বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ, নাস্তিক্যতাবাদ ও ইসলাম; আপনি এখন কোনটার প্রতি ঈমান আনবেন ?

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২৮ মে, ২০১৪, ১২:১৪:৫৭ দুপুর



বিজ্ঞানের কাঁধে বন্দুক রেখে দীর্ঘদিন ধরে নাস্তিকরা মুসলমানদের ঈমান ধ্বংসের কাজ করছে। নাস্তিকদের কথা হল আমরা মুসলমানরা যেহেতু আল্লাহ সুবহানাতায়ালার উপর ঈমান এনেছি, আখিরাত কে বিশ্বাস করি তাই আমরা মুসলমানরা নাকি বিজ্ঞান মনস্ক নই। আচ্ছা বিজ্ঞানের সাথে নাস্তিক্যতাবাদের সম্পর্কটা কি তা কি কেউ আমাকে একটু বলবেন ? বিজ্ঞানের কোন বইতে কি লেখা আছে যে সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছু নাই। সৃষ্টিকর্তা আছে কি না এটা কখনই বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় নয়। মূলত সায়েন্টিফিক মেথড সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলেই কেউ এই ধরণের বক্তব্য দিতে পারে যে সৃষ্টিকর্তা, আখিরাত বিশ্বাস করা হচ্ছে অবৈজ্ঞানিক। এই দুনিয়ার কোনো ল্যাবেই গডের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব প্রমাণের জন্য বৈজ্ঞানিকভাবে কোন গবেষণা করা হচ্ছে না এবং হবেও না, কেননা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব আছে কিনা এই বিষয়টা বিজ্ঞানের আওতাভূক্তই নয়। কাজেই সায়েন্টিফিক মেথড অনুযায়ী গডের অস্তিত্বের পক্ষে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ চাওয়া একেবারেই একটি অবৈজ্ঞানিক দাবি। আর বাংলার শিক্ষক হুমায়ন আজাদও যিনি বাংলাদেশের নাস্তিকদের গুরু উনিও সারাদিন খালি চিল্লায়তো যে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব নাকি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত না। কিন্তু Physics, Chemistry এর কোন বইয়ে এটা লেখা আছে যে এই মহাবিশ্বের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই এটা এখনও আবাল নাস্তিকরা আমাদের কে বলতে পারে নাই। কিন্তু তা সত্বেও এই নাস্তিকরা প্রতিদিন ত্যানা প্যাচায় যে আমরা মুসলমানরা আখিরাত, আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি তাই নাকি আমরা মুসলমানরা বিজ্ঞান মনস্ক নই !

images (12)

আচ্ছা আপনারা কি জানেন নাস্তিকরা প্রতিমুহূর্তে কি পরিমানে একটি অন্ধ বিশ্বাসে নিমজ্জিত থাকে। কোটি কোটি বছর আগের একটি কাল্পনিক ব্যাকটেরিয়া থেকে র‍্যান্ডম মিউটেশন ও ন্যাচারাল সিলেকশন এর মাধ্যমে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে পুরো জীবজগতের বিবর্তনে বিশ্বাস করতে হলে কী পরিমাণ অন্ধ বিশ্বাসী হতে হবে, আপনারা একটু হিসাব করে দেখুন! নাস্তিকরা বিশ্বাস করে যে ধাপে ধাপে বিবর্তনবাদের মাধ্যমে এই প্রাণী জগত সৃষ্টি হয়েছে। যেটাকে তারা ডারউইনের বিবর্তনবাদ বলে চালিয়ে দেয়। একটু চিন্তা করে দেখুন আমাদের শরীরে একটিও ডান হাতি অ্যামাইনো এসিড নেই। যদি আপনা আপনিই এই প্রানী জগত সৃষ্টি হত তাইলে অবশ্যই আমাদের শরীরে একটি হলেও ডান হাতি অ্যামাইনো এসিড থাকত। একটি প্রোটনের অ্যামাইনো এসিড গুলি ডান হাতিও হতে পারে আবার বাম হাতিও হতে পারে। তবে সবচেয়ে অবাক করা জিনিস হল এই যে মানব দেহের প্রোটিন গঠনে শুধু মাত্র বাম হাতি অ্যামাইনো এসিড গুলি যুক্ত থাকে। মানব দেহের প্রোটিন কাঠামোর মাঝে যদি একটিও ডান হাতি অ্যামাইনো এসিডের প্রবেশ ঘটে তবে এই প্রোটিন কাঠামোটি তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে একটি অকার্যকর খন্ডে পরিনত হবে। এখন আপনি যদি কোন নাস্তিককে জিজ্ঞাস করেন যে কেন আমাদের শরীরের প্রোটিন কাঠামো গঠনে ডান হাতি অ্যামাইনো এসিড গুলি থাকল না তখন নাস্তিকরা এই প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারবে না। কারন প্রানের উৎপত্তি যদি দুর্ঘটনাই হত তাইলে তো অবশ্যই মানব দেহের প্রোটিন গঠনে একটি হলেও ডান হাতি অ্যামাইনো এসিডের প্রবেশ ঘটত। তাইলে আপনারা ঠিকই বুঝতে পারছেন যে এই নাস্তিকতা হচ্ছে একটি চরম অন্ধবিশ্বাস। কারণ এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বকে অস্বীকার করা মানে পুরো মহাবিশ্বের প্রতিটি অণূ, প্রতিটি পরমানু, প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটা ঘটনাকে ব্যাখ্যা করার জন্য নাস্তিকদের কে প্রতি মুহূর্তে চান্স আর Probability এর ন্যায় অন্ধ বিশ্বাসের আশ্রয় নিতে হয়। ডারউইনের বিবর্তনবাদ থিওরী মতে একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে 'র‍্যাণ্ডম মিউটেশন ও ন্যাচারাল সিলেকশন' নামক মন্ত্রের মাধ্যমে এই পৃথিবীর পুরো প্রাণীজগত ও উদ্ভিদজগতের উৎপত্তি হয়েছে এটা বিশ্বাস করতে হলে কী পরিমাণ চান্স আর অন্ধ বিশ্বাসের আশ্রয় নিতে হচ্ছে নাস্তিকদের কে, তা কি আপনারা কখনো ভেবে দেখেছেন? আপনা আপনি প্রাণের উৎপত্তি হওয়া যে অসম্ভব এই ব্যাপারে আপনারা আমার লেখা এই নোট টা পড়তে পারেন

whaleancestors3

download (2)

ডারউইনের বিবর্তনবাদ এটা কোন fact না এটা হচ্ছে just একটা বৈজ্ঞানিক থিওরী। আর এই ডারউইনের বিবর্তনবাদ থিওরী কেই নাস্তিকরা ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে মুসলমানদের কে অপমান করে। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ডারউইনের বিবর্তনবাদ থিওরী যে একটা আজগুবি তত্ত্ব ছাড়া আর কিছুই না তা জানতে আপনারা এস এম রায়হান ভাইয়ের লেখা এই ব্লগটা পড়ুন। http://www.shodalap.org/smraihan/23805

কোটি কোটি বছর আগের একটি [কাল্পনিক] ব্যাকটেরিয়া, যেই ব্যাকটেরিয়া কে আজ পর্যন্ত কোন নাস্তিক চোখেও দেখে নাই আর সেই ব্যাকটেরিয়া থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে পুরো জীবজগতের উৎপত্তিতে যারা বিশ্বাস করে আর সেই নাস্তিকরা নাকি আসছে মুসলমানদের আখিরাতের বিশ্বাস নিয়ে কথা বলতে। নাস্তিকরা বলে যে আমরা আল্লাহকে দেখতে পাই না বলে আমরা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাসী না। আচ্ছা নাস্তিকরা তো বিবর্তনবাদকেও চোখে দেখে নাই তাইলে তারা বিবর্তনবাদ কে কেন বিশ্বাস করে ? আপনারা কখনোই কি দেখেছেন এক প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়ে আরেক প্রাণীর উত্‍পত্তি ঘটতে ? একটা বস্তুর অস্তিত্বকে যদি প্রমান করা না যায় তবে একজন নাস্তিক সেটা রিজেক্ট করেন! সেই হিসাবে তো বিবর্তনবাদকেও নাস্তিকদের রিজেক্ট করার কথা! কারন একজন নাস্তিক কখনও বিবর্তনবাদকে প্রমান করে দেখায়নি, চোখেও দেখেনি! কিন্তু বিবর্তনবাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় নাস্তিকদের বিশ্বাসটা ঠিক উল্টোটাই ঘটে! তবে কি ধরে নেব যে নাস্তিকেরা বিবর্তনের প্রতি প্রমান ছাড়াই বিশ্বাস এনেছে?

title_banner

নাস্তিকদের কথা হল এই পৃথিবীতে মানুষের উদ্ভব হঠাৎ, নিয়ন্ত্রনহীন আর অপরিকল্পিতভাবে (spontaneous, random) ভাবে হয়েছে। তার মানে একটি জড় মৌলিক অথবা যৌগিক কণা প্রাণলাভ করতে পারে এবং কোন নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই পর্যায়ক্রমে মানুষের মত জটিল সৃষ্টিতে পরিণত হতে পারে। এককথায় কোন জড় কণা উপযুক্ত পরিবেশ আর যথেষ্ট সময় পেলে সেটি মানুষে পরিণত হওয়া সম্ভব– এটাই হচ্ছে বস্তুবাদী ধ্যান ধারণা। বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ নামের এই জটিল আর উন্নত প্রাণীটি অজৈব তথা প্রাণহীন জড় বস্তু থেকে দৈবাত একটি সরল এককোষী জীব হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেছে এবং কোটি কোটি বছর সময়ের ব্যবধানে সেই এককোষী জীবটিই উন্নত বুদ্ধিমত্তার ও মানবিক গুণসম্পন্ন মানব জাতীতে পরিণত হয়েছে।

অর্থাৎ, জড় — দৈবাত জীবন লাভ — একটি কোষ — বিবর্তন — মানুষ

কিন্তু এই জড় কণার দৈবাত প্রাণ লাভ, কিছুতেই প্রমাণিত নয়। আসুন দেখা যাক একটি জ়ড় কণা থেকে জীবন আসতে হলে কী কী ধাপ অতিক্রম করতে হবে–

১/ প্রথমে কিছু সরল জড় কণাকে সতঃস্ফুর্ত, নিয়ন্ত্রণহীন (spontaneous, random) রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জটিল জৈব কণা বা নিউক্লিক এসিড মলিকিউলে পরিণত হবে।

২/ জটিল জৈব কণা বা নিউক্লিক এসিড মলিকিউলগুলোর সাথে নানা ধরণের এনজাইম ও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান (nutrient molecules) একটি কোষ ঝিল্লির (membraned cells) মধ্যে আবদ্ধ হতে হবে।

৩/ কোষের নিউক্লিক এসিড মলিকিউলগুলো (ডিএনএ) সেল্ফ রেপ্লিকেশন এবং সেল ডিভিশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন নতুন কোষ উৎপাদন করতে থাকবে।

—– এভাবে সরল জড় কণা উপযুক্ত পরিবেশে সম্পূর্ণ সতঃস্ফুর্তভাবে, নিয়ন্ত্রণহীন প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত জটিল জীবকোষে পরিণত হতে পারে।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখনকার পৃথিবীতে প্রাণধারণ আর প্রাণ সৃষ্টির যথেষ্ট উপযুক্ত পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও এভাবে কোন জড় কণা সতঃস্ফুর্তভাবে, নিয়ন্ত্রণহীন প্রক্রিয়ায় জীবকোষে পরিণত হয় না। এমনকি পরীক্ষাগারে পৃথিবীর আদি পরিবেশ কৃত্তিমভাবে তৈরী করেও কোন জড় কণাকে জীবন্ত সরল কোষে পরিণত করা যায়নি। [তথ্যসূত্রঃ আমার যত সংশয় পর্ব-১]

images (14)

স্টীফেন হকিং এর একটি থিওরী মতে ভিন গ্রহ থেকে একটা উল্কাপিন্ড এসে এই পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার করেছে। লক্ষ কোটি আলোক বর্ষ দূরত্ব থেকে একটা উল্কাপিন্ডের মাধ্যমে এই পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে এইসব আজগুবী কিচ্ছা কাহিনী ঠাকুরমার ঝুলিকেও হার মানায়। সত্যি কথা বলতে আমরা মুসলমানরা ঈমান এনেছি আল্লাহ সুবহানাতায়ালার উপরে আর নাস্তিকরা ঈমান এনেছে Random Mutation, Natural Selection আর Probability এর উপর।

সেই তুলনায় মুসলমানদের আখিরাতের বিশ্বাস অবশ্যই যৌক্তিক এর কারন হল হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম থেকে শুরু করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত এই পৃথিবীতে অনেক নবী রাসুল এসেছিলেন এটা প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবে সত্য। এমনকি সকল নবী রাসূলের কবরও চিহ্নিত করা আছে।

অর্থ্যাৎ Archaeology বা প্রত্নতাত্ত্বিক মতে এবং Anthropology বা নৃতত্ত্বমতে এই পৃথিবীতে হাজার হাজার নবী রাসূল রা এসেছিলেন এই ব্যাপারে সকল ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিকরাও একমত। আচ্ছা সকল নবী রাসূল রা কি একই সময় এসেছিল ? না হাতে গোনা কয়েকজন নবী রাসুল ছাড়া আর সকল নবী রাসুলদের আসার সময় ভিন্ন ভিন্ন ছিল। এক এক নবী এক এক জাতির কাছে এসেছিলেন। নবী রাসূলরা যেই জাতিগুলি কাছে এসেছিলেন সেই জাতিগুলির ভাষা, জীবন যাত্রা ও পৃথিবীতে অবস্থানের সময় পুরাপুরি ভিন্ন ছিল। শুধু তাই নয় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে নবী রাসুলরা যেই জাতিগুলির কাছে এসেছিল সেই জাতিগুলির মাঝে কোন পারস্পরিক কোন যোগাযোগও ছিল না। আর যোগাযোগ থাকবেই বা কীভাবে এক এক নবী রাসুল রা এসেছিলেন এক এক সময়ে। যেমন হযরত নূহ আলাইহিস সাল্লাম হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের অনেক পূর্বে এসেছিলেন। আবার হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লাম হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লামের অনেক অনেক পূর্বে এসেছিলেন। কিন্তু সকল নবী রাসূলদেরর মূল কথাই ছিল তাওহীদ রিসালত ও আখিরাত। নবী রাসূল রা কি শুধু মাত্র লা ইলাহা ইল্লাল্লাহের দাওয়াত দিছেন ? না সকল নবী রাসূলরাই একটা ইসলামী জীবন ব্যবস্থার দাওয়াত দিছেন। একমাত্র আদম আলিহিস সাল্লাম ও হযরত সুলায়মান আলাইহিস সাল্লাম ছাড়া আর সকল নবী রাসূলরা ঐ সময়কার জালেম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। যেমন হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ইহুদীদের সুদ প্রথার বিরুদ্ধে, হযরত মুসা আলাইহিস সাল্লাম ফেরাঊনের বিরুদ্ধে, হযরত দাঊদ আলাইহিস সাল্লাম তালুতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। এই সকল নবী রাসূলরা কিন্তু নব্যুয়ত পাওয়ার আগেও তাদের সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। নবী হওয়ার আগেও উনাদের মাঝে কোন লোভ লালসা ছিল না এবং নবী হওয়ার পরেও উনারা কাফেরদের অত্যাচারের কারনে দ্বীন ইসলামের প্রচার থেকে এক চুলও সরে যান নি। এমনকি অনেক নবী রাসূলকে কাফেররা হত্যাও করে ফেলেছিল। তাইলে সকল নবী রাসুলদের পক্ষে কি মিথ্যা কথা বলা সম্ভব ? আর নবীরা যখন যেই এলাকায় এসেছেন সেই এলাকায় ঐ নবী ছাড়া আর কেউই একত্ববাদের সাক্ষী দেয় নাই। তাইলে এই সকল নবী রাসুলরা একই ইসলামী জীবন ব্যবস্থার কথা তাঁরা কার কাছ থেকেই বা শিখল ? এ থেকে বুঝা যায় এক ঐশী বাণী বা ওহী উনাদের কাছে এসেছিল আল্লাহ সুবহানাতায়ালার তরফ থেকে যার জন্য সময়, ভাষা, জীবনযাত্রা আলাদা হলেও সকল নবী রাসুলদের মূল কথাই ছিল আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ছাড়া আর কোন ইলাহ নাই, আখিরাত সত্য। আর প্রায় প্রত্যেক ধর্ম গ্রন্থের কিতাব তা যত বিকৃতই হোক না কেন যেমন খ্রিষ্টানদের বাইবেল, ইহুদীদের তালমুদ, হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ বেদ সকল ধর্মগ্রন্থেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন সম্পর্কিত ভবিষ্যৎবাণী গুলি উল্লেখ করা আছে।

images (1)

আর বার্ণাবাসের বাইবেল টা একটু উল্টাইলেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন সম্পর্কিত ভবিষ্যৎবাণী গুলি খুব সহজেই চোখে পড়ে। ডাক্তার জাকির নায়েকের Similarities Between isLam and Hinduism এই Lecture টা শুনলে স্পষ্টই বুঝা যায় যে হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ বেদে সহস্র হাজার বার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে এই পৃথিবীতে আসবেন তা আগে থেকেই বলা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে তাওহীদ রিসালত ও আখিরাতের দাওয়াত দিয়েছেন ঠিক তেমনি হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত মুসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সাল্লাম এরকম সকল নবী রাসূল রা একই কথা বলেছেন।

قُلْ آمَنَّا بِاللّهِ وَمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَالنَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ

বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত। [ সূরা আল ইমরানঃ ৮৪ ]

তোমরা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন। [ সূরা হজ্জ, আয়াতঃ ৭৮ ]

আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যুদান করুন। [ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ১০১]

এই তাওহীদ রিসালত আখিরাতের কথা এই পৃথিবীতে মানব জাতির আগমনের পর থেকে শুরু করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল নবী রাসুলরাই বলে গিয়েছেন। জ্বলজ্যান্ত ইতিহাস এর সাক্ষী। তাইলে এখন কোন যুক্তিতে আপনি সকল নবী রাসূলদের কথা অস্বীকার করবেন? এখন আপনি যদি বলেন যে আখিরাত বলতে কিছু নাই তাইলে আপনি এই পৃথিবীতে আসা সকল নবী রাসুলের কথা টা কে অস্বীকার করলেন। আপনি একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন তো ১ লাখ ২৪ হাজার বা ২ লাখ ২৪ হাজার নবী রাসূলরা এই পৃথিবীতে এসেছিলেন যারা সবাই এই মানব জাতিকে তাওহীদ রিসালত ও আখিরাতের দাওয়াত দিয়েছেন তাইলে এতগুলি নবী রাসুলের কথা কি মিথ্যা হতে পারে ? আর ইসলামই কিন্তু এই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম কারন এই পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম থেকেই দ্বীন ইসলামের সূচনা। আর আল কোরআনেই কিন্তু বলা হয়েছে যে হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত মুসা আলাইহিস সাল্লাম উনারা সবই মুসলমান ছিলেন এবং উনারা সবাই দ্বীন ইসলামের কথাই বলেছেন। আর একমাত্র দ্বীন ইসলাম ছাড়া আর সকল ধর্মেই কিন্তু আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সাথে শিরক বা অংশীবাদ করা হয়েছে। যেমন খ্রিষ্টানরা হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহ্‌র পুত্র বানিয়ে নিয়েছে নাউযুবিল্লাহ আর ইহুদীরা হযরত উযাইর আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহ্‌র পুত্র বানিয়ে নিয়েছে নাউযুবিল্লাহ। আর হিন্দুধর্মের কথা তো বাদই দিলাম। তাই আজকে যারা মূর্খ আরজ আলী মাতুব্বরের কথায় আখিরাত কে অস্বীকার করছেন তারা কি বুদ্ধিমান নাকি যারা ১ লাখ ২৪ হাজার বা ২ লাখ ২৪ হাজার নবী রাসূলদের কথা দ্বারা আখিরাতের উপর বিশ্বাস আনছেন তারা বুদ্ধিমান ? অবশ্যই মুসলমানরাই হচ্ছে সবচেয়ে বুদ্ধিমান জাতি যারা হাজার হাজার নবী রাসুলদের কথা মত আখিরাতের উপর ঈমান এনেছে। এখন নাস্তিকরা হয়ত আপনাকে সৃষ্টিকর্তা কে কে সৃষ্টি করেছে, এই মহাবিশ্বের উত্‍পত্তি ও ক্রমবিকাশে কি সত্যিই কোন সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন আছে কিনা এইসব প্রশ্ন করে বিব্রত করতে চাইবে। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি টাইপ নাস্তিকদের সব প্রশ্নের উত্তর আমি আমার এই NOTE টা এ দিয়েছি।

ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব

আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান

আল কোরআনের ব্যাকরণগত সৌন্দর্য্যের কিছু অসাধারন দিক

বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা

ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল

আমাদের মুসলমানদের কেন একটি কেন্দ্রীয় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজন ?

হাতের কাছে রাখার মত কয়েকটি চমৎকার ইসলামী বই

পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথা কে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে

হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ২য় পর্ব

মেসওয়াক করার ফযীলত

আমার উম্মতের মাঝে ৭৩ টি দল হবে এদের মাঝে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে" এই হাদীস টির মূল ব্যাখ্যা টি কি ?

সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল

সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা

মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তার আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি আমাদের জন্য ঠিক হচ্ছে

সন্ত্রাসবাদী হিন্দুদের ধর্ম বিশ্বাস রাম লক্ষন রাবন কিংবা রাম মন্দির যে ঠাকুরমার ঝুলি ছাড়া আর কিছুই না

বিষয়: বিবিধ

১৪০২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

227351
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
শাফিউর রহমান ফারাবী লিখেছেন : বিজ্ঞান মনস্ক নাস্তিকরা চাইলেই পারে Google, Microsoft এর মত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে কিন্তু তা না করে তারা সারাদিন খালি অনলাইনে ইসলামের বিরুদ্ধে সময় দেয়।
227383
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০১:২০
ইয়াফি লিখেছেন : নাস্তিকরা ন্যায্যতা, সমতায় বিশ্বাসী নয়! নইলে মানবজাতি পরস্পরের বিরুদ্ধে অগোচরে যে অপরাধ সংঘটিত করে তার প্রতিকার কিভাবে করবে?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File