তব স্মরনে সিক্ত হৃদয় ...
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া মুকিম ১১ মার্চ, ২০১৫, ১২:০০:৪০ রাত
ধূলোবালির এ্যালার্জিটা বাড়তে বাড়তে আ্যজমায় রুপ ধারন করেছে। নিয়মিত ঔষধ নেয়া আমার কাছে কঠিন শাস্তির মতোন মনে হয়। কারন আমার মনেই থাকে না সময় মতোন ঔষধ নিতে! যখন আ্যজমা বেড়ে যায় প্রবলভাবে শ্বাষকষ্ট অনুভব করি পাগলের মতো ঔষধের কাছে ছুটে আসি! ঐ সময় আমার কাছে পৃথিবীটা খুব ছোট হয়ে আসে, চোখদুটি বিষ্ফোরিত হয়ে, ফুসফুসটা অস্থিরভাবে প্রচন্ডরকম সংকোচিত-প্রসারিত হতে থাকে একটু খানি বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য... স্প্রে করে দুটি বড় বড় শ্বাস নিয়ে জানালা খুলে আমি বাইরে এসে দাঁড়াই! ভাবি, সমস্ত পৃথিবী পরিপূর্ন অক্সিজনে, বিনা মূল্যে আল্লাহ সবাইকে তা গ্রহন করার সুযোগ দিয়েছেন! এই যে প্রতিমুহূর্তে বিনা কষ্টে ফ্রি অক্সিজন গ্রহন করছি এর জন্য কয়বার সন্তুষ্টচিত্তে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করা হয় ? মনেই তো পড়ে না এই অফুরান নিয়ামতের কথা!
এবার তুষারপাত হলো ফেব্রুয়ারী মাসে। বিকাল থেকে ঝিরঝির তুষারপাত সারারাত পর্যন্ত যখন দীর্ঘস্থায়ী হলো রাস্তাঘাট তখন তুষারে প্রায় হাটু ছুইঁছুঁই! সকালে যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন বুঝলাম আমাদের বিল্ডিং থেকে আমি প্রথম ব্যক্তি এই তুষারে বের হয়েছি। ফলাফল স্বরুপ পুরো সাদা তুষারে আবৃত রাস্তায় তুষার পাড়িয়ে যখন হাঁটছিলাম তখন ভারসাম্য রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছিলো! হাটু পর্যন্ত ডেবে যাচ্ছিলো এক পা তুলতে গিয়ে আরেক পা ফেলতে গেলে উপুড় হয়ে পড়ে যাওয়ার ভয় ছিলো! আমার চিরপরিচিত রাস্তাটি অবরুদ্ধ হয়ে ছিলো তুষারে যে রাস্তাটা আমার প্রতিদিন পাড়ি দিতে আমার কোন কষ্ট হতো না!
দু দিন পর রাস্তার তুষার সরিয়ে উঁচু করে ফুটপাথে রাখা হলো। যখন সকাল বেলায় রাস্তা পার হচ্ছিলাম যদিও রাস্তায় হালকা পাতলা কিছুটা তুষার ছিলো তারপরো এতো নির্বিঘ্নে পার হওয়া যাচ্ছিলো দেখে প্রথমবারের মতোন অনুভব করলাম এই রাস্তটা আল্লাহর দেয়া একটা বিশাল নিয়ামত! কতোদিন আমি এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে গিয়েছি, কোনো পেরেশানী ছাড়াই পার হয়েছি, রাস্তাটা যে নিরাপদে পার হওয়া এক বিরাট নিয়ামত এটা ঘুনাক্ষরেও মনে আসেনি! মনে মনে আলহামদুলিল্লাহ বললাম! ভাবলাম অসংখ্য নিয়ামত ডুবে আছি তাই নিয়ামতগুলোকে নিয়ামত হিসেবে সনাক্ত করতেও যেনো ভুল গেছি। প্রতিটা দিন এরকম কতো জটিলতা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করছেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা কি সেই শুকরিয়া স্বরুপ অন্তর থেকে বলি, আলহামদুলিল্লাহ? হে প্রভু এই সহজতার জন্য, অনেক জটিলতা সামনে আসতে পারতো তা থেকে বাঁচানোর জন্য অশেষ শুকরিয়া তোমার দরবারে?
আমাদের এখানে বাচ্চাদের আ্যরাবিক এবং বাংলা শিক্ষা দেয়ার জন্য একটি ইসলামিক সেন্টার আছে। কিছু বিদেশী এবং বেশিরভাগ বাংলাদেশী বাচ্চারাই এখানে আসে। বেশকিছুদিন আগে প্রায় সমবয়সী দুই বোন আসলো। ছোট বোন খুবি চঞ্চল প্রকৃতির! একটুখানি স্থির থাকতে চায় না! তবে খুবি বুদ্ধিমতি এবং হাসিখুশি আর প্রানবন্ত হওয়ায় সবাই ওর প্রতি সন্তুষ্ট।
ওর বড় বোন বয়স ১২ হবে। ঠিকভাবে দাঁড়াতে, হাঁটতে, কথা বলতে সমস্যা হয়। ফিজিক্যালি অটিস্টিক হলেও খুবি মেধাবী মেয়ে! আমাদের যেখানে ক্লাস হয় সেখানে সিঁড়ি বেয়ে একটু উঠতে হয়, আমি যখন ওকে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে দেখলাম নিজের ভিতর এক অবর্ননীয় কষ্ট অনুভব করলাম! সুস্থ সাবলীলভাবে সিঁড়ি দিয়ে ওঠেও কতো হায় হুতাশ করি, পায়ে ব্যথা কত কিছু বলি ! যে মেয়েটির ঠিকমতো পা মেলে দাঁড়াতে- হাঁটতে কষ্ট হয় তারপরেও সে কি এক আনন্দানুভূতি নিয়ে উপরে উঠে আসছিলো তা না দেখলে বুঝানো যাবে না!
যখন ওর খাতা খুললাম বড় বড় অক্ষর লিখা ছিলো জান্নাতুন নাঈম! অগোচরেই এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়তে চাইলে নিজেকে সংযত করলাম! জান্নাতুন নাঈম যখন সূরা পড়ছিলো ও যে কি আপ্রান চেষ্টা করছিলো সঠিকভাব উচ্চারন করার, মাসনুন দোআগুলি পড়ার সময় এতো সচেতন ছিলো আর যখন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী বলছিলাম খুব মনোযোগী হয়ে শুনছিলো! অবাক হয়েই লক্ষ্য করলাম আমি, অন্য স্টুডেন্টদের মধ্যে ওর মতো শিখার আগ্রহ, জানার তৎপরতা, এবং আনন্দানুভূতি কোনদিন দেখিনি!
আমি প্রায় জান্নাতুন নাঈম এর কথা ভাবি! জান্নাতুন নাঈম! ওর নামটাই আমার মনে এক আশ্চর্য আনন্দানুভূতির শিহরন তোলে, ওর প্রতি অব্যক্ত ভালোবাসা বোধ জাগিয়ে তোলে! বারবার আমার নিজের কথাই ঘুরে ফিরে আমার মনে আসে আমার। মেয়েটি আমার মতো সুস্থ না, অনেক জটিলতা ঘিরে ওর জীবন! তারপরেও ওকে আমি কখনো গম্ভীর মুখে দেখিনি! সবসময় এক পবিত্র নির্মল হাসিতে আচ্ছাদিত থাকে ওর মুখটি! ইসলামকে জানার, শিখার এক অপ্রতিরোধ্য আগ্রহ ওর মাঝে! যা কিনা আমার, আমাদের সমাজের অনেক সুস্থ মানুষের মাঝেও আজ অনুপস্থিত।
গবেষনায় জানা গেছে, একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন শ্বাস গ্রহন ও নিঃশ্বাস ত্যাগ করে প্রায় ২১ হাজার থেকে ২৮ হাজারবার এর মতোন। এই সময় প্রতি ২৪ ঘন্টায় আমরা ৩ হাজার লিটার অক্সিজেন গ্রহন করি! সুবহানাল্লাহ! এই ৩ হাজার লিটার অক্সিজেন বিনা মূল্যে আমরা গ্রহন করছি প্রতিদিন। গ্রহন করে এসেছি অতীতে এবং যতদিন হায়াত আছে ভবিষ্যতে আমরা গ্রহন করে যাব ইনশা আল্লাহ!
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার নিকট যখন আমরা সবাই ফিরে যাব তখন আমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে এই যে অফুরান নিয়ামত -বিশুদ্ধ অক্সিজেন আমরা গ্রহন করেছি এর কী শুকরিয়া করেছি? কয় বার এই নিয়ামতের কথা ভেবে অবনত মস্তকে সন্তুষ্ট চিত্তে প্রভুর নিকট আলহামদুলিল্লাহ বলেছি?
আমাদের এই সুস্থ শরীর, স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ন জীবন, ভোগবিলাসের উপকরন, অফুরন্ত সময় সবকিছুর জবাবদিহী যখন করা হবে তখন সঠিক জবাবদিহিতায় কি আমরা উত্তীর্ন হতে পারব ?
হাদীস থেকে আমরা জেনেছি কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ঠাণ্ডা ছায়া , ঠাণ্ডা খেজুর ও ঠাণ্ডা পানি সম্পর্কেও! আর আামদের এই বর্তমান বিলাসবহুল জীবনের তুলনা না হয় নাই করলাম! আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদত্ত নিয়ামতগুলোর স্বীকৃতি কি আমরা আদৌ দেই ? নিজের ইচ্ছা ,মনোভাব ও কর্মের মাধ্যমে এগুলোর জন্য আল্লাহর প্রতি সঠিক অর্থে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি?
সেদিন কিয়ামতের ময়দানে যখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে আমাদের কাউকে যেনো লজ্জিত হতে না হয়! আমরা প্রত্যেকে যে অবস্থায়ই থাকি না কেনো আন্তরিক ভাবে শুকরিয়া আদায় করা শিখি, আলহামদুলিল্লাহ দিল থেকে বলি! আল্লাহর সমস্ত নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি! তিনি আমাদের যা দিয়েছেন আর যা দেননি সব অবস্থার উপর সন্তুষ্ট থাকি!
যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামতসমূহ গণনা করতে চাও তাহলে তাতে সক্ষম হবে না৷(ইবরাহীম-৩৪ )
বিষয়: বিবিধ
১৬৮১ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এত এত নেয়ামত আমরা ভোগ করছি কিন্তু তার পরেও আলহামদুলিল্লাহ্ টুকু বলতেও কার্পন্য করছি। আল্লাহ আমাদের মাফ করুন।
ব্লগের প্রবীন এবং জ্ঞানীব্যক্তি হিসেবে আপনার প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা অনুভব করি সবসময় আর আমার এই পোস্ট সর্বপ্রথম আপনার মন্তব্য পেয়ে মনটা খুবি আনন্দিত! আলহামদুলিল্লাহ!
অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো
আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭]
নীল ধ্রুব সত্যিই বাস্প হয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।
তা এখন কিভাবে বাস্প হতে তরল হলো।
শত ব্যস্ততার মাঝে সময় করে পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য শুকরিয়া!
‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭]
আওণ রাহ'বার - ওয়ালাইকুমাসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
অনেক অনেক শুকরিয়া আপু আল্লাহর নিয়ামতের কথা স্বরন করিয়ে দেওয়ার জন্য ।
আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি শুকরিয়া করার এবং কৃতজ্ঞ হওয়ার তৌফিক দান করুন!
‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭
অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো!
আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি শুকরিয়া করার এবং কৃতজ্ঞ হওয়ার তৌফিক দান করুন! আপনার সুন্দর দোআয় আমীন! সময় করে পড়ার ওমন্তব্য করার জন্য আন্তরিক শুকরিয়া!
‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭
অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো
আমার অগোছালো লিখাগুলি পড়ে তোমার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম! আলহামদুলিল্লাহ!
আমাদর প্রতিটা কস্টের বিনিময় আমাদের প্রভু সওয়াব দিয়ে পূর্ন করে দিবেন ইনশা আল্লাহ! আশকরি এখন তুমি সুস্থ আছো!
আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি শুকরিয়া করার এবং কৃতজ্ঞ হওয়ার তৌফিক দান করুন
‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭
অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো
আপনার দেখা এবং অনুভূতিগুলো হৃদয় ছুঁয়ে গেল। জাজাকাল্লাহু খাইর।
ভালোবেসে ছোট আপুকে এতো বড় উপাধি দিয়ে দিলেন? শুধু দোআ করেন আপনি যা বললেন, আল্লাহ আমার মাঝে এই উত্তম গুন গুলি দান করুন! আমিন!
যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭
বারাকাল্লাহু ফিক! অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো
এখন রাস্তা পার হবার সময় মনে হয় পাটা যদি একটু ঘুড়ে যায় তাহলেই আমি গাড়ির নিচে।
মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে চিন্তা হয়।
এটাও মনে করি যে এই প্রতিটা কদমের ভারসাম্য তো সেই মহান রব্বুল কারীমের অনন্য দান।
আহ্ কতইনা নাফর আমি! কিন্তু যিনি নেয়ামত দান করেছেন তিনিতো অনন্য এবং রহিম।
সকালে যখন পড়লাম লিখাটি তখন মনে হলো লিখাটি আমার জন্যই উৎসর্গ করা।
কেনো যেনো মনে হলো।
জাজাকাল্লাহু খাইরান বড়আপু।
জাজাকাল্লাহ আহসানাল জাজা।
এক্সিডেন্ট এর কথা জেনে খারাপ লাগলো|! একটু দেখে সাবধানে চলার পরামর্শ রইলো!
প্রতিটা দিন যে আমরা অতিবাহিত করছি কতো রকম বিপদ থেকে আল্লাহ আমাদের হিফাজত করছেন তার ইয়ত্তা নেই সেই তুলনায় আমাদের শুকরিয়া জ্ঞাপন খুবি কম হয়!
আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি শুকরিয়া করার এবং কৃতজ্ঞ হওয়ার তৌফিক দান করুন
যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭
বারাকাল্লাহু ফিক! অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো
আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি শুকরিয়া করার এবং কৃতজ্ঞ হওয়ার তৌফিক দান করুন
যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ ” [ইবরাহীম; ১৪ : ৭
অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা রইলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন