কিশোর মনিরঃ হরতালের বলি নাকি নিউজ মেকারদের ইচ্ছের বলি?
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ০৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:২৫:২৯ বিকাল
টানা তিনদিন শরীরের ৯০% পুড়ে যাওয়া কিশোর মনির অমানুষিক যন্ত্রণা সহ্য করে আজ ভোর সাড়ে ৪ টায় মারা গেল। ওহ কি বর্বরতা, কি নৃশংসতা!!
গত ০৫ ই নভেম্বর দ্যা ডেইলী স্টার In the name of politics
Brutality beyond belief শিরোনামে খবরটি প্রচার করে প্রথম।
একই দিন একই সাথে মাহফুজ আনাম এর সম্পাদকীয় -
Commentary An Appeal to Our Higher Judiciary Save us from hartal, pre-hartal violence" নামে।
ঠিক পরদিন একই মালিকানাধীন (ট্রান্সকম গ্রুপ) দৈনিক প্রথম আলোতে ঐ সম্পাদকীয় এর অনুবাদ- আদালতের প্রতি আবেদন হরতালের নৃশংসতা থেকে রক্ষা করুন।
প্রিয় পাঠক মনে কি পড়ে-২০০৩ সালের ঘটনা যখন হরতাল চলাকালে বাসে গান পাউডার দিয়ে ১২ যাত্রীকে জীবন্ত হত্যা করা হয়েছে?
কি নৃশংস! কি লোমহষক!! প্রিয় পাঠক-চোখ বন্ধ করে একবার চিন্তা করুন- দগ্ধ হয়ে মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করা সে অসহায়দের করুণ আর্তনাদ, নিদারুণ হাহাকার!!
তখন এ দুটি পত্রিকা লিডিং স্টোরি কিংবা সম্পাদকীয় দূরে থাক, এ হতভাগা দগ্ধ ১২ জন যাত্রীর নির্মম নিদারুণ মৃত্যুর খবরটি প্রথম পাতায়ও ছাপেনি।
তাই কিশোর মনির এসব নিউজ মেকারদের ইচ্ছার নিদারুণ বলি এটা সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে ।
জাতির বিবেক এর কাছে কিছু প্রশ্ন রেখে যেতে চাই-
১। কিশোর মনির এর গায়ে যে বা যারা আগুন দিয়েছে তাঁদের কেউ হাতেনাতে ধরা পড়েনি। তাহলে কোন যুক্তিতে এর দায় সরাসরি হরতালকারীদের উপর বর্তায়?
২। প্রতিটি হরতালেই ছাত্রলীগকে সশস্ত্র অবস্থায় দেখা গেছে। এর আগে মির্জা আজম ও নানক এর যৌথ প্রযোজনায় ২০০৩ সালে ১২ জন বাসযাত্রীকে গানপাউডার দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা প্রমাণিত। ছাত্রলীগ কর্তৃক এ নাশকতা ঘটানোর প্রচুর যুক্তি ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের উপর কেন কোন অভিযোগ আনা হচ্ছেনা?
৩। প্রতিটি হরতালেই বিএনপি ও জামায়াত এর প্রচুর কর্মী পুলিশ ও ছাত্রলীগ এর যৌথ হামলায় নির্মমভাবে প্রাণ হারিয়েছেন নির্মমভাবে। রাজপথ হয়েছে তাঁদের রক্তে রঞ্জিত। তখন এসব মিডিয়া কেন সেসব ঘটনা আড়াল করেছে?
৪। লক্ষ করুন-প্রথমে ইংরেজী পত্রিকায় কোন প্রমাণ ছাড়াই হরতালকারীদের দায়ী করে নৃশংস ঘটনাটিকে লিডিং স্টোরি করা হয়েছে এবং একই দিন মর্মস্পর্শী ভাষায় সম্পাদকীয় রচিত হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বসম্প্রদায়কে এটা বোঝানোর চেষ্টা
-বিরোধীদল আন্দোলন এর নামে নৃশংসভাবে মানুষ খুন করছে। তাহলে কি ঘটনা এটা নয় যে- বিরোধীদল এর অত্যন্ত যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেতে এমনতরো প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে ?
৫। ইতিমধ্যে সারা দেশব্যাপী ছাত্রলীগ কর্তৃক সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে। পাবনার সাঁথিয়ায় ছাত্রলীগ যুবলীগ এর নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। কিন্তু পুলিশ উল্টো আশ্রয় প্রদানকারী সেসব বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ নিয়ে তিন মন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘুরা স্পষ্ট করে বলে -আমাদের উপর হামলাকারীরা বিরোধী দলের কেউ নয়। এবং তাঁদের আশ্রয় প্রদানকারী বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেফতার করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। কিন্তু এসব মিডিয়া সেসক ন্যক্কারজনক ঘটনার দায় বিরোধীদলের উপর চাপিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে। তত্ত্বাবধায় সরকারের যৌক্তিক আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য এসব মিডিয়ার হীন চক্রান্ত নয় কি?
সর্বশক্তিমান আল্লাহই ভালো জানেন, সেদিন কি ঘটেছিল। তবে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজতে গেলে নিজের বিবেক ও সাধারণ জ্ঞান হতেই অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে।
বিষয়: বিবিধ
২৪৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন