মেঘ পাহাড়ের দেশে (চতূর্থ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ১২ আগস্ট, ২০১৫, ০২:২৭:১৭ দুপুর
পূর্ববর্তী পর্বের লিংকঃ মেঘ পাহাড়ের দেশে (তৃতীয় পর্ব)
দার্জিলিং শহরে আসার পথেই দেখেছিলাম বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলষ্টেশন ‘ঘুম’ ও ‘টয়ট্রেন’। গাড়ি হতে দেখেতো আর তৃপ্তি মিটে না। এবার তাই রওনা করলুম ভালভাবে দেখবো বলে। এটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ এর অংশ।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেল পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং শহরের মধ্যে চলাচলকারী একটি 2 ft (৬১০ mm) ন্যারো গেজ রেল পরিষেবা। এই রেল টয় ট্রেন নামে সমধিক পরিচিত। দার্জিলিং হিমালয়ান রেল ভারতীয় রেল কর্তৃক পরিচালিত।
১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ৮৬ কিলোমিটার (৫৩ মাইল)। এর উচ্চতার মাত্রা শিলিগুড়িতে ১০০ মিটার (৩২৮ ফুট) এবং দার্জিলিঙে ২,২০০ মিটার (৭,২১৮ ফুট)। আজও এটি বাষ্পচালিত ইঞ্জিনে চলে, গতি বেশ মন্থর।
আমাদের দেশের শিশুপার্কের ট্রেন এর চেয়ে সামান্য বড় দেখতে। তবে বেশ সুন্দর ও ঝকঝকে।
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো দার্জিলিং হিমালয়ান রেলকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দার্জিলিং ও ঘুমের একাধিক সেনা ক্যাম্পে রসদ সরবরাহের ক্ষেত্রে এই রেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।[৩]
স্বাধীনতার পর ভারতীয় রেল দার্জিলিং হিমালয়ান রেল অধিগ্রহণ করে নেয় এবং ১৯৫৮ সালে এই রেল উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অংশে পরিণত হয়। ১৯৬২ সালে শিলিগুড়ি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ৪ মাইল (৬ কিলোমিটার) পথ নতুন ব্রড গেজ লাইনের মাধ্যমে যুক্ত হয়। ১৯৮৮-৮৯ সালে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময় এই রেল ১৮ মাস বন্ধ ছিল। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে। অস্ট্রিয়ার সেমারিং রেলওয়ের (১৯৯৮ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য মর্যাদাপ্রাপ্ত) পর এই রেল উক্ত মর্যাদা প্রাপ্ত দ্বিতীয় রেলপথ।
টয়ট্রেন দেখা শেষে চা বাগান ঘুরলাম একটু। মার্কেট এর তুলনায় চা বাগানে চাপাতা বেশ সস্তায় মিলে।
দার্জিলিং এর চা বাগান-
চা বাগান দেখা শেষে আবার গেলাম মলচত্বর। ঐ স্থানটি আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। সময়াভাবে রকগার্ডেন যাওয়া হয় নি। হোটেলে ফিরে ফেরার প্রস্তুতি নিলাম। এবার গন্তব্য কোলকাতা। তবে যেতে হবে শিলিগুঁড়ি হয়েই।
ব্যাগ গুছিয়ে শিলিগুঁড়ির উদ্দেশ্যে জীপে চড়ে বসলাম। জীপের এবারকার ড্রাইভার নেপালী, নেপালী আর হিন্দী খুব ভাল বলে, বাংলা এক আধটু বুঝে, ইংরেজী একদম না।
ভোর চারটার আগে উঠেছিলাম বলে ভাবলাম গাড়িতে উঠে একটু ঘুম দেব। কিন্তু তা আর হলো না। ড্রাইভার এর পাশে বসল উজ্জ্বল বর্ণের শ্লিম ফিগারের এক আল্ট্রামডার্ন তরুণী, গায়ে হাতাকাটা জামা। প্রথমে আমি বুড্ডিস্ট বা গোর্খা ভেবে ভুল করলাম। ড্রাইভার গাড়ি চালু করেই হিন্দী হাই মিউজিক এর গান ছেড়ে দিল হাই ভল্যুমে। মেয়েটিও মাথা হেলেধুলে এনজয় করছিল বেশ। এদিকে আমার করছে মাথাব্যথা। বিরক্তি চেপে একঘন্টা পার করলুম।........
(চলবে....)
পরবর্তী পর্বঃ দার্জিলিং টু শিলিগুঁড়ি টু নিউজলপাইগুঁড়ি।
বিষয়: সাহিত্য
১৫৫৬ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ট্রেন গুলো দেখে রাজেশ খান্না-শর্মিলী ঠাকুর অভিনীত হিন্দী ছবি '' আরাধনা''র সেই বিখ্যাত গানের কথা মনে পড়ে গেল ।
এমনই একটা স্পটে গানটি চিত্রায়িত হয়েছিল।
সাবধান, ভাবী যেন না শোনে!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন