষিন( ঢাকা মহানগরির দক্ষিন নয়!) বৈষ্নব ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা শ্রি চৈতন্য এর জন্মস্থান। কিন্তু ইসকন আর সনাতন বৈষ্নব ধর্ম এক নয়।
247702
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:০৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : What is going on in Bangladesh. It is really unbelievable. I think it is due power. Now a day in every institution Hindu people are in power. Last time when I went to bd one of my well wisher has been transferred due to wear hiijab.
It is a shame. Janakallah khair for your valuable post.
247723
২৪ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৫:৫৩
শেখের পোলা লিখেছেন : বিজাতীয় শাসক থাকলেতো এমন হবেই৷ সহ্য করুন, স্বাধীনতা নামক সোনার হরীনতো পেয়েছেন৷ তাতেই হবে৷
247790
২৪ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
হতভাগা লিখেছেন : গতকালের জিটিভির খবরে হাইলাইটে দেখেছি যে , একটা অনুষ্ঠানে শিবসেনার এক এমপি অনুষ্ঠান স্থলের এক মুসলিম ওয়েটারকে জোর করে মুখে রুটি তুলে দিতে চাচ্ছে ।
247846
২৪ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:৩২
শাফিউর রহমান ফারাবী লিখেছেন : সিলেটে ইস্কনীদের অনেক ক্ষমতা। তারা বাজার রাস্তা ঘাট বন্ধ করে রথযাত্রা করে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File