"গ্রামের বাড়িতে বনভোজন"
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া মুকিম ২৮ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:৫০:১৬ রাত
প্রায় পাঁচ বছর দেশে ফিরেছি ঈদুল ফিতর সবাইকে নিয়ে করবো এই উদ্দেশ্যে। কক্সবাজার থেকে মেজো ভাই সপরিবারে আসলেন, ছোটো ভাই ঢাকা থেকে, আম্মা- আব্বা, বড় আপা সবাই বড় ভাইয়ের বাসায় একত্রিত হয়েছিলাম। ঈদের পর সবাই মিলে ঠিক করলাম গ্রামের বাড়িতে গিয়ে একদিন ঘুরে আসবো। আম্মা আর ছোট ভাই আগেই চলে গেলেন, আমরা সবাই নির্ধারিত দিনে খুব সকালে মাইক্রো বাসে করে রওয়ানা হলাম।
দূর দুরান্ত পর্যন্ত যতটুকু দৃষ্টি যায় সবুজে সবুজে ছেয়ে আছে পরিবেশ। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট ভিজা, কাঁদা মাটিতে একাকার। এখানকার মানুষরা অভ্যস্ত ভংগিতেই জীবনের সব কাজের আন্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।নীল ফ্রক, আর সাদা শার্ট পরিহিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুল অভিমুখে ছুটেছে, চমৎকার সরলতা বাচ্চাগুলোর মুখাবয়বে দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।
প্রায় সব বাড়ির সাথেই ছোট ছোট পুকুর নজর এড়ায় না, সেগুলো বর্ষার শাপলা আর কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। টিপ টিপ বৃষ্টি যখন সেই পুকুরে পড়ছিলো ,এক অপরুপ জল নৃত্য তরঙ্গাকারে ছড়িয়ে যাচ্ছিলো সমস্ত পুকুর জুড়ে। পাশ দিয়ে কেউ গরু নিয়ে, কেউ ছাগল নিয়ে ঘাস খাওয়াতে ব্যস্ত, কেউ মাথায় ঝুড়ি নিয়ে যাচ্ছেন এসব দেখতে দেখতে আমরা ছুটে চলছিলাম সামনে।
স্থানীয় বাজারের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম গ্রামের হাট। জেলেরা ঝুড়িতে মাছ সাজিয়ে বসে আছে, হরেক রকমের মাছ, তাজা কৈমাছ গুলো রীতিমত লাফাচ্ছিলো। সাথেই সবজি ওয়ালা, সুন্দর করে ঢালায় সবজি সাজিয়ে বসে আছেন,চোখ আটকে গেলো সবুজ তাজা তাজা পেয়ারার দিকে তাকিয়ে, আমরা সব ভাই-বোনরা ভীষন রকম পেয়ারাখোর। পেয়ারা খাওয়ার কম্পিটিশিন হলে আমরাই জিতব হলফ করে বলতে পারি! ভাইয়া গাড়ি থেকে নেমে বিশলা পলিথিন ভর্তি করে পেয়ারা নিয়ে এলেন। কচ কচ করে খেতে খেতে আবার সমানে ছুটে চলা...
প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন আর খোশ গল্প করতে করতে আমরা চলে এলাম বাড়িতে। আমাদের বাড়িটি একটি টিলার উপর, দূর থেকেই দেখতে পেলাম ছোট ভাই, আম্মা সবাই আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন। রাস্তাঘাট ভিজা তো আছেই তারপর এই মাটি হলো এঁটেল মাটি বৃষ্টিতে ভিজে ভয়ানক পিচ্ছিল হয়ে আছে, একবার আছাড় খেলে খবর আছে, সবাই সবধানে পা টিপে টিপে হেঁটে বাড়িতে উঠলাম।
গরম গরম তেলের পিঠা, চালের রুটি সাথে দেশি মুরগির ঝোল আর চা দিয়ে তৃপ্তির সাথে সকালের নাস্তা করলাম। এবার দুপুরের খাবার রান্নার আয়োজনেরপালা। আগে থেকেই আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম সবাই মিলে রান্না করবো।
উঠোনের এক কোণে ভাইয়ারা মুরগি জবাই করলেন, আম্মা করলেন কবুতর জবাই, পুকুর থেকে উঠানো হলো তাজা মাছ- রান্না ঘরে আমরা মহিলারা মিলে সেগুলো কাটাকাটিতে লেগে গেলাম। আমাদের আসা উপলক্ষ্যে খালাতো সম্পর্কের ভাবীরা এসেছেন। সবাই মিলে কাজ ভাগ করে নিলাম।
অনেকদিন পর দেখলাম ছাই দিয়ে ধরে তাজা মাছ কাটতে। আঁশ ছড়ানো থেকে শুরু করে খন্ড খন্ড করে মাছ টুকরো করা- মনেহলো এক মুহুর্তেই করা হয়ে গেলো। আস্তো মুরগিটাকে চামড়া ছাড়িয়ে সেটাকেও বিভক্ত করা হলো সুণিপুন কৌশলে।
ভাবী সবজি কাটছিলেন, বঠি দিয়ে এতো মিহি করে করলা কাটলেন মুগ্ধ নয়নে শুধু দেখলাম! বঠি আর হাতের দ্রুত উঠানামা পাশদিয়ে কুচি কুচি হয়ে পড়া সব্জির নির্ভুল জ্যামিতিক মাপ দেখে একেবারেই অবাক আমি। উনারা অভ্যস্ত বলেই হয়তো ঐ ধারালো বঠি দিয়ে কাজ করতে ভয় যেমন পান না তেমনি সুঁচালো মাপে সব্জি ও কাটতে জানেন।
অন্যান্যরা সবালীল ভাবে কাজ শুরু করলেও আমি কোনোভাবেই পারছিলাম না, বটিতে কাজ করার অভ্যাস নাই, তাই আগিয়ে পিছিয়ে, ধুয়ে দিয়েই শরীক থাকতে হচ্ছিলো।
ঠিক হলো সিলিন্ডার চুলায় রান্না না করে মাটির চুলায় রান্না হবে। আম্মা লাকড়ির ঘর থেকে অনেকগুলো লাকড়ি আনলেন, আমি চুলার পাশে বসা ছিলাম,কিন্তু অনেক মাথা খাটিয়েও কৌশল বের করতে পারছিলাম না কেমন করে এই চুলায় আগুন ধরানো যায়! এতো লজ্জা লাগছিলো - যে কাজই সামনে আসছিলো সেটাতেই আমার কোন না কোন অপারগতা ছিলো!
বড় আপা খুব অল্প সময়ের মধ্যে চুলায় আগুন জ্বালিয়ে ফেললেন, কড়াই দেয়া হলো, তেল আর পিঁয়াজ যখন দেয়া হলো কি আর বলব ! কতো দিন এই ঘ্রান শোনা হয় নি! পোড়া লাকড়ির ঘ্রান আর তেলে-পিঁয়াজের ঘ্রান একাকার হয়ে তা শুধু পেটের ক্ষুধাকেই জাগ্রত করে তুললো!
রান্নাঘরের মূল দায়িত্ব বড় আপা নিলেও রান্না করছিলেন আমার মেঝোভাবী। অসম্ভব গুণী মহিলা। যদিও উনি আমাদের গ্রামের বাড়ি আসার আগ পর্যন্ত মাটির চুলো পর্যন্ত কোনোদিন দেখেন নি তবু যখন রান্না করছিলেন বোঝার উপায় নেই উনি কোনোদিন এভাবে রান্না করেন নি! আমি একটু সাহায্য করার আশায় পাতিলে নাড়াচাড়া দিবো এই মনে করে কাছে গেলাম , চুলার কালো ধোঁয়ার কাশিতে অস্থির হয়ে কেঁদে-কেটে সরে আসতে বাধ্য হলাম! অবশেষে রান্নাঘরের জুডিশিয়াল বোর্ড তর্জনী উঁচু করে ঘরের শেষ মাথায় রাখা উঁচু মোড়াটা দেখিয়ে আমাকে ঐখানে মূর্তি হয়ে বসে থাকার আদেশ করলেন!
মূর্তি হয়ে বসে থাকতে পারবো না বলে চলে আসলাম ঐখান থেকে। বাচ্চাদের কি খবর তা দেখার জন্য আসতে যা চোখে পড়লো তা দেখে আমি রীতিমত স্তম্ভিত।
পিচ্চিপাচ্চারা সব মিলে গোয়াল ঘরে ঢুকেছে। আমার পুত্রের হাতে একগুচ্ছ খড় সেটা সে পরম মমতায় বাছুরকে খেতে দিচ্ছে। মেঝো ভাইয়ার পুত্র আরো এক ডিগ্রী এগিয়ে, যে প্রমান সাইজের উঁচু গামলার মধ্যে যেটাতে গরুকে পানি -ভূষি খাওয়ানো হয়, সেইটার মধ্যে হাত ডুবিয়ে ডুবিয়ে প্রচন্ড সতর্কতার সাথে নিরীক্ষণ করছে পানিতে ভূষি আর খাদ্যোপাদানের পরিমান! বড় ভাইয়ার পুত্র গরুর গায়ে হাত দিয়ে এমন ভাবে আদর করছে মনে হচ্ছে এই গরু সদ্য এতীম হয়েছে!
ভ্রু কুঁচকে,চোখ কপালে তুলে, কৃত্রিম রাগান্বিত হয়ে চিৎকার করতে করতে সেদিকে গেলাম কিন্তু কারো বিন্দু মাত্র ভয়ের কারণ পর্যন্ত হতে পারলাম না। সবাই এতো নিখাদ আনন্দ উপভোগ করছে এই নিরীহ প্রাণীগুলোর খেদমত করে যা আমাকে বাধা দিলো ওদের শাষন করতে। সবচাইতে বড় কথা ওদের গুরু হলো আমার ছোটো ভাই, সে যা বলছে বাচ্চাগুলো তাই করছে। কাঁচি দিয়ে ঘাস কেটে আনা, খড় আনা, পানি ঢালা, ভূষি রান্না, গরু-বাছুর নিয়ে মাঠে চড়িয়ে আনা,গরুর দুধ দোহন - সব করা শেষ এই বিচ্ছু বাহিনীর।
আমার পুত্রের অবস্থা ভীশন করুণ। ওর দু হাত মশা কামড়িয়ে ফুলিয়ে ফেলেছে, তবু সেদিকে চোখ নাই তাঁর। একমনে বাছুরের সেবা করছে। একটু ভীতু বলেই সে বাছুরকে বেছে নিয়েছে, অপরদিকে মেঝোভাইয়ের পুত্র উমায়ের নিয়েছে বাড়ির সবচাইতে বড় গরুটি, আর বড় ভাইয়ের পুত্র বোখারী নিয়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট গরু। এমনকি তারা তিনজন এই তিনটি গরুর নাম পর্যন্ত ঠিক করে দিয়েছে।
উমায়ের আবেদন করলো সে গরুকে গোসল করাবে, আর পায় কে! সবাই নেচে উঠলো এই তালে। বাধ্য হয়ে ছোট ভাই কলের পাড়ে গরু এনে গোসলের প্রস্তুতি নিলো। উমায়ের-বোখারী- আফনান ছুটে দৌড়ে বাথরুম থেকে সাবান -শ্যাম্পু নিয়ে গেলো! হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাচ্ছিলো যখন ওদের বোঝাতে যাচ্ছিলাম গরুর গোসলের জন্য সাবন শ্যাম্পুর দরকার হয় না! কিন্তু এদের বোঝানোর কোনো উপায় নাই, নিরুপায় হয়ে ছোটো ভাই বালতির পানিতে সাবান-শ্যাম্পু গুলিয়ে নিলো-বাচ্চারা পানি ঢেলে দিয়ে তিনটি গরুর গোসল সমাধা করলো ।
আম্মা সমস্ত বাড়ি জুড়ে অনেক গাছ লাগিয়েছেন, আমি সহ ভাইয়ারা আম্মার পিছু পিছু গেলাম বৃক্ষ পরিদর্শনে। প্রায় চল্লিশ রকমের ঊর্ধে নানান জাতের ফলের গাছ লাগানো হয়েছে, এগুলো বেশির ভাগ হাইব্রিড জাতের। আমার জন্য গাছের কিছু ফল তখনো রেখে দিয়েছিলেন আম্মা - এই ভেবে আমি নিজ হাতে পেরে খাবো! কয়েকটা পেয়ারা গাছ থেকে পেয়ারা পারলাম, একটা আম গাছ থেকে আম - আম্মার চোখে মুখে তৃপ্তির দ্যুতি চিক চিক করছিলো!
অকর্মা খেতাব থেকে নিজের নাম কাটিয়ে নেয়ার জন্য গেলাম টেবিল গুছাতে। শো-কেজ থেকে প্লেট,গ্লাস, জগ, বাটি নামিয়ে সেগগুলো ধুয়ে সুন্দর করে ডেকোরশন করলাম। রান্না শেষে টেবিলে খাবার দিলাম, ভাইয়াদের ডেকে আনলাম খাওয়া শুরুর জন্য।
পর্দার কারণে ভাবীদের নিয়ে একসাথে বসে খাওয়া যাচ্ছিলো না, তাই আমি ভাবীদের সাথে খাবো মনে করে বসতে চাইলাম না, কিন্তু আমার বড় ভাই বেজায় রসিক মানুষ, উনি বললেন সাত সমুদ্রতেরো নদী পার হয়ে ইতালি থেকে এসেছিস বাবা-মা ভাই-বোনের কাছে আর কিনা পরের বাড়ির মেয়েদের জন্য আমাদের সাথে খাবি না তা হবে না। অগত্যা ভাইয়াদের সাথে বসলাম ঠিক কিন্তু খাওয়া শেষ করলাম না, ভাইয়ারা চলে গেলে ভাবীদের সাথে বসে তৃপ্তির সাথে মাটির চুলোয় রান্না করা খাবার খেলাম।
এট আানো- সেট আানো আব্বার হাঁকডাকে মুখর প্রাঙ্গণ, সেবা-যত্ন ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সেটা নিয়ে আম্মার পেরেশানী, ভাইয়াদের কৌতুকময় পরিবেশ, অন্দরমহলের মহিলাদের রান্না নিয়ে নানবিধ গবেষনা, পিচ্চিদের প্রাণীপ্রীতি এতো সব আনন্দঘণ মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো আমাদের সেই দিনের বনভোজন কিন্তু অনিঃশেষ আনন্দের রেশখানি হৃদয়ের গহীনে হৃদয় বীণার সবক'টা তারে এখনো আনন্দবাণীর ঝংকার তুলে যায় অহর্ণিশ.........
বিষয়: বিবিধ
২২৯২ বার পঠিত, ৪১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
খাওয়ার জন্য আসছি.........
আমি তো খাওয়ার কোনো ছবি দেই নি এবার!
দেশের অনুভূতিগুলো লিখবো ভাবছি অনেকদিন ধরে কিন্তু লিখা হচ্ছে না, তাই বসে গেলাম! পড়ার আমন্ত্রণ রইলো!
শুকরিয়া!
ভালো রকমের ফাঁকিবাজ হয়েছো তুমি দেখছি!
দেশের অনুভূতিগুলো লিখবো ভাবছি অনেকদিন ধরে কিন্তু লিখা হচ্ছে না, তাই বসে গেলাম! পড়ার আমন্ত্রণ রইলো!
শুকরিয়া
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম! অনেক অনেক শুকরিয়া আপনাকে। জাযাকাল্লাহ খাইর।
আচ্ছা আপু! এটাকে বনভোজন বলবো? নাকি ঘরভোজন?? নাকি টেবিলভোজন??? নাকি আনন্দভোজন????
আসলে গ্রামের বাড়ীর মজাটাই আলাদা। ঢাকা শহরের ছোট বেড রুমটি আর ইটালির সেই ফ্লাটের বেড রুমটির পার্থক্য কোথায়?
কিন্তু গ্রামের মজাই আসল মজা। কবি বলছেন না! আমাদের ছোট গ্রামের মায়ের সমান। দারুন এক অনুভূতি শেয়ার করলেন।
বনে না গিয়েও আনন্দভোজন হয়েছে এটা ঠিক
গ্রামের বাড়ির সাথে জড়িয়ে আছে নানান রঙ্গের স্মৃতি বিজড়িত দিন, যা আজো ভাবায়- আনন্দে উদ্বেলিত করে মন-প্রাণ। কিন্তু গ্রামকে, দেশকে, মাটিকে মা বলতে আমার বাঁধে! আসলে এটা বিশেষ শ্রেণীর বুদ্ধিজীবিরা বিশেষ কৌশল করে আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে -আমরা বুঝতেও পারি না!
সময় নিয়ে পড়েছেন এবং অনুভূতি প্রকাশের জন্য আন্তরিক শুকরিয়া আপনাকে। জাযাকাল্লাহ খাইর। শুভকামনা নিরন্তর।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক আনন্দিত হলাম। অনেক অনেক শুকরিয়া!
স্মৃতি ঘেটে লিখে ফেলুন আপনাদের গ্রামের কাটনো সময় গুলো নিয়ে!
জাযাকাল্লাহু খাইর!
শুনেছি বনে গিয়ে ভোজন করলে তাকে বনভোজন বলে। কিন্তু আপনার বনভোজন দেখি পুরোটা বাড়িতে।
যাহোক আপনার ভোজনের কাহিনী খুব ভালো লাগলো। এককালে আমিও গরুর অনেক সেবা যত্ন করেছি।
আপনার সাবলীল বর্ণনা উপভোগ করলাম। চালিয়ে যান।
হুম, আমাদের টা তাহলে বাড়িভোজন হয়েছে!
ওরা তিন ভাই তিন গরূর নাম দিয়েছে- টাইগার, বেল্লো, কিউট! আমি বলি গরুর নাম আবার টাইগার হয় কেমনে করে?
তবে বাচ্চারা প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখেছে, পুকুরে নেমেছে, আনন্দ উপভোগ করেছে আমার দেশে আসা শতভাগ স্বার্থক মনে করি !পুত্র তো বলেই ফেলেছে তার বেল্লো বাছুরটাকে ইতালি নিয়ে আসতে চায়!
ভালো লেগেছে জেনে আন্তরিক ভাবে খুশী হলাম। জাযাকাল্লাহু খাইর।
অনেক মজা করেছেন আপু দেখে অনেক ভাল লাগল ধন্যবাদ আপু ।
আসলে আপু গ্রামের বাড়িতে খুব একটা সহজ না রান্না বান্না করা তাও যদি আবার অভ্যাস না থাকে!
এজন্য ঈদের প্রায় সমস্ত রান্না আমি নিজে করেছিলাম ভাইয়ার বাসায় যেনো কিছুটা হলেও হক আদায় হয়!
আসলেই আমরা অনেক আনন্দ করেছিলাম
জাযাকিল্লাহু খাইর। অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও দোআ
নো খাবার
আংশিক হলেও চিত্রটা আমাদের পরিবারের মতই!!
কল্পনা করে হা-পিত্যেশ করা ছাড়া এখন আর কিছুই করার নেই!!
ভাই-বোনদের অনুযোগ শুনি, আর আশ্বাসবানী শোনাই- এইতো, আর ক'টা মাস!!
আপনাদের জন্য দোয়া রইল- এ মধুবন্ধন জান্নাত পর্যন্ত টিকে থাক!!
আপনাদের পরিবারের সবার জন্য রইলো আন্তরিক দোআ, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। আপনারাও একসাথে হয়ে আয়োজন করুন মিলনমেলার এই দোআ উপরওয়ালার নিকট!
অতি উত্তম ও মূল্যবান দোয়ার জন্য আন্তরিক শুকরিয়া, আপনার জন্যেও অনুরুপ!
জাযাকাল্লাহু খাইর!
দুরে থাকুন বা কাছে থাকুন সবাই এক।
দেশী রান্না মাটির চুলায় তার স্বাদ একেবারে অনন্য! পরের বার লিখব চট্রগ্রাম ভ্রমন এবং মেজবানী গোস্ত ভোজন ইনশা আল্লাহ!
জাযাকাল্লাহু খাইর
সবচাইতে বেশী ভালো লেগেছে এটাই যে,বাচ্চারা প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলো।
আমাদের গ্রামে যাওয়া হতো শুধু স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার পর, তাও খুব অল্প সময়ের জন্য যেতাম । আব্বা রিটায়ারের পর সিদ্ধান্ত নিলেন গ্রামে চলে যাবেন, তখন কিছুদিন ছিলাম পরে ইতালী চলে আসা হয়েছে। আর এখন প্রবাস থেকে গেলেও খুব একটা যাওয়া হয় না গ্রামে।
অনেক অনেক শুকরিয়া ভাইয়া আপনাকে। জাযাকাল্লাহু খাইর।
গরম গরম তেলের পিঠা, চালের রুটি সাথে দেশি মুরগির ঝোল আর চা দিয়ে তৃপ্তির সাথে সকালের নাস্তা করলাম। এবার দুপুরের খাবার রান্নার আয়োজনেরপালা। আগে থেকেই আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম সবাই মিলে রান্না করবো।
উঠোনের এক কোণে ভাইয়ারা মুরগি জবাই করলেন, আম্মা করলেন কবুতর জবাই, পুকুর থেকে উঠানো হলো তাজা মাছ- রান্না ঘরে আমরা মহিলারা মিলে সেগুলো কাটাকাটিতে লেগে গেলাম। আমাদের আসা উপলক্ষ্যে খালাতো সম্পর্কের ভাবীরা এসেছেন। সবাই মিলে কাজ ভাগ করে নিলাম।
অনেকদিন পর দেখলাম ছাই দিয়ে ধরে তাজা মাছ কাটতে। আঁশ ছড়ানো থেকে শুরু করে খন্ড খন্ড করে মাছ টুকরো করা- মনেহলো এক মুহুর্তেই করা হয়ে গেলো। আস্তো মুরগিটাকে চামড়া ছাড়িয়ে সেটাকেও বিভক্ত করা হলো সুণিপুন কৌশলে।
মন্তব্য আর কি করব !! আমি শোকে পাথর। আমার পুটির মা যদি এসব রান্না করত !!! ওহ !!
দেশবাসী আপনার অভ্যর্থনার জন্য লাল কার্পেট বিছিয়ে বিশাল বিশাল পাতিলে রান্না চড়িয়ে রাখবে, সাথে নববধূ পুটির মা-দোআ ও শুভকামনা রইলো।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
মোটেও দেরী হয়নি বরং সময় নিয়ে পড়া ও চমৎকার ভালোলাগা অনুভূতি ব্যাক্ত করার জন্য আন্তরিক শুকরিয়া!
জাযাকাল্লাহু খাইর।
হরেক রকমের মাছ, তাজা কৈমাছ ...
সবুজ তাজা তাজা পেয়ারা
গরম গরম তেলের পিঠা
চালের রুটি সাথে দেশি মুরগির ঝোল
মুরগি , কবুতর
পুকুর থেকে তাজা মাছ
মাটির চুলায় রান্না
পোড়া লাকড়ির ঘ্রান আর তেলে-পিঁয়াজের ঘ্রান
আহ ! আর কি বলব ! কান্নাই পাচ্ছে এখন ....
আপু এখন সব শুধু সোনালী স্মৃতি, আবার যেতে ইচ্ছে করছে!
আপু নতুন লিখা পাই না অনেক দিন আপনার! মিস করি ভীষন
জাযাকিল্লাহু খাইর। দোআ ও শুভকামনা রইলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন