বাস্তব অভিজ্ঞতাঃ ব্লাড সুগার বেশি মানেই ডায়াবেটিস নয়
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ০২ মে, ২০১৬, ০৪:৫৩:১৪ বিকাল
বংশে ডায়াবেটিস আছে বিধায় মাঝে মাঝে সতর্কতাবশত সুগার টেস্ট করতাম স্থানীয় ফার্মেসীতে। কখনো সেটা ৫ এর বেশি হতো না। কিন্তু গতবছর একদিন সুগার টেস্ট করে চক্ষু ছানাবড়া! ১১.৫ দেখাচ্ছে রিডিং। ভাবনায় পড়লাম। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরপর কয়েকদিন ফার্মেসীতে টেস্ট করলাম- খালি পেটে ও ভরা পেটে। রিডিং যা আসছিল ৮ হতে ১২ এর মধ্যে। একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম। এরপর ল্যাব টেস্ট এর জন্য গেলাম ডায়াবেটিস হাসপাতালে। সেখানে যথারীতি Fasting Blood Sugar এবং ৭৫ মিলি গ্লুকোজ খাওয়ার ২ ঘন্টা পর Blood Sugar টেস্ট করার পর ডাক্তার নিশ্চিত করলেন আমার ডায়াবেটিস। একটু ভাবনাতেই পড়ে গেলাম। তবে ডাক্তার সাহেব একটু অভয় দিলেন-“নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস এর সাথে সাথে অন্যান্য রোগ হতেও আপনি মুক্ত থাকবেন”। তথাস্তু!
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ এবং নিয়মানুবর্তিতা চলছিল। ৬ মাস পর আবার সুগার টেস্ট করলাম (ল্যাবে)। এবার রিপোর্ট আসলে খালিপেটে ৪ এবং গ্লুকোজ পানের পর ৬.৮। ভাবলাম হয়তো নিয়ম ও ঔষধ চলাতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অাছে। সপ্তাহে অন্তত একবার করে ফার্মেসীতেও টেস্ট করছিলাম। ৪-৬ এর বেশি কখনো সুগার এর মাত্রা হয় নি। এবার ঔষধ এবং খাবারে নিয়ম মেনে চলাটাও বন্ধ করে দিলাম। ৫ মাস পর আবারো ল্যাব টেস্ট করলাম। না, ডায়াবেটিস বলার মতো সুগার নেই রক্তে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য এক মাসের মাথায় আরো দু’বার টেস্ট করলাম ভিন্ন ভিন্ন হাসপাতালে। না, এবারো নেই। এবার একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হলাম। তিনি বললেন, “আপনার কখনো ডায়াবেটিস ছিল না। হয়তো কোন কারণে সাময়িকভাবে রক্তে সুগার এর পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। আপনার গত এক বছরের সকল প্রেসক্রিপশন দেখালে হয়তো বুঝতে পারতাম কোন ঔষধের কারণে এটা ঘটেছে কিনা।” সকল চিকিৎসাপত্র জোগাড় করে আবারো গেলাম ঐ ডাক্তারের কাছে। অভিজ্ঞ ডাক্তার সহজেই আবিষ্কার করলেন, সুক্রালফেট নামক একটি ব্যথানাশক ঔষধের প্রভাবেই আমার রক্তে সাময়িকভাবে সুক্রোজ তথা সুগার এর পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। উল্লেখ্য যে, একজন খ্যাতনামা মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে সুক্রালফেট গ্রুপের ঔষধটি দীর্ঘ ২ মাস ধরে সেবন করেছিলাম দৈনিক ৬ টি করে ওরাল আলসার নিরাময়ের জন্য। ভাল ফলও পেয়েছি। সেটিই ছিল রক্তে সাময়িকভাবে সুক্রোজ বা চিনি বেড়ে যাওয়ার কারণ।
আলহামদুলিল্লাহ, ডায়াবেটিস নেই। তবে রোগ নিরূপণের জন্য ডাক্তারদের আরো সতর্কতার পরিচয় দেয়া উচিত। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে রোগীর পূর্বকার রোগ এবং ড্রাগ সেবনের ইতিহাস পর্যালোচনা করতে হবে। আমাদের বেশিরভাগ ডাক্তার অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক হওয়ায় তারা রোগীকে যথেষ্ট সময় দেন না। ফলে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় হয় না এবং আমার মতো সুস্থ মানুষকেও তারা রোগী বানিয়ে দেন।
বিষয়: বিবিধ
২৯৫৭ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ডাক্তারদের কাজই হল রোগীকে ভয় দেখিয়ে বারবার উক্ত ডাক্তারের কাছে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা।
আহারে, কত কি খেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু খেতে গিয়ে একবার হাত সামনে আগায় তো তিনবার পিছিয়ে আসে!
আরো বলেন যে গলব্লাডার এ পাথর যে কোন সময় হতে পারে। কোন সমস্যা হলেই সেটা চিকিৎসার দরকার হয়। কিন্তু অনেক ডাক্তার স্রেফ ওষুধ কোম্পানির কমিশন আর সার্জারি করার জন্য নিরোগ কেও রোগি বানিয়ে দেয়!!
আমি বলিলাম .।
মন্তব্য করতে লগইন করুন