মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ব এবং একটি বাস্তব গল্প
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ১১ মে, ২০১৫, ০২:৫৪:৫৮ দুপুর
মাকে আমরা সবাই খুব ভালোবাসি। এই নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। তবে মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে আমরা কতটা সচেতন? মা দিবস নিয়ে আবেগী অনেক স্টাটাস (অনেকক্ষেত্রে সচিত্র) পড়লাম। দিবসের ফ্রেমে কি মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যকে সীমাবদ্ধ করা যায়?
এক বন্ধুর গল্প বলি। বন্ধুর বাবা উচ্চশিক্ষিত ছিলেন এবং ঢাকায় ভালো একটি ব্যবসা করতেন। সেই সূত্রে তার শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। এক সময় তার বাবা ব্যবসায় বড় ধরনের লস করে সপরিবারে গ্রামে চলে গেলেন। বন্ধুটি তার তিন সন্তানের মাঝে মেঝ। গ্রামে গিয়ে স্থানীয় কলেজ হতে কোনরকমে ডিগ্রীটা পাশ করে ঢাকায় ছোটখাট একটা চাকরিতে জয়েন করলো। বড়ভাই ও ছোটভাই ইন্টারমিডিয়েট পাশ বেকার। গ্রামের বাড়িতে জায়গাজমি হতে সামান্য আয়, বাবার টুকটাক আয় আর বন্ধুর আয়ে টেনেটুনে সংসার চলতো। হঠাৎ করে বন্ধুর বাবা মারা গেলেন। বাবার টুকটাক আয়ও বন্ধ হয়ে গেল। বন্ধুর উপর পুরো সংসারের ভার। অন্য দুইভাইও এসময় ছোটখাট চাকুরি শুরু করলো। কিছুদিন পর বন্ধুটি চাকুরির পাশাপাশি ব্যবসাও করতে লাগলো। আবার সপরিবারে তারা ঢাকায় চলে এল, একটি বাসায় মাকে নিয়ে উঠলো তারা।
একসময় বন্ধুটি চাকুরি ছেড়ে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হয়ে গেল। তবে বন্ধুটি পরিবারের সবাইকে ঝাড়ির ওপর রাখতো বেশ। ভাবটা এমন- আমার আয় বেশি, আমার দয়ায় তোমরা আছো, তাই আমার কথামতোই চলতে হবে।
একসময় আমার বন্ধুটি এক শাহবাগী টাইপ মেয়ের খপ্পড়ে পড়লো। তার গর্ভধারিণী মাতো কেঁদেকেটে অস্থির, কোনভাবেই এই মেয়েকে বউ বানাবেন না। কিন্তু ছেলের হুমকি আর জিদের কাছে পরাজিত হয়ে মানতে বাধ্য হলেন, বিয়ে হয়ে গেল।
বিয়ের অতি অল্প কিছুদিনের মধ্যে বউয়ের সুপরামর্শে (!) মা এবং ভাইদের বাসা হতে বের করে দিলেন। একই শহরে বসবাস করেও ছেলের সাথে থাকার সৌভাগ্য হলো না মায়ের। ব্যক্তিগতভাবে এই কাজটি করতে তাকে আমি খুব করে নিষেধ করেছিলাম।
বন্ধুটির সেই জৌলুস নেই আর এখন। ব্যবসায় লালবাত্তি জ্বলেছে, সঞ্চয় ভেঙ্গে খেল কিছুদিন। এখন আবার মোটামুটি একটা চাকুরি।
গতকাল বন্ধুটি ‘মা দিবস’ উপলক্ষে মায়ের সাথে তোলা ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছে। তা দেখে আমার ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে এক চিলতে হাসি।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে রব্বুল কারিমের কাছে দোয়া "ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলুব ছাব্বিত ক্বলবি আলা দ্বীনিক"।
প্রচুর ভয় হয় । আবার দোয়া করি যেনো এমন অবস্থা আমার কোনদিনো না হয়। আমীন ইয়া রব্ব।
পরিশেষে সুন্দর লিখনীর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
কারন এই একদিন তারা মা এর খবর নেয়!!
যাজাকাল্লাহ খাইরান।
বন্ধুর ঘটনাটি জেনে খারাপ লাগলো। বন্ধুর বউও একদিন শ্বাশুড়ি হবে ! তখন বুঝবে মায়ের কষ্ট!
শুকরিয়া শেয়ার করার জন্য!
মন্তব্য করতে লগইন করুন