বরুন গান্ধী ও ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:০০:১০ রাত

বাবরী মসজিদ

বরুন গান্ধী উনি হলেন ভারতীয় জনতা পার্টি অর্থ্যাৎ বিজেপির সাধারন সম্পাদক। বরুন গান্ধী হলেন ইন্দিরা গান্ধীর নাতী ও রাহুল গান্ধীর আপন চাচাত ভাই। গান্ধী পরিবারের একজন ছেলে বিজেপির রাজনীতিতে জড়িত হবার কারনে স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের মিডিয়ায় সেই সময় বরুন গান্ধী কে নিয়ে অনেক তোলপাড় শুরু হয়। আপনারা কি জানেন এই বরুন গান্ধী প্রকাশ্যে জনসভায় ভারতের মুসলমানদের কে হত্যা করতে হিন্দুদের কে উৎসাহ দেয়। বরুন গান্ধীর কথা হল ভারতের মুসলমানরা আরব আফগানিস্তান তুরস্ক থেকে এসেছে। তাই ভারতের মুসলমানদের কে হয় আমাদের হত্যা করতে হবে নয় তাদের কে আবার হিন্দু বানিয়ে পরিশুদ্ধ করতে হবে। আমি এখন YouTube থেকে বরুন গান্ধীর একটি জনসভার ভিডিও লিংক আপনাদের কে দিব। আপনারা এই লিংক

http://youtu.be/4kiQ5pnV4zQ

এ গেলে মুসলমানদের হত্যা করার ব্যাপারে বরুন গান্ধীর খোলাখুলী আহবান দেখতে পাবেন।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের VHP এর সিনিয়র নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়া যেখানে বক্তব্য দেয় সেখানেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বেঁধে যায়। বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী নেতা হল এই Praveen Togadia।

ভবিষ্যতে হায়দারবাদ হয় আরেক গুজরাট অথবা অযোধ্যা হবে এই কথা খোলাখুলী প্রবীন তোগদিয়া তার বিভিন্ন জনসভায় বলে। YouTube এর এই লিংক

http://youtu.be/_bNFN5j0dAU

এ যেয়ে Praveen Togadia

এর এই ভিডিও টা দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন যে মুসলমানদের হত্যা করার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা কিভাবে সাধারন হিন্দুদের কে উৎসাহ দিচ্ছে। আচ্ছা এখন আপনারাই বলেন বিজেপির একজন কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক যদি প্রকাশ্যে খোলাখুলী ভাবে এই ভাবে ভারতের হিন্দুদের কে আমাদের মুসলমান ভাইদের কে হত্যা করতে উৎসাহ দেয় তাইলে মাঠ পর্যায়ের বিজেপীর নেতাদের মন মানসিকতা কি ভয়ংকর !

Google এ আপনারা Hate Speech about isLam লিখে search দিলেই বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অনেক বড় বড় নেতার ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য পাবেন।

আমি গত ২ দিন আগে আমার facebook Status এ বলেছিলাম যে হিন্দুদের কীর্তন রথ যাত্রা টাইপ যেইসব ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয় সেইসব অনুষ্ঠানে ব্রাক্ষণ পুরাহিতরা একটা জ্বালাময়ী ভাষন দেয় যে তোমরা মুসলিম হত্যা করবে তাইলে খুব সহজেই স্বর্গে যেতে পারবে। তখন ভারতীয় হিন্দুরা একযোগে আমার সেই কথার প্রতিবাদ করেছে যে বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা নাকী কখনই সাম্প্রদায়িক উস্কানী মূলক কোন বক্তব্য দেয় না। আচ্ছা এখন তো আমি আপনাদের কে Youtube থেকেই বিজেপির সাধারন সম্পাদক বরুন গান্ধীর বক্তব্যের লিংক দিলাম। তো এখন আপনারা কি বলবেন ? শুধু তাই নয় আপনারা কি জানেন বাবরি মসজিদ ভাঙা শুরু হয়েছিল লালকৃষ্ণ আদভানির আয়োজিত রথযাত্রার সেই সমাবেশ থেকে। রথযাত্রায় লালকৃষ্ণ আদভানির সেই ঐতিহাসিক ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য দেয়ার পরপরই মালাউন হিন্দুরা এক যোগে বাবরী মসজিদ ভাঙ্গা শুরু করে।

আচ্ছা আমি এখন হিন্দুদের কে বলছি বাংলাদেশে যেই ইসলামীক রাজনৈতিক দল গুলি আছে যেমন জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাইর পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, হিযবুত তাহরীর আপনারা কি পারবেন এই সব ইসলামিক রাজনৈতিক দলের কোন নেতার এমন কোন ভিডিও দেখাতে যেইখানে উনারা বাংলাদেশের মুসলমানদের কে বলছে যে তোমরা হিন্দুদের কে হত্যা কর, হিন্দু মেয়েদের কে ধর্ষন কর ? না আপনারা কখনই পারবেন না। কারন ইসলাম কখনই অনুমতি দেয় না নিজ দেশের অমুসলিম নাগরিকদের কে হত্যা করতে। আজ পর্যন্ত কখনই ধর্মীয় কারনে বাংলাদেশের কোন মুসলমান কখনই কোন হিন্দু কে হত্যা করে নাই আর কোন হিন্দু মেয়েকে ধর্ষন করা তো দূরের কথা। বাংলাদেশের সকল ইসলামিক রাজনৈতিক দলের কথা হল হিন্দুরা এই দেশের নাগরিক। হিন্দুরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে এই বাংলাদেশেই থাকবে। ভারতের হিন্দুরা ১০ টা রাম মন্দির করুক এতে আমাদের কোন আপত্তি নাই। কিন্তু উনারা আমাদের বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে কেন তাদের রাম মন্দির বানাবে ? এই বিশাল ভারতে কি জমির এতই অভাব পরল যে আমাদের মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে ভারতের হিন্দুরা তাদের রাম মন্দির বানাবে ? হিন্দুরা যদি সত্যিই মানুষের বাচ্চা হত তাইলে তারা ঠিকই বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পর মুসলিম বিশ্বের কাছে ক্ষমা চেয়ে আমাদের বাবরি মসজিদ আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিত। কিন্তু আজ পর্যন্ত এখনো আমরা আমাদের বাবরী মসজিদ ফিরে পাই নি। বাবরী মসজিদের মেহরাবে হিন্দুরা তাদের রামের মূর্তি স্থাপন করে সেই খানে রাম লক্ষনের পূজা করে। ১৯৭১ সালে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যতগুলি হিন্দুদের মন্দির ভেঙ্গে ছিল দেশ স্বাধীন হবার হিন্দুরা তাদের প্রত্যেকটা মন্দির কেই ফেরত পেয়েছিল। আমরা মুসলমানরা হিন্দুদের একটা মন্দিরের জমিও দখল করি নাই।

আপনারা হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে বাংলা ভাষায় যতগুলা হিন্দু পেইজ আছে সব গুলা হিন্দু পেইজে জোর তত্‍পরতা চালানো হচ্ছে যে নরেন্দ্র মোদী যেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়। আপনারা একটু চিন্তা করে দেখুন একটা সুস্থ মস্তিস্কের ব্যক্তি কি কখনো নরেন্দ্র মোদীকে Support করতে পারে ? এই নরেন্দ্র মোদী যদি ভারতের প্রধান মন্ত্রী হয় তাইলে ভারতের প্রত্যেকটা প্রদেশই হবে সেই ২০০২ সালের গুজরাট। আসলে ভারতের হিন্দুরা ধর্ষন ও ধর্ষক এই ২ টা জিনিসকেই খুব Like করে। তাই ২০০২ সালে যার নেতৃত্ত্বে আমাদের গুজরাটের বোনদের কে ধর্ষন করার পর আগুণে পুড়ানো হয়েছিল সেই নরেন্দ্র মোদীকেই ভারতের হিন্দুরা তাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আপনারা দেখবেন যেই দিন নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধান মন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হবে ঠিক সেই দিন থেকেই পুরা ভারত জুড়ে মালাউন হিন্দুরা একযোগে আমাদের মুসলমান ভাই বোনদের উপর ঝাপিয়ে পরবে। এই নরেন্দ্র মোদীই হবে আধুনিক নব্য ভারতীয় হিটলার।

বিষয়: রাজনীতি

১৮৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File