ওয়াশিংটন টাইমস এ বেগম জিয়ার নিবন্ধ ও সরকারের প্রোপাগান্ডা

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৪:০০:৫১ বিকাল

ঠাকুর ঘরে কেরে? আমি কলা খাইনা- এই প্রবাদটির নোয়াখালি সংস্করণ হচ্ছে, মাডিত বাড়ি দিলে গোনাহগার চ্যাতে। Winking সম্প্রতি ওয়াশিংটন টাইমস এ The thankless role in saving democracy in Bangladesh

Corruption and stealing threaten a once-vibrant nation
শিরোনামে বেগম জিয়ার নিবন্ধটির যে প্রতিক্রিয়া সরকারি দল প্রদর্শন করছে সেই প্রেক্ষিতে উক্ত প্রবাদটি মনে পড়ল।

নিরপেক্ষদৃষ্টিতে বিচার করলে বলতে হয়, দেশ, জাতি ও গণতন্ত্র রক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে বেগম জিয়া সময়োপযোগী একটি সাহসী নিবন্ধ লিখেছেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সহায়তাও কামনা করেছেন বেগম জিয়া। দেশপ্রেম এর সার্থক অভিব্যক্তি এই নিবন্ধকে দেশবিরোধী হিসেবে চিত্রিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামীলীগ। এ কাজে তাঁদের সরকারি সকল প্রচারযন্ত্রের পাশাপাশি নিজেদের দলীয় সংবাদমাধ্যমকেও নগ্নভাবে ব্যবহার করে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে।

এদেশের রাজনীতির ইতিহাস স্বাক্ষী দেয়, সরকার ও বিরোধীদল উভয় অবস্থাতে আ.লীগ চরম রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারনা ও কার্যক্রম চালিয়েছে। বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময় আন্দোলনের নামে নানক আর মির্জা আজম এর নেতৃত্বে পেট্রোল দিয়ে ১২ জন নিরীহ বাসযাত্রীকে পুড়িয়ে মারার বর্বরতা আমরা ভুলে যাইনি। তখনকার সরকারকে বিপদে ফেলতে আওয়ামীলীগ এর উর্বর গর্ভ হতেই প্রসব হয়েছিল বাংলাভাই আর শায়খ রহমান এর মত জংগি নেতারা। শায়খ রহমান ছিলেন আওয়ামীলীগ এর শীর্ষ স্থানীয় নেতা মির্জা আজম এর ভগ্নিপতি। অথচ এই ইস্যু নিয়েই আওয়ামীরা দেশ বিদেশে নজিরবিহীন প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল। তখন তারা পশ্চিমা বিশ্বকে এই বলে উস্কে দিয়েছিল-দেশ তালেবান জঙ্গিতে ভরে গেলে, অচিরেই এই দেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে। গোয়েবলসীয় কায়দায় তাঁদের এসব তথ্যসন্ত্রাস আজ ও থেমে নেই। সত্যিই-আ.লীগ যত সুন্দর করে মিথ্যা বলতে পারে, অন্যেরা তত সুন্দর করে সত্যটাও বলতে পারে না!



অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বেগম জিয়া একটি ফ্যাসিবাদ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, দেশের বিরুদ্ধে নয়। সরকারের বিরোধিতা মানেই দেশের বিরোধিতা নয়। বরং দেশ রক্ষার জন্যই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, ইকোনমিস্ট, ওয়াশিংটন পোস্ট, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ছাড়াও নয়টি মানবাধিকার সংস্থা সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে খালেদা জিয়ার চেয়ে আরও বেশি সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সে সব প্রতিবেদনও সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ, এসব সমালোচনা সহ্য করার মতো দল আওয়ামীলীগ নয়।

কিন্তু এর পূর্বে আওয়ামীলীগ সরাসরি দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছিল। সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর নিবন্ধে উল্লেখ করেছিলেন-বাংলাদেশে বোরকার ব্যবহার অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি ঝুঁকে পরছে জনগণ, অচিরেই এই দেশ জঙ্গিদের অভয়ারণ্য হতে যাচ্ছে।



এমনকি বর্তমানে ও আওয়ামীলীগ এর সকল কার্যক্রম গণবিরোধি ও দেশের স্বার্থ পরিপন্থী। এক দূর্নীতিবাজ আবুলকে রক্ষা করতে গিয়ে বহুল কাঙ্খিত পদ্মা সেতু হতে বঞ্চিত হল পুরো জাতি।





দেশ আজ কতটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সম্মুখীন -পুলিশ এর হাতে পেট্রোল আর ম্যাচ এর এই ছবিটিই তার প্রমাণ।

পুলিশের পাশাপাশি নৈরাজ্যে অংশ নিচ্ছে ছাত্রলীগও । গত চারবছরে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, খুন, গুম , রগকাটা, সংখ্যালঘু নির্যাতন এর পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, নারী ধর্ষণ, নারী নির্যাতন কোনটাতেই পিছিয়ে ছিলনা ছাত্রলীগ, যুবলীগ। এবং এসব কাজে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং সিনিয়র মন্ত্রীদের কাছ হতে বাহবা পাচ্ছে ছাত্রলীগ এর নেতাকর্মীরা। গণতান্ত্রিক বিভিন্ন আন্দোলনে পুলিশ শুধু বাধাই দিচ্ছেনা, বিরোধীদের উপর পিপার স্প্রে প্রয়োগ করছে। হাতকরা অবস্থায় বন্দীকে গুলি করছে, তীব্র নির্যাতন ও গুলি করে মেরেও ফেলা হচ্ছে। পুলিশ এর পাশাপাশি ছাত্রলীগ এ অস্ত্র হাতে বিরোধি দমন করতে মাঠে থাকছে। বিষয়টি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ক্যামেরার চোখকে ফাঁকি দিতে পারছেনা বিধায় পুলিশের সহায়তায় এবার নতুন এবং ভয়ংকর কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে ছাত্রলীগ। পুলিশের পোশাক পরিয়ে অস্ত্র হাতে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের।



দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে কোন মন্তব্য নাই। তবে একটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়।ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় রায় এ সপ্তাহে, তৃতীয় রায় ১৪ তারিখ : মিসরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীর।

বিচারের রায় এর তারিখ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অগ্রীম জানলেন কিভাবে? তাহলে কি ডাল মে কুছ কালা হ্যায়?

উপরের ঘটনাবলী কি প্রমাণ করেনা- ওয়াশিংটন টাইমস এ বেগম জিয়ার প্রকাশিত নিবন্ধটি অত্যন্ত সময়োপযোগী ও দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য?

বিষয়: বিবিধ

১৫০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File