"অনুভবের আলোড়ণ"
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া মুকিম ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:১৪:৩৭ রাত
৩৮০০০ মাইল ফিট উপর থেকে ধীরে ধীরে যান্ত্রিক পাখি এসে বাংলার ভূমিতে অবতরণ করলো। পাখির উড্ডয়ন আর অবতরণকাল দুটোই আমার জন্য যথেস্ট ভয়ংকর সময়। উড়তে থাকার সারাটা ক্ষণ অজানা আশংকায় মন দুরু দুরু করতে থাকে। বিগত বছরের বিমান গায়েবের সংবাদগুলোর কিছু ভূমিকা আছে অবশ্য এতে। দোআ পড়তে পড়তে অবশেষে যান্ত্রিক পাখির চাকা রানওয়ে স্পর্শ করলো। আমরা সুন্দরভাবে আমাদের কাংখিত স্থানে এসে পৌঁছলাম।
ভূ-পৃষ্ঠ থেকে অনেক উপরে থাকার কারণে প্লেনের ভিতর স্বভাবতঃই খুব ঠান্ডা থাকে। যখনি এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়েছি পুত্র কন্যা অদ্ভুতভাবে লম্ফঝম্প করা শুরু করলো। হঠাৎ ঠান্ডা থেকে বেরিয়ে ঢাকার আদ্রতা গায়ে লাগার সাথে সাথে মনে হলো গরম কিছু দিয়ে ছ্যাকা দেয়া হচ্ছে।বাচ্চাদের অবস্থা দেখে মনে হলো গরম তো লাগছেই আবার শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। আমার নিজের কাছেও ঢাকার বাতাস খুব ভারী মনে হলো,মনে হলো এখানে বাতাসের অক্সিজেনেও বুঝি ফরমালিন আছে।
গাড়িতে বসে চোখ মেলে বহুদিন পর দেশকে দেখলাম। এই সেই এয়ারপোর্ট রোড যা সবার আপনজনকে কাছ থেকে দূর দূরান্তে বিভক্ত করে দেয়! কাউকে রিসিভ করতে আসাটা অনেক আনন্দের কিন্তু বিদায়ের বিষয়টা ভীশন রকম করুণ!
রাস্তায় রাস্তায় এতো সাইনবোর্ড, হায়রে পণ্য- আর পণ্যের বিজ্ঞাপন! বিজ্ঞাপনের ঠাসাঠাসির কারণে বাসা-বাড়ি দেখা যাওয়াও দুষ্কর। শুধু তাই নয় ইলেক্ট্রিসিটির তার আর বিজ্ঞাপনের অনভিপ্রেত অন্তরঙ্গ সহবস্থান যথেস্ট ঝুঁকিপূর্ণ। কে তার খেয়াল রাখে?
বরাবরের মতো ফুটপাত জুড়ে দখল করে থাকা ছোট ছোট দোকান গুলো খদ্দরদের দিয়ে পরিপূর্ণ। জায়গায় জায়গায় ময়লা ফেলে রাখার বদঅভ্যাসটা বদলায়নি বিন্দুমাত্র! আর সেই নোংরা ঘেটে ছোট-বড় অনেকেই ঝুড়িতে তুলছেন নানান সামগ্রী। পাশের সিটে বসা মেয়ের দিকে দিকে তাকিয়ে দেখি সেও একই দৃশ্য দেখছে এবং যথারীতি মুখ ভার করে ফেলেছে। ছোট বাচ্চাদের এই ধরণের কাজ করতে দেখলে মেয়েটাকে বড্ড পীড়া দেয়। যে শিশুদের অধিকার ছিলো এই মুহূর্তে তারা স্কুলের বেঞ্চে বসে বিদ্যা শিক্ষা করবে,মেধা তুলে নিবে জীবনের ঝুলিতে, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তারা আজ টুকরো কাঁচ-প্লাস্টিক কুড়াচ্ছে- আমরা কি পেরেছি সঠিক অধিকার টুকু ফিরিয়ে দিতে?
মোড় নিয়ে গাজীপুরের দিকে ঢুকতেই দু-চোখ জুড়িয়ে গেলো। এলাকাটি এখনো চিরসবুজ আছে। লালচে আঠালো এঁটেল মাটিতে জন্মে থাকা সারি সারি গজারি গাছ খুবি দৃষ্টিনন্দন । তবে বোঝা যাচ্ছে গাছপালার পরিমান বেশ কমে গেছে! হুট করে ভালো রাস্তা ছেড়ে গাড়ি এসে পড়লো ভাংগা রাস্তায়। বহু কসরত করে এঁকে বেঁকে চলেও ঝাঁকি খাওয়া থেকে বাঁচা যাচ্ছিলো না। একপর্যায়ে পুত্র বলে উঠলো আম্মু আমরা কি লুনা পর্কের মতো কোনো রাইডে উঠেছি নাকি?
চিরচেনা এলাকাটা কেমন যেনো বয়োবৃদ্ধ - জীর্ণ-শুষ্কাতার আবরণ মেখে আছে। অনেক অনেক স্মৃতি বিজরিত এলাকটা দেখতে দেখতে মনের মাঝে অতীতের নানা রকম কথা দুলে উঠতে লাগলো!
খুব সকাল হওয়াতে জ্যামের কবলে পড়তে হয় নি। খোলা রাস্তা দিয়ে গাড়ি দ্রুত বেগে ছুটতে লাগলো। গাজীপুর চৌরাস্তার দিকে এসে হর্ণের আওয়াজ জানান দিচ্ছে সামনে ট্রাফিক আছে। কি এক প্রয়োজনে গাড়ি থামলো রাস্তার পাশে, আমরাও গ্লাস নামিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার উদ্দেশ্যে বাইরে তাকালাম। দলে দলে অনেক মহিলারা লাইন ধরে যাচ্ছেন দেখে বোঝা যায় আশেপাশেই কোথাও গার্মেনট্স ফ্যাক্টরি আছে। প্রায় বেশিরভাগ মহিলাই বোরখা পরিহিতা বা সালোয়ার কামিজের সাথে মাথায় হিজাব আছে। উনারা হয়তো খুব বেশি শিক্ষিত না কিন্তু পর্দার বিধানটার প্রতি ভালোবাসা সত্যি ভালোলাগার জন্ম দেয়। শুধু পার্থক্য এতটুকু অনেকেই বোরখা পড়লেও মাথায় উড়না বা স্কার্ফটা এমনভাবে পড়েছেন যে মাথার অর্ধেক চুল বিনা ক্লেশে বাইরে বেড়িয়ে আছে অথবা সামনে দিয়ে মাথা ঢাকা তো পিছন দিয়ে জামার গলা এতো বড় যে ঘাড়, পিঠের অনেকাংশ অনাবৃত। উনাদের পর্দায় দুর্বলতা আছে স্বীকার করি কিন্তু মৌলিক বিধানটি জীবনে বাস্তবায়নের জন্য যে অনুগত মন উনাদের আছে অনেক পড়ালেখা জানা ভদ্র সমাজের ভদ্র মহিলাগণের জীবনে তা ভীশন রকম অনুপস্থিত!
এই রাস্তাটা যখন বানানো হয়েছিলো তখন সরকারী ক্ষমতায় ছিলেন বেগম জিয়া। বিষয়টা মনে আছে কারণ তখন থেকেই আম্মা সবসময় উনার দোআ করতেন কেননা আগে এই রাস্তার কষ্টে জনসাধারণের অনেক সমস্যা হতো। আর এভাবেই বিষয়টা আমার মনে রয়ে গেছে। মনে থাকার আরেকটা স্মরণীয় ঘটনাও আছে। সেটা হলো রাস্তা তৈরির সময় আমি আর আমার ভাইয়া নানা বাড়িতে যাচ্ছিলাম, যেহেতু রাস্তায় কাজ চলছিলো তাই বাস আসা-যাওয়া করতে পারছিলো না নির্দিষ্ট কিছু এলাকা পর্যন্ত। আমরা তো আগে জানতাম না, যাই হোক সবার মতো এই নির্দিষ্ট কিছু এলাকা আমরা দু-ভাই বোন হেঁটেই পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে নেমে গেলাম। কিন্তু কিছুদূর আগানোর পর ইটের টুকরোর খোঁচা খেতে খেতে আমার পায়ের জুতো ছিঁড়ে গেলো। আমি ছিঁড়া জুতো নিয়ে হাঁটতে পারছিলাম না, আবার খালি পায়েও হাঁটা যাচ্ছিলো না। ভাইয়া নিজের জুতো খুলে আমাকে পড়িয়ে দিলেন, আমি হেঁটে গেলাম জুতো পায় আর আমার ভাইয়া খালি পায়ে সেই ইটের সুঁচালো টুকরোয় খোঁচার আঘাতে কষ্ট পেয়ে! তবু একটুকুও অনুযোগ করেন নি! ঘটনাটি আমার মনে এমনভাবে আঁকা হয়ে আছে যা আমি কোনোদিন ভুলবো না, সেইদিন ভাইয়া যতটুকু না কষ্ট পেয়েছেন আজ আরো বেশি কষ্ট লাগতে লাগলো আমার নিজের! স্মৃতিরা হু হু করে যে ঝড় বইয়ে দিয়ে গেলো তা থামতে অনেক সময় লেগে গেলো! খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো ভাইয়ার সাথে শেয়ার করি ঘটনাটি কিন্তু আবেগ কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না কোনোমতেই তাই অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ঐ মুহূর্তে বলতে পারিনি! সব ভালোবাসার বোঝার জন্য মনে হয় প্রকাশভংগি বা স্বীকারোক্তির প্রয়োজন হয় না, কৃতজ্ঞ মন নীরববেই ভালোবাসার ঘোষনা দেয়!
ভাইয়ার সাথে গল্প করছি আর আশেপাশের দৃশ্য দেখছি , অনেক পরিবর্তনের মধ্যে একটা বিশেষ রকম পরিবর্তন হলো মাটির বাড়িগুলো আর নেই। প্রায় সব মাটির বাড়িগুলো এখন ইট- সিমেন্টের বিল্ডিং এ পরিণত হয়েছে। দেশের মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতির প্রমান বলা যায়।
ঠিক যে বাড়িটার পাশে গাড়িতে বসে আছি আমরা, বাড়িটা দেখেই বোঝা যায় বেশ সৌখিনতার সাথেই তা সৃষ্টি করা হয়েছে।একেবারে মূল গেটের উপর বড় বড় অক্ষরে লিখা কালিমায়ে তাইয়্যেবার উজ্জল রং চোখে পড়লো । আরো ভালো করে দেখার আশায় চোখ বুলালাম, হুম ভদ্রলোকের রুচি আছে,পুরো কালিমাটা লিখেছেন মার্বেল পাথরের টাইলস ফিটিংসে। কান খাড়া না করেও শুনতে পেলাম বাড়ি থেকে আসা গানের সুর । আমরা ছুটে চললাম কিন্তু বাড়িটির এই দ্বৈত অবস্থা আমার মনের মধ্যে অনেক নাড়া দিয়ে গেলো!
আমাদের দেশের ড্রাইভার সাহেবদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু আছে সেটা নিয়ে বিতর্ক বা প্রশ্ন থাকলেও উনাদের ড্রাইভিং ট্যালেন্ট যে আরো হাজারো দেশের প্রশিক্ষিত ড্রাইভার থেকেও বেশি এটা চোখ বন্ধ করেই স্বীকার করতে হবে। আমি প্রায় চিৎকার করছিলাম শুধু উনি যেভাবে সামনে-পিছনে-ডানে-বামে আসা গাড়িগুলোকে ওভারটেক করছিলেন এটা দেখে! ভাইয়া শুধু বললেন -শোন বাংলার মাটিতে এসেছিস সুতরাং কলিজাটকে চড়ুইপাখির কলিজা না বানিয়ে রয়েল বেংগল টাইগারের কলিজা বানা- আর চিৎকার বন্ধ কর। তোর মতো ঐসব নিয়ম মানতে গেলে ২৪ ঘন্টায় ও বাড়িতে পৌঁছতে পারবি না!
আমাদের ভীতু কলিজাগুলো দুরুম দুরুম করতে করতে প্রায় খাঁচা ছাড়া অবস্থার স্বীকার হয়ে অবশেষে আমাদের বাসার সামনে এসে স্থির হলো।
ভাইয়ের ছোট মেয়েটা এক ছুটে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো, হাতে ছিলো একমুঠো বুনো ঘাস ফুল- যা আকারে ছোট, সুগন্ধহীন তবু আমার উতলা মনকে প্রচন্ডরকম ভালোবাসায় সিক্ত রাখার জন্য যথেস্ট ছিলো।বাসায় চলে আসলাম। উন্মুখ হয়ে থাকা প্রতিটি আপনজনের উষ্ণ আলিংগনে দীর্ঘ সফরের ক্লান্তি-কষ্ট সবকিছুই নিমিষে মিলিয়ে দিলো। চঞ্চল দৃষ্টি শান্ত হলো, ক্লান্ত মন হলো শীতল । এরই নাম বুঝি নীড়- সুখের নীড় আলহামদুলিল্লাহ!
বিষয়: বিবিধ
১১৬১ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই তো এবারের জুলাইয়ের ঘটনা। ঈদুল ফিতর দেশে করেছিলাম দীর্ঘ ১০ বছর পর।
অনেক পরিবর্তন এসেছে তবে এটা যদি কল্যাণের পথে হতো খুব ভালো হতো।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে মজবুত ঈমান , সুন্দর আমলের মাধ্যমে জান্নাতুল ফেরদৌসের অধিকারী বানিয়ে দিন - সেদিন সেখানের শুক্রবারের মজলিসে আমাদের সবার সাথে যেনো সাক্ষাত হয়ে যায়! আমীন।
অনেক অনেক শুকরিয়া তোমাকে চমৎকার ভাষায় অনুভূতিটুকু শেয়ার করার জন্য! আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!
দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন যারা তাদের কোনো পরিবর্তন আসেনি। তাঁরা তো আমাদের দেশের খেলার গুটি, তাঁরা না থাকলে গনতন্ত্রের ফাঁসি হবে যে!
অনেক শুকরিয়া ভাই আপনাকে, শত ব্যস্ততার মাঝেও বোনটির পোস্ট পড়া এবং অনুপ্রেরণার জন্য! জাযাকাল্লাহ খাইর
ভালো লাগল সাবলীল সুন্দর উপস্হাপনা!
জাগতিক উন্নয়ণ বেড়েছে কিছুটা!
তবে,সহনশীলতা-নৈতিকতার ততটুকুই অবনতি হয়েছে আজকের সমাজের!
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান!
যে কয়টা দিন দেশে যাই মনে হয় অর্থ দিয়ে কেনা কিছু সময়, তা কেবলই দ্রুত ফুরিয়ে যেতে চায়! অবহেলা তো নয়ই বরং সময়ের যথাযথ মূল্যায়নের সর্বাধিক প্রচেষ্টার পরেও বরকত লাভ থেকে বঞ্চিত হতে হয়! তারপরেও সবাইকে কাছে পাওয়া , তাঁদের সুখের স্মৃতি নিয়ে ফিরে আসা!
আশাকরি আল্লাহ আপনাকে সুস্থ ও সুন্দর রেখেছেন। আপনার চমৎকার মন্তব্যটি অনেক অনুপ্রেরণা দিয়ে গেলো!
"সহনশীলতা-নৈতিকতার ততটুকুই অবনতি হয়েছে আজকের সমাজের!" -একমত ।
বারাকাল্লাহ ফিক। শুভাকামনা ও দোআ রইলো।
যথার্থই বললেন মুহতারামা আপুজ্বী!
করুণাময় আল্লাহ আমাদের সকল কে হেদায়েতময় সাফল্য দান করুন,আমিন!
ঢাকার বাতাস খুব ভারী মনে হলো,মনে হলো এখানে বাতাসের অক্সিজেনেও বুঝি ফরমালিন আছে। একদম ঠিক বলেছেন।
অতি চমৎকার বর্ণনা, খুব ভালো লাগল।
আপনারা দেশে আসলেন কবে???
২০১৫ সালের ঈদুল ফিতর এবার দেশে করেছিলাম । প্রায় ৫ বছর পর দেশে আসা আর ১০ বছর পর একসাথে ঈদ করা!
আপনার প্রো-পিকটি সেই আগেরটি রয়ে গেলো- হঠাৎ মনে পড়লো!
শুকরিয়া ভাই আপনাকে, পড়া- মন্তব্য - অনুপ্রেরণার জন্য! জাযাকাল্লাহু খাইর
এইযে আপপপপপি দেশে এসে এতততত কিছু দেখলেন যা নেগেটিভ
পজিটিভ কিছু নেই
এই যেমন: পিঠা পয়েশ, ঘোড়াফেরা, চুরিকরা, পুকুরে সাতার,
হাতুড়িফুল গ্রহণ করুন
নেগেটিভ-পজেটিভ মিলিয়েই যে ইলেক্ট্রনিক বৈদ্যুতিক বিভব হয়, এরকম নেগেটিভ -পজিটিভ অনুভূতি দিয়ে আমার সফর সমাধা হয়েছিলো।পিঠা পায়েশের বক্তব্য আসছে -আগামী ভার্সনে
হাতুড়ি ফুলে আমার ভীশন রকম আ্যালার্জি -রক্তে IGe এর পরিমানে গন্ডগোল আছে!
শুকরিয়া
আপনার মন্তব্যটুকুও আসাধারণ ভালো লাগা রেখে গেলো! শুকরিয়া শুভকামনার জন্য! জাযাকাল্লাহ খাইর
আগামী বছর ই তো যাচ্ছেন ইনশা আল্লাহ। আপনার ভ্রমনকাহিনী প্লাস পুটির মায়ের শুভ পরিণয়ের কাহিনী একসাথে পড়তে পারবো আমরা!
বারাকাল্লাহ ইক।
কিন্তু তারপরে যখন একেবারে সমুদ্রপৃষ্ঠের বরাবর ছিলাম তখনো কিন্তু আগুনে ছ্যাকা বাতাস পিছু ছাড়েনাই
শুকরিয়া সবুজ ভাই।
৩৮০০০ মাইল ফিট উপর ঠিক বুঝলাম না।
সত্যিই বাংলার বাতাসেও ফরমালিন। কলকারখানা ও ব্লিকফিল্ডের ধোয়া ও ধুলাবালি সব মিলিয়ে ফরমালিনই।
বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে যখন কুড়িল বিশ্ব রোড পর্যন্ত আসি, তখন আমার মনে হয় কোন ভুমিকম্পে ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকায় প্রবেশ করছি।
আবুধাবীর প্রাসাদ ও পরিচ্ছন্নতা আর বাংলার ঐতিহ্যবাহী নোংরা শহরটির তুলনা আর কিভাবে মিলবে। তবুও আমার সোনার দেশ।
সকাল ছিল বলে জ্যামে পড়েননি। আমরা কুড়িল বিশ্বরোড় থেকে সায়দাবাদ আসতেই ২ঘন্টা। দেশীয় ঘাম আর ধুলোবালিতে তখনই গোসলের প্রয়োজন অনুভব করি।
শহর ছেড়ে গাড়ী যখন রাস্তায় প্রতিযোগীতায় নামে, তখন মন থেকে বাড়ি ও আত্মীয় স্বজন সবার ভালোবাসা মুহুর্তেই বিষাদ হয়ে যায়। চিন্ত করি আগে নিজের জান থাকবো তো!
এত কিছুর পরও যখন নিজের গ্রামে গিয়ে পৌছি, গ্রামের পরিচিত মানুষ গাছপালা ঘরবাড়িগুলো দেখি, সব কষ্ট ক্লেশ মুহুর্তেই পানি হয়ে যায়।
স্মৃতিময় পোষ্টির জন্য শুকরিয়া।
আমাদের ফ্লাইটগুলো প্রতিবার অলৌকিকভাবে এমন সময়ে পড়ে যায় যে আমরা খুব সকালে এসে নামি। এবার তো সেহরী টাইমে নেমেছিলাম! লাগেজ নিয়ে বের হতে হতে সকালের আলো ফুটে উঠেছিলো!
আপনার চমৎকার মন্তব্যটির জন্য আন্তরিক শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহু খাইর।
আপু বর্ণনা অনেক সুন্দর হয়েছে ধন্যবাদ আপু।
আমরা এবার গেলাম প্রায় ৫ বছর পর। দীর্ঘহ সময়ের বিরতি স্বল্প সময়ের সফর তবু মনে অনেক ভালোলাগা রেখে যায়!
অনেকদিন পর তোমাকে পেলাম, সব ঠিক আছে তো? শরীর-মন ভালো তো?
জাযাকিল্লাহু খাইর!
মন্তব্য করতে লগইন করুন