হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম সম্পর্কে আসিফ মহিউদ্দীনের জঘন্য মিথ্যাচারের জবাব

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১৬ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:৫৫:০৪ রাত



মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীন গত ২ দিন আগে কুরবানী নিয়ে তার একটা status এ হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম সম্পর্কে চরম কুৎসা রটিয়েছে। আসিফ মহিউদ্দীনের সেই status টির লিংকটা হল এটা https://www.facebook.com/atheist.asif/posts/584095514971214

হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম আল্লাহ সুবহানাতায়ালার নির্দেশে কেন উনার পুত্র হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম কে কুরবানী করতে চেয়েছিলেন এই ঘটনাটা উল্লেখ করে আসিফ মহিউদ্দীন একাধারে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম, উনার স্ত্রী হাজেরা বিবি কেও গালমন্দ করেছে। আসিফ মহিউদ্দীনের ঐ status থেকেই আপনাদেরকে বলছি- "আমাগো অনেক বড় নবী, হের নাম ইব্রাহিম বাদশা। সক্কল মুসলমান খেরেশটান ইহুদীগো হে হইলো বড় নবী। একদিন আল্লাহপাক হেরে স্বপ্নে দেখা দিয়া কইলো, হে ইব্রাহিম বাদশা, তোমার প্রিয় জিনিস আমার জন্য কোরবানি কর। ইব্রাহিম বাদশা তো পরলো বিপদে। অনেক চিন্তা কইরা সে বুঝলো, হের পোলা ইসমাইল হইলো তার প্রিয়। তাই সে বউ বিবি হাজেরারে কইলো, বউ আমি পোলারে কোরবানি করমু। বিবি হাজেরা উথাল পাথাল কান্দে, কিন্তু পোলারে তো আল্লাপাকের লাইগা কোরবানি দেওনই লাগবো। সে পোলারে চুমা দেয়, আদর করে। তেল সাবান দিয়া গোছল করায়। তারপরে সুন্দর কইরা সাজাইয়া গুজাইয়া বাপের লগে পাঠায়। বাপে বড় একখান ছুরি নিয়া চলল পোলা কোরবানি দিতে। দূর পাহাড়ে নিয়া কোরবানি দেওনের সময় আল্লায় খুশি হইলো, খুশি হইয়া কইলো হে ইব্রাহিম, আমি তোমার ভক্তিতে খুশি হইছি। তুমি একখান পশু কোরবানি দেও। ইব্রাহিম বাদশা খুব খুশি। একটা পশু কোরবানি দিয়া পোলারে নিয়া বাসায় আইলো। এই হইলো কোরবানির ইতিহাস।

আমার জানি কেমন কেমন লাগলো। আমি জিগাইলাম, পোলার লাইগা বাপ মায়ের ভালবাসা নাই, জবাই করতে গেল স্বপ্ন দেইখা, এতে আল্লায় খুশি হইলো? আর আল্লায় যদি সময় মত খুশি না হইতো, তাইলে কি এখন ঈদে মানুষ পোলা কোরবানি দিতো? আর হেই বাপ মাই বা কেমন বাপ মা, যে নিজের পোলাপান জবাই দিতে যায়? সেই মাই কেমন মা যে নিজের পোলারে গোছল দিয়া জবাই করতে পাঠায়? সে স্বামীর লগে ঝগড়াঝাঁটি মারামারি করতে পারলো না? সেই বাপে কইতে পারলো না আমার পোলা আমি জবাই দিমু না, লাগে আমি নিজে জবাই হমু? আমার মায়ে এইসব কথা শুইনা দেয় ধমক, যা ছ্যাড়া কি কস এডি। এইসব কথা বলতে নাই। বিবি হাজেরা হইলো সকল মায়ের আদর্শ মা। বাবা ইব্রাহিম বাদশা হইলো সকল বাপের আদর্শ বাপ। তাগো মত কেউ নাই।

আমি কইলাম, আচ্ছা মা, কাইল যদি আব্বায় স্বপ্ন দেখে, তাইলে তুমি কি আমারে গোছল দিয়া জবাই করতে পাঠাবা? কথা শুইনা মায়ে জানি ক্যামন হইয়া গেল। তার মুখ চোখ শুকনা। কোন কথা কয় না।"

এই কথার সুত্র ধরে আসিফ মহিউদ্দীন তার মা কেও জিজ্ঞাস করেছে যে আমার পিতা যদি কখনো স্বপ্ন দেখে যে স্বপ্নে কেউ আমার পিতা কে নির্দেশ দিচ্ছে আমাকে জবাই করতে তো আমার পিতাও কি তখন আমাকে জবাই করে ফেলবে ? আমি এখন আপনাদের কে দেখাব যে আসিফ মহিউদ্দীন কিভাবে শার্টপ্যান্ট পড়া সরল মুসলমানদের কে বিভ্রান্ত করছে। আচ্ছা প্রথমেই আমরা দেখি আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সরাসরি নির্দেশ বা ওহী কার উপর নাযিল হয় ? আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সরাসরি নির্দেশ বা ওহী শুধুমাত্র নবী রাসূলদের উপর নাযিল হয়। নিদ্রামগ্ন অবস্থায় নবী রাসূলরা ঘুমিয়ে থাকলেও উনাদের অন্তর জাগ্রত থাকে। হাদীসে বলা আছে যে নবী রাসূলদের স্বপ্ন সত্য। স্বপ্নের মাধ্যমেও নবী রাসূলদের কাছে ওহী আসে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছেও স্বপ্নের মাধ্যমে ওহী এসেছিল। ইহুদীদের মিত্র মুনাফিক লবীদ ইবনে আসাম যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে যাদুটোনা করেছিল তখন স্বপ্নেই ২ জন ফেরেশতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জানিয়ে দেয় যে মুনাফিক লবীদ ইবনে আসাম আপনার একটি চুল সংগ্রহ করে সেই চুলটি একটি চিরুনীর ভিতর যরোয়ান নামক কূপের নিচে রেখেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ স্বপ্নটি দেখার পর ঐ যরোয়ান কূপ থেকে উনার চুলটি উদ্ধার করেন।

যেহেতু হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম একজন নবী ছিলেন তাই আল্লাহ সুবহানাতায়ালার কাছ থেকে স্বপ্নের মাধ্যমে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম কে কুরবানী দেয়ার যে নির্দেশ টা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম পেয়েছিলেন তা ছিল ওহী। একজন সাধারন মানুষের স্বপ্ন শুধুমাত্র স্বপ্নই কিন্তু নবী রাসুলদের স্বপ্ন হল ওহী বা আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সরাসরী নির্দেশ। তাই একজন সাধারন মানুষের স্বপ্ন আর নবী রাসুলদের স্বপ্ন কখনই এক নয়। কিন্তু মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীন তার এই কুরবানীর status এ হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের স্বপ্ন আর একজন সাধারন ব্যক্তির স্বপ্ন কে এক করে ফেলেছেন। নাউযুবিল্লাহ। আসিফ মহিউদ্দীন তার কুরবানী নিয়ে ঐ status এ হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম আল্লাহ সুবহানাতায়ালার নির্দেশে কেন উনার পুত্র হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম কে কুরবানী করতে চেয়েছিলেন এই ব্যাপার টা উল্লেখ করে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম কে আসিফ মহিউদ্দীন একজন মানসিক বিকারগ্রস্থ ও পাগল বলেছে। নাউযুবিল্লাহ। একজন সাধারন মানুষের উপর কখনই আল্লাহ সুবহানাতায়ালার কোন নির্দেশ বা ওহী আসে না কিন্তু নবী রাসুলদের উপর সব সময় আল্লাহ সুবহানাতায়ালার নির্দেশ বা ওহী নাযিল হয়।

আচ্ছা একজন সাধরন মানুষ আর নবী রাসুল রা কি একই পর্যায়ের ? বা আল্লাহ সুবহানাতায়ালা একজন নবী রাসূলের উপর ঠিক যতটা ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেন একজন সাধারন মানুষের উপর কি ঠিক ততটুকুই ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেন? কখনই নয়। নবী রাসূলদের ঈমান সব সময় বাড়তে থাকে কিন্তু একজন সাধারন মানুষের ঈমান বাড়েও আবার কমে। নবী রাসুলরা হলেন নিস্পাপ কিন্তু আমরা সাধারন মানুষেরা সব সময় গোনাহর সাগরে ডুবে থাকি। চোখের মনি দেখতে খুব ছোট হলেও চোখের মনি দিয়ে আমরা অনেক বৃহৎ বৃহৎ বস্তু যেমন পাহাড় পর্বত সাগর নদী দেখি ঠিক তেমনি নবী রাসুলরা দৈহিক দিক থেকে আমাদের মত মানুষ হলেও নবী রাসুলদের শক্তি বুদ্ধিমত্তা জ্ঞান ও ধৈর্য্য আমাদের থেকে বহু বহু গুন বেশী। তাই নবী রাসুলদের উপর ধৈর্য্যের পরীক্ষাটাও অনেক বেশি হয়। আপনাদের একটু উদাহরন দেই।

একদিন হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লাম তাহাজ্জুদের নামায পড়ছিলেন। আর সেই সময় হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাহাজ্জুদ নামাযের মাঝে হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লাম মোট ৩ বার হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লামের দিকে দৃষ্টিপাত করেছিলেন। তখন আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ফেরেশতাদের কে বলেছিলেন- “ দেখ আমার মকবুল বান্দা সালাতের মাঝে অন্যের দিকে মনযোগ দিচ্ছে। আমার সম্মান ও প্রতিপত্তির কসম, আমি তার চক্ষুদয় উৎপাটিত করে দিব, যদ্বারা সে অন্যের দিকে তাকায় এবং যার দিকে মনযোগ দিয়েছে, তাকে দীর্ঘকালের জন্য তার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিব। [ তথ্যসূত্রঃ তাফসীরে কুরতবী ও তাফসীরে মা আরেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ]

এরপর হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম দীর্ঘ ৪০ বছর উনার পিতার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। এই দীর্ঘ ৪০ বছরে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম একবারও উনার পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের কাছে উনার কোন সংবাদ পৌছাননি। কিন্তু কূপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার পর হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম যখন গোলাম হয়ে মিসরের আযীয মিসরির গৃহে গিয়েছিলেন তখন ঐ আযীয মিসরির গৃহে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লামের সব রকম স্বাধীনতা ও সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান ছিল। হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম কিন্তু চাইলেও পারতেন সেই সময় উনার পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের কাছে উনার খবর পৌছাতে। তারপর জুলেখার ষড়যন্ত্রে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম দীর্ঘ ৭ বছর কারাগারে বন্দী ছিলেন। জেল খানা থেকেও পিতার কাছে খবর পৌছানো কোন কঠিন কাজ ছিল না। কারাগারের রক্ষী বা কারাগার থেকে যারা মুক্তি পায় ঐসব মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমেও হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম উনার পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের কাছে উনার খবর পৌছাইতে পারতেন। তারপর কারাগার থেকে মুক্তি পাবার পর যখন হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম মিসরের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার হন তখনও উনার পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের কাছে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম উনার কোন খবর পৌছাননি। এমনকি উনার সৎ ভাইয়েরা যখন খাদ্যশস্য নেওয়ার জন্য উনার কাছে আসে তখনও হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম উনার সৎ ভাইদের কাছে উনার আসল পরিচয় দেননি। এই যে একটা দীর্ঘ সময় হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম উনার পিতার কাছ থেকে ইচ্ছা করেই বিচ্ছিন্ন ছিলেন এর কারন কি আপনারা জানেন ? এর কারন হল আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ওহীর মাধ্যমে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম কে কঠোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন যে উনি যেন কখনই উনার পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের কাছে উনার কোন খবর না পৌছান। কিন্তু আবার যখন আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ওহীর মাধ্যমে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম কে নির্দেশ দেন উনার পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সাল্লামের কাছে উনার খবর পৌছাইতে তখন কিন্তু ঠিকই হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম উনার পিতাকে মিসরে নিয়ে আসেন। একটু চিন্তা করে দেখুন আমাদের সাধারন মানুষের পক্ষে কি সম্ভব ইচ্ছা করে নিজের পিতা মাতা ভাই বোন থেকে দীর্ঘ ৪০ বছর বিচ্ছিন্ন থাকা। কিন্তু নবী রাসুলদের জীবনে এরকম অনেক কঠিন পরীক্ষাই এসেছে। মক্কী জীবনে শাব ই আবু তালেবের গিরি উপত্যকায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মোট ৩ বছর অবরুদ্ধ ছিলেন। শাব ই আবু তালেবের গিরি উপত্যকার সেই ৩ বছর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহবীদের কে গাছের পাতা খেয়েও জীবন ধারন করতে হয়েছিল। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম কে যখন নমরুদ অগ্নিকুন্ডে ফেলতে যাবে ঠিক সেই সময় জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম কে বলেছিলেন আমি আপনাকে এখন সাহায্য করি। কিন্তু হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন নমরুদের এই অগ্নিকুন্ড থেকে বাঁচার জন্য শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাতায়লার সাহায্য ছাড়া আর কারো সাহায্য উনি নিবেন না। তাইলে আপনারা একটু চিন্তা করে দেখুন হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের ঈমান কোন পর্যায়ে ছিল।

যেহেতু হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামও একজন নবী ছিলেন তাই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম কে নিজ পুত্র ইসমাইল কে উনার সন্তুষ্টির জন্য কুরবানী করতে বলেছিলেন। এরকম কঠিন পরীক্ষা শুধুমাত্র নবী রাসূলদের উপরেই আসে। কিন্তু এখন যদি অন্য কেউ এই রকম স্বপ্ন দেখে যে স্বপ্নের মাঝে কোন ব্যক্তি তাকে বলছে তার ছেলেকে জবাই করতে তাইলে এই স্বপ্ন টার ইসলামী শরীয়তে কোন গুরুত্বই নেই। কারন একমাত্র নবী রাসূলদের স্বপ্নই হচ্ছে ওহী। নবী রাসূল ছাড়া আর কারো স্বপ্নই ওহী নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের দিন হযরত ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বলছিলেন- “ আজ থেকে আমাদের উপর ওহীর দরজা বন্ধ হয়ে গেল। আমাদের উপর আর কোন দিন ওহী নাযিল হবে না। ” এর কারন হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সর্বশেষ রাসূল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর আর কোন নবী রাসুল আসবে না। তাই আর কখনো এই পৃথিবীতে কোন ওহীও নাযিল হবে না। তাই কোন ব্যক্তি যদি স্বপ্ন দেখে যে স্বপ্নের মাঝে কোন ব্যক্তি তাকে বলছে তার ছেলেকে জবাই করতে তাইলে এ স্বপ্নটা হল একটা শয়তানের স্বপ্ন। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের স্বপ্ন আর সাধারন কোন মানুষের স্বপ্ন কখনই এক নয়। কিন্তু মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীন গত ২ দিন আগে কুরবানী নিয়ে তার ঐ status এ হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের স্বপ্ন আর একজন সাধারন ব্যক্তিদের স্বপ্ন কে এক করে ফেলেছেন। নাউযুবিল্লাহ।

মগাচীপ আসিফ মহিউদ্দীন তার কুরবানী নিয়ে ঐ status এ বলেছে যারা গরু জবাই করে আসিফ মহিউদ্দীন নাকি তাদের কে খুব ঘৃণা করে। আচ্ছা আমি আসিফ মহিউদ্দীন কে জিজ্ঞাস করছি আপনি যদি কোন কসাইয়ের পরিবারে জন্ম নিতেন তাইলে কি আপনি আপনার পিতাকেও ঘৃণা করতেন ? সমাজের ৮-১০ টা পেশার মত কসাইও একটা হালাল পেশা। বছরে মাত্র ১ টা দিন আমরা বাধ্য হয়ে কসাইয়ের ভুমিকায় অবতীর্ন হই। এরসাথে কোন নিষ্ঠুরতার সম্পর্ক নেই। আর কুরবানীর ঈদের দিন আমরা নিজেরা কসাই না হলে এত পেশাদার কসাই আমরা কোথায় পাব ? এই আসিফ মহিউদ্দীনের ইসলামের বিরুদ্ধে লেখার মূল কারন হল আমেরিকার ভিসা জোগাড় করা। যদি কখনো এই আসিফ মহিউদ্দীন আমেরিকায় যায় আর আমেরিকা সরকার যদি তাকে বলে এখন থেকে আপনার পেশা হল শিকাগো শহরে কসাই এর চাকরি করা তখন কিন্তু ঠিকই এই আসিফ মহিউদ্দীন শিকাগো শহরে কসাইয়ের চাকরি করবে। এই আসিফ মহিউদ্দীন যে একটা ভন্ড এতে আর কোন সন্দেহ নাই।

আচ্ছা কোরআনে উল্লেখিত আল্লাহ সুবহানাতায়ালার নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের নিজ পুত্র ইসমাইল কে কুরবানী দেয়ার প্রচেষ্টা, এই ঘটনাটা কিন্তু আসিফ মহিউদ্দীন ঠিকই বিশ্বাস করেছে কিন্তু এই কোরআনেই কিন্তু উল্লেখ আছে যে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম একটানা ৪০ দিন নমরুদের অগ্নিকুন্ডে থাকলেও ৪০ দিন পর হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম একদম সুস্থ হয়ে বেঁচে এসেছিলেন, হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের এই নমরুদের অগ্নিকুন্ড থেকে বেঁচে আসার ঘটনাটা কিন্তু আসিফ মহিউদ্দীন আর বিশ্বাস করবেনা। আপনি কোরআনের একটা ঘটনা পুরাপুরি বিশ্বাস করবেন কিন্তু আরেকটি ঘটনাকে একদম অবিশ্বাস করবেন এটা কি ভন্ডামি না। নাকি কোরআনের যেই ঘটনাগুলি নিজেদের পক্ষে যায় শুধু মাত্র সেইগুলিকেই দলীল হিসাবে ব্যবহার করবেন আর কোরআনের বাকী যেই ঘটনাগুলি নিজেদের বিপক্ষে যায় তা অস্বীকার করবেন এটাকি দ্বিমুখী নীতির উদাহরন নয় ? সত্যিকথা বলতে কি ইসলামের মত এই জ্বলজ্যন্ত সত্য কে অস্বীকার করে এই আসিফ মহিউদ্দীনরা এখন এই দ্বিমুখী নীতিকেই তাদের জীবনের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছে। আফসোস বাংলাদেশের নাস্তিকরা এই ভন্ড দ্বিমুখী নীতি বিশিষ্ট আসিফ মহিউদ্দীনকেই তাদের গুরু বানিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের নাস্তিকগুলি যে একটা আবাল এটা আসিফ মহিউদ্দীনের পা চাটার মাধ্যমেই আমি প্রমান পাচ্ছি।

ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব

আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান

আল কোরআনের ব্যাকরণগত সৌন্দর্য্যের কিছু অসাধারন দিক

বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা

ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল

আমাদের মুসলমানদের কেন একটি কেন্দ্রীয় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজন ?

হাতের কাছে রাখার মত কয়েকটি চমৎকার ইসলামী বই

পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথা কে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে

হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ২য় পর্ব

মেসওয়াক করার ফযীলত

আমার উম্মতের মাঝে ৭৩ টি দল হবে এদের মাঝে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে" এই হাদীস টির মূল ব্যাখ্যা টি কি ?

সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল

সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা

বিষয়: বিবিধ

৩২৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File