চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংখ্যালঘু নির্যাতন। আমাদের মিডিয়া ও সুশীল সমাজ কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ২৫ জুলাই, ২০১৩, ০১:৫৩:৩৬ দুপুর
মিডিয়ার কাছে বিএনপি -জামায়াত কর্তৃক আমরা সংখ্যালঘু নির্যাতনের অনেক বানোয়াট ঘটনা শুনেছি। সংখ্যালঘু নির্যাতনের অপ্রমাণিত ঘটনাসমূহ মিডিয়া ও আমাদের স্বঘোষিত সুশীল সমাজ অবলীলায় বিএনপি জামায়াত এর উপর চাপিয়ে দেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যখন সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে এবং সে ঘটনা হয় ছাত্রলীগ যুবলীগ বা আওয়ামীলীগ কৃত তাহলে আশ্চর্য নীরবতা পালন করে আমাদের হলুদ মিডিয়াগুলো।
এবার চট্টগ্রামের মুরাদপুরে কমিউনিটি সেন্টারে একটি হিন্দু পরিবারের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে সদলবলে আক্রমণ চালায় ছাত্রলীগ।
হঠাৎ ‘জয় বাংলা’ বলে তান্ডব শুরু শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে
এই ঘটনায় যদি বিএনপি -জামায়াত এর যোজন দূরত্ব থাকতো কিন্তু ঘটনাটি অপ্রমাণিত হতো (মানে কারা করেছে প্রমাণ নেই)এমনকি ঘটনাটি যদি অরাজনৈতিক ও হতো তবে ১০০% নিশ্চিত এর দায় চাপানো হতো বিএনপি-জামায়াত এর উপর। কিন্তু অঘটন ঘটন পটিয়সী ছাত্রলীগ হওয়ায় এবার মিডিয়া বেশ নীরবতা পালন করবে।
সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু নিয়ে মিডিয়ার কারসাজি লক্ষ্য করুন-
১। গ্রামে গঞ্জে,পাড়া মহল্লায় অনেক অরাজনৈতিক সংঘাত ঘটে। যেমন ধরুন- আইল ঠেলাঠেলি, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ, ব্যক্তিগত দ্বন্ধ। এইসব ঘটনা মুসলমান হিন্দু নির্বিশেষে সবার মাঝেই ঘটে। অনেক সময় এইসব সংঘাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। কোন মুসলমান ঘটনার শিকার হলে মিডিয়া সেটাকে অরাজনৈতিক ঘটনা হিসেবেই তুলে ধরে বিপরীতে ঘটনার শিকার ব্যক্তি অমুসলিম হলে মিডিয়া সেখানে সংখ্যালঘুর প্রলেপ লাগিয়ে দেয় এবং কোন প্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দায় চাপায় বিএনপি-জামায়াত এর উপর।
২। ছাত্রলীগ -যুবলীগ এর হিন্দু সদস্য আক্রমণ করতে এসে প্রতিরোধ এর শিকার হলে সেটা আর ছাত্রলীগ-ছাত্রদল কিংবা ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির দ্বন্ধ নয়, মিডিয়া সেটা প্রকাশ করে সংখ্যালঘু নির্যাতন হিসেবে।
৩।যখন প্রকাশ্যে রাজপথে বিশ্বজিতকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো তখন সেই ঘটনাকে সংখ্যালঘু ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়নি। কারণ হন্তারক যে ছাত্রলীগ।
৪। যখন দেবাশীষ বিশ্বাস পবিত্র কুরআন পোড়ায় কিংবা সিলেট এমসি কলেজ এ ছাত্রলীগ এর হিন্দু নেতার নেতৃত্বে হোস্টেল জ্বালিয়ে পবিত্র কুরআন হাদীস পুড়ানো হয় তখন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নিয়ে মিডিয়ায় কোন নিউজ আসেনা। ঘটনা স্রেফ ছাত্রলীগ এর এমসি কলেজ হোস্টেল এ হামলা হিসেবেই নিউজ হয়।
৫। যখন ছাত্রদল-ছাত্রশিবির মন্দির রক্ষার্থে পাহারার ব্যবস্থা করে তখন মিডিয়ায় সেটার কোন প্রচার হয়না।
৬। যখন কুমিল্লার লাকসামে হিন্দুপাড়ায় আগুন ধরিয়ে অনেকগুলো পরিবারকে গৃহহীন করে দিল যুবলীগ সন্ত্রাসীরা তখন মিডিয়া ঘটনাটি বেমালুম চেপে যায়। কারণ ঐ হিন্দুপাড়ার প্রভাবশালী ব্যক্তিটি বিএনপি এর রাজনীতির সাথে জড়িত এবং ঘটনা যুবলীগ কর্তৃক ঘটিত।
৭। যখন হেফাজত এর উপর দোষ চাপাতে শহীদ মিনার ভাংতে গিয়ে হাতেনাতে যুবলীগ কর্মী ধৃত হয় তখন মিডিয়া নিশ্চুপ। কিন্তু যুবলীগ কর্মী ধরা না পড়ে অপকর্ম করে আসলে এর দায় ঠিকই হেফাজত এর উপর চাপানো হতো।
যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ঐতিহ্য রেখে আসছে আমাদের দেশের শান্তিপ্রিয় মুসলমান ও হিন্দুরা। আজ হীন রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁদের ব্যবহার করে আসছে মিডিয়া। মিডিয়ার মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্ট সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাশাপাশি হিংসা - বিদ্বেষকে উস্কে দিচ্ছে। তথ্যসন্ত্রাসীদের এমন নোংরামির নিন্দা ও তীব্র ধিক্কার জানাই। হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে হলুদ মিডিয়ার এই অপচেষ্টা বানচালে এগিয়ে আসতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
২৬১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন