আরজ আলী মাতুব্বরের আখিরাত বিষয়ক যুক্তি খন্ডন
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১৯ মে, ২০১৪, ১১:৫১:৫৮ সকাল
আরজ আলী মাতুব্বর উনার সত্যের সন্ধানে নামক একটি বইয়ে মুসলমানদের পরকাল বা আখিরাত বিষয়ক কিছু প্রশ্ন করেছেন। উনি বলতে চেয়েছেন যে মানুষ মৃত্যুর পর মাটিতে মিশে যাবে, তার শরীরের কোন অস্তিত্বই থাকবে না, তাহলে কিভাবে আবার এই মানুষ কে জীবিত করে তাকে গোর আযাব/কবরের আযাব দেওয়া হবে ? আবার কিভাবেই বা তাকে বেহেশত বা দোযখে পাঠানো হবে ?
আসলে এই প্রশ্নগুলি শুধু বানর প্রজাতি থেকে উদ্ভুত নাস্তিকদেরই নয় হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম থেকেই কাফেররা বিভিন্ন নবীদের কে এই প্রশ্নগুলি করত। যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়েও এক কাফের একটি কবর থেকে কয়েকটি হাড় গোড় উঠিয়ে নিয়ে এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে প্রশ্ন করেছিল, হে মুহাম্মাদ! আমি যখন মৃত্যুর পরে এরকম হাড়গোড় হয়ে যাবো তখন আমি আবার কিভাবে জীবিত হব ? তখন আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ওহী নাযিল করে আল-কোরআনে বললেন- “ আমি কি একবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে তোমাকে ২য়বার সৃষ্টি করতে পারবো না, বরং আমি তোমার আংগুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত মিলাতে সম্ভব।” [ সূরা কিয়ামাহ ৩-৪ ] এই কথায় তো আমরা সবাই একমত আমাদের এই পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত নতুন প্রাণের উদ্ভব হচ্ছে। তাই বলা যায় আমাদের এই প্রকৃতিটা হচ্ছে একটা উত্পাদনশীল প্রকৃতি। মৃত্যুর পরে মানুষ জীবিত হবে কি হবে না এটা বুঝার জন্য আগে আমরা কয়েকটি জিনিস এইখানে আলোচনা করবো। আচ্ছা একটা বটগাছ আর তার একটা বীজের কথা চিন্তা করি। একটা শুকনা বীজ থেকে এতবড় একটা বটগাছ তৈরী হল। বীজ ও বটগাছের মধ্যে তো যোজন যোজন পার্থক্য রয়েছে তাদের আকার আকৃতি ও তাদের শারিরীক বৈশিষ্ট্যে। আপাতবিশ্বাসে এটা অবিশাস্য মনে হলেও এটা তো সত্য যে একটা ছোট বীজ থেকেই তার থেকে অনেক অনেক বড় ও ভিন্ন বৈশিষ্টের একটা প্রাণের উৎপত্তি অর্থ্যাৎ বটগাছের জন্ম হয়েছে। এই ব্যাপারটা কে কিন্তু আমরা মানব জাতি খুব সহজভাবে মেনে নিয়েছি। মানুষের প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে কি কখনো আমরা চিন্তা করেছি ? মানুষ তৈরী হয় জাইগোট থেকে। জাইগোট হলো পুরুষের শুক্রানো ও নারীর ডিম্বানোর সমষ্টি। এই জাইগোট থেকে অনেক রুপান্তরের মাধ্যমে মায়ের পেটে মানুষ সৃষ্টি হয়। এটাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ভ্রুণ তত্ত্ব। যাই হোক এই জাইগোট কিন্তু সামান্য কিছু পানি ছাড়া আর কিছুই না। আর মানুষের শরীর কিন্তু শুধু পানি নয়, মানুষের শরীরে হাড়গোড় অনেক কিছুই আছে। মানুষ আর জাইগোটের মাঝখানে বস্তুগত হাজার হাজার পার্থ্যক্য রয়েছে সেটা তো আর আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যদি দুনিয়ার জীবনে একটা শুকনা বীজ থেকে এতবড় একটা বট গাছ তৈরী করতে পারেন, সামান্য জাইগোট রূপ পানি থেকে এতবড় একটা মানুষ বানাতে পারেন তাইলে আখিরাতেও কোন বিশেষ প্রক্রিয়ায় আবার নতুন করে মানুষ তৈরী করা আল্লাহ সুবহানাতায়ার জন্য কোন অসম্ভব ব্যাপার না। আপনি যদি যুক্তি বিদ্যায় আসেন তাইলে এটা মানতেই হবে যে মায়ের পেটে যখন আমরা ছিলাম তখন কি আমরা কখনো ভাবতে পেরেছিলাম যে মায়ের পেট থেকে বের হয়ে আবার পৃথিবী নামক একটা ভিন্ন জগৎ এ যাবো যেটা মায়ের পেটের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাইলে এই পৃথিবীর জগৎ থেকেও আরো বৈচিত্র পূর্ণ জগৎ থাকবে যেটা হয়ত আমাদের দুনিয়ার জীবনে কল্পনাতেও আসছে না। যেমন মায়ের পেটে থাকতে এই পৃথিবীর জগত এর কথা আমাদের চিন্তাতেও আসে নি। অর্থ্যাৎ এই দুনিয়ার জীবনে যদি বীজ জাইগোটের মত একটা ভিন্ন বস্তু থেকে সম্পূর্ন আরেকটা ভিন্ন বস্তু তৈরী হতে পারে তাইলে আখিরাতেও আমাদের সামান্য হাড়গোড়ের কোন খন্ডাংশের মাধ্যমে আমাদের কে আবার নতুন করে সৃষ্টি করা আল্লাহ সুবহানাতায়ালার জন্য কোন ব্যাপারই নয়।
আরজ আলী মাতুব্বর প্রশ্ন করেছেন যে কবরের আযাব তো শুনাও যায় না আবার দেখাও যায় না। তাইলে এটা কিভাবে সম্ভব হবে ?
আচ্ছা এই পৃথিবীর সকল শব্দ কি আমরা শুনতে পাই ? না পাই না। মানুষের শ্রাব্যতার সীমা হল ২০-২০০০০ Hz. ২০ Hz এর কম বা ২০০০০ Hz এর বেশি কোন শব্দ মানুষ শুনতে পায় না। মানুষ ২০ Hz এর কম বা ২০০০০ Hz এর বেশি কোন শব্দ শুনতে না পেলেও কিন্তু অনেক পশু পাখি আছে যারা ২০ Hz এর কম বা ২০০০০ Hz এর বেশি কোন শব্দ অনায়াসেই শুনতে পায়। হাদীসে কিন্তু বলা আছে যে কবরের আযাব একমাত্র মানুষ ও জ্বীন ছাড়া আর সকল প্রাণিই শুনতে পায়। তাই কবরের আযাবের শব্দ হয়ত এত সূক্ষাতিসুক্ষ বিষয় যেটা মানুষের শ্রবণ শক্তির সীমার বাইরে। তাই মানব জাতি কখনই কবরের আযাবের শব্দ অনুধাবন করতে পারবে না।
আচ্ছা কবরের ভিতর যে আযাব হয় তা আমরা কেন দেখতে পারি না ? মানুষের দৃষ্টি শক্তির সীমা হলো ৪০০০-৮০০০ আংস্ট্রম। এর কম বা বেশী কোন তরঙ্গ দৈর্ঘ্য আমরা খালি চোখে দেখতে পারি না। যেমন অবলোহিত বিকিরন, বেতার তরঙ্গ, অতি বেগুনি রশ্মি, এক্সরে রশ্মি এইগুলি খালি চোখে দেখা যায় না। দৃশ্যমান আলো ছাড়া আর সকল তড়িৎ চৌম্বক বর্ণালী ফটোগ্রাফিক প্লেট, ফটোট্রানজিস্টর এইগুলি দ্বারা উদঘাটন করা হয়। পরমানু ভেঙ্গে ইলেকট্রন প্রোটন নিউট্রন পাওয়া যায়। এরপর পাওয়া যায় মেসন লেপ্টন নিওন। এরপর পরমানুর সর্বশেষ উপাদান কোয়ার্ক কে পাওয়া গেছে Deep inelastic Scattering এর মাধ্যমে।
পরমানুর এই সর্বশেষ উপাদান গুলি কিন্তু চোখে দেখার মত কিছু নয়। ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোস্কুপের মাধ্যমে খুবই সূক্ষাতিসূক্ষ পর্যবেক্ষন ও গানিতিক পদার্থ বিজ্ঞানের সাহায্যে এই ব্যাপার গুলি অনুধাবন করা হয়। আজ থেকে ১৫০ বছর আগেও মেসন লেপ্টন নিয়ন কোয়ার্ক অবলোহিত বিকিরন এক্সরে রশ্মি এই ব্যাপার গুলি সম্পর্কে মানুষের কোন ধারন ছিল না। কিন্তু এই পদার্থ গুলি ছিল কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারতাম না। আজ থেকে ১৫০ বছর আগে যদি কোন বিজ্ঞানী ইলেকট্রন প্রোটন নিঊট্রন কোয়ার্ক অবলোহিত বিকিরন এক্সরে রশ্মি এই কথাগুলি বলত তাইলে পৃথিবীর মানুষ তাকে পাগল বলত কিন্তু এই পৃথিবীতে এই তরঙ্গ রশ্মি গুলি এই ইলেকট্রন প্রোটন নিঊট্রন কোয়ার্ক তখনও ছিল। কিন্তু তখনকার মানুষ তা অনুধাবন করতে পারি নি। কবরের আযাব জ্বীন ফেরেশতা রুহ এই গুলি হয়ত এতই সূক্ষাতিসূক্ষ তড়িৎ চৌম্বক বর্ণালীর মাধ্যমে ঘটে যা উদ্ঘাটন করা মানব জাতির পক্ষে কোনদিনও সম্ভব হবে না। তাই বুঝা যাচ্ছে কবরের আযাব এতই সূক্ষাতিসুক্ষ বিষয় যেটা মানুষের দৃষ্টি শক্তির ও শ্রবণ শক্তির সীমার বাইরে। কিন্তু মানুষের জ্ঞানের সীমার বাইরে হলেই কি আপনি তা অস্বীকার করতে পারবেন ? কখনই নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাহাবীদের কে বলেছিলেন - “আখিরাতে অনেকেই মাথার উপর ভর দিয়ে উলটো করে চলবে। ” তখন সাহাবীরা জিজ্ঞাস করলো- “ ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটা কিভাবে সম্ভব যে কিছু মানুষ আখিরাতে মাথার উপর ভর দিয়ে চলবে ? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের কে বললেন- “আদম সন্তানের বৈশিষ্টই হল যেটা সে কখনো দেখি নি সেটা সে বিশ্বাস করবে না। মানুষ যদি দুনিয়ার জীবনে বুকের উপর ভর দিয়ে কোন প্রানীকে চলাফেরা না করতে দেখত অর্থ্যাৎ সরীসৃপ জাতীয় তাইলে সে এই প্রশ্ন করতো যে বুকের উপর ভর দিয়ে কি কোন প্রানী চলতে পারে ? (মেশকাত শরীফ, আখিরাত অধ্যায়) আর মূর্খ আরজ আলী মাতুব্বরও হচ্ছেন এই শ্রেণীর লোক।
আরজ আলী মাতুব্বর উনার “সত্যের সন্ধান” নামক বইতে মুসলমানদের আখিরাত বা পরকালীন বিশ্বাস এবং হাশর মিযান পুলসিরাত এই ঘটনাগুলিকে একটা আজগুবি বিশ্বাস বলে অভিহিত করেছেন। আর আরজ আলী মাতুব্বরের এই কথার সূত্র ধরেই বাংলার আবাল নাস্তিকরা বলা শুরু করেছে যে আখিরাত বলতে নাকি কিছু নেই। আচ্ছা আমরা এখন একটু চিন্তা করে দেখি তো মুসলমানদের আখিরাত বিশ্বাস কি আসলেই একটা আজগুবি বিশ্বাস ? হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম থেকে শুরু করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত এই পৃথিবীতে অনেক নবী রাসুল এসেছিলেন এটা সত্য। হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম উনারা যে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, এই পৃথিবীর মানুষের মাঝে দ্বীন ইসলাম প্রচার করেছেন এর হাজার হাজার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এমনকি সকল নবী রাসূলের কবরও চিহ্নিত করা আছে।
অর্থ্যাৎ Archaeology বা প্রত্নতাত্ত্বিক মতে এবং Anthropology বা নৃতত্ত্বমতে এই পৃথিবীতে হাজার হাজার নবী রাসূল রা এসেছিলেন এই ব্যাপারে সকল ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিকরাও একমত। আচ্ছা সকল নবী রাসূল রা কি একই সময় এসেছিল ? না হাতে গোনা কয়েকজন নবী রাসুল ছাড়া আর সকল নবী রাসুলদের আসার সময় ভিন্ন ভিন্ন ছিল। এক এক নবী এক এক জাতির কাছে এসেছিলেন। নবী রাসূলরা যেই জাতিগুলি কাছে এসেছিলেন সেই জাতিগুলির ভাষা, জীবন যাত্রা ও পৃথিবীতে অবস্থানের সময় পুরাপুরি ভিন্ন ছিল। শুধু তাই নয় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে নবী রাসুলরা যেই জাতিগুলির কাছে এসেছিল সেই জাতিগুলির মাঝে কোন পারস্পরিক কোন যোগাযোগও ছিল না। আর যোগাযোগ থাকবেই বা কীভাবে এক এক নবী রাসুল রা এসেছিলেন এক এক সময়ে। যেমন হযরত নূহ আলাইহিস সাল্লাম হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের অনেক পূর্বে এসেছিলেন। আবার হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লাম হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লামের অনেক অনেক পূর্বে এসেছিলেন।
কিন্তু সকল নবী রাসূলদেরর মূল কথাই ছিল তাওহীদ রিসালত ও আখিরাত। নবী রাসূল রা কি শুধু মাত্র লা ইলাহা ইল্লাল্লাহের দাওয়াত দিছেন ? না সকল নবী রাসূলরাই একটা ইসলামী জীবন ব্যবস্থার দাওয়াত দিছেন। একমাত্র আদম আলিহিস সাল্লাম ও হযরত সুলায়মান আলাইহিস সাল্লাম ছাড়া আর সকল নবী রাসূলরা ঐ সময়কার জালেম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। যেমন হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ইহুদীদের সুদ প্রথার বিরুদ্ধে, হযরত মুসা আলাইহিস সাল্লাম ফেরাঊনের বিরুদ্ধে, হযরত দাঊদ আলাইহিস সাল্লাম তালুতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। এই সকল নবী রাসূলরা কিন্তু নব্যুয়ত পাওয়ার আগেও তাদের সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। নবী হওয়ার আগেও উনাদের মাঝে কোন লোভ লালসা ছিল না এবং নবী হওয়ার পরেও উনারা কাফেরদের অত্যাচারের কারনে দ্বীন ইসলামের প্রচার থেকে এক চুলও সরে যান নি। এমনকি অনেক নবী রাসূলকে কাফেররা হত্যাও করে ফেলেছিল। তাইলে সকল নবী রাসুলদের পক্ষে কি মিথ্যা কথা বলা সম্ভব ? আর সকল নবী রাসুলরা একই ইসলামী জীবন ব্যবস্থার কথা তাঁরা কার কাছ থেকেই বা শিখল ? এ থেকে বুঝা যায় এক ঐশী বাণী বা ওহী উনাদের কাছে এসেছিল আল্লাহ সুবহানাতায়ালার তরফ থেকে যার জন্য সময়, ভাষা, জীবনযাত্রা আলাদা হলেও সকল নবী রাসুলদের মূল কথাই ছিল আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ছাড়া আর কোন ইলাহ নাই, আখিরাত সত্য। আর প্রায় প্রত্যেক ধর্ম গ্রন্থের কিতাব তা যত বিকৃতই হোক না কেন যেমন খ্রিষ্টানদের বাইবেল, ইহুদীদের তালমুদ, হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ বেদ সকল ধর্মগ্রন্থেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন সম্পর্কিত ভবিষ্যৎবাণী গুলি উল্লেখ করা আছে। আর বার্ণাবাসের বাইবেল টা একটু উল্টাইলেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন সম্পর্কিত ভবিষ্যৎবাণী গুলি খুব সহজেই চোখে পড়ে। ডাক্তার জাকির নায়েকের Similarities Between isLam and Hinduism এই Lecture টা শুনলে স্পষ্টই বুঝা যায় যে হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ বেদে সহস্র হাজার বার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে এই পৃথিবীতে আসবেন তা আগে থেকেই বলা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে তাওহীদ রিসালত ও আখিরাতের দাওয়াত দিয়েছেন ঠিক তেমনি হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত মুসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সাল্লাম এরকম সকল নবী রাসূল রা একই কথা বলেছেন। এই তাওহীদ রিসালত আখিরাতের কথা এই পৃথিবীতে মানব জাতির আগমনের পর থেকে শুরু করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল নবী রাসুলরাই বলে গিয়েছেন। জ্বলজ্যান্ত ইতিহাস এর সাক্ষী। তাইলে এখন কোন যুক্তিতে আপনি সকল নবী রাসূলদের কথা অস্বীকার করবেন? এখন আপনি যদি বলেন যে আখিরাত বলতে কিছু নাই তাইলে আপনি এই পৃথিবীতে আসা সকল নবী রাসুলের কথা টা কে অস্বীকার করলেন। আপনি একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন তো ১ লাখ ২৪ হাজার বা ২ লাখ ২৪ হাজার নবী রাসূলরা এই পৃথিবীতে এসেছিলেন যারা সবাই এই মানব জাতিকে তাওহীদ রিসালত ও আখিরাতের দাওয়াত দিয়েছেন তাইলে এতগুলি নবী রাসুলের কথা কি মিথ্যা হতে পারে ? আর ইসলামই কিন্তু এই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম কারন এই পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম থেকেই দ্বীন ইসলামের সূচনা। আর আল কোরআনেই কিন্তু বলা হয়েছে যে হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম, হযরত মুসা আলাইহিস সাল্লাম উনারা সবই মুসলমান ছিলেন এবং উনারা সবাই দ্বীন ইসলামের কথাই বলেছেন। আর একমাত্র দ্বীন ইসলাম ছাড়া আর সকল ধর্মেই কিন্তু আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সাথে শিরক বা অংশীবাদ করা হয়েছে। যেমন খ্রিষ্টানরা হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহ্র পুত্র বানিয়ে নিয়েছে নাউযুবিল্লাহ আর ইহুদীরা হযরত উযাইর আলাইহিস সাল্লাম কে আল্লাহ্র পুত্র বানিয়ে নিয়েছে নাউযুবিল্লাহ। আর হিন্দুধর্মের কথা তো বাদই দিলাম। তাই আজকে যারা মূর্খ আরজ আলী মাতুব্বরের কথায় আখিরাত কে অস্বীকার করছেন তারা কি বুদ্ধিমান নাকি যারা ১ লাখ ২৪ হাজার বা ২ লাখ ২৪ হাজার নবী রাসূলদের কথা দ্বারা আখিরাতের উপর বিশ্বাস আনছেন তারা বুদ্ধিমান ? অবশ্যই মুসলমানরাই হচ্ছে সবচেয়ে বুদ্ধিমান জাতি যারা হাজার হাজার নবী রাসুলদের কথা মত আখিরাতের উপর ঈমান এনেছে।
আরজ আলী মাতুব্বরের যুক্তি খন্ডন, ৪র্থ পর্ব
আরজ আলী মাতুব্বরের যুক্তি খন্ডন, ৬ষ্ঠ পর্ব
বিষয়: বিবিধ
৩২৯০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আজ কোথাকার আরজ আলী,কেউ চিনেনা, জানেনা, সে একটি মন্তব্য করলো ব্যস হয়ে গেলো নায়ক, তার পোট্রেট আর্ট করে চারুকারুর ছাত্ররা, তাকে নিয়ে বই লেখে বড় বড় লেখকরা,
আরজ আলী মাতুব্বরের শিষ্যের কাছে প্রশ্ন- ধরুণ কোন ব্যক্তি কর্তৃক এমন কোন ক্ষুদ্র অপরাধ বা ক্ষতি বা নূন্যতম অসাদচরণের শিকার হলেন আপনি। যার জন্য আপনার কোন দৃশ্যমান ক্ষতি না হলেও প্রচন্ড মর্ম বেদনায় ভুগছেন। কারণ এখানে আপনার পক্ষ থেকে কোন প্রকার প্ররোচনা ছিলনা। এখন মশা মারতে কামান দাগানের মত হলেও ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতিকার নিতে গিয়ে দেখা গেল সমাজের প্রচলিত দন্ডবিধির কোন ধারায় ঐটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হচ্ছেনা! কিংবা সালিশ-বিচারেও আমলে নেয়ার মত প্রয়োজনীয় সাক্ষী-সাবুদ দেখানো যাচ্ছেনা। অন্যদিকে আবার ব্যক্তিটি এত সবল কিংবা বজ্জাত যে প্রতিকার চাইতে গেলে বড় ক্ষতির আশংকা আছে। তাইলে টু-শব্দ না করে মর্মযাতনায় ভূগবেন আর নিজেকে ধিক্কার দিবেন! যেন অপরাধ নিজেই করেছেন, নিজেকে ভুগতে হবে! আর অপরাধী ব্যক্তিটি পার পাবেন কারণ সমাজের দন্ডবিধিতে তার ঐ দুষ্কর্ম অপরাধ না! এখানেই শেষ! Law of Nature কি বলে? আল্লাহ বলছেন না! (আমরা মানুষেরা) প্রতিদান দিবসের কথা স্মরণ কর। যেদিন প্রত্যেকে তার অতীত কৃত কর্মের যতই ক্ষুদ্র হোক, তার প্রতিদান পাবে। সেদিন কারো প্রতি কোন অন্যায় করা হবেনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন