মেঘ পাহাড়ের দেশে (তৃতীয় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ১১ আগস্ট, ২০১৫, ০২:৫৯:৪০ দুপুর
দ্বিতীয় পর্বের লিংকঃ মেঘ পাহাড়ের দেশে (দ্বিতীয় পর্ব)
মল মার্কেট হতে কিছু কেনাকাটা সারলাম। গ্রীনটি ও ব্ল্যাক টি মিলে কয়েকজাতের দার্জিলিং টি নিতেও ভুল করি নি। দার্জিলিং শহর সন্ধ্যা নামার প্রায় সাথে সাথে একটু নীরব হয়ে যায়, বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ দোকানপাট। তখন কিছুটা ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। সন্ধ্যার পর তাই বাধ্য হয়ে মল চত্বর হতে ফিরতে হলো। ইসলামিয়া রেঁস্তোরায় রাতের খাবার সেরে আঞ্জুমানে ইসলামিয়া মসজিদে এশার নামায শেষে পরবর্তীদিনের ট্যুর প্ল্যান করছি। কতকিছু দেখা বাকী-টাইগার হিল, বাতাসিয়া লুপ বা গোর্খাল্যান্ড, ঘুম ষ্টেশন.......। ৮০০ রুপিতে একটি জীপ রিজার্ভ করে রাখলাম, সুঠাম পাঠান ড্রাইভার।
হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় যেতেই ভ্রমণক্লান্তিতে এলিয়ে পড়লাম, রাজ্যের ঘুম নেমে এল চোখে। তবে ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে রাখতে ভুলি নাই। টাইগার হিল যেতে হলে যে ভোর ৪টায় উঠতে হবে।
ভোর সোয়া ৪টায় হোটেলের গেইট এ দাঁড়ালাম। একটু পরই পাঠান ড্রাইভার তার জীপ নিয়ে হাজির। বেরিয়ে পড়লাম টাইগার হিলের উদ্দেশ্যে সূর্যোদয় দেখবো বলে।
টিকেট কেটে টাওয়ারে ওঠে অপেক্ষা করছি। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল, আগের দিন বৃষ্টি হলেও আজ আকাশ পরিষ্কার। সূর্যোদয় দেখতে কোন বিঘ্ন হবে না। পাহাড় আর মেঘমালার মাঝে মনোমুগ্ধকর সূর্যোদয় দেখলাম। সাথে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে মনটা জুড়িয়ে গেল।
টাইগারহিলে সূর্যোদয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়।
কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয় পর্বতমালার পর্বতশৃঙ্গ। মাউন্ট এভারেস্ট ও কে২ এর পরে এটি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ যার উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার (২৮,১৬৯ ফুট)। এইটি ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত। ঐ যে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা-
টাইগিরহিল দেখা শেষে জীপ নিয়ে চললাম বাতাসিয়া লুপ বা গোর্খাল্যান্ড দেখার উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন যুদ্ধে নিহত নেপালী গোর্খা সৈনিকদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত স্তম্ভ এটি। দার্জিলিং এ প্রচুর নেপালী গোর্খার বসবাস। হিন্দী, বাংলার পাশাপাশি নেপালী ভাষাভাষীও প্রচুর এখানে। যারা পর্যটকদের সার্ভিস দেয়, যেমন রেন্ট এ কার সার্ভিস, হোটেল রেঁস্তোরা সার্ভিস তারা তিনটি ভাষাই টুকটাক জানে।
বাতাসিয়া লুপ হতেও দার্জিলিং শহরটাকে খুব সুন্দরভাবে দেখা যায়। এছাড়া এখান হতে দূরবীন এর মাধ্যমে নেপাল ও চীন এর বেশ কিছু সুন্দর স্থাপনা ও পর্বতশৃঙ্গ দেখা যায়। কাঞ্চনজঙ্ঘাটাকে দূরবীন এ দেখলে খুব কাছের মনে হয়।
গোর্খাল্যান্ড দেখা শেষে ছুটলাম বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলষ্টেশন ‘ঘুম’ ও ’টয়ট্রেন’ দেখার উদ্দেশ্যে।
(চলবে....।)
বিষয়: সাহিত্য
১৪৯৬ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন