মহাগ্রন্থ আল কোরআনের অসাধারণ কিছু অলৌকিকত্ব (পর্ব ৪)

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৪৯:৪৬ সকাল

প্রথম তিনটি পর্বের লিংকঃ http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/1980/ohidul/39148#181685

সূরা ‘মোমেন’ থেকে সূরা ‘আহক্বাফ’ পর্য্ন্ত এই ৭ টি সূরার শুরুতে রয়েছে একই ‘মোকাত্তায়াত’-হা এবং মীম।ধারাবাহিক এ সাতটি সূরায় হা এবং মীম –এ দু’টি অক্ষর মোট ২১৪৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।

হরুফে মোকাত্তায়াত এর মধ্যে হা-ত্বোয়া-সীন এবং ত্বোয়া, সীন, মীম বর্ণগুলোও রয়েছে। এগুলো রয়েছে সূরা মারইয়াম, ত্বোয়াহা, শোয়ারা, নামল এবং কাছাছে। এ পাঁচটি সূরায় মোকাত্তায়াতসমূহ মোট ১৭৬৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে, যা ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়।

সূরা ‘ইউনূস’ এবং সূরা ‘হুদ’ শুরু হয়েছে আলিফ লাম রা এই মোকাত্তায়াত দিয়ে। সূরা দুটিতে হরফ তিনটি ব্যবহার হয়েছে মোট ২৮৮৮ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।

সূরা ইউসূফ, সূরা ইবরাহীম এবং সূরা আল হেজরেও একই মোকাত্তায়াত রয়েছে অর্থাৎ ‘আলিফ’, ‘লাম’, ‘রা’। সূরা তিনটিতে এ হরফগুলোর ব্যবহার হচ্ছে এমনঃ সূরা ইউসূফ, সূরা ইবরাহীম ও সূরা আল হেজরে অক্ষরগুলো এসেছে যথাক্রমে ২৩৭৫ বার, ১১৯৭ বার এবং ৯১২ বার অর্থাৎ এগুলোর প্রতিটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।

সূরা রাদ এর মোকাত্তায়াত ‘আলিফ, লাম, মীম, রা’। এতে আছে ৪ টি অক্ষর। এই ৪ টি অক্ষর এ সূরাটিতে মোট ১৪৮২ বার এসেছে, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।

মোকাত্তায়াত সম্বলিত সর্বশেষ সূরা হচ্ছে সূরা ‘আল কালাম’। এর শুরুতে মাত্র একটি হরফ বিশিষ্ট মোকাত্তায়াত ব্যবহৃত হয়েছে-‘নূন’। এই সূরায় এ অক্ষরটি ১৩৩ বার এসেছে যা নিঃসন্দেহে ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।

শুধু ‘ক্বাফ’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে সূরা ক্বাফ। এখানে ক্বাফ অক্ষরটি গণনায় ঠিক রাখার জন্য আল্লাহ কি ব্যবস্থা নিয়েছেন তা লক্ষ্যণীয়।

আল্লাহতা‘আলা কোরআনে ১২ টি জায়গায় লুত সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করেছেন এবং প্রতিবারেই তিনি তাঁদের সম্বোধন করেছেন ‘ক্বওমে লুত’ বলে। কিন্তু সূরা ক্বাফ এর ১৩ নাম্বার আয়াতে এসে ‘কওমে লুত’ না বলে বলা হয়েছে ‘ইখওয়ানুল লুত’, যা অর্থের দিক দিয়ে একই। ব্যতিক্রম করার কারণ হচ্ছে এখানে ‘কওমে লুত’ শব্দ ব্যবহার হলে ক্বাফ এর ব্যবহার হতো ৫৮ টি যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য হতো না। সে কারণে একই অর্থবিশিষ্ট ‘ইখওয়ানুল লুত’ শব্দ ব্যবহার করে ক্বাফ এর সংখ্যা ৫৭ তে সীমিত রাখা হয়েছে যেন তা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য হয়।

‘ছোয়াদ’ অক্ষরটি তিনটি সূরার মোকাত্তায়াতে ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে সূরা আরাফ, মারইয়াম এবং ছোয়াদ। এ তিনটি সূরাতে ছোয়াদ এসেছে মোট ১৫২ বার যা ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়।

এখানে আল্লাহতা‘আলার গাণিতিক ফর্মূলা মিলানোর জন্য যে বিস্ময়কর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা বেশ লক্ষ্যণীয়। আরবীতে ‘বাছতাতান’ শব্দের বানান লেখা হয়-‘বা’, ‘সীন’, ‘ত্বোয়া’ ও ‘তা’ দিয়ে; সূরা বাকারার ২৪৭ নাম্বার আয়াতে এই শব্দটি এ বানানেই এসেছে। কিন্তু সূরা আরাফ এর ৬৯ নং আয়াতে ‘বাছতাতান’ শব্দের বানান এসেছে ‘বা’, ‘ছোয়াদ’, ‘ত্বোয়া’ ও ‘তা’ দিয়ে, এর সাথে ‘ছোয়াদ’ এর উপর ছোট্ট করে একটা ‘সিন’ বসিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে করে ‘বাছতাতান’ শব্দের কোনো অর্থের তারতম্য ঘটেনি। এটা না করা হলে এ সূরা তিনটিতে ‘ছোয়াদ’ এর সংখ্যা একটি কম হয়ে যেতো এবং তা ১৯ দিয়ে ভাগ করা যেতনা। আল্লাহর কি অসীম কুদরত!

তথ্যসূত্রঃ আল কোরআন একাডেমী, লন্ডন।

চলবে.............।

বিষয়: বিবিধ

১২৭৮ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

181687
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:৫২
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : Rose Roseধন্যবাদ Rose Rose
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:০০
134303
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : স্বাগতম। Happy Happy Happy
সাথে থাকুন।
181708
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:১১
নেহায়েৎ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খাইরন। চলতে থাকুক। ইনশা আল্লাহ পুরোটা সংগ্রহ করে রেখে দিব।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৭
134450
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : ইনশা আল্লাহ
181732
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:০৮
বিন হারুন লিখেছেন : আল্লাহ সবচেয়ে বড়. الله اكبر
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৭
134449
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : الله اكبر
181896
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৩
সজল আহমেদ লিখেছেন : চালিয়ে যান সাথেই আছি।যাযাকাল্লাহু খাইরান।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৬
134523
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : বারাকামুল্লা ফিক
182604
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৪
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৪
135057
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File