নাসা কর্তৃক স্বীকৃত যে রামসেতু বলতে কিছু নেই
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৫২:০৪ সকাল
হিন্দুরা অনেক দিন ধরেই নেটে প্রচারনা চালাচ্ছে যে নাসা নাকি বলেছে যে রামসেতু নাকি সত্য। ফটোশপ করা বিভিন্ন আজগুবী ছবি যে গুলিতে দেখা যায় যে মাঝ সমুদ্রে পাথর ডুবে না এই ছবি গুলি মালাউন হিন্দুরা নাসার নামে চালিয়ে দিয়ে বলছে যে খোদ নাসাই নাকি বলছে যে রাম সেতু নাকি সত্য। কিন্তু আপনারা কি জানেন সেই ২০০৭ সালেই খোদ নাসা থেকেই বলা হয়েছে যে মালাউন হিন্দুরা রাম সেতুর ব্যাপারে যে ছবি গুলি অনলাইনে শেয়ার করে সেগুলি কোনটাই নাসার কোন অভিযাত্রী তুলে নাই। শুধু তাই নয় যাকে হিন্দুরা রামসেতু বলছে সেটাকে স্পষ্ট ভাবে নাসা একটা ৩০ কিলোমিটারের পক প্রনালী বলেছে যেই পক প্রনালীর মাঝে অসংখ্য প্রবাল শৈবাল বালু ও ডুবো পাহাড় রয়েছে। আর এরকম প্রাকৃতিক পক প্রনালী এই পৃথিবীতে বহুত আছে। আর নাসার এই খবরটা ভারতের একদম প্রথম শ্রেণীর দৈনিক পত্রিকা The Hindustan Times সেই ২০০৭ সালে উনাদের পত্রিকায় প্রকাশ করেছে। আপনারা এই লিংক http://tinyurl.com/ldgyucn এ যেয়ে রামসেতুর ব্যাপারে নাসার বক্তব্যটা পড়তে পারবেন।
এই পৃথিবীর ভূপৃষ্ট কত গুলা আনুভূমিক প্লেট এর সমন্বয়ে গঠিত । পৃথিবীর সৃষ্টির সময় সকল মহাদেশ একত্রে এবং জলরাশি একত্রে ছিল। পর্বতমালা সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর ভূ-গর্ভের সৃষ্ট আন্দোলনের ফলে। ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ বহু শক্ত প্লেটে বিভক্ত এবং এর ঘনত্ব হচ্ছে ১০০কিলোমিটার। প্লেটগুলো আংশিক গলিত অঞ্চলে ভাসমান,যাকে Aesthenosphere বলে। আল কোরআনের সূরা নাযিয়াত -৩২, এবং সূরা গাশিয়ার ১৯নং আয়াতেও অনুরূপ বক্তব্য এসেছে।
পাহাড়ের গঠন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের বর্ণনা ভূতত্ত্ব বিদ্যার সাথে পুরো মিলে যায়। হিন্দুরা যেটা কে রাম সেতু বলছে ওটা ভুকম্পন এবং প্লেটের কম্পনের এর ফলে উৎপন্ন জাস্ট একটা অগভীর সমুদ্র ও ডুবো পাহাড় । ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির গভর্নর রবার্ট পকের (১৭৫৫-১৭৬৩) নামে এই প্রণালীর নামকরণ করা হয়েছে। আর রাম সেতুর মত এরকম প্রাকৃতিক পক প্রনালী এই পৃথিবীতে বহুত আছে।
২০০৭ সালে তামিলনাড়ুরর মুখ্যমন্ত্রী এস.করুণানিধি তামিলনাড়ু ও শ্রীলংকার মধ্যে অবস্থিত সমুদ্রগর্ভের একটি প্রবাল প্রাচীর খনন করে জাহাজ চালানোর জন্য সামুদ্রিক রাস্তা হ্রাস ও সুগম করার জন্য টেন্ডার আহবান করলে বিজেপিরা চিল্লাচিল্লী শুরু করে যে এতে নাকি তথাকথিত রাম সেতুর ক্ষতি হবে। এই রাম সেতু নিয়ে বিতর্কটা তখন ভারতের সুপ্রীম কোর্টেও উঠেছিল। সেই সময় ভারতের সুপ্রীম কোর্ট ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মতামত জানতে চায়। The Archaeological Survey of India (AIS) ভারতের সুপ্রীম কোর্ট কে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয় যে রাম লক্ষন হল একটা মিথ। রাম লক্ষন বলতে যে কেউ এই ভারতে ছিল এই ব্যাপারে কোন ঐতিহাসিক ও প্রত্নত্ত্বাত্তিক নিদর্শন নেই। আর তথাকথিত রামসেতুর ব্যাপারে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সুপ্রীম কোর্ট কে বলে- “it’s a natural formation made of shoals and sand bars. অর্থাৎ রাম সেতু হল কিছু মাছের ঝাঁক ও বালির সমষ্টি ছাড়া আর কিছু না। হ্যা আর এই খবরটাও ভারতের একদম প্রথম শ্রেণীর দৈনিক পত্রিকা The Hindustan Times উনাদের পত্রিকায় প্রকাশ করেছিল সেই ২০০৭ সালে। আপনারা এই লিংক http://tinyurl.com/lal5zjm এ যেয়ে রাম লক্ষনের ব্যাপারে ভারতের প্রত্ন তত্ত্ব অধিদপ্তরের বক্তব্যটা পড়তে পারবেন। রাম লক্ষনের ব্যাপারে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বক্তব্যটা ছিল এরকম -" হিন্দু ধর্ম মতে সময় বা যুগ ৪ টা ধাপে বিভক্ত। সত্য যুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ, কলি যুগ। হিন্দুরা বিশ্বাস করে রাম লক্ষন যখন এই পৃথিবীতে এসেছিলেন তখন ছিল ত্রেতা যুগ। হিন্দুদের ধর্ম বিশ্বাস মতে ত্রেতা যুগের সময় টা ছিল আজ থেকে ১২ লাখ বছর আগে। তাইলে হিন্দু ধর্ম মতে রাম লক্ষন উনারা আজ থেকে ১২ লাখ বছর আগে এই পৃথিবীতে অবস্থান করেছিলেন।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ পুঙ্খানুপুঙ্খ খননকার্য চালিয়ে দেখেছে, ১২ লাখ বছর আগের ত্রেতা যুগ তো দূরের কথা এমনকি গুপ্ত যুগেও এই অযোধ্যায় মনুষ্য বসতির কোনো অস্তিত্ব ছিল না। বস্তুত গোটা অযোধ্যা বা তার চার পাশে খ্রিষ্টীয় একাদশ শতক পর্যন্ত মানুষের পা ই পড়েনি। বাবরি মসজিদের পেছনে, ও বাবরী মসজিদের চার পাশে রাম মন্দির বা তার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া তো দূরের কথা, পুরা অযোধ্যাজুড়ে ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি করেও রামের কোনো মূর্তিরও হদিস মেলেনি। যদিও অযোধ্যা রাজ্যে বৌদ্ধ ও জৈনধর্মের প্রসারের অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে কিন্তু পুরা অযোধ্যাতেও রামের কোন মূর্তি পাওয়া যায় নি। "
আর মজার ব্যাপার হল সুপ্রীম কোর্টে রাম লক্ষনের ব্যাপারে ভারতের প্রত্ন তত্ত্ব অধিদপ্তরের এই রিপোর্ট টি পেশ করার পর তামিলনাড়ুর মূখ্যমন্ত্রী এস.করুণানিধি উনার সেই ঐতিহাসিক উক্তিটি করেন- “সূর্য চন্দ্র যেরকম সত্য ঠিক তেমনি সত্য হল এই পৃথিবীতে রাম লক্ষন রাবন বলতে কিছু ছিল না। “
এখন আপনারা একটু চিন্তা করে দেখুন যে মালাউন হিন্দুরা কতটা মিথ্যাবাদী। সেই ২০০৭ সালেই নাসা এবং ভারতের প্রত্ন তত্ত্ব অধিদপ্তর স্পষ্ট ভাবে বলে দেয় যে রামসেতু হল একটা প্রবাল শৈবাল স্তুপ আর রাম লক্ষন হল শুধুমাত্র একটা মিথ। আর এরপরেও হিন্দুরা ফটোশপ করা আজগুবি সব ছবি নাসার নামে রামসেতুর বলে চালিয়ে দিচ্ছে। যেই ভারত ভারত করতে করতে মালাউন হিন্দুদের মুখে ফেনা উঠে যায় সেই ভারতের প্রত্ন তত্ত্ব অধিদপ্তর স্পষ্ট ভাবে সুপ্রীম কোর্ট কে বলে দেয় যে রাম লক্ষন রাবন হল বাল্মীকির লেখা কিচ্ছ কাহিনী ছাড়া আর কিছুই না।
আমি যে প্রায়ই একটা কথা বলি যে প্রত্যেকটা হিন্দু মেয়েই হচ্ছে বেশ্যা আর প্রত্যেকটা হিন্দু ছেলেই হচ্ছে জারজ এর কারন হল একটা হিন্দু ছেলে যখন তার মায়ের পেটে থাকে তখন তার মা কয়েক পুরুষের সাথে SEX করে। হিন্দুদের সম্পর্কে আমার এই কথাটা বলার কারন কি আপনারা জানেন ? এর কারন টা হল এই যে বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির আছে এই কথা বলে হিন্দুরা আধুনিক লঙ্গাকান্ড ঘটিয়ে আমাদের বাবরী মসজিদ ভাঙ্গল, বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পর আমাদের ভারতের মুসলমান ভাইয়েরা প্রতিবাদ করার কারনে হিন্দুরা হাজার হাজার আমাদের ভারতীয় মুসলমান ভাইদের কে হত্যা করল, শত শত মুসলিম মেয়েদের কে এই হিন্দুরা রাজপথে প্রকাশ্যে ধর্ষন করল কিন্তু এই রাম লক্ষন রাবন হল বাল্মীকির লেখা কিচ্ছ কাহিনী ছাড়া আর কিছুই না। এর চেয়ে দুঃখ জনক আর কি হতে পারে যে বাল্মীকির লেখা কিচ্ছা কাহিনী টাইপ একটি রামায়ন উপন্যাসের কিছু প্রাগৌতাহাসিক চরিত্র কে ভিত্তি করে হিন্দুরা ১৯৯২ সালের দিকে একটা প্রাচীন মসজিদ কে ভেঙ্গে ফেলল, তারপর হাজার হাজার মুসলমান কে হত্যা করল আর শত শত মুসলমান মেয়েকে ধর্ষন করল।
ভারতের হিন্দুরা ১০ টা রাম মন্দির করুক এতে আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্তু হিন্দুরা আমাদের বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে কেন তাদের রাম মন্দির বানাবে ? এই বিশাল ভারতে কি জমির এতই অভাব পরল যে আমাদের মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে ভারতের হিন্দুরা তাদের রাম মন্দির বানাবে ? হিন্দুরা যদি সত্যিই এক বাপের বীর্য থেকে জন্ম নেওয়া সন্তান হত তাইলে তারা ঠিকই বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পর মুসলিম বিশ্বের কাছে ক্ষমা চেয়ে আমাদের বাবরি মসজিদ আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিত। কিন্তু আজ পর্যন্ত এখনো আমরা আমাদের বাবরী মসজিদ কে ফিরে পাই নি। বাবরী মসজিদের মেহরাবে মালাউন হিন্দুরা তাদের রামের মূর্তি স্থাপন করে সেই খানে রাম লক্ষনের পূজা করে। ছি। সেই ১৯৯২ সালের পর ভারতের মুসলমানরা বাবরী মসজিদ প্রাঙ্গনে আর এক ওয়াক্ত নামাযও পড়তে পারে না। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা পৌত্তলিকদের কে ধ্বংস করুক।
বিষয়: বিবিধ
২০৬৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন