গাজীপুর সিটি নির্বাচনঃ ভোটের হিসেবে এত গড়মিল কেন
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ০৭ জুলাই, ২০১৩, ০৫:০৬:৪১ বিকাল
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর প্রকাশিত ফলাফলে ভোটের হিসেবে বেশ গড়মিল পরিলক্ষিত হচ্ছে।
নয়াদিগন্তে "মান্নানের বিপুল বিজয়" শিরোনামে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী অধ্যাপক এম এ মান্নান পেয়েছেন ৪,৬৮,০০০ ভোট এবং এডভোকেট আজমত উল্লাহ পেয়েছেন ৩,১২,০০০ ভোট।
কট্টর সরকারপন্থী পত্রিকাগুলোতেও এই হিসেবের সমর্থন মিলে।
দৈনিক আমাদের সময় এর প্রতিবেদন এ বলা হয়-গাজীপুরের প্রথম নগরপিতা হলেন ১৮ দল সমর্থিত এম এ মান্নান। তিনি ১৪ দল সমর্থিত আজমত উল্লা খানকে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৮৮ ভোটের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেন। ৩৯২ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে বিএনপির মান্নান পেয়েছেন ৪ লাখ ৬৮ হাজার ভোট। আর আওয়ামী লীগের আজমত পেয়েছেন ৩ লাখ ১২ ভোট।
আ.লীগের দ্বিতীয় দূর্গও বিএনপি'র এই শিরোনামে কালের কন্ঠে বলা হয়-রাত সোয়া ২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৭১ টিভির দেওয়া তথ্য মতে ৩৯২টি কেন্দ্রের সবগুলোর ফল পাওয়া যায়। এতে দেখা যায়, অধ্যাপক মান্নান চার লাখ ৪৮ হাজার ভোট পেয়েছেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের প্রাপ্ত ভোট তিন লাখ ১২ হাজার।
সমকাল "গাজীপুরেও বিএনপি'র বাজিমাত" শিরোনাম দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে-রাত ২টার দিকে কয়েকটি টিভি চ্যানেল সব ক’টি কেন্দ্রের ফলাফল প্রচার করে। অনানুষ্ঠানিক এই ফলাফলে দেখা যায়, মোট ৩৯২ কেন্দ্রে টেলিভিশন প্রতীকের এমএ মান্নান পান ৪ লাখ ৬৮ হাজার এবং দোয়াত-কলমের অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান পান ৩ লাখ ১২ হাজার ভোট। বিএনপি নেতারাও গভীর রাতে দাবি করেন, তাদের কাছেও এই ফলাফল এসেছে। যেখানে ১ লাখ ৫৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে এমএ মান্নান জিতেছেন। বিএনপি নেতাদের এ দাবি অনুযায়ী মোট ভোট পড়েছে প্রায় ৭৮ শতাংশ। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, ভোট পড়েছে কমবেশি ৬৫ শতাংশ।
ভোরের কাগজ ও ফলাফল এ ৪,৬৮,০০০ ভোট ও ৩,১২,০০০ ভোট এর কথা উল্লেখ করে।
কিন্তু ভোর ৪ টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা যে ফলাফল ঘোষণা করেন তাঁর সাথে মিডিয়ায় প্রকাশিত ভোটের হিসেব মিলছেনা। রিটার্নিং অফিসার মতিয়ার রহমান কর্তৃক ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, মান্নান পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী আওয়ামী লীগের আজমত উল্লাহ খান পেয়েছেন ২ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৭ ভোট। নির্বাচন কমিশন এর বরাত দিয়ে এই সংবাদটিই প্রচারিত হয়েছে দৈনিক আমার দেশ, ইত্তেফাক, প্রথম আলো ও আরো কিছু পত্রিকায়।
দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণরায়
Click this link
মিডিয়ায় প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী- দেড় লক্ষাধিক ভোট কোথায়? তাহলে কি নির্বাচন কমিশন বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে উক্ত দেড় লক্ষাধিক ভোট কারচুপি করেছে?
ভোট প্রদানের হার নিয়ে ও মিডিয়া ও নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত তথ্যে বেশ গড়মিল। কমিশন বলছে কম বেশি ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে কিন্তু মিডিয়ার হিসেবে ভোট পড়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশ।
দেড় লক্ষাধিক ভোট বেমালুম গায়েব। এরপরও কি এটাকে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বলা চলে? এই দলীয় নির্বাচন কমিশন এর উপর এরপরও কি আস্থা রাখা যায়?
বিষয়: বিবিধ
১৬৮১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন