হলুদ সাংবাদিকতা ও তথ্যসন্ত্রাসের কবলে দেশ, আশু উত্তরণ জরুরী।
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ২৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৩১:১৫ দুপুর
হলুদ সাংবাদিকতা ও তথ্যসন্ত্রাস আজ দেশের উন্নতির পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায়। এটি বর্তমানে দেশের ভয়াবহ একটি সমস্যা। হলুদ সাংবাদিকরাই আজ অধিকাংশ মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। কি ইলেকট্রনিক কি প্রিন্ট মিডিয়া কি অনলাই মিডিয়া-সর্বত্রই এদের অশুভ দাপট। স্বৈরাচারী সরকারের পদলেহন করতে গিয়ে এরা আর গণমাধ্যম নেই, হয়ে গেছে আওয়ামী প্রচারমাধ্যম। দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে সীমাহীন প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে এরা,ফ্যাসিজম আর অসভ্যতাকে সমর্থন করছে। এরা সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করছে।দূর্নীতিকে সততা আর সততাকে দূর্নীতি হিসেবে উপস্থাপন করে সততাকেই নিরুৎসাহিত করছে।
মনে পড়ে স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালে সরকার গঠন করে বিএনপি। এরা তখন নিজেরা কোন মিডিয়া সৃষ্টি করেনি। বাকস্বাধীনতার নামে এতই পরমতসহিষ্ঞুতা (নাকি বোকামি) দেখিয়েছে, জনকন্ঠ নামে সম্পূণ ভিন্নমতের একটি পত্রিকার অনুমোদন দেয়। অনুমোদন পেয়েই সরাসরি জঘন্য সব কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে জনকন্ঠ। সম্ভবত তখন ১৯৯৪ সাল। তাসলীমা নাসরীন এর চরম আপত্তিকর অশ্লীল ও রুচিহীন লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রচার করতে থাকে জনকন্ঠ। ঘাদানিক এর অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডেও নানাবিধ সহযোগিতা দেয়া শুরু করে। তবে কোন রাখঢাক ছাড়া জনকন্ঠের এই নগ্ন দলীয় অবস্থান জনগণের কাছে সহজেই ধরা পড়ে যায়। তবে বসে থাকেনা হলুদ সাংবাদিকরা। এরা ভিন্ন কৌশল খুঁজতে থাকে। ৯৬ এ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরে জন্ম নেয় ভোরের কাগজ নামক পত্রিকা। ভোরের কাগজ হতে বের হয়ে একসময় ট্রান্সকম গ্রুপের অর্থায়নে প্রথম আলো প্রতিষ্ঠা করেন কমিউনিস্ট নেতা মতিউর রহমান। খুবই কৌশলে এগুতে থাকেন মতিউর রহমান। প্রথমেই সরাসরি দলীয় অবস্থান না নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মগজধোলাই এর পরিকল্পনা নেন এই বিশিষ্ট নাস্তিক। দৃশ্যত তখন সরকারের নানাবিধ অপকর্মের কিছু সমালোচনা করে দ্রুত জনপ্রিয়তাও পায় পত্রিকাটি। ধীরে ধীরে মগজধোলাই এর কাজ চলতে থাকে। দেশের শীর্ষস্থানীয় নাস্তিকদের বড় বড় ছবি ও সাক্ষাতকার পত্রিকার পাতায় পর্যায়ক্রমে ছাপিয়ে হাইলাইটস করার মাধ্যমে তাঁদেরকে দেশের বিশিষ্টজন ও সুশীল হিসেবে তুলে ধরা হয়। সুযোগ পেলেই ইসলামপন্থীদের জঙ্গি, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী হিসেবে পরিচিত করা হতে থাকে বিভিন্ন সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, প্রবন্ধ ও সংবাদে। ইসলামফোবিয়ায় আক্রান্ত আন্তর্জাতিক মহলও (বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ)তখন এদেরকে আর্থিক ও অন্যান্য সমর্থন দিয়ে পাশে দাঁড়ায়। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠে অনেক হলুদ মিডিয়া। এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির বিপরীতে সেই বিশেষ দেশের সংস্কৃতিকে নানা কৌশলে প্রচার করা হয়। যেমন-বৈশাখী সংস্কৃতির নামে শাড়ি আর সিঁদুর পড়া রমনীর ছবি, ধুতি পড়া পুরুষের ছবি,শিল্পের নামে দেবদেবীর মূর্তির ছবি ইত্যাদি ইত্যাদি। নারীর আপত্তিকর ও যৌন উত্তেজক ছবি ছাপিয়ে নগ্নতাকেও উস্কে দেয়া হয়। এভাবে তরুণ প্রজন্মের বিরাট অংশের মগজধোলাই আর নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেয়ার কাজটি ভালভাবেই সম্পন্ন হয়। এরপর বাকি কাজটা সহজ হয়ে যায়। এখন সরকারের নৃশংস গণহত্যাকেও যখন সন্ত্রাস প্রতিরোধ আখ্যা দেয়া হয় কিংবা দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগণের রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাকে বলা হয় মধ্যযুগীয় বর্বরতা-তখন ভাবি এটা কি সাংবাদিকতা নাকি সাংঘাতিক গোয়েবলসীয় প্রোপাগান্ডা। এইসব অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সত্য প্রকাশের মহান ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসেন সময়ের সাহসী বীর মাহমুদুর রহমান। শত হুমকিতেও পিছপা হননি এই বীর। যুক্তিতে ও ন্যায়নীতিতে তাঁকে হারাতে পারেনি আজ পর্যন্ত কেউ । মুখোশ খুলে পড়ার ভয়ে প্রমাদ গুণে হলুদ সাংবাদিকরা। স্বৈরাচার সরকারকে লেলিয়ে দেয়া হয় এই সাহসী বীর এর বিরুদ্ধে। তথ্যসন্ত্রাসীদের উস্কানিতে এই কালজয়ী কলমসৈনিক আজ বাকশালী নির্যাতনের নির্মম শিকার।
সেলুকাস! বড়ই বিচিত্র আমাদের হলুদ সাংঘাতিক সমাজ। বড়ই বিচিত্র আমাদের এই দেশ।
বিষয়: বিবিধ
১৭২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন