আমাদের মিথ্যে আত্ন তৃপ্তি.......
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া মুকিম ১০ মার্চ, ২০১৫, ১২:৫৫:০০ রাত
আমাদের বড় হয়ে ওঠা কলোনী এলাকায়! সেই কলোনী জীবনে ভালো শিক্ষার পরিবেশ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা , বন্ধু-বান্ধব , আন্তরিক প্রতিবেশী পেয়েছি, জীবনটা সেখানে খুব নিরিবিলি আর স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ন ছিল! আমার কাছে সারা পৃথিবীটাই ছিলো আমার বেড়ে ওঠার পরিবেশ- সেই চির সবুজ কলোনীটি!
পরিবারের বেড়ে ওঠার পরিবেশ থেকে ইসলামিক জীবন ধারনের প্রথম হাতেখড়ি ও সবক শুরু হয়ছিলো! প্রথম আরবী বর্নমালার পাঠ, প্রথম প্রাইমারী, হাইস্কুল এবং কলেজ পর্যন্ত সবকিছু কলোনীর মধ্যে থাকায় কখনোই বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
আমার ক্ষুদ্র চিন্তার পরিসর থেকে আমি ইসলামকে নিয়ে যা ভাবতাম তার সম্পূর্নটুকু প্রতিফলিত হতো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভাবে! আমাদের পরিবার ছিলো বেশ রক্ষনশীল! কিন্তু আমার বান্ধবীরা যারা ছিলো তাদের কারো পরিবারেই ইসলামী বিধি নিষেধের কড়াকড়ি ছিলো না! ওরা শখ করে নামায পড়তো, পরীক্ষা থাকলে ওদের রমাদান রোযা না করলেও সমস্যা ছিলো না!
তখনো আমার সঠিক বুঝ আসে নি আর তাই মাঝে মাঝেই ভাবতাম কেনো আমার আব্বু বা ভাইয়ারা আমাদের যেভাবে ইসলাম মেনে চলার জন্য শাসন করেন, উৎসাহ দেন অন্যরা কেনো করে না? ইশ! ওদের জন্য কতো সহজতা! ওদের পরিবারে ওদের আব্বা বা ভাইয়াদের ইসলাম মানার ব্যাপারে কারো কোনো চাপ নেই! আমার আব্বা বা ভাইয়ারা এমন কেনো?
ছোট বেলা থেকেই বদ্ধমূল হয়েগিয়েছিলো যারা ইসলামিক ফ্যামিলি তথা আলিম ফ্যামিলি তারাই ইসলামকে অনুসরন করে। আর বাকিদের সুযোগ আছে কেউ ইচ্ছা করলে করে ইচ্ছে না করলে করে না! মাঝে মাঝে ভাবতাম আব্বা , ভাইয়ারা আলিম না হয়ে অন্য বান্ধবীদের আব্বার মতোন হলে মনে হয় বাসায় টিভি থাকতো, নামাযর জন্য কড়াকড়ি থাকতো না, পর্দার এতো বিধিনিষেধ থাকতো না!
দেশের বাইরে আসার পর উপলব্ধির পাতায় নতুন কিছু চিন্তা স্থান পেলো! যা আমি কখনোই কলোনী লাইফে ভাবার সুযোগ পাইনি! ইউরোপের মানুষগুলোকে দেখতাম আর অবাক হতাম! অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তো আছেই আাবর ইউরোপিয়ানদের যেমন শারীরিক সৌন্দর্য তেমনি অমায়িক ব্যবহার সত্যি মন কে আকৃষ্ট করার মতোন! প্রথম বারের মতোন আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টি, স্বল্প চিন্তার মষ্তিষ্ক অনুভব করেছিলো এই ইউরোপ শুধু মাত্র আধুনিক এক ভূখন্ড নয় বরং আমার সৃষ্টিকর্তার এক অনুপম সৃষ্টি! প্রতিভা, সৃজনশীলতা, স্বাধীনতা,আধুনিকতা সবকিছু এখানে থাকলেও সৃষ্টিকর্তার বিধানটাই এখানে অনুপস্হিত সেটঈ আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিলো!!
অমুসলিমদের ভীড়ে যখন হেঁটেছি, সুপার মার্কেটে গিয়েছি কোন খাবার কিনতে উপাদান পড়ে হারাম কিছু থাকায় আর যখন কেনা হয়নি , সামারের প্রচন্ড গরমে যখন হিজাবে আবৃত থেকেও পথ চলেছি সবার জোড়ায় জোড়ায় দৃষ্টির তীব্র আক্রমন বিনা দ্বিধায় হজম করেছি - সত্যিকার অর্থে প্রথমবারের মতোন নিজেকে মুসলিম মনে হয়েছে! মনে হয়েছে মুসলিম হয়ে আমি আমর ঈমান রক্ষার যুদ্ধে লিপ্ত আছি! ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করেছি বহু প্রতিকূলতায় ইসলাম পালন করতে গিয়ে! যেটা শুধু যেটা বেড়ে ওঠার সেই কলোনী না বরং পুরো বাংলাদেশেও অনেকটা সময় কাটিয়েও মুসলিম হওয়ার এই প্রচন্ড অনুভূতিটুকু, এই তৃপ্তি টুকু এইভাবে অনুভব করিনি ।
ইউরোপে আসার পর দৃঢ়ভাবে সচেতনতার সাথে অনুভব করলাম ইসলাম শুধু আচারস্বর্বস্ব কোন ধর্ম নয় বরং পূর্নাংগ একটি জীবনবিধান! আল্লাহর সৃষ্টি এতো বড় পৃথিবী এটা তিনি এমনি সৃষ্টি করেন নি! উনার দেয়া বিধান বাস্তবায়নের জন্য তিনি সৃষ্টি করেছেন! খুঁজে ফিরে হতাশ হয়েছি এতো বড় পৃথিবীর মাঝে মাত্র একটা রাস্ট্র, এক টুকরা ভূ খন্ডের অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে যেখানে পূর্নাংগভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত আছে! ব্যথিত হয়েছি, কষ্ট পয়েছি এই ভেবে নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করি আর এটাই কি ইসলামের দৃষ্টিভংগি হওয়া উচিত? মুসলিম তো তাদের বলে যাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয়সহ জীবনব্যবস্থা, আচরন, চিন্তাধারা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা সবকিছু ইসলামী আদর্শ ও নীতিমালা থেকে নেয়া।
আমাদের প্রিয় স্বদেশ এর কথাই ধরি! মানুষের জীবনযাপনের ধরন, আচরন, নীতিবোধ, সংস্কৃতি দেখে কারোই বুঝতে অসুবিধা হয় না জাহিলিয়াতের কোন ঘূর্নিপাকে আমাদের মৌখিক স্বীকৃতির মুসলিম জাতি আজ ঘুরপাক খাচ্ছি! জাহিলি সংস্কৃতি ঘুনে পোকার মতোন আমাদের মুসলিম সমাজের মেরুদন্ড শতছিদ্র করে ফেলেছে,সেটা এখন শুধু চুড়মাড় করে ভেংগে পড়ার অপেক্ষায়! আমরা বোধশক্তি সম্পন্ন মুসলিমরা আজ চেয়ে চেয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছি!
মুসলিমজাতি অধ:পতন আর অবক্ষয়ের অন্ধকূপের অতল গহবরে তলিয়ে যাচ্ছে, জাহিলি স্রোতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মুসলিম জাতি কি নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেই মুসলমানিত্বের মিথ্যা স্বাদ আস্বাদন করতে পারে?
আমার নিজের ঘরে আগুন লেগে গেলে আমি কি পালিয়ে যাই? অন্যের আশায় থাকি? নিজেই যাই উদ্ধার করতে! সুতরাং আমাদের মুসলিমদরকেই আজ এ দায়িত্ব নিতে হবে! এই বিশেষ দায়িত্বের জন্যই আমাদের পৃথিবীত পাঠানো হয়েছে।
আমি এই মূহূর্তে যখন চেয়ারে বসে কম্পিউটারে এই পোস্ট লিখছি ,আমার জন্য অনেকটাই সহজ এই নীতিকথাগুলো অকপটে লিখে যাওয়া এটা আমি স্বীকার করি। তবু অস্বীকার করার উপায় নেই আমাদের দেশে যেভাবে আল্লাহর বিধানকে প্রত্যাখ্যান করে মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত নিয়মনীতি, আইনকানুন , বিধি নীতি জারি করা হচ্ছে মূলত এটা সুস্পষ্ট আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ করার নামান্তর! আল্লাহর বিধান প্রত্যাখ্যান করে তারা নিজেদের ইচ্ছামাফিক নতুন আইন প্রনয়ন করছে! একজন মুসলিম হিসেবে আমার যদি আল্লাহর প্রতি, উনার কালামের প্রতি ঈমান থাকে, সেখানেই আমার কল্যান আছে, এই অনুভূতি যদি থাকে তাহলে মনুষ্য মষ্তিষ্কপ্রসূত জাহিলি আইনের প্রয়োজন কোথায়? এই ইসলামবিরোধী আইন কে বা কারা প্রনয়ন করছে? আইন প্রনয়নের এই সুযোগ এই দুঃসাহস তারা কোথায় পেলো?
আমাদের দেশে তথাকথিত যে গনতন্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত, গনতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থায় মানুষের রায়ে এমন সব বিধিবিধান চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে যার অনুমোদন আল্লাহ তায়ালা দেননি! এগুলো হচ্ছে আল্লাহর মর্যাদার অবমূল্যায়ন করা এবং আল্লাহ প্রদত্ত জীবনব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য করার সমতুল্য! এর সূত্র ধরেই আজ মানুষ মানুষেরই আনুগত্য, দাসত্ব এবং গোলামীতে পরিনত হচ্ছে। আমরা মনিসিক বোধ শক্তি শূন্য মুসলিম অনেক ক্ষেত্রেই এটা বুঝিনা বা বুঝতে চাই না! প্রকৃত সত্য এটাই এই আধুনিক জাহিলিয়াত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে ইসলামকে বাস্তবায়ন করা, ইসলামকে বাস্তবা্যনের মাধ্যমে মানুষের সৃষ্ট আইন থেকে, শৃংখল থেকে, পরাধীনতা থেকে, গোলামীর নিকৃষ্ট কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করা! কেননা আল্লাহ তায়াল আল কোরআানে বলেন-
"আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচারকার্য সম্পাদন করেনা, তারা কাফের"(সূরা আল মায়েদাহঃ ৪৪)
"আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচারকার্য সম্পাদন করেনা , তারা ফাসেক"(সূরা আল মায়েদাহঃ ৪৫)।
"আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচারকার্য সম্পাদন করেনা, তারা যালেম"(সূরা আল মায়েদাহঃ ৪৭)।
শুধু মাত্র লিখনী, বক্তৃতা, ওয়াজ, সেমিনার, কনফারেন্স করলেই কি ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করবে? নাহ, বরং একটি সত্য নিস্ঠ দলের প্রয়োজন যারা নির্ভেজাল তাওহীদের ঝান্ঠাবাহী হয়ে সর্বস্ব ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে গিয়ে আসবে।
বাস্তবতা এতোই নির্মম যে ইসলাম বিদ্বেষীরা এ ধরনের মুসলিমদের নির্মুল করতে চায়। আজ যারাই ইসলাম শাসন ব্যবস্থা বাস্তববায়নের নাম নেয় তাদেরকেই জংগী, টেররিষ্ট, ফান্ডামেন্টালিষ্ট, তালেবান, রাজাকার উপাধি দেয়া হয়! এদের পরিনতি হয় অত্যন্ত ভয়াবহ! অন্ধকার কারাগারে রিমান্ডের নামে হাত পা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়! এদের পুরষ্কার হয় ফাঁসির মঞ্চ!
ইসলাম আমাদের সেই সুযোগ দেয় না যে আমরা মুসলিম থাকবো আবার কার্লমার্কসের অর্থনীতি সমর্থন করব! আমরা মুসলিম থাকবো আবার সেকুলার জীবনব্যবস্থা সমর্থন করবো। মুসলিমকে ১০০% মুসলিম হতেই আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। মুসলিম হয়ে স্বেচ্ছাচারিতার কোন সুযোগ আছে কি?
আমরা প্রত্যেকটি মুসলিম আদর্শ মুসলিম হয়ে জীবনযাপনের ব্রত গ্রহন করি, আমাদের প্রতিটি মুসলিম ঘর যদি ইসলামের দুর্গ হয়ে গড়ে ওঠে, আমরা, আমাদের সন্তান, পরিবার পরিজনদের মধ্যে ইসলামী আদর্শের সৌন্দর্য প্রষ্ফুটিত হয় এভাবেই ইসলাম দিক বিদিক ছড়িয়ে পড়বে। ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে উঠলে এ ধরনের মুসলিমরাই পারবে কাংখিত পরিবর্তন আনয়ন করতে। যদি ব্যক্তি জীবনেই ইসলাম না থাকে তবে তাদের কি আদৌ সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব?
যত সমস্যা আসুক , বাধা বিপত্তি আসুক , পথ যত বন্ধুর হোক, সহায় সম্বল যতোই অপ্রতুল হোক তারপরেও আমরা স্বপ্ন দেখি এক সুন্দর পৃথিবীর....
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৬ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু আমরা মুসলমানেরা ঘুমিয়ে আছি , আমাদের জাগতে হবে জাগাতে হবে ।
যত সমস্যা আসুক , বাধা বিপত্তি আসুক , পথ যত বন্ধুর হোক, সহায় সম্বল যতোই অপ্রতুল হোক তারপরেও আমরা স্বপ্ন দেখি এক সুন্দর পৃথিবীর....আপু অনেক সুন্দর লিখেছেন । অনেক অনেক জাজাকাল্লাহ আপু ।
সুন্দর মন্তব্যখানির জন্য আন্তরিক শুকরিয়া আপু! শুভকামনা ও দোআ রইলো
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে কাজে এবং অনুশীলনে ধর্মীয় চেতনা গ্রথিত করুণ আপনার মত এটাই সবার প্রত্যাশা। চমৎকার লিখনীটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও নিরন্তর শুভেচ্ছা রইলো।
উপস্থিতি এবং মন্তব্যের জন্য আন্তরিক শুকরিয়া!অনেক দোয়া ও নিরন্তর শুভেচ্ছা রইলো।
আপনি কি আযহার থেকে পড়াশোনা করেছেন??
সর্বস্ব ব্যয়ে,উদ্যত অবিরত বাতিলের ধ্বজাধারী।
চমৎকার মন্তব্যটির জন্য অসংখ্য শুভকামনা ও শুভেচ্ছা রইলো! আপনার আশাবাদী লিখা পড়ার অপেক্ষায়..
"আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচারকার্য সম্পাদন করেনা , তারা ফাসেক"(সূরা আল মায়েদাহঃ ৪৫)।
"আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচারকার্য সম্পাদন করেনা, তারা যালেম"(সূরা আল মায়েদাহঃ ৪৭)।
ক্বুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী নারী নীতির ব্যাপারে আপনারা কি করেছিলেন , মুফতি আমীনির দল তো হরতাল করেছিল ? তার পোলাপান মাইরও খেয়েছিল ব্যাপক ।
হেফাজত নাস্তিকদের জন্য লড়াই করতে এসে জান দিয়ে গেল. তার বিপক্ষে নারীরাবাদীরা সমাবেশ করেছে , আপনারা কি করেছেন হেফাজতের ফেভারে ?
উল্টো এক মহিলা সাংবাদিক নিয়ে কত কাহিনীই না হল !
আপনারাই তো বলেন '' আমরা নারী সবই পারি ''
তো কি পেরেছেন এই ক্ষেত্রে ?
আমার পোস্ট সম্পূর্ন পড়েছেন এই বিশ্বাস থেকে লিখছি, আমি প্রথমেই উল্লেখ করেছি কলোনী লাইফ ছিলাম, ইসলামচর্চা হয়েছে আমাদের ব্যক্তিগত এবং পারিবারিকভাবে! সমাজ পরিবর্তনের অনুভূতিবোধ দেশে থাকা অবস্থায় অনুভব করিনি! আশেপাশের অনেক স্বেচ্ছাচারী মুসলিমদের দেখে আমার ধারনাটা সংকীর্ন ছিল! যে যার মতো ইসলাম পালন করে এটাই আমি পরিবেশ থেকে দেখেছি, শিখেছি!
অল্প বিদ্যা ভয়ংকর- এই উক্তি আমি ভীশনভাবে মেনে চলার চেষ্টা করি! সাম্প্রতিক বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে আমার বিদ্যা খুবি অল্প! ব্লগের মাধ্যমেই আমার মূলত জানা হয়!
যেমন বাংলদেশে খেলা হচ্ছে এটা আমি জানতাম না ব্লগ থেকে জেনেছি! আবার নারী নির্যাতনমূলক শরীয়তি আইন হয়েছে এটাও আমি আপনার কাছ থেকেই জেনেছি! আমি আমার অপারগতা এবং অজ্ঞতার জন্য সত্যি দুঃখিত!
আল্লাহ কাউকে তার সামর্থের বাইরে কোন দায়িত্ব দেন না! আমি চেষ্টা করি সামর্থ অনুযায়ী কাজ করতে! আমার জানার মধ্যে, আয়ত্তের মধ্যে সৎকাজের আদেশ আর অসৎকাজের বাধা দি্তে! হাত দিয়ে না পারলে মুখদিয়ে বলার চেষ্টা করি, না পারলে অন্তর দিয়ে ঘৃনা করি! চেষ্টা করি কথা ও কাজের মিল রাখতে। ঈমানের সর্বনিম্ন পর্যায়ে স্থান জন্য অত্যন্ত লজ্জাবোধ করি!
ধর্মনিরপেক্ষ মতাবলম্বী সরকারকে ভোট দিয়ে নেতৃত্বের আসন দেয়া হয়েছে উনারা শরীয়ত কিভাবে বুঝবেন? স্বাভাবিকভাবেই উনারা ধর্মনিরপেক্ষ মতানুযায়ী আইন করেছেন। দোষ তো জনগনের, আমাদের! আর আমরা নির্বাচিত করব ধর্মনিরপেক্ষদের উনারা শরীয়ত বিরোধী কাজ করলে এটার মাশুল শুধু হিফাজত আর মুফতিসাহেবের দল যুলুম সহ্য করবে,হরতাল করবে নীতি পরিবর্তনের চেষ্টা করবে, সাধারনরা বসে জরিপ করবে এটাকে আমার কাছে শুধুই আত্ন -প্রহসন !
আমি মনে করি নারী হিসেবে এমন কোন সমস্যাই সৃষ্টি করা উচিত না যার কারনে আমার বা আমার পরিবারের শরীয়ত বিরোধী আইনের আওতায় যাওয়া লাগে! আর এজন্য আমরা যদি জীবনে শতভাগ মুসলিম হওয়ার চে্সটা করি মনে হয় এই সমস্যা এড়াতে পারব! দেশের জনগন যদি ইসলামি জীবন ব্যবস্থার, শরী্যতী আইনের মূল্য বুঝতো এই ধরনের সরকার কে কখনো নেতৃত্বে দিত না!শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন না আসলে , ইসলামী নেতৃত্ব না আসলে শান্তির শ্বেত পায়রার দেখা আমরা কষ্মিনকালেও পাব না!
আপনি কি আমাকে বিশেষ কোন দলের অভিযুক্ত মনে করছেন?
তবে শরীয়ত বিরোধী আইনের প্রতিবাদ করি, আপনি ও করছেন আশা করি আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন!
দীর্ঘ প্রতিমন্তব্যটি সময় নিয়ে পড়ার জন্য শুকরিয়া! শুভকামনা ও দোআ রইলো!
বড় পরিসরে অনেক কিছুই করা অসম্ভব হয়ে যায় অনেকসময়! কিন্তু আমরা যদি ব্যক্তি পরিসর থেকে শুরু করি ইসলাম মানা, পালন করা, বিধান মেনে চলা তাহলে নিজে, পরিবারের সদস্যরা অন্তত ভালো মুসলিম হওয়ার সুযোগ পাবে। অন্তত আমরা ইসলাম বিরোধী কাজ করব না, ধীরে ধীরে এটাই সমাজের মানুষকে বুঝতে সাহায্য করবে! আল্লাহর কাছে প্রতিনিয়ত দোআ করা দরকার তিনি আমাদর সবাইকে হিফাজত করুন!
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য আন্তরিক শুকরিয়া! শুভকামনা ও দোআ রইলো!
সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী (রহ.) এর একটি কিতাব ‘মাযা খাসিরাল আলামু বিনহিতাতিল মুসলিমীন’ এর বাংলা তর্জমা অনুবাদঃ আবু তাহের মিসবাহ
নাম: মুসলিম উম্মাহর অধঃপতনে বিশ্বের কী ক্ষতি হলো?
আমি হার্ড কপিতে পড়ছি। আপনার জন্য অনলাইন থেকে!
http://alqualam.com/section/8
দেখে নিতে পারেন অল্প-স্বল্প।
এটার ইংরেজী অনুবাদ ও আছে Muslim and The world.
সত্যিই ব্লগে আসি আর আপনার লিখাগুলো পড়লে জ্ঞান বাড়ে প্রচুর।
আপনার খিদমাতে পেশ করলাম লিখাটি ।
আমার ধারনা বইটি আপনি আগে পড়েছেন এরপরও অনুরোধ রইলো যতটুকু আছে একটু চোখ বোলাবেন।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
না ভাই , বইটা আগে পড়া হয়নি! আজকেই পড়ব ইনশা আল্লাহ!
বইটির লিংক, উপস্থিতি এবং আন্তরিক মন্তব্যের জন্য জাযাকাল্লাহু খাইর! আল্লাহ তোমাকে দুনিয়া ও আখিরাতের অনেক অনেক হাসানা দান করুন! জ্ঞানের জগতে তোমার বিচরন আরো সম্প্রসারিত হোক!আমাদের জন্য খাস করে দোআর আবেদন রইলো!
অনেক অনেক শুকরিয়া ও শুভকামনা
জাজাকাল্লাহ অপূর্ব জবাবের জন্য।
আফসোস হচ্ছে যে, বইটির ভূমিকা, লেখকের কথা, সাইয়্যেদ কুতুব(রহ.) এর ভূমিকা ইত্যাদি ও লিংকে নাই।
সব মাঝখান থেকে আছে অন-লাইনে !
দেখি অনলাইনে এটারর ইংলিশ কপি পাওয়া যায় কিনা!
তবে এ বইটি ইসলামিক শতাব্দীর অন্যতম সেরা বই।
আপুর জন্যও মহান রব্বুল কারীমের দরবারে কবুলিয়াতের দোয়া রইলো।
আপুকে আল্লাহ ইসলামিক সাহিত্যিক হিসেবে কবুল ও মঞ্জুর করে নিন।
এবং দুনিয়া আখিরাত উভয় জাহানে সর্বপ্রকার কল্যান দান করুন।
আমিন
রাহবারহীন এ জীবনে কোন কিছুতেই স্থীর হতে পারছিনা।
এটাও বুঝতে পারছিনা যে আমি কি করছি? কি করবো? কিভাবে করবো? কিছুই বুঝতে পারছি না।
মনটা প্রচুর ছটফট কোন কিছুতেই স্থীর হতে পারছে না।
জীবনতো কেবল শুরু হলো আর আমাদের জীবনটা সম্পূর্ণ সংগ্রামের।
সংগ্রাম করেই চলতে হয় প্রতিটা পদক্ষেপ।
কিন্তু আজ আমি খুব অসহায় খুব খুব অসহায় সকালে একটা করি বিকালে আরেকটা করি।
এখন একটা চিন্তা করি তখন একটা করি আসলে সব কিছু রাহ'বার না থাকারই ফল।
ইশশশসসসস কোন একটা বিষয় যদি পূর্ন করতে পারতাম সময় তো চলে যাচ্ছে তার মত করে সেতো আর বসে নাই।
খুব আফসোস হচ্ছে সত্যিই এখন আমি কোন শাইখের খোজে বের হবো। যে হবেন রাহ'বার।
ব্যাক্তিগত কথা বলে ফেললাম ক্ষমা করবেন।
আসলে পোষ্ট পরে এমন চিন্তার ঢেউ চলে এসেছে তাই বললাম।
জাজাকাল্লাহু খাইরান অনন্য সুন্দর লিখাটির জন্য।
অধিকাংশ মানুষের ধারনা জন সমর্থন ই সত্য মিত্যার মানদণ্ড!!
আসলে কি তাই??
তবে এটা ঠিক যে কোন আদর্শ সমাজে বাস্তবায়িত হবে কি হবে না তা সমাজের জন গোস্টির সমর্থনের উপর নির্ভর করে।
শুধু নিজেরা নিজেরা আমি ভাল আমি ভাল এই কথা বলে চিল্লালেই আপনার আদর্শ মানুষ অবলীলায় গ্রহণ করবে না । এই জন্য হিকমাহ তথা উত্তম কৌশল প্রয়োগ অতীব জরুরী। এই ক্ষেত্রে একটি কৌশল এই হইতে পারে যে , দুর্বলতার সমালোচনা না করে সৎ গুণাবলী বিকাশে সহযোগীতা করা।
অনেক এক্সট্রিমরা নিজেদের সততায় এতই মুগ্ধ থাকে যে অন্যরা কি বলতে চায় তা কর্ণপাত ও করে না। ফলত সমাজে সৎ আদর্শ হওয়ার পর ও তারা প্রত্যাখ্যাত হতে বাধ্য। ইস্লামিস্টদের এই বিষয়ে অর্থাৎ সামাজিক আচার ও চরিত্র বিষয়ে প্রজ্ঞার পরিচয় দেওয়া অত্যাবশ্যক।
সাধারন মানুষ কোন আদর্শের থিউরি পইড়া আদর্শ সাপোর্ট করে না , তারা সাপোর্ট করে আদর্শ ধারন কারী লোকদের বাস্তব চরিত্র দেখে। তাই ইস্লামিস্টদের উচিৎ তাদের আদর্শের সততা তাদের ব্যবহারিক জীবনে প্রতিফলিত করা । নচেৎ তাদের তর্জন গর্জন পণ্ডশ্রম হইতে বাধ্য।
সবচেয়ে কঠিন বাস্তবতা হইল এই যে, এক্সিট্রিম কথাবাত্রা বললে আপনার দলেরই অধিকাংশ আপনাকে সাপোর্ট করবে না , এই জন্য যাদের সাথে কথা বলা হয় তাদের মন - মানসিকতার দিকে লক্ষ্য রেখে টার্গেট নির্ধারণ করা জরুরী । এই জন্য জনসমক্ষে হালকা মানের কথা বলার সময় ও সাবধানতা প্রয়োজন , যা আমরা অনেকেই খেয়াল রাখতে মনযোগী নই।
আমাদের সকল কর্মকাণ্ডে আদর্শের প্রতিফলন থাকা চাই......... কিন্তু তা কঠিন , মনে প্রানে আদর্শ লালন না করলে তা কখনো সম্ভব নয় । সবাই যে এই রকম পারবে তা নয় , তবে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা জরুরী।
• অনেকেই আদর্শের দাবীদার , কর্মে একদম উল্টো..... অথচ রাসুল সা এর সময়ে কেউ যদি ইসলাম কি ? জানতে চাইতো , তবে যে কোন একজন সাহাবী কে দেখিয়ে বলতো ঐ দেখো , ইসলাম হেঁটে যায় । আর আমরা কি করি ? অনেকে অবশ্য কোন স্বার্থের জন্য কিছু করে ফেলতে পারে ,এটা মানলাম , লোভে বা বিপদে পড়ে ভূল হয়ে গেছে । কিন্ত যখন দেখি কোন স্বার্থহীন , অর্থহীন কাজে আদর্শের দাবীদারদের বিচ্যুতি ,তখন অনেক কষ্ট লাগে ।
তবে এটা ও বাস্তবতা যে ভাল মানুষদের পাশাপাশি আবদুল্লাহ ইবনে ঊবাইরা ও যুগে যুগে কালে কালে ছিল , আছে , থাকবে। তাই কারো কর্ম কাণ্ডে অরিড না হয়ে উত্তম আদর্শ প্রতিস্থাপনে নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তবে সংস্কারের উদ্যেশ্যে সমালোচনা তার নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী চলমান তথা জারী রাখা অতীব জরুরী।
মন্তব্য করতে লগইন করুন