একটি চাঁদনী রাতে

লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া মুকিম ২৯ এপ্রিল, ২০১৫, ১১:২৫:৪৭ রাত



সোনালী চিলের ডানায় ভর করে চলে যাওয়া হারানো দিনের স্মৃতিগুলো মনের আকাশে গুটি গুটি হয়ে ধূষর মেঘের আস্তরনে রুপ নেয়! ফুটপাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে ভাবনাগুলো সেই ভাসমান উড়ে যাওয়া চলন্ত মেঘের মতোন গতিবেগবান হয়! ফুটপাতের পাশেই লাগানো সারি সারি ঝোপের সবুজ কচি পাতা গুলো বাতাসে এদিক ওদিক দুলছে, সেই পাতাগুলোকে হাতের স্পর্ষের আদর দিয়ে সামনে বাসার দিকে এগিয়ে যায় আঈশা! রেসিডেন্সিয়াল এলাকায় বাসা হওয়াতে এপাশটাতে কোন কোলাহল নেই, খুবি নিরিবিলি শান্ত একটি এলাকা ! রাস্তার শেষ মাথায় বাসা যার পিছনেই রয়েছে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো পর্বতশৃংগ! উঁচু পর্বত আর নীলকাশের থোকা থোকা মেঘগুলো যেনো পরষ্পর ছুঁই ছুঁই! শান্ত নির্মল বাতাস গুনগুন করে স্নিগ্ধতায় বয়ে যাচ্ছে চারিপাশে!

কিছুক্ষন আগেই অঝোরে বৃষ্টি বর্ষন হয়েছে ! বৃষ্টিতে সিক্ত ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ পুরো প্রকৃতি জুড়ে! মায়ের হাতের বানানো কলাপাতায় তৈরি কাঁঠালের পিঠা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে খুউব! কিছুটা পোড়া পোড়া ভিতরে নারকেল আর বাদাম দেয়া কাঁঠালের পিঠার স্বাদ বহুদিনেও বিস্মৃত হয়নি! পিঠা সমেত ভাইবোনদের সাথে ভাগাভাগি করা আনন্দোচ্ছল সেইদিনগুলোর ঘ্রানও বুঝি মনের অজান্তেই জীবন্ত হয়ে ওঠে! মুখে মৃদু হাসির রেখা টেনে আঈশা দ্রুত পদে গৃহাভিমুখে রওনা হয়! সূর্যাস্তের সময় বুঝি চলেই এলো, মাগরিবের সালাতেরো আর বেশি দেরী নেই!

বাসায় যখন সালাত আদায় করা হয় তখন সবাই মিলে জামায়াতে সালাত আদায় করে ২৭ গুন সওয়াব অর্জনের সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না আঈশা। সন্তানদের নিয়ে আঈশা বাসায় জামায়াত করলেও তাঁর স্বামী মসজিদে গিয়েই যথাসম্ভব সালাতে শরীক হয়। বাসায় ঢুকেই পুত্র আর কন্যাকে ওযুর নির্দেশ দিয়ে সালাতের প্রস্তুতি নিলেন । সবাই সালাত আদায় করা শেষ হলে পুত্র কন্যা জায়নামাজ গুটিয়ে উঠতে চাইলে আঈশা হাত দিয়ে বসার ইশারা করলেন! মুয়াজ নামাজের আগে কার্টুন দেখছিলো তাই মনের আকর্ষন এখনো সেখানেই রয়ে গেছে! আর তাই মা বললেন মুয়াজ সূরা নাস, ফালাক আর ইখলাস আম্মুকে একটু শোনাও তো! মুয়াজের সূরা বলা শেষ হলে মাহিরাকে বললেন আয়াতুল কুরসী বলতে! সম্পূর্ন পড়া শেষ হতেই বাবা জামিল এসে বাসায় ঢুকলেন! সবাইকে সালাম দিয়ে বললেন সবাই তাড়াতাড়ি রেডি হও আমরা সবাই ছাদে যাবো !

মুয়াজের তো আনন্দ আর সয় না, দৌড়ে গিয়ে রেডি হতে শুরু করলো! মাহিরা, সে পারতপক্ষে বাসা থেকে বেরই হতে চায় না! তবু পরিবারের সবাই মিলে যাওয়া হচ্ছে তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও রয়ে সয়ে সেও রেডি হলো! দশতলা বিল্ডিং এ তাঁদের বসবাসের মেয়াদও দশ বছর হতে লাগলো! মুয়াজ বাবার সাথে অসংখ্য বার ছাদে এলেও আঈশা আর মাহিরার জন্য এটাই প্রথমবার ছাদ পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে বের হওয়া!

দশ তালা উঁচু বিল্ডিং আর তার উপর ছাদ, সেই উপর থেকে সব কিছু খুব পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে! অনেক দূরের জিনিসগুলোকেও কাছে নিয়ে এসেছে! আশেপাশের সব ফ্লাটগুলোতে সন্ধাবাতির উজ্জল আলো প্রজ্জলিত! পশ্চিমাকাশে ধূষর মেঘের আবরনে রক্তিম সূর্যটা ক্ষয়ে ক্ষয়ে বিস্তীর্ন আকাশজুড়ে রঙিন লালচে আভা ছড়িয়ে বিদায়ের অপেক্ষায়! এই সূর্যাস্ত অসাধারন আশ্চর্যরকম অদ্ভুদ ভালোলাগাময় এক দৃশ্য যা হৃদয় পটে আনন্দের রংপেন্সিল দিয়ে নো মোছা স্মৃতি এঁকে দেয়!

বাচ্চারাও উপভোগ করছিলো এই চির সুন্দর সূর্যাস্তের শেষ বিদায়ের লগ্ন! জামিল বললো, মসজিদ থেকে বের হয়েই দেখি আজকের আকাশ অদ্ভুত রকমের সুন্দর তাই সবাইকে নিয়ে এই চমৎকার মূহুর্তের আনন্দানুভূতি শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারিনি!সবাই মুগ্ধ স্বরে স্বীকৃতি জানিয়ে একাত্নতা প্রকাশ করে জামিলের সাথে !

ছাদের উপর এলোমেলো ঠান্ডা বাতাসে সবাই কিছুটা কাবু তারপরেও আনন্দের কমতি নেই! ঘুরে ঘুরে সবাই ছাদের এ পাশ থেকে ওপাশে যাচ্ছে , ছাদ থেকে পুরো শহরের নৈশকালীন প্রস্তুতির আয়োজন দেখছে! আনন্দিতো হতে বা সুখী হতে কি খুব বেশী প্রয়াসের প্রয়োজন? মনেতো হয় না! প্রিয়জনেরা পাশে থেকে ছোট একটু প্রাকৃতিক আনন্দঘন পরিবেশেও প্রচন্ডরকম সুখানুভূতি লাভ করা যায়! তবে সুখ সেই উচ্ছল দুরন্ত প্রজাপতির মতো সে তাঁর বর্নিল ডানা মেলে দূরে উড়ে যেতে চাইবে ! তাঁকে কাছে রাখার জন্য তাই নতুন করে আবার আয়োজন করতে হবে!

আকাশের রং ক্ষনে ক্ষনে পরিবর্তনের আঁচড় লেগেছে! ভাসমান অপরুপ সুন্দর ভাবে মেঘেরা ভেলায় চড়ে ছুটে চলছে দূর দূরান্তর! মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা শিশুটিও বুঝি আজ মেঘের সংগী হতে চাইছে! চাইছে ডানা মেলে একটু যদি মেঘের দেশ থেকে নিমন্ত্রনে পাড়ি দিয়ে আসা যেতো!

ভাসমান মেঘের দিকে তাকিয়ে চোখে পড়ে রাতের সৌন্দর্যে পরিপূর্ন সরু কাস্তের মতোন বাঁকা চাঁদের অস্তিত্ব! মেঘে মেঘে এই চাঁদ ভেসে আসছে নাম না জানা কোন সে অচিন পুরী হতে! চাঁদ তার গন্তব্য স্থির করলো ঠিক জামিল পরিবারের মাথার উপর! মুয়ায তো হাত বাড়িয়ে চাঁদ দেখাচ্ছে মাকে! মাহিরা মোবাইল দিয়ে চাঁদনী রাতের সৌন্দর্য ক্যামেরা বন্দীর প্রচেস্টায়! আঈশার মনে পড়লো আজ রজব মাসের তিন তারিখ। বাসা থেকে চাঁদ দেখা যায় না তাই এ কয়দিন দেখা হয়ে ওঠে নি! যাক, ছাদে এসে খুবি ভালো হয়েছে শুধু সূর্যাস্ত নয় বরং নতুন মাসের চাঁদ ও দেখা হয়ে গেলো!

মুয়াজকে বললো, আব্বু আরবী বারো মাসের নামগুলো একটু বলোতো দেখি!

মুয়াজ ও সদ্য মুখস্থ করেছে তাই ভালো ভাবেই মনে আছে ওর! মনের আনন্দে বলতে শুরু করে- মহররম, সফর,রবিউল আউয়াল, রবিউস সানি, জুমাদিউ আউয়াল, জুমাদিউস সানি, রজব , শাবান, রমাদান , শাওয়াল ,জিলক্বদ এএবং জিলহজ্ব!

মাশা আল্লাহ! গুড বয় বলে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দেয় আঈশা! মুয়াজ এখন আরবী কোন মাস বলতে পারবে বাবা?

মুআজ ঝটপট হিসাবে কষতে লেগে যায়- রবিউস সানি চিৎকার করে বলে ওঠে! ছেলের দিকে তাকিয়ে জামিল আর আঈশা ভাবে রবিউস সানি কেনো বললো? আব্বু তুমি কিভাবে হিসাব করে বললে এখন কোন মাস?

মুয়াজ তৎক্ষনাত জবাব দেয়- গুনে বলেছি এখন এপ্রিল মাস মানে চার নম্বর মাস আর আরবীতে চার নাম্বর মাস হলো রবিউস সানি! সবার হাসি চলে আসলেও বহু কষ্টে হাসি চাপিয়ে রাখলো! ছোট মানুষ বুদ্ধি করে এটুকু বলেছে তাই অনেক! ওকে শুধু এখন সঠিক বিষয়টা বুঝিয়ে দিতে হবে!

মাহিরাকেও একি প্রশ্ন করা হলে দুষ্টু বুড়িটা বলে আম্মু তোমার মোবাইলটা দাও তো, প্রেয়ার্স টাইমে দেয়া আছে আজ কোন মাস! মেয়েক আদরের ধমক দিলেন আঈশা!

জামিল বললো , আব্বু আমরা জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি যে মাসের হিসাব করি সেটা হলো গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আর আরবী মাসের মহররম, সফরের যে হিসাব করি সেটা হচ্ছে চন্দ্রীয় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী! জানুয়ারী , ফেব্রুয়ারী র মতো একই হিসাবে বা সিরিয়ালে কিন্তু আরবী মাস আসে না! দেখো ঐ যে দূর আকাশে যে চাঁদ দেখতে পাচ্ছো আরবী মাসের হিসাব করা হয় এই চাঁদ অনুযায়ী ! যেমন এই চাঁদটা হলো একটা নতুন আরবী মাসের চাঁদ! অথচ আজকে কি এপ্রিল মাসের শুরু ? মোটেও না! অপরদিকে এখন আরবী ক্যালেন্ডারের রজব মাস চলছে আর রজব হলো আরবী সপ্তম মাস বুঝেছো? তাহলে ইংরেজী চতুর্থ আর আরবী মাসের সপ্তম মাসে আছি আমরা এখন!

মুয়াজ তো খুবি লজ্জা পেলো! ওকে আশ্বাস দেয়া হলো কোনো কিছু শিখার মাঝে লজ্জা নেই বরং শিখতে না চাওয়ার মাঝেই রয়েছে লজ্জা ! আর মুয়াজ তো সেদিন মাত্র আরবী বারো মাসের নাম গুলো ওর আ্যারাবিক খাতায় লিখে মুখস্থ করেছে! ধীরে ধীরে ওকে শিখিয়ে দেয় হতো এসব!

জামিল স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললো- এই চাঁদ দেখে পড়ার দোআটার শুরুটা যেনো কি?

- ‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল ইউমনি ওয়াল ঈমান, ওয়াস্ সালামতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ্’ । বাচ্চাদের বলা হলো তোমরাও একটু খানি কয়েকবার বলো দেখবে তোমাদেরো মুখস্ত হয়ে যাবে! মুয়াজ শুধু আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু পর্যন্ত মুখস্থ করলো! আর মাহিরা করলো অর্ধেকের বেশি! আঈশা হেসে বললো- আজ এই দোআ মুখস্থ তোমাদের জন্য হোমওয়ার্ক হিসেবে রইলো!

রজব মাস শুধু আরবি সপ্তম মাসই নয় বরং এই মাসকে কোরানে “আশহুরু হারাম” তথা মর্যাদাপূর্ণ ও সন্মানিত মাসসমূহের একটি বলা হয়েছে! বরকতময় এই মাসের কিছু দিন পরেই আসছে রমাদান! রমাদানের আগমনের কথা ভাবতেই খুশিতে চিকচিক করে ওঠে আঈশা- জামিলের মুখ!

কথাচ্ছলে বেশ খানিকটা সময় মুহূর্তেই কেটে গেলো! নববঁধুর মতো লজ্জিত চাঁদ যেনও নিজেকে মেঘের ঘোমটার আড়ালেই লুকিয়ে রাখতে চাইছে! তারা ঝলমল ঝিকমিক ওড়নায় চাঁদ বারংবার নিজেকে লুকিয়ে হারায়! সূর্যাস্তের লালচে আভার রঙিন আলোর সাথে চাঁদনী রাতের সৌন্দর্যের আবহ ছাদে অবস্হিত প্রতিটি মনের মাঝে প্রভুর দিকে প্র্ত্যাবর্তনের নতুন আশার আলো জাগিয়ে দেয়,যে আলো ছড়িয়ে পড়ে দূর থেকে বহুদূরে.................

বিষয়: বিবিধ

১৫৪০ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

317536
২৯ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১১:৪০
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আপু, আমি ফাষ্টু..............
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:১০
258667
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : ওয়ালাইকুমাসসালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ!শ্রদ্ধেয় ভাইয়ার আন্তরিক প্রথম উপস্থিতিতে বোনটিও আনন্দিতো! আলহামদুলিল্লাহ!Praying
317537
২৯ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১১:৪২
আবু জান্নাত লিখেছেন : সময় করে পরে পড়বো, ফাষ্ট হওয়ার মজাই আলাদা। ঠিক না আপু! Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:১১
258668
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : জ্বি! জানার অপেক্ষায় Happy
317538
২৯ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১১:৪৩
আফরা লিখেছেন : আমার তো শুনেই ভয় লাগছে আপু রমজানের আর বেশী দেরী নেই । আপু আমার জন্য দুয়া করবেন যেন সব গুলো রোজা রাখতে পারি ।
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৩২
258672
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আপুনি! ভয়ের কিছু নেই আপুমনি! এখন থেকেই একটু একটু করে শুরু হয়ে যাক সকল প্রস্তুতি! অবশ্যই আপুর জন্য আন্তরিক দোয়া!Good Luck Praying
317541
২৯ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১১:৫৩
নিমু মাহবুব লিখেছেন : লেখাটি ভালো লেগেছে। এই রকম আরো পাবো আশা রাখি। Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose Rose Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose Rose Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose Rose Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose RoseRose Rose Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose Rose
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৩৩
258673
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম । ভালো লাগা জানানোর জন্য আন্তরিক শুকরিয়া! কিছু মেসেজ দিতে চেয়েছি জানিনা কতটুকু সফল হয়েছি! শুকরিয়া নিমু মাহবুব ভাইGood Luck Praying
317545
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১২:২৩
শেখের পোলা লিখেছেন : চমৎকার হয়েছে৷ ধন্যবাদ৷
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৩৫
258674
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া!
এই মাত্র সদালাপে আপনার কিছু পোস্ট পড়ে এলাম!Happy

আপনার উপস্থিতি অনেক অনুপ্রেরনার Praying Good Luck
317556
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:২৯
এলিট লিখেছেন : আস সালামু আলাইকুম
অসাধারন হয়েছে। ধন্যবাদ।
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৪২
258676
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : ওয়ালাইকুমাসসালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ ! জ্ঞানী ভাইয়াটিকে দেখে আমি খুবি আনন্দিত! আলহামদুলিল্লাহ! Happy

আমার কন্যার সাথে চাঁদের মাধুরি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো, সে আমাকে বললো চাঁদ মোটেই সুন্দর নয়, এবরো থেবরো ধূষর এক উপগ্রহ, সূর্যের প্রতিফলিত আলো পড়ে বলেই চাঁদের আলো দেখা যায়!হাইড্রিজেন হিলিয়ামে ভরা তারাদের দেখে এতো সাহিত্যানুভূতি আসার কি হলো???? বরং চিন্তা করো চাঁদের ক্রমশ ক্ষয় , বৃদ্ধি এর সাথে অরবিটে ঘূর্নায়মান গ্রহ , উপগ্রহ, নক্ষত্র গুলোর মধ্যে যে গতি আর মধ্যাকর্ষন এগুলো যদি ছুটে যায় মুহূর্তেই আমরা ধ্বংস হয়ে যাব! Worried

আপনি জ্ঞানী- বিজ্ঞান নিয়ে জানাশোনা মানুষ তাই আপনাকে কন্যার ধারনাটা শেয়ার করলাম, যদি ভুল ধারনা হয় আশাকরি সংশোধন করে দিবেন!

শুকরিয়া ভাইয়া!Good Luck Praying
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৩:২৬
258683
এলিট লিখেছেন : ধন্যবাদ। এমনভাবে জ্ঞানী বলে লজ্জা দিবেন না। আমার ব্যাপারটা হল - ফাকা কলসি। তাই মাঝে মাঝে বাজে। সাধারনত দেখা যায়, ইসলামিক ফ্যামিলিতে ছেলে মেয়েরা খুব একটা বিজ্ঞানের চর্চা করে না। সেখানে আপনার মেয়ে এই অল্প বয়সে এমন চাদ-সুর্য বিষয়ে জানে সেটা অত্যান্ত আনন্দের কথা।

যাই হোক, মা মণির জন্য আমার কলসী বাজানো কিছু কথাঃ
হ্যাঁ, বৈজ্ঞানিক দিক থেকে দেখলে কথাগুলো ঠিক আছে। তবে এখানে কিছু ভাববার বিষয়ও আছে।
কোন কিছুর মধ্যেই আসলে ইন্টারেস্টিং কিছু নেই। যে রংধনু দেখে আমরা মুগ্ধ সেটা আসলে সুর্যের আলোর প্রতিফলন। যে নদী দেখে আমরা কবি হয়ে যাই সেটা আসলে পানি গড়িয়ে সমুদ্রে ফিরে যাওয়ার পথ। যে মেঘ দেখে আমরা তাকিয়ে থাকি সেটা আসলে উপরে জমে থাকা পানি। যেই ফুল দেখে আমরা মুগ্ধ সেই ফুল হল গাছের বংশবিস্তার করার মাধ্যম। যে অবারিত ধান ক্ষেত দেখে কবিতা চলে আসে সেটা আসলে আমাদের খাদ্য। দুনিয়াতে ইন্টারেস্টিং কিছুই নেই।
ওদিকে আবার মুগ্ধ চোখে দেখলে গাছের পাতার উপরে শিশির বিন্দুও অনেক ইন্টারেস্টিং লাগে। ওটা দেখেই সাহিত্য চলে আসে। আর সাদিয়া আপার মতন লিখতে জানলে তো কথাই নেই।
মরুভূমি, বরফে ঢাকা মেরু, ঘন জঙ্গল, পাহাড়ি অঞ্চল, ইত্যাদি সব যায়গারই আলাদা ধরনের সৌন্দর্য আছে। ঠিক তেমনি এবড়ো থেবড়ো চাদেরও এক ধরনের সৌন্দর্য আছে। এমন একটি সুন্দর ছবি দিলাম।
চাদের আরো ছবি আছে এই লিঙ্কে - Click this link


৩০ এপ্রিল ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৬
258756
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : অনেক অনেক শুকরিয়া! ছবিটা আসলেই অনেক সুন্দর!Praying
317558
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৪০
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। মা-শা-আল্লাহ। খুব সুন্দর লিখেছেন। ভাল লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকিল্লাহু খাইরান।
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৪৬
258677
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : ওয়ালাইকুমাসসালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ! আশাকরি আপনার থিসিস ভালো ভাবে সম্পন্ন হয়েছে! আপনাকে নিয়মিত দেখে ভালো লাগলো!

ব্লগে আপনাদের মতোন যারা দ্বীন নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করছেন আপনাদের দায়িত্ব এক ধাপ বেশি! আমাদের লিখাগুলো পড়ে শুধু উৎসাহ দেয়াই নয় বরং পাশাপাশি কিছু পয়েন্ট ধরিয়ে দেয়া (ইতিবাচক- নেতিবাচক উভয়)।

অনুপ্রেরনার জন্য শুকরিয়া! বারাকাল্লাহু ফিক!Praying
317576
৩০ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৮:১৭
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : না না আমার তো পড়তে ইচ্ছা করেনা Sad Crying Sad Crying
পড়লেই আবার আবার মন যেনো কেমন কেমন লাগবে চোখ বন্ধ করে নিলুম Sad Crying
৩০ এপ্রিল ২০১৫ বিকাল ০৫:৫২
258758
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আরে ভাই পড়েই দেখো না Happy !ছবিতে আর শিরোনামেই ভিতরে কিছু নাই - সদরঘাটTongue

Good Luck
317635
৩০ এপ্রিল ২০১৫ বিকাল ০৫:২৩
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু প্রাণপ্রিয় আপুমণি। ছবিটি দেখে প্রথমে চমকে উঠেছিলাম! আমার একটি লিখার নির্বাচিত পরিচিত ছবি তাই!! বোনে বোনে কী অদ্ভুত মিল!!

সাহিত্য রসে ভরপুর ফ্যামিলি জগতের আবেগমথিত ভালোবাসার রাজ্যে এযেন মনোমুগ্ধকর নির্মল এক বিচরণ আপু। চাঁদনী রাতের মোহময়ী বর্ণনায় পারস্পারিক হৃদয় নিঃশেষিত ভালোবাসার হীরার টুকরাগুলোর স্নিগ্ধ দীপ্তি যেন ছাদের আঙিনায় জ্বলজ্বল করছিলো।

পরিবারের প্রিয়জনদের মধ্যে চিন্তাশীল জগতের কল্পনাময় এবং বাস্তবের ভালবাসাময় ভাবাবেগের আদান প্রদান, ধর্মীয় অনুভূতি- রামাদানের প্রস্তুতি সবকিছুই সত্যিই অনবদ্য, অপূর্ব। Thumbs Up Rose Thumbs Upমুয়াজ আর মাহিরার উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা, শেখা এবং জানার আগ্রহ এবং তাদের ছোট হৃদয়ের ভাবনাগুলো মন ছুঁয়ে গেল। Rose Rose Rose লিখাটি পড়ে ভীষণ ভীষণ ভালো লাগলো আপু। Rose Rose Roseতোমাদের সকলের জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
Cheer Cheer Cheer
৩০ এপ্রিল ২০১৫ বিকাল ০৫:৫০
258757
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : ওয়ালাইকুম সালাম আপুনি! আমি কিন্তু অপেক্ষায় ছিলাম আপনার সাহিত্যরসে মাখা টইটুম্বর মন্তব্যটির জন্য! ইশ কি যে মিস্টি কমেন্ট আমার আপুটার! আল্লাহ আপনার মননে, জ্ঞানে এবং কলমে আরো বারাকাহ দান করুন!

চাঁদনী রাতের মোহময়ী বর্ণনায় পারস্পারিক হৃদয় নিঃশেষিত ভালোবাসার হীরার টুকরাগুলোর স্নিগ্ধ দীপ্তি যেন ছাদের আঙিনায় জ্বলজ্বল করছিলো। মনটাতে ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেলো!Love Struck Love Struck Love Struck Praying
১০
317657
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৮:২৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : মা শা আল্লাহ আপু, আপনাদের ফ্যামিলিটা এত গোছানো! ইস! আমার খুব কেমন যেন ইর্শা হচ্ছে, আমাদের ফ্যামিলিটাও যদি আপনাদের মত করে গড়তে পারতাম!
আচ্ছা আপু, আপনার ও দুলাভাইয়ের শিক্ষাজীবন কোনধারাতে ছিল জানাবেন কিন্তু (মাদরাসা/স্কুল-কলেজ/ক্বাওমী) কতটুকু পৌচেছেন তাও জানাবেন।
ভাসমান অপরুপ সুন্দর ভাবে মেঘেরা ভেলায় চড়ে ছুটে চলছে দূর দূরান্তর! মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা শিশুটিও বুঝি আজ মেঘের সংগী হতে চাইছে! চাইছে ডানা মেলে একটু যদি মেঘের দেশ থেকে নিমন্ত্রনে পাড়ি দিয়ে আসা যেতো!

নতুন অতিথীর আগমনের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। আসলে জানাতে ভূলবেন না কিন্তু, সালাম ও দোয়া রইল।
০৩ মে ২০১৫ রাত ০১:৫৭
258983
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম ভাইয়া! দীর্ঘ সময় দেরী করে জবাব দেয়ায় আমি আন্তরিকভাবে লজ্জিত এবং দুঃখিত!

আমরা কেউ মা্দ্রাসা লাইনে পড়িনি তবে দাদা- নানা, আব্বা - ভাইয়ারা মাওলানা ( ক্বওমি) হওয়াতে পারিবারিকভাবেই আমাদের ইসলামিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা হয়েছে!

আমাদের জন্য দোআ করবেন!আপনাদের পরিবারটি হয়ে ওঠুক অবারিত আনন্দের চাঁদনী রাতেরর জোছনায় ছেঁয়ে যাওয়া এক টুকরো শান্তির স্বপ্নীল নীড়!Good Luck
০৩ মে ২০১৫ সকাল ১১:৪২
259064
আবু জান্নাত লিখেছেন : যেটুকু জানলাম, আনন্দ লাগছে। আরো দুটি প্রশ্ন রয়ে গেছে, উত্তরের অপক্ষোয়....
১১
317711
০২ মে ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : হামমমম পড়েছি আপু আলহামদুলিল্লাহ।
সত্যিই বেশ শীক্ষনীয়।
রবি, সোম এবং মঙ্গল চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,১৫ খুব তাৎপর্যপূর্ণ রোজা আপনার পোষ্ট পড়ে মনে হলো।
ইনশাআল্লাহ প্র‍্যাকটিস করবো রোজার আগে।
Loser Loser Loser
০৩ মে ২০১৫ রাত ০১:৫৯
258985
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম ।

লিখাটি অর্ধেক লিখে রেখে দেয়া হয়েছিলো বেশ কিছুদিন! পরে পোস্ট দেয়া হলো!

আমরা অলরেডি আজকে ১৩ রজব পার করলাম আলহামদুলিল্লাহ !

শুকরিয়া পড়ার এবং স্মরনে এনে দেয়ার জন্য!Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File