নীরবেই চলে গেলেন সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী জামাল উদ্দীন আহমদ স্যার

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ১৮ জানুয়ারি, ২০১৫, ১০:৫৩:২৫ সকাল

খবরটি প্রথম শুনি ৩রা জানুয়ারী রাত এগারোটার দিকে এক সিএ বন্ধুর এসএমএস এর মাধ্যমে। ঐদিনই মাত্র ঘন্টাখানেক আগে বারিধারায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী জামাল উদ্দীন আহমদ এফসিএ।



দোয়া পাঠ করলাম, এরপর নষ্টালজিক হয়ে গেলাম। স্যারের সাথে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের স্মৃতি। স্যার ছিলেন আমার সরাসরি শিক্ষক। খুব মনে পড়ে প্রতিবছর পিকনিক এর সময় স্যার সবাইকে তার গার্মেন্টস এ তৈরি সুন্দর সোয়েটার দিতেন সকল ছাত্র ও আমন্ত্রিত অতিথিদের। ফার্মের সকল সাবেক ছাত্রও আমন্ত্রণ পেত বার্ষিক Picnic, Fruits Festival ও নানাবিদ অনুষ্ঠানে।

১৯৫৪ সালে সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রাপ্ত জামাল উদ্দিন আহমদ পরবর্তীতে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস হতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ ও ১৯৯২ সালে দুই মেয়াদে বাংলাদেশের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের সংগঠন ICAB এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া South Asian Federation of Accountant (SAFA) এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেদিন শাহাদাত বরণ করেন সেদিন জামাল উদ্দীন আহমদ স্যারও সার্কিট হাউজে ছিলেন। ভাগ্যগুণে তিনি সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন ঘাতকের বুলেট হতে।

স্যারের জন্মস্থান ও নির্বাচনী এলাকা ছিল চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি। সেখানে একসময় উত্থান ঘটে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও সোনা চোরাচালানী রফিকুল আনোয়ার তথা সোনা রফিক এর। অনেক চেষ্টা করেও এ জনপদকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে পারেন নি জামাল স্যার। সন্ত্রাসীদের মত অতটা নীচেও নামতে পারেন নি সর্বমহলে ভদ্র, উচ্চশিক্ষিত ও সজ্জন নামে পরিচিত এই ব্যক্তিত্ব। শেষ বয়সে এস তাই রাজনীতিটাকেই বিদায় জানিয়ে দেন। নিজের ব্যবসা আর চার্টার্ড একাউন্ট্যান্সি পেশা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন।

রোববার বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা, চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মাসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা এবং তারই প্রতিষ্ঠিত গুলতাজ মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাজা ও নিজ বাড়ির প্রাঙ্গণে শেষ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

ফটিকছড়ির দৌলতপুরে নিজ গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন জামাল উদ্দিন আহমদ।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাআলা স্যারকে জান্নাত নসীব করুন।

বিষয়: বিবিধ

১০৯৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300658
১৮ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:০০
ইয়াফি লিখেছেন : জামাল উদ্দীন সাহেবের এলাকার একজন লোক খুব দুঃখ করে বলেছিলেন তাঁর মত সম্মানিত মানুষের বিপক্ষে রফিকুল আনোয়ার ওরফে সোনা রফিক সাহেব কিভাবে নির্বাচনে দাঁড়ায়! কারণ জামাল উদ্দীন সাহেব এত উঁচু মর্যাদার লোক ছিলেন তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বির কোন তুলনাই চলেনা। আল্লাহ্ জামাল উদ্দীন সাহেবকে জান্নাত নসীব করুন!
১৮ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:৩২
243268
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আমীন।
300693
১৮ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৪২
শেখের পোলা লিখেছেন : আল্লহ তাঁর গুনাহ মাফ করে তাঁকে জান্নাত দান করুক৷৷
300716
১৯ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:০৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
তবে একটি তথ্য নিয়ে কিছু প্রশ্ন আছে তিনি সম্ভবত সেই রাতে ঘটনার সময় সার্কিট হাউসে ছিলেন না। তবে অনেক রাত পর্যন্তই ছিলেন।
১৯ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:০৭
243315
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আমিও অবশ্য নিশ্চিত নই। শুনেছিলাম একটি দলীয় বিবাদ নিরসনের জন্য প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেদিন চট্টগ্রাম এসেছিলেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File