The Face of Buddhist Terror
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২০ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:১০:২২ রাত
মার্চ মাসের ১ তারিখে প্রথম আলো পত্রিকার আন্তর্জাতিক পাতায় একটা খবর পড়ে থমকে গেলাম। আর তা হল বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানরা তাদের রাখাইন অঙ্গরাজ্যের কোন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পায় না। সরকারি বেসরকারি কোন হাসপাতালেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রবেশাধিকার নেই। শুধু তাই নয় ফ্রান্স ভিত্তিক একটি ত্রান সংস্থা মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ারস (এমএসএফ) রোহিঙ্গা মুসলমানদের কে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে বলে বার্মার প্রেসিডেন্ট দপ্তর এই এমএসএফ ত্রান সংস্থা কে রাখাইন অঙ্গরাজে নিষিদ্ধ করেছে।
রোহিঙ্গাদের কে নিয়ে প্রথম আলো পত্রিকার খবরটা এই লিংকে
আপনারা একটু চিন্তা করে দেখুন এই ২০১৪ সালে একটি জাতি শুধুমাত্র মুসলমান হবার কারনে এই বৌদ্ধরা তাদের কে কোন চিকিৎসা সেবা নিতে দিচ্ছে না ! এই পৃথিবীর মানবতা এখন কোথায় ? যারা ফেইসবুকে খালি মানব ধর্ম মানব ধর্ম বলে চিল্লায়ে গলা ফাটিয়ে ফেলে তারা এখন কোথায় ? বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানরা কি খালি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ? না রোহিঙ্গা মুসলমানদের ছেলে মেয়েরা রাখাইন অঙ্গরাজ্যের কোন স্কুলে ভর্তিও হতে পারে না। বার্মার সেনাবাহিনী প্রায়ই এই রোহিঙ্গা মুসলিম মেয়েদের কে বাড়িঘর থেকে ধরে নিয়ে যায়। ইচ্ছা হলে গনধর্ষন করার পর এই রোহিঙ্গা মেয়েদের কে তারা বাড়ি ফিরিয়ে দেয় আর তা না হলে তাদের কে তারা হত্যা করে ফেলে। যেই সকল রোহিঙ্গা মুসলিম মেয়ে সেনা ক্যাম্পে থেকে ফেরত আসে তারা সারাজীবন একটা কলঙ্ক নিয়ে বেঁচে থাকে। নূন্যতম নূন্যতম মৌলিক মানবাধিকার বলতেও এই বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানরা বৌদ্ধদের কাছ থেকে পায় না। আল জাজিরা চ্যানেলের The Hidden Genocide এই ডকুমেন্টরিটা যারা দেখেছেন তারা জানেন যে এই বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর কি অত্যাচারটাই না করছে এই বার্মার বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয় জাতিসংঘ থেকেও বলা হয়েছে যে বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানরা হচ্ছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত জাতি। বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর এই অত্যাচার নির্যাতনের নেতৃত্ব দিচ্ছে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। এটা আমার কথা না বিশ্ববিখ্যাত Time Magazine গত বছর জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে তাদের পত্রিকার প্রচ্ছদ কভার টা করে এই শিরোনামে The Face of Buddhist Terror
এই Time Magazine এ বলা হচ্ছে যে বার্মার মুসলমানদের উপর এই অত্যাচার নির্যাতনের নেতৃত্বটা দিচ্ছে U Wirathu এর মত বড় বড় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। বার্মার বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মুসলিম নিধনের এই কর্মসূচিটা ৯৬৯ সংখ্যা দ্বারা পরিচিত যেই ৯৬৯ সংখ্যাটা গৌতম বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন দিক নির্দেশ করে।
Time Magazine এ গৌতম বুদ্ধের অনুসারীদের এই খবর প্রকাশ হবার পর দেশীয় বৌদ্ধদের ও গা জ্বলে উঠে। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে যে বৌদ্ধরা খুবই শান্তিপ্রিয় জাতি। টাইম ম্যাগাজিনের হলুদ সাংবাদিকতা, একজন বৌদ্ধভিক্ষু ও প্রকৃত সন্ত্রাস এই নিবন্ধে দেশীয় বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দাবীকেও অস্বীকার করে এবং বার্মার বৌদ্ধ ভিক্ষুরা যে মুসলিম নিধন করছে তা না কি খুবই উত্তম কাজ সেটাও তারা স্বীকার করেছে। এই নিবন্ধটা পড়লে আপনরা বুঝতে পারবেন বাংলাদেশের বৌদ্ধরাও বার্মায় মুসলিম নির্যাতনকে সমর্থন করে যাচ্ছে এবং শধু বাংলাদেশের মুসলিমই নয়, সারা বিশ্বের সব মুসলিমকেও বাংলাদেশের বৌদ্ধরা খারাপ নজরে দেখে ।
আচ্ছা ফেইসবুকে যেইসব নাস্তিক সারাদিন খালি মানব ধর্ম মানব ধর্ম বলে চিল্লায়ে গলা ফাটিয়ে ফেলে তাদের কে কি আপনারা কখনই দেখেছেন এই বার্মার বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সমালোচনা করে কোন status দিতে বা বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের এই দুঃখ দূর্দশা নিয়ে কোন ব্লগ লিখতে ? বরং আপনি যদি অনলাইনের নাস্তিকদের টাইম লাইনে যান তাইলে দেখতে পাবেন যে তাদের কভার পিকচারে গৌতম বুদ্ধের ছবি। আচ্ছা এই গৌতম বুদ্ধ লোকটা কেমন ছিল ? এই গৌতম বুদ্ধ লোকটা সারাজীবন তার স্ত্রী যশোধরা ও তার পুত্র রাহুলের কোন খোজ খবর নেয় নাই। তথাকথিত সিদ্ধিলাভ করার পরেও এই গৌতম বুদ্ধ কোনদিন ও তার নিজ স্ত্রী ও পুত্রের কোন খোজ খবর নেয় নি। আচ্ছা আপনারাই বলুন যেই ব্যক্তি তার স্ত্রী ও পুত্রদের কোন খোজ খবর নেয় নাই সারা জীবনে সে কি কখনো মানব জাতির আদর্শ হতে পারে ? গৌতম বুদ্ধের সময়ে এই ভারত বর্ষে দাসপ্রথা চলছিল। কিন্তু দাসদাসী মুক্ত করা নিয়ে গৌতম বুদ্ধের একটা বাণীও নাই। আর যেই গৌতম বুদ্ধের অনুসারীরা প্রকাশ্যে দিবালোকে বিশ্ব মানবতার মতামত কে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র মুসলমান হবার কারনে রোহিঙ্গাদের কে হত্যা করছে সেই গৌতম বুদ্ধ কিভাবে নাস্তিকদের আদর্শ হতে পারে ? তাইলে আমরা কি বুঝতে পারলাম ? এই নাস্তিকরা যদি কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পায় তাইলে এই নাস্তিকরা সারা পৃথিবীর মুসলমানদের কে কচুকাটা করবে। নাস্তিকরা যদি সত্যিই মানব ধর্মের অনুসারী হত তাইলে তারা ঠিকই এই বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে লেখালেখি করত ও কখনই গৌতম বুদ্ধের ছবি নিজেদের ফেইসবুকের কভার পিকচারে রাখত না। আমি আজ ৫ বছর ধরে এই নাস্তিকদের সাথে Debate করছি। আমি কখনই কোন নাস্তিককে দেখলাম না যে তারা কখনই এই বার্মার বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সমালোচনা করে কোন ব্লগ লিখতে। আসলে শুধু বার্মা নয় এই আমেরিকা যে ইরাক আফগানিস্তানে লাখ লাখ মুসলমান হত্যা করল এ নিয়েই বাংলাদেশের অনলাইনের নাস্তিকদের কোন লেখা নাই। এই বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে কোন কিছু না লেখালেখি করার কারনে বাংলাদেশের অনলাইনের নাস্তিকগুলি যে একটা ভণ্ড এটা প্রমান হয়ে গেল। যতই নাস্তিকরা বলুক না কেন তাদের ধর্ম হচ্ছে মানব ধর্ম আসলে বাংলাদেশের অনলাইনের নাস্তিকগুলির ধর্ম হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্ম। এই জন্যই গৌতম বুদ্ধ যে সারাজীবন তার নিজ স্ত্রী যশোধরা ও পুত্র রাহুলের কোন খোজ খবর নিল না এটা নাস্তিকদের চোখে কোন দোষই বলেই গন্য হয় না। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র বৈবাহিক জীবন নিয়ে নাস্তিকদের সমালোচনার যেন শেষ নাই।
যারা বৌদ্ধ ধর্মকে পরম শান্তির ধর্ম মনে করেন তারা ভুল ধারনা পোষন করছেন । এই বৌদ্ধ ধর্ম কখনোই কোন শান্তিপূর্ণ ধর্ম ছিল না । বৌদ্ধরা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে তখন দেখেই যখন মুসলমানরা বৌদ্ধপ্রধান দেশে বসবাস করা শুরু করেছে ।
Buddhist warfare এই বইটা বিস্তারিত তথ্য আছে কিভাবে সারা বিশ্বে বৌদ্ধরা মুসলিমদের নির্যাতন করছে । ডাইলোড করে সবাই পড়তে পারেন । লিংক :
http://www.goodreads.com/book/show/6745496-buddhist-warfare
আর Violent Buddhism এই বইয়েও মুসলমানদের উপর বৌদ্ধরা কীভাবে নির্যাতন করছে তার তথ্য রয়েছে :
আর Violent Buddhism বইয়ের ডাউনলোড লিংকঃ http://www.goodreads.com/book/show/17537057-violent-buddhism
আশা করি সবাই এই বইগুলো পড়বেন । আর Buddhist warfare ও Violent Buddhism এই বইগুলি Google Books এ ও রয়েছে। অন্ততপক্ষে প্রথম বইটা Buddhist warfare পড়বেন । যদি পড়েন তাহলেই বুঝতে পারবেন যে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ ৫ টা প্রদেশকে কীভাবে চীন মুসলিম সংখ্যালঘু করেছে । কীভাবে মুসলমানদের কে চীনারা পুড়িয়ে মেরেছে । এই মাওসেতুং সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নামে লাখ লাখ চীনা মুসলমানকে হত্যা করেছে। কিন্তু এই মাওসেতুং হচ্ছে বাংলাদেশের নাস্তিকদের রাজনৈতিক গুরু।
বৌদ্ধরা কীভাবে থাইল্যান্ডে মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে । বৌদ্ধরা কীভাবে বার্মায় মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে । এইভাবে সব বৌদ্ধ প্রধান দেশে কিভাবে বৌদ্ধরা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে তার তথ্য এই Buddhist warfare বইয়ে রয়েছে । Buddhist warfare বইটা অক্সফোর্ড ইউনির্ভাসিটি প্রেস হতে বের করেছে । সুতরাং যেন তেন বই নয় । বইগুলো পড়লেই বোঝা যায় কীভাবে বৌদ্ধরা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে । এসব বই কোন মুসলমান লিখেনি । অমুসলিম দেশগুলোর বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি থিসিস এই বইগুলি। বৌদ্ধ ধর্মের লোকরা বিভিন্ন দেশে যেমন : বার্মা, চীন, শ্রীলংকা, কোরিয়া, তাইওয়ান ইত্যাদি দেশে মুসলমানদের উপর কতরকম উপায়ে নির্যাতন করছে তা জানতে দয়া করে এই বইগুলো পড়ুন । যারা বৌদ্ধ ধর্মকে পরম শান্তির ধর্ম মনে করে এর বিশ্বময় প্রসার কামনা করেন, তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য এইসব বই। যেসব মূর্খ প্রচার করে বৌদ্ধ ধর্ম শান্তির ধর্ম, তাদের এইসব বই পড়া উচিত। আরো যাই হোক,বার্মার অং সান সুচির শান্তিতে নোবেল প্রাইজটা যে অবৈধ হয়েছে এটা জোর গলায় বলতে চাই আমরা ! এই অং সান সুচি বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের পক্ষে একটি বিবৃতিও দেয় নি। আমাদের মুসলমানদের কে প্রতিবাদী হতে হবে বার্মার বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
বিষয়: বিবিধ
১৭০৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Even our government refused to help the refugees.
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সত্যি, নিতান্তই সত্যি কথা বলেছেন!!! মোহাম্মদের মত দাসী, বাদী, যুদ্ধবন্ধি নারী গনিমত, ৬ বছরের বলিকা সহবত-মর্দন না করলে কি মহামানব হওয়া যায়?
এখানে শুকুরের বাচ্চার ৭, ৮ কমেন্ট দেখে নিজেকে আরো অসহায় লাগতেছে
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
যুক্তিহীন ও অস্লীল মন্তব্যটি মুছে দিলে ভাল হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন