হিন্দুদের ভাই ফোঁটা সংস্কৃতি প্রচারকারী আসিফ মহিউদ্দিনের কট্টর হিন্দুত্ত্ববাদী রুপ সম্পর্কে জানুন
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১৬ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৩০:৩১ রাত
আসিফ মহিউদ্দীন যাকে আপনারা এক নামে সবাই চিনেন। এই আসিফ মহিউদ্দীন নিজেকে একজন মুক্তমনা মনের অধিকারী ও নাস্তিক বলে পরিচয় দেয়। আচ্ছা একজন নাস্তিক কি কখনো কোন হিন্দু ধর্মের সংস্কৃতিকে আপন করে নিতে পারে ? একটা মুসলমান ঘরের ছেলে নাস্তিক হওয়া মানেই হল সে পৃথিবীর আর কোন ধর্ম ও এই পৃথিবীর আর কোন ধর্মীয় সংস্কৃতি কে গ্রহন করবে না। বর্তমান পৃথিবীর একজন প্রথম শ্রেণীর নাস্তিক রিচার্ড ডকিন্স কে কি কখনই আপনারা দেখেছেন হিন্দু ধর্মের কোন সংস্কৃতিকে গ্রহন করতে ? কিন্তু বাংলাদেশের নাস্তিকদের গুরু এই আসিফ মহিউদ্দীন এই মাসের ৫ তারিখে একটা status দিয়েছে যেই status এ আসিফ মহিউদ্দীন বাংলার মুসলমান মেয়েদের কে ভাই ফোঁটা সংস্কৃতি গ্রহন করতে বলেছে। এবং সেই সাথে বাংলার মুসলমান মেয়েদের কে হিজাব ছাড়তে বলেছে। আসিফ মহিউদ্দিনের সেই Status এর লিংকটা হল এটা https://www.facebook.com/atheist.asif/posts/593710307343068
আসিফ মহিউদ্দিনের সেই Status এর কিছু অংশ আমি এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরছি- “বোরখা হিজাবের প্রাদুর্ভাবের বিপরীতে ভাইফোঁটা অনেক বেশি সেক্যুলার এবং কার্যকর সংস্কৃতি। একটা সমাজে বোরখার প্রাদুর্ভাব সেই সমাজের বদ্ধতার প্রতীক, সেই সমাজের পুরুষদের লাম্পট্যের প্রতীক। একটা সমাজে বোরখা হিজাবের প্রাদুর্ভাব মানে হচ্ছে সেই সমাজের পুরুষরা এক একটি ধর্ষক, যারা খানিকটা খোলামেলা পোশাকের মেয়ে দেখলেই বা পোশাক বাতাসে একটু উড়লেই উত্তেজিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পরে। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের রাজনৈতিক সফলতার চাইতে সাংস্কৃতিক সফলতা অনেক অনেক গুণ বেশি। এর ফলাফল খুব ধীরে ধীরে মানুষের ভেতরে প্রকাশ পাবে বলে আমার বিশ্বাস। গণজাগরণ মঞ্চের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের মধ্যে ভাইফোঁটা ব্যাপারটা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আধুনিক তরুণ তরুণির ভেতর। আমি এই ধরণের সাংস্কৃতিক চর্চাকে খুব পজিটিভলি দেখি।“ আসিফ মহিউদ্দীন এইখানে খোলাখুলি ভাবে মুসলমান মেয়েদের কে পর্দা ছেড়ে দিয়ে ও হিন্দুদের ভাই ফোঁটা সংস্কৃতি গ্রহন করতে বলেছে। আচ্ছা ভাই ফোঁটার ইতিহাসটা কি আমরা জানি ? বাংলা উইকিপিডিয়াতে স্পষ্ট বলা আছে যে ভাই ফোঁটা হল শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের একটি অনুষ্ঠান। কালীপূজার ২ দিন পরে এই ভাই ফোঁটা উৎসব উদযাপিত হয়। হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ পুরানে উল্লেখ আছে পুরাণে উল্লেখ আছে- কার্তিকেয় শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তাঁর ভাই যমের মঙ্গল কামনায় গভীর ধ্যানমগ্ন হয়ে পুজা করেন। তাঁরই পুণ্য প্রভাবে যমদেব অমরত্ব লাভ করেন। বোন যমুনা দেবীর পুজার ফলে ভাই যমের এই অমরত্ব লাভের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে বর্তমান কালের বোনেরাও এই সংস্কার বা ধর্মাচার পালন করে আসছে।
অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়।
ভাই ফোঁটার দিনে বোনেরা উপবাস রেখে ভাইয়ের কপালে বাঁ হাতের অনামিকা আঙ্গুল দিয়ে চন্দন, ঘি, কাজল, মধু , শিশির, গোমূত্র দিয়ে ফোঁটা দিয়ে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে থাকে।
ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলে-
"ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা
যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা
কাঁটা যেন সরে না
ভাই যেন মরে না
চন্দ্র সূর্য যতদিন
ভাই যেন বাঁচে ততদিন।"
পশ্চিম ভারতের হিন্দুদের মাঝে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে। সেখানে দুর্গা পূজার বিজয়া দশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব। মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাইবিজ/ভাই ফোঁটা পালন অবশ্য কর্তব্য। এমনকি যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাঁদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ/ভাই ফোঁটা পালন করতে হয়। বাংলা উইকিপিডিয়ায় ভাই ফোঁটা নিয়ে নিবন্ধটির লিংকটা হল এটা http://tinyurl.com/lda48dv
তাই ভাই ফোঁটা অবশ্যই শুধুমাত্র হিন্দুদের একটি অনুষ্টান। বাংলার বৌদ্ধরাও এই ভাই ফোঁটা উৎসব পালন করে না। আসিফ মহিউদ্দিনের Time Line এ এই মাসের ৫ তারিখে ইউরিডাইস রিবর্ন নামে এক হিন্দু মেয়ে পোস্ট করেছে এই লিখে যে
"ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা
যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা
কাঁটা যেন সরে না
ভাই যেন মরে না
চন্দ্র সূর্য যতদিন
ভাই যেন বাঁচে ততদিন।"
যথারীতি মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীন ঐ হিন্দু মেয়ের ভাইফোঁটা কে গ্রহন করে অনেক লুতুপুতু Comment ও করেছে। আচ্ছা এখন আপনারাই বলেন একটা নাস্তিক কি কখনো হিন্দুদের ভাই ফোঁটা সংস্কৃতি গ্রহন করতে পারে ? মুসলমানদের ঈদ আর রোযা আসলে এই আসিফ মহিউদ্দীন ইসলাম ধর্মকে গালিগালাজ শুরু করে দেয় আর কালী পূজা আসলে আসিফ মহিউদ্দীন ভাই ফোঁটার প্রশংসা করে পোস্ট দেয়। আসিফ মহিউদ্দীন আপনি ইসলাম ধর্মের একেশ্বরবাদি চিন্তা বাদ দিয়ে মূর্তিপূজাকরা হিন্দুদের সংস্কৃতি গ্রহন করবেন আর নিজেকে একজন মুক্তমনা নাস্তিক বলে পরিচয় দিবেন এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? আসলে আসিফ মহিউদ্দীনের এই ভাই ফোঁটা সংস্কৃতির পক্ষে কথা বলার মাধ্যমে আমরা আবারা বুঝতে পারলাম যে আসলে বাংলার জমিনে যারা নিজেদের কে নাস্তিক বলে পরিচয় দেয় এরা কেউই আসলে নাস্তিক না এরা সবাই ভিতরে ভিতরে কট্টর হিন্দুত্ত্ববাদী। আর আসিফ মহিউদ্দীনের Cover Picture এ অনেক গুলিই গৌতম বুদ্ধের ছবি আছে।
আর যেই হিজাব বা পর্দার ব্যাপারে আসিফ মহিউদ্দিনের এত আপত্তি সেই হিজাব বা পর্দা আজ থেকে ৫০০০ বছর পূর্বে পৃথিবীর প্রথম সভ্যতা মেসোপটেমিয়ায় শুরু হয়েছিল। মেসোপটেমিয়ার সম্ভ্রান্ত নারীরা নিজেদের কে দাসী ও বেশ্যা নারীদের থেকে পৃথক রাখার জন্য যখন উনারা ঘরের বাইরে যেতেন তখন উনাদের সারা শরীর লম্বা কাপড় দিয়ে ঢেকে ও মাথার চুল কাপড় দিয়ে ঢেকে তারপর ঘর থেকে বের হতেন। যদি কেউ কোন কারণে মাথা মুখ না ঢেকে বাইরে বের হয়ে পড়তো তখন তাঁকে আইন অমান্য করার অপরাধে শাস্তি দেয়া হতো। ৫৩৯ খৃষ্টপূর্ব অব্দে যখন প্রথম বারের মত পার্সিরা অ্যাসিরীয়দের রাজধানী মেসোপটেমিয়া দখল করে বিজয়ীর বেশে নগরে প্রবেশ করে, তখন রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ বেশভূষা পরিহিত নারীদের মধ্যে ২/১ জন নারীকে বিশেষ পোশাক পরা এবং মাথা, মুখ ঢেকে চলাচল করতে দেখে। তখন তারা জানতে পারে যে, অ্যাসিরীয়দের অভিজাত নারীরা ঘরের বাইরে আসেনা, কোন কারণে আসলে তারা যে অভিজাত পরিবারের নারী তা পথচারীদেরকে জ্ঞাত করতে তারা তাদের মাথা এবং মুখ ঢেকে রাখে। পার্সিরাও আভিজাত্যের প্রতীক হিসাবে তাদের নারীদের মধ্যেও এই প্রথাকে গ্রহণ করে।
কালক্রমে পার্সি সাম্রাজ্য বিস্তার এবং বর্ধিত আকার ধারণের সাথে সাথে নব বিজিত এলাকার অভিজাত শ্রেণীর লোকেরাও এই প্রথাকে গ্রহণ করে নেয়। পরবর্তীতে পার্সিদের হাত ধরে এই প্রথা ভূমধ্য সাগরের পূর্ব পাশের দেশ সমূহ সিরিয়া, লেবানন ও উত্তর আরবে ছড়িয়ে পড়েছিলো,
আর দ্বীন ইসলামের প্রত্যেকটা মেয়েই হল এক একজন সম্ভ্রান্ত নারী। তাই ইসলাম প্রত্যেকটা মেয়েকেই হিজাব বা পর্দা করতে বলেছে। খুব দুঃখ লাগে যখন দেখি অনেক মুসলমান ঘরের ছেলে এই কট্টর হিন্দুত্ত্ববাদী চিন্তাচেতনা লালনপালনকারী ও মানুষ কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তকারী এই আসিফ মহিউদ্দিনকেই তাদের গুরু মেনে নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাস্তিক যে একটা আবাল সেটা তখনই বুঝা যায় যখন তারা ভাই ফোঁটার মত হিন্দুদের সংস্কৃতিকে নিজেদের সংস্কৃতি বানিয়ে নিয়েছে।
ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব
আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান
আল কোরআনের ব্যাকরণগত সৌন্দর্য্যের কিছু অসাধারন দিক
বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা
ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল
আমাদের মুসলমানদের কেন একটি কেন্দ্রীয় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজন ?
হাতের কাছে রাখার মত কয়েকটি চমৎকার ইসলামী বই
পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথা কে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে
হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ২য় পর্ব
মেসওয়াক করার ফযীলত
আমার উম্মতের মাঝে ৭৩ টি দল হবে এদের মাঝে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে" এই হাদীস টির মূল ব্যাখ্যা টি কি ?
সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল
সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা
বিষয়: বিবিধ
২৫১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন