রুখে দাঁড়াও ক্রিকেট নিয়ে ষড়যন্ত্র
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০২:১৮:০২ দুপুর
মনে পড়ে গত এশিয়া কাপের ফাইনালে প্রায় জিতে যাওয়া ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হেরে সাকিব মুশফিকদের কান্না? সে আবেগ স্পর্শ করেছিল সেদিন বাংলাদেশ এর কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমীকে। হ্যা, এই একটি ছবিই হতে পারে ক্রিকেট নিয়ে বাংলাদেশ এর প্রেম, উন্মাদনা, আবেগ, ভালোবাসাসহ সকল জিজ্ঞাসার জবাব। সেদিন অনুধাবন করেছিলাম, এই আবেগ আর এই ভালোবাসাই একদিন আমাদের ক্রিকেটকে নিয়ে যাবে অন্য উচ্চতায়, সাফল্যের শিখরে।
সীমাহীন রাজনৈতিক বিভাজনের মাঝে ক্রিকেটই একমাত্র ইস্যু যেটি গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। ক্রিকেট নিয়ে বাংলাদেশে আগ্রহ বাড়ে সেই 1997 সালে মালয়েশিয়ার কুযালালামপুরে আইসিসি ট্রফি দিয়ে জয়যাত্রার মাধ্যমে।এরপর 1999 এর বিশ্বকাপে শক্তিশালী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়। বাংলাদেশের প্রতিটি গৌরবোজ্জল জয়ে এদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা ধর্ম বর্ণ, ধনী দরিদ্র, দল মত রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সকল দুঃখ ভুলে প্রাণ খুলে উল্লাস করেছে। ক্রিকেট আজ বাংলাদেলের প্রতিটি ঘরে মানুষের রক্তে মিশে আছে। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজ বাংলাদেশের ক্রিকেটের একটা গৌরবময় স্থান পেয়েছে বিশ্ব ক্রীড়াজগতে। আমরা পেয়েছি সাকিব, তামিম, মুশফিকদের মত বিশ্বমানের সব তারকা।
আজ টাইগারদের দমিয়ে রাখার হীন ষড়যন্ত্র হচ্ছে ভারতের নেতৃত্বে। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে ভারতই একমাত্র দেশ যারা এখনো বাংলাদেশকে সিরিজ খেলার আমন্ত্রণ জানায়নি, বাংলাদেশ এর টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তি নিয়ে নানা সময় বাজে ও নোংরা মন্তব্য করেছে। শেওয়াগ এর সে দম্ভোক্তি আজো কানে বাজে। আজ ভারতের কূটচালে নতুন ত্রি-দেশীয় ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশ এর টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেয়ার পায়তারা হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে ভারত কি ক্রিকেটে তাদের আসন্ন পতন আঁচ করেই এ বিতর্কিত দ্বিস্তর পরিকল্পনা পাশ করতে উঠে পড়ে লেগেছে কিনা! দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে ব্যর্থতার পর দূর্বল নিউজিল্যান্ড এর সাথে টানা হার সেটিরই ইংগিত দিচ্ছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী তিনটি দেশ-ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড হবে আইসিসি এর স্থায়ী সদস্য এবং পারফরম্যান্স যতই খারাপ হোক র্যাংকিং এ তাদেরকে কেউ টপকাতে পারবেনা। অর্থাৎ প্রতিযোগিতা নয়, ক্রিকেট হচ্ছে বাণিজ্য নির্ভর। ভাবতে পারেন, প্রতিযোগিতায় লাস্ট হলেও র্যাংকিং এ অবনমন হবেনা ? কি আজগুবি, গাঁজাখুরি, নোংরা আর উদ্ভট প্রস্তাব! মামা বাড়ির আবদার!
তবে কি আইসিসি ভারতীয় সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি? অবশ্য এমনিতেই ভারতকে বিরাগভাজন হওয়ার রিস্ক আইসিসি কখনও নেয় না; কারণ এর সঙ্গে জড়িত কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক স্বার্থ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাজিকরদের অধিকাংশই ভারতীয় হওয়া সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে আইসিসিকে কখনও উচ্চকিত বা সরব হতে দেখা যায়নি। তবে কি ক্রিকেটকে ভারতের অন্যায় আধিপত্যই বজায় থাকবে, নাকি বিশাল বাণিজ্যের কথা ভেবে ভারতের সব আবদারে আইসিসির নীরব সায়?
তবে এদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা সবচেয়ে ক্ষুব্ধ, হতভম্ব ও অবাক হয়েছেন গত তেইশে জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বিসিবির বোর্ড সভায় এ উদ্ভট ও বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী প্রস্তাবটি 20-3 ভোটে সমর্থিত হওয়ার সিদ্ধান্তে। ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির মতো নতজানু ক্রিকেট নীতি! বিসিবির এ ভূমিকা প্রকারান্তরে দেশদ্রোহিতা ছিল। ক্রিকেট প্রেমীদের আন্দোলনের মুখে বিসিবি শেষমেষ পিছু হটেছে।
ইতিমধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান শ্রীনিবাসন হুমকি দিয়েছেন এ বলে “আপনারা রাজি না হলে আমরা এ বছর বাংলাদেশে টি টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ খেলব না। এশিয়া কাপ থেকেও নাম তুলে নেব। দেখি আপনারা কী করেন।” এমন অনৈতিক ও শিষ্ঠাচারবহির্ভূত হুমকিকে পাত্তা দেয়ার আদৌ প্রয়োজন নেই বাংলাদেশ এর। ভারতীয়রা টয়লেট হতে কূটনীতি কোথাও শিষ্ঠাচার মানেনা, ক্রিকেটেও মানবেনা এটাই স্বাভাবিক। প্রয়োজনে টি20 বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ না হয়, না হোক। বড় ক্ষতি হতে রক্ষা পেতে ছোট ক্ষতি আমরা মেনে নেব। তবুও ভারতের অন্যায় আবদারে সায় দিয়ে এদেশের ক্রিকেটকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়া যাবেনা কোনোভাবেই।
হুমকির পাশাপাশি প্রচুর অর্থও ঢালছে ভারত তাদের অন্যায় দাবির সমর্থনে। চাপের মধ্যে পড়ে এ দিন জিম্বাবোয়ে, নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ শ্রীনিবাসনদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। জিম্বাবোয়ে কর্তা পিটার চিঙ্গোকা বিশ্ব ক্রিকেটে তাঁর শুভানুধ্যায়ীদের অকপটে বলেন, “জানি, নোংরা ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হতে যাচ্ছি। কিন্তু কিছু করার নেই। আমাদের বোর্ডের টাকা দরকার। ভারত অনেক টাকা দেবে বলেছে। অবশ্য শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানকে ভারত বহু চেষ্টাতেও টিমে টানতে পারেনি।
আশার কথা হচ্ছে, ষড়যন্ত্রের হোতা ভারত ও অপর দু দেশ-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াও পিছু হটেছে। প্রস্তাবটিতে কিছু পরিবর্তন আসছে। তবে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে যাতে ক্রিকেট নিয়ে নতুন কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত না হয়।
জেন্টেলম্যান’স গেম খ্যাত ক্রিকেট থাকুক নিষ্কলুষ, পঙ্কিলতামুক্ত। অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক, কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্র যেন ক্রিকেটের মর্যাদা ও গৌরবকে ভূলুণ্ঠিত না করে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে আইসিসি কে নিরপেক্ষ ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। আইসিসি যদি অর্থকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয় তবে ক্রিকেট হারাবে তার সৌন্দর্য্য ও আভিজাত্য।
ক্রিকেট নিয়ে ষড়যন্ত্র
বিষয়: বিবিধ
১২৯৭ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে এই প্রস্তাবে ১০০ টা দেশের মধ্যে ৯৯ টা দেশেরই কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই । ক্ষতি যা হবার তা একমাত্র বাংলাদেশেরই হবে , আর কারও না । কারও না ।
So called বন্ধু তো বিপদে ফেলে দেওয়ার মত প্রস্তাব আনলো ।
দেখি এখন দক্ষিন আফ্রিকা ও শ্রী লংকার সাথে আর কোন দেশ এগিয়ে আসে বাংলাদেশেরই সমস্যাটাকে দূর করতে ।
( ইহাও একটি কপি-পেস্ট পরিবেশনা ! হায়রে কপাল !)
নিজের লেখা নিজে কপি করলে সেটাকে কি কপি পেস্ট বলা চলে? লিংক এ গিয়ে দেখুন। আমি এবং উনি এক ব্যক্তি।
ইহাকেও কপি-পেস্ট হইতে বাতিল করা যাইবে না , কারণ টুমরোর আগে ইহা আরেক জায়গায় পরিবেশিত হইয়াছে ।
''আমি এবং উনি এক ব্যক্তি। ''
০ ঠিক আছে । তবে , একই নাম দুইজন ব্যক্তির হতে পারে না ? এক্ষেত্রে কোন জিনিসটা দিয়ে ভ্যারিফাই করাবেন ?
বাহার ভাই সত্যায়িত কিসের ভিত্তিতে করলেন ? এই ছবি দুটো কি এক ?
এক সিঁদেল চোর সারারাত চুরি করে ভোররাতে পুকুরে গোসল করছে। পুকুরের অপর পাড়ে মসজিদের ইমাম সাব ও গোসল করছেন। সিঁদেল চোর মনে মনে ভাবছে-ঐ পাড়েও আমার মত আর এক চোর গোসল করছেন। আর ইমাম সাব? তিনিও ভাবছেন-ঐ পাড়ে একজন দ্বীনদার ব্যক্তি ফরজ নামাজ পড়ার জন্য পবিত্র হচ্ছেন।
তা যাউকগা। আপনি মাইন্ড খাবেননা আবার। ; ;
http://www.onbangladesh.net/blog/blogdetail/detail/3323/HOTOVAGA/37166
মন্তব্য করতে লগইন করুন