দূর্গা পূজা ও দূর্গা দেবীর পরিচয় সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ?

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১৪ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:৩৯:৫৭ রাত



বাংলাদেশের হিন্দুরা সব সময় তাদের ভারত মাতা কে নিয়ে খুব গর্ব করে। সারাদিন দিল্লী মিম্বাই এর প্রশংসা করতে করতে বাংলাদেশের হিন্দুদের মুখে ফেনা উঠে যায়। আপনারা জানেন যে বর্তমানে বাংলাদেশের হিন্দুরা খুব ঝাকঝমকের সাথে দূর্গা পূজা পালন করছে। শুধু বাংলাদেশ না ভারতের পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরার হিন্দুরাও খুব ঝাকঝমকের সাথে দূর্গা পূজা পালন করছে। খ্রিষ্টানদের বড়দিনের উৎসব বা যীশু খ্রিষ্টের জন্মদিন যখন সামনে আসে তখন আপনি দেখবেন ভারতের মূল ধারার চ্যানেল গুলি যেমন Star Plus, Zee Tv, sony TV

তাদের বিভিন্ন সিরিয়ালের মাঝে ক্রিস্টমাস, বড়দিন এই কথাগুলি উল্লেখ করে। Star Plus, Zee Tv, sony TV এর সিরিয়াল গুলিতে অভিনয়রত শিল্পীরা ক্রিস্টমাস, বড়দিন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যায়। ক্রিস্টমাস, বড়দিনের সময়টাতে ভারতের বিভিন্ন রিয়েলিটি শোতে আগমন রত মিডিয়া ব্যক্তিরাও যীশু যীশু করে, আর ক্রিস্টমাস, বড়দিনের সময়টাতে যদি নতুন কোন চলচিত্র মুক্তি পায় তাইলে নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত ঐ চলচিত্রের প্রমোশন অনুষ্ঠানে আগত চলচিত্র অভিনেতা অভিনেত্রীরাও সারাদিন যীশু যীশু করে। বিভিন্ন রিয়েলিটি শোর স্টেইজেও ক্রুশ চিহ্ন দেখা যায়। বিভিন্ন রিয়েলিটি শোর কোরিওগ্রাফিদের প্রতি কঠোর নির্দেশ থাকে অবশ্যই যেন অনুষ্ঠান টিতে ক্রিস্টমাস, বড়দিনের আবহ ফুটে উঠে। অর্থ্যাত ক্রিস্টমাস, বড়দিন যে আসছে তা ভারতের Star Plus, Zee Tv, sony TV এর সিরিয়াল আর রিয়েলিটি শো গুলি দেখলেই বুঝা যায়। কিন্তু এই যে এখন বাঙ্গালী হিন্দুদের এত বড় উৎসব দূর্গা পূজা চলছে কই ভারতের Star Plus, Zee Tv, sony TV এর সিরিয়াল গুলি দেখলে তো তা বুঝা যায় না। ঐসব সিরিয়ালের অভিনয়রত অভিনেতারা একবারও তাদের মা দূর্গার কথা বলল না। কিন্তু দেওয়ালী দোল উৎসবের সময় Star Plus, Zee Tv, sony TV এর সিরিয়াল গুলির অভিনেতারা রঙ মেখে তো সারা শরীর ভরিয়ে ফেলে।

ঠিক এইসময় ভারতে যে রিয়েলিটি শো গুলি হচ্ছে সেগুলিতেও কোন দূর্গা পূজার আবহ ফুটে উঠছে না। আসলে দিল্লী মুম্বাই গুজরাটের হিন্দুরা বাঙ্গালী হিন্দুদের কোন জাতের মধ্যেই ধরে না। যদি তারা একটুই বাঙ্গালী হিন্দুদের কোন জাতের মধ্যে ধরত তাইলে ঠিকই ভারতের মূল ধারার চ্যানেল গুলিতে একটু হলেও দূর্গা পূজার আবহ ফুটে উঠত। আসলে দূর্গা পূজার কথা তো হিন্দু ধর্মেই নাই। এই ব্রিটিশ পিরিয়ডের সময় শুধুমাত্র বাংলা অঞ্চল গুলিতে দূর্গা পূজা চালু হয়। দক্ষিন ভারতের হিন্দুরা দূর্গার নামও শুনে নাই।

যাই হোক আমরা এখন দেখি দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু এইরকম নাম না জানা বহু দেব-দেবীকে যে হিন্দুরা পূজা করে এই সব দেব-দেবীদের সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ?

আল-কোরআনের সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা বলেছেন আমি জ্বীন ও মানুষ উভয়ের মাঝেই নবী প্রেরন করেছি। মানব জাতির পৃথিবীতে বসবাস করার অনেক আগে থেকেই জ্বীনরা এই পৃথিবীতে বসবাস করত। বুখারী মুসলিম শরীফের অনেক হাদীসেই হযরত আদম আলাইহিস সাল্লামের পৃথিবীতে আগমণের পূর্বে জ্বীন জাতির অনেক ঘটনা পাওয়া যায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তখন জ্বীনদের মাঝে অনেক নবী রাসুল এসেছিল কারন মানুষ ও জ্বীন উভয়েরই আখিরাতে হিসাব হবে। এখন আপনি দেখবেন দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব উনাদের আকার আকৃতি হল অনেকটা হাতির মত শূড়, কারো অনেক গুলি হাত পা আবার কারো ৪ টা মুখ।

মানুষের কখনো এরকম আকৃতি হতে পারে না। তবে জ্বীনদের এরকম আকৃতি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারন জ্বীনদের আকৃতি সম্পর্কে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় যে দলীল টা পাওয়া যায় সেখানে উনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলেছিলেন বিভিন্ন বিচিত্র আকৃতির প্রানীকে আপনার কাছে আসতে দেখেছি। মুসনাদে আহমদ হাদীস গ্রন্থ ও বুখারী মুসলিমে লায়লাতুল জ্বীনের যে ঘটনা গুলি পাওয়া যায় সেইখানে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত আছে যে-“ একবার আহলে সুফফার লোকদের মধ্যে সকলকেই কেউ না কেউ খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেছে। শুধু আমি একা থেকে গেছি। আমাকে কেউ নিয়ে যায়নি। শুধু আমি একা মসজিদে নব্বীতে বসে ছিলাম। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে এলেন। তার হাতে ছিল খেজুরের ছড়ি। তা দিয়ে তিনি আমার বুকে মৃদু আঘাত করলেন এবং বললেন আমার সাথে চলো। এরপর আমরা রওয়ানা হলাম। যেতে যেতে আমরা মদীনার বাকীয়ে গরক্বদ পর্যন্ত পৌছে গেলাম। ওখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের ছড়ি দিয়ে একটা গোল রেখা টানলেন এবং আমাকে বললেন এর মধ্যে বসে যাও, আমি না আসা পর্যন্ত এখানেই থাকবে। এরপর তিনি চলতে শুরু করলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে খেজুড় গাছের ঝাড়ের ভিতর দিয়ে হেটে যেতে দেখলাম। শেষ পর্যন্ত একটা কালো কুয়াশা ছেয়ে এসে উনার ও আমার মাঝে যোগাযোগ কেটে গেল। আমি নিজের জায়গায় বসে শুনতে পাচ্ছিলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছড়ি ঠুকছিলেন এবং বলছিলেন “বসে যাও, বসে যাও” অবশেষে রাত পেরিয়ে সকাল হতে শুরু করল। কুয়াশা উঠে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন তুমি যদি এই বৃত্ত থেকে বের হতে তাইলে জ্বীনরা তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেত। আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাস করলেন তুমি রাতে কি দেখেছিল ? আমি বললাম বিভিন্ন বিচিত্র আকৃতির প্রাণি কে আপনার কাছে আসতে দেখেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ওরা ছিল নসীবাইনের জ্বিনদের প্রতিনিধি দল। ওরা আমার কাছে কোরআন শিখতে এসেছিল। "

এখন আপনারা লক্ষ্য করুন দূর্গা কালি লক্ষী শিব গণেশ মহাদেব কার্তিক কৃষ্ণ বিষ্ণু উনাদের আকার আকৃতি গুলিও কিন্তু বিচিত্র আকৃতির। আরবের কাফেররা যে লাত উজ্জার পূজা করত হাদীস শরীফেও কিন্তু বলা আছে যে তারা জ্বীন ছিল। আবার অনেক জ্বীন পরবর্তী তে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনলেও তাদের মানুষ অনুসারীরা আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ঈমান আনে নি। এই জাতীয় বর্ননাও বিভিন্ন রেওয়াতে পাওয়া যায়। তাই আলেমদের মতে হিন্দুরা যাদের পূজা করে তারা সবাই হল দুষ্ট জ্বীন। আর হিন্দুদের মা কালী কিন্তু ডাকাতদের দেবী। তাই হিন্দুদের দেব দেবী গুলি যে প্রত্যেকটা এক একটা শয়তান জ্বীন এতে আর কোন সন্দেহ নাই।

তাফসীরে জালালাইনের সম্মানিত লেখক আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহ আলাইহির জ্বীন জাতিকে নিয়ে লেখা একটা বিখ্যাত বই যার নাম "লাক্বতুল মারজানা ফি আহকামুল জিন্নাহ" এই বইটাকে বলা হয় জ্বীন জাতির বিশ্বকোষ। এই বইটির বাংলা অনুবাদ হয়েছে "জ্বীন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস" এই বইটির বাংলা অনুবাদ ঢাকার মদীনা পাবলিকেশন্স ৩৮/২, বাংলাবাজার, ঢাকা থেকে বের হয়েছে। এই বইটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন যে জ্বীনদের সমাজ কাঠামো মাতৃতান্ত্রিক। তাই আরবের লাত উজ্জারাও যেমন মহিলা জ্বীন ছিল ঠিক তেমনি ভারতের দূর্গা কালী লক্ষী উনারাও কিন্তু মহিলা জ্বীন। মজার ব্যাপার হল জাহেলিয়াতের যুগে আরবের কাফেররা যেইসব জ্বীনের পূজা করতো তারা কিন্তু ঠিকই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈমান এনেছিল কিন্তু ঐ জ্বীন পূজারী কাফেররা আর মুসলমান হয়নি। এই ঘটনাটা নিয়ে পরবর্তীতে কোরআনে ওহীও নাযিল হয়েছিল। জ্বীনদের আয়ুস্কাল সাধারনত ১০০০ থেকে ২০০০ বছর হয়। সেই হিসাবে দূর্গা কালী লক্ষী এই দুষ্ট জ্বীন গুলি বহু আগেই মারা গেছে। হিন্দুরা এখন যেই দুষ্ট জ্বীন গুলির পূজা করছে এগুলি হচ্ছে সব মৃত জ্বীন। আমাদের উচিত হিন্দুদের কে তাওহীদের দাওয়াত দেয়া যেন হিন্দুরা বেশ্যা শয়তান অযাচার প্রিয় মৃত জ্বীন দের উপাসনা বাদ দিয়ে দ্বীন ইসলামের ছায়াতলে আসে।

ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব

আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান

আল কোরআনের ব্যাকরণগত সৌন্দর্য্যের কিছু অসাধারন দিক

বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা

ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল

আমাদের মুসলমানদের কেন একটি কেন্দ্রীয় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজন ?

হাতের কাছে রাখার মত কয়েকটি চমৎকার ইসলামী বই

পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথা কে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে

হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ২য় পর্ব

মেসওয়াক করার ফযীলত

আমার উম্মতের মাঝে ৭৩ টি দল হবে এদের মাঝে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে" এই হাদীস টির মূল ব্যাখ্যা টি কি ?

সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল

সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা

বিষয়: বিবিধ

৬৯১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File