একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir এর মুক্তি চাই

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ২১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৭:৪৮:৪৫ সন্ধ্যা



একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir এর জামিন বাতিল করে উনাকে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে এটা আপনারা এখন সবাই জানেন। ফেইসবুকে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir এর আইডিটার নাম ছিল Akm Wahiduzzaman. দীর্ঘদিন ধরে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir আমাদের কে অল্প কথায় অনেক চমৎকার লেখা উপহার দিয়ে আসছেন। উনার একটা Status এর কথা আমার এখনো মনে পড়ে। “ এত সস্তা বাঁশ ভ্রমন এই পৃথিবীতে আর কোন দেশে নাই। ৩০ টাকার টিকেট কেটে ৩ ঘণ্টা বাসে বসে থাকা যায়।” উনি মূলত উনার এই Status টির মাধ্যমে ঢাকা শহরের যানজটের করুন চিত্র তুলে ধরেছেন। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে উনি প্রথম থেকেই সরব ছিলেন। একজন চরম ডানপন্থী মানুষ হলেও সকল মতের লোকদের সাথে উনার খুব ভাল সম্পর্ক আছে। থাবা বাবা/রাজীব যে নাস্তিক ছিল এটা উনি প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন। থাবা বাবা/রাজীবের ব্যাপারে উনার খুলাখুলী কথা বলার কারনে উনি অনেকেরই বিরাগভাজন হয়েছিলেন। হয়ত এই কারনেই উনার অনেক পরিচিত অনলাইন এক্টিভিটিস্ট যারা নিজেদেরকে মুক্তমনা বলে দাবী করে তারা আজকে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir এর ব্যাপারে চুপ করে আছে। থাবা বাবার জানাজার ইমাম কে হত্যার হুমকি দেয়ার কারনে আমার নিজেরও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭(১) ধারা ও পেনাল কোড ৫০৬ ধারায় মামলা হয়েছে। একটানা ৬ মাস জেল খেটে আমি হাইকোর্ট থেকে মাত্র ৬ মাসের জামিন পেয়েছি। আমার জামিনের মেয়াদ শেষ হবে সামনের বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর যদি আমি ঢাকার জর্জ কোর্ট থেকে স্থায়ী জামিন না পাই তাইলে আমাকে আবারও কাশিমপুর কারাগারে চলে যেতে হবে। শেখ হাসিনার পরিবার কে নিয়ে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir এর status টা মনে হয় এরকম ছিল যে শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে অনেক গুলি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন, উনার ছেলে জয় একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আর উনার কন্যা একজন অটিসম বিশেষজ্ঞ তাই উনি শেখ হাসিনার পরিবার কে একটি বিজ্ঞানী পরিবার বলেছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবারকে নিয়ে এই কথাটা বলার কারনে একজন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কে কারাগারে প্রেরন করা হবে এটা মানা যায় না। ইউরোপ আমেরিকার দেশ গুলিতে প্রতিদিন সেই দেশের রাজা রানী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কে নিয়ে অনেক ব্যঙ্গচিত্র আকা হয়। কই আপনারা কি কখনো শুনছেন ইউরোপ আমেরিকার সরকার রা তাদের দেশের কোন নাগরিকদের কে এই ফেইসবুক ব্লগে উনাদের কে নিয়ে কটুক্তি করার জন্য কাউকে গ্রেফতার করেছে ? এই কিছুদিন আগেও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি করার কারনে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় বুয়েটের এক শিক্ষককে ৭ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়। আমরা কি তাইলে রাষ্ট্রযন্ত্র ও সরকার প্রধানদের কে নিয়ে কোন সমালোচনা করতে পারবো না। রাষ্ট্রই যদি নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধা দেয় তাইলে সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই তো হচ্ছে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী।

বুয়েটের ঐ শিক্ষককে ৭ বছর কারাদন্ড দিয়েছিল ঢাকার জর্জ কোর্টের সিনিয়র স্পেশাল জজ জহুরুল হক। এই জহুরুল হকের কোর্টেই আমার মামলা। আমি তো ধরেই নিয়েছি যে এই জহুরুল হক আমাকেও ৫/৭ বছর সাজা দিয়ে দিবে। ঢাকার জর্জ কোর্টের সিনিয়র স্পেশাল জজ এই জহুরুল হকই আসিফ মহিউদ্দীন, আল্লামা শয়তানদের কে মাত্র ৩ মাসেই জামিন দিয়ে দিয়েছিল কিন্তু আমাকে সে জামিন দেয় নাই। যদিও আমাদের উভয়ের মামলাই ছিল তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিভিন্ন ধারায়। ৬ মাস জেলে থাকার সময় এই দেশের বিচার বিভাগ যে ধ্বংস হয়ে গেছে তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। আপনারা জানেন বাংলাদেশে প্রায়ই হত্যাকান্ড হয়। আর হত্যা মামলার আসামীরা ৫/৬ মাসের মধ্যেই কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে যায়। কিন্তু নরকের কীট কুলাঙ্গার নাস্তিক ব্লগার রাজীব হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত নর্থসাউথের ঐ ৬ জন ছাত্র অনিক, দ্বীপ, রুম্মান, নাফিস, ইরাদ ও সাদমানরা আজকে ৮ মাস ধরে জেলে পচতাছে। জেল খাটা আসলে যুবক বয়সের কাজ। কোন মধ্যবয়সী ব্যক্তির জন্য জেলখানা নয়। আর বাংলাদেশের কারাগার গুলি হচ্ছে নরকের একটা অংশ। একেএম ওয়াহিদুজ্জামান Sir কিভাবে এই নরকের অংশে উনার জীবন পার করবে এখন এটাই আমার জিজ্ঞাসা। এই কিছুদিন আগেও কোরবানীর ঈদের সময়ে মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীন মুসলমানদের কোরবানী প্রথা কে কটাক্ষ করে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম কে একজন মানসিক বিকার গ্রস্থ ব্যক্তি বলেছে। সরকার কিন্তু এই মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। লুইচ্চা নবী মোহাম্মদ পেইজটাতে প্রতিদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উম্মুল মুমেনীনদের কে নিয়ে অনেক অশ্লীল পোস্ট করা হচ্ছে। দাড়িপাল্লা দমাদম, দিগম্বর পয়গম্বর, সাদিয়া সুমি উজ্জা আর নাগরিক ব্লগের অর্বাচিন স্বাপ্নিক প্রতিদিন অনলাইনে আল্লাহ ও তার রাসুলকে গালিগালাজ করে যাচ্ছে। RAB কিন্তু চাইলেই পারে IP Address Track করে যারা প্রতিদিন অনলাইনে আল্লাহ ও তার রাসুলকে গালিগালাজ করে যাচ্ছে তাদের কে খোজে গ্রেফতার করতে। কিন্তু আমরা ভাল করেই জানি এই নাস্তিক আওয়ামী লীগ সরকার ঐ লোকদেখানো ৪ টা নাস্তিক ব্লগার গ্রেফতার করা ছাড়া আর কোন নাস্তিক ব্লগারকেই গ্রেফতার করবে না। তাইলে কি আমরা ধরে নিব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উম্মুল মুমেনীনদের সম্মান ও মর্যাদার চেয়েও শেখ হাসিনার পরিবারের সম্মান ও মর্যাদা বেশী ? লেবু বেশী কচকাইলে তিতা হয় আর শেখ হাসিনা কোন কিছু তিতা না কইরা ছাড়বে না। আমাদের হাতে তো অস্ত্র নাই কিন্তু সেনাবাহিনীর হাতে তো অস্ত্র আছে। সেনাবাহিনী কি পারে না যারা অনলাইনে আল্লাহ ও তার রাসুল কে গালিগালাজ করে যাচ্ছে তাদের কে খোজে খোজে বের করে তারপর তাদের কে বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করতে ?

বিষয়: রাজনীতি

২৩৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File