"এক টুকরো সুখের নীড়"
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া মুকিম ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৩:২৬:১১ রাত
বিছানাটা টান টান করে গুছিয়ে ঘড়ির দিকে তাকালো নাঈমা, ৫টা বেজে ১৫ মিনিট। নতুন এক প্রতিবেশী রামীনা ভাবীকে বাসায় চা-নাস্তার দাওয়াত দেয়া হয়েছে। বাচ্চা নিয়ে স্কুল যাওয়ার পথে ভদ্রমহিলার সাথে দেখা হয়েছিলো,সালাম বিনিময়ের পর টুকটাক কথা এর মাঝে মোটামোটি পরিচয়! দেশ থেকে সম্প্রতি নতুন এলাকায় এসে ভীশন একাকী বোধ করছেন বেচারী! কিছুটা প্রতিবেশিনীর হক আর বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়া সব মিলিয়ে সম্পর্কটি সম্প্রসারনের উদ্দেশ্যে আজকের এই ঘরোয়া ছোট আয়োজন!
সিংগাড়াগুলো ভাজতে ভাজতেই কলিংবেলের অাওয়াজ কানে এলো, গিয়ে দরজা খুলে সালাম বিনিময় করে সহাস্য অভ্যর্থনা জানালেন রামীনা ভাবীকে! বসার রুমে এসে রামীনা ভাবী কিছুটা কৌতূহলের দৃষ্টিতে আশপাশে তাকালেন, প্রথমবার এসেছেন এ বাসায় তিনি, কিছুটা সংকোচ আর দ্বিধা চোখে মুখে উনার! মাঝারি আকারের রুম, একপাশে বড় একটি সোফা, এক কর্নারে ডাইনিং টেবিল, অপর পাশে বিশাল আলমারি ভর্তি বই! খোলামেলা ছিমছাম একটি রুম!
নাঈমা ট্রে করে সিংগাড়া, মোগলাই পরোটা আর চা নিয়ে এলেন! রামীনা ভাবী বাসা থেকে নিজ হাতে বানানো পিঠা এনেছেন।সাদরে গ্রহন করলেন নাঈমা। নাস্তা পরিবেশন করছিলেন, এই মুহূর্ত নাঈমার ফোন বেজে উঠলে সালাম দিয় ফোন ধরলেন, কিছু কিছুক্ষন কথা বলে রেখে দিলেন! রামীনা ভাবীর দিকে তাকিয়ে নাঈমা বললো, আপনাদের তানভীর ভাই ফোন করেছিলেন, অফিস শেষে মসজিদে সালাহ করে বাসায় ফিরবে এটা জানালন !
রামীনা ভাবী কিছুটা আশ্চর্যান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার হাসব্যান্ডকে আপনি কি সবসময় সালাম দিয়ে কথা বলেন?
হ্যা, আমরা তো ফোনে, বাসায় ঢোকার সময়, ঘুম থেকে উঠে সবসময় একে অপরকে সালাম দেই, এমনকি বাচ্চারাও দেয়! কেন ভাবী, এত অবাক হলেন যে?
না, মানে আমি কখনো সালাম দিয়েছি বলে মনে পড়ছে না! আসলে সালাম তো শুধু বাইরের কাউকে দিয়ে অভ্যস্থ আমরা! ভালো লাগলো আপনাদের এই নিয়মটির কথা জেনে!
নাস্তা মুখে দিতে দিতে একথা সেকথায় বাচ্চাদের গড়ে তোলার ব্যাপারটা নিয়ে কথা উঠলো! রামীনাভাবী বলছিলেন,
আমি একদম রাজী ছিলামনা প্রবাসে আসার ব্যাপারে, এখানে ছেলেময়েদের মানুষ করা ভীশন কঠিন, স্কুলে পড়াশোনার ধরনও ভিন্ন,সব কাজ নিজের করা লাগে, অসুখ বিশুখ হয়ে পড়ে থাকলেও দেখার কেউ নেই, সুখ,দুঃখে সব সময় একাই নিজেকে সবকিছু সামলাতে হয়! আমি চাইছি দেশে ফিরে যেতে, অন্তত বাচ্চাতো মানুষ করতে পারব- খুব পেরেশানী কন্ঠে বলছিলেন কথাগুলো রামীনাভাবী! আপনাদের কি প্ল্যান ভাবী? উৎসুক কন্ঠে জানতে চাইলেন রামীনা!
আসলে আমরা সেভাবে চিন্তা করছিনা, আমি মনে করি বাংলাদেশ থেকে এখানেই তূলনামূলকভাব সহজ বাচ্চাদের গড়ে তোলা। এটা ঠিক এখানে সহযোগী নেই, সব কাজ নিজের একা করতে হয় তারপরেও আমি মনে করি এসেই যেহেতু পড়েছি এখানেই ঠিক আছি আমরা! যদিও ইসলাম বিমুখ একটি পরিবেশ তারপরো এখানকার স্কুলগুলো আমাদের বাচ্চাদের অন্তত সততা আর নৈতিকতা শিক্ষা দিচ্ছে ,আমাদের কাজ হলো এর সাথে ইসলাম যোগ করে দেয়া, ওদের ইসলামী সততা আর ইসলামী নৈতিকতা শিখানো, যেমন ধরেন এখানে একটা ছোট বাচ্চাও জানে অন্যায় ভাবে কারো কাছ থেকে কিছু কেড়ে নেয়া যাবে না, মিথ্যা বলা যাবেনা, নিয়ম শৃংখলা মেনে চলতে হবে -আমাদের কাজ হলো গুলো ইসলামের দৃস্টিতে বুঝিয়ে দেয়া, যে বিষয়গুলোতে ওদের সাথে আমাদের মিলেনা আমরা যদি বলি ওরা ননমুসলিম আর আমরা মুসলিম এই পার্থক্যের কারনে আমরা কিছু বিষয় মানতে পারব কিছু বিষয় পারব না, তাহলে কিন্তু অনেক কাজ সহজ হয়ে যায় আমাদের! যেটা বাংলাদেশে আমরা পারব না, সবাই মুসলিম কিন্তু সবাই প্রাক্টিসিং না, ওরা অনেক ধোকায় পড়ে যাবে তখন! আর আমি মনে করি বাচ্চাদের ভালো মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের দায়িত্ব ভালো বাংলাদেশী না!
রামীনার মনে হলো এই অদ্ভুত কথা জীবনের প্রথমবার শুনছে সে! এ পর্যন্ত যতজনর সাথে কথা হয়েছে সবাই রামীনার মতোই চিন্তাভাবনা করেছে কিন্তু এ মহিলা কি বলছে এসব! কিছুটা হতাশ হলো আর কিছুটা দৃস্টিভংগির পার্থক্য বোঝার চেস্টা করছে রামীনা!
রামীনা প্রসংগে বদলে বইগুলোর দিকে তাকিয়ে বললো, এত বই আপনি কি সাথে করে নিয়ে এসেছেন? কে পড়ে এত বই? এত সময় কোথায় পান?
আমি যখন দেশ থেকে আসি তখন শুধু একসেট কোরআন তাফসীর নিয়ে এসেছিলাম, তাও সেটা আমার সিদ্ধান্তে না, আপনার ভাই এর পরামর্শে! তারপর ধীরে ধীরে আমি নিজেই বই আনাতে লাগলাম- সে এক লম্বা কাহিনী ভাবী!
কৌতূহলী হয়ে উঠলেন রামীনা এবং বললেন বলেন না একটু শুনি!
হেসে শুরু করলেন নাঈমা, আমি যখন প্রবাসে পাড়ি দিচ্ছিলাম ভেবেছিলাম আমি যাচ্ছি এক ইউরোপীয়ান দেশে, নতুন একটা সংসার গড়বো, বাচ্চারা স্কুলে যাবে আনা নেয়া করবো, স্বামী অফিসে যাবে রান্না বান্না করব, একসাথে ঘুরতে যাব কত কি ,এখানে এসে কি পড়াশোনা করা লাগবে? নিজের জন্য একটা কোরআন শরীফ আর মা দিয়েছিলেন বেহেশতী জেওর এই নিয়ে যাত্রা শুরুর ইচ্ছা ছিল আমার! বাদ সাধলেন আমার উনি! বললেন কোরআন তাফসীর নিয়ে এসো, কিছু সহীহ হাদীস গ্রন্থ আর ইসলামীক কিছু বই! যদিও বেশির ভাগ কাজের সবই তোমাকে করতে হবে কিন্তু সবার আগে জ্ঞানচর্চা করতে হবে! আমি তখন কি বলেছিলাম জানেন?
কি? জানতে চাইলেন রামীনা।
আমি বলেছিলাম, আর কতো জ্ঞানচর্চা করব? না , আমি আসছি শুধু সংসার করতে ! এতো সময় কোথায় পাব জ্ঞানচর্চার? এই নিয়ে অনেক প্যাচাল করেছিলাম তখন! যাই হোক সাথে করে আনা বইগুলো আমার জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিলো। সংসারে আমরা মাত্র তিনজন মানুষ তখন, সারাদিনর কাজকর্ম সেরে অফুরান সময় আমার হাতে , এভাবেই শুরু করলাম বই পড়া, ব্যাস আবিষ্কার করলাম আমাদের ইসলামী জীবনবিধানের কতোকিছুই তো জানিনা, জ্ঞানের জগতে নিজেকে প্লেগ্রুপের স্টুডেন্ট ধরে নিয়ে শুরু করলাম পথচলা যা আজো থামে নি আলহামদুলিল্লাহ! সবাই দেশে গেলে কাপড় -চোপড়, হাড়ি -পাতিল, ক্রোকারিজ -শো পিস আনে আর আমি কিনি বই! কি যে তৃপ্তি লাগে তখন বলে বোঝানো যাবে না! একেকজন মানুষের ভালো লাগা, পছন্দের তারতম্য থাকবেই আমি কোন শোপিস দিয়ে ঘর সাজানোর চাইতেও ঘরে আদর্শ বই রাখাকে অনেক দামী শো পিস মনে করি যা শুধু ঘরের নয় পরিবারের প্রত্যেকের আত্নীক সৌন্দর্যকেও বিকশিত করে! দেখুন আমি যেভাবে আমার ঘরখানি সাজাবো আমর ছেলেমেয়েরা তা দেখবে, শিখবে ওদের মনেও সেটার প্রভাব পড়বেই! আর ঘর যদি হয় জ্ঞানচর্চার উৎস সন্তানদের মাঝেও এই চেতনা এক সময় আসবে বলে মনে করি!
আচ্ছা ভাবী ঘর সাজানো কি তাহলে গুনাহ?
নাহ, আমি তো তা বলি নি! ইসলাম তো আমাদের পরিপাটী এবং শৃংখলতার জীবন যাপনের নির্দেশ দেয়, তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তা অপচয়ের কারন হবে না, সময় নষ্টের কারন হবে না এবং বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরনও হবে না, এরকম না হলে তো কোন সমস্যা দেখছি না! জবাব দিলেন নাঈমা!
রামীনা বলতে শুরু করলেন- আমি দেশ থেকে আসার সময় আমার বিয়ের এবং আমাদের একটা ফ্যামিলি পিকচার বড় করে বাঁধিয়ে নিয়ে এসেছিলাম, এখন বাসার ড্রয়িংরুমে টানিয়ে রেখেছি, আপনার বাসায় কোন ছবি নেই দেখছি তাই ভাবছি আমি কি ঠিক করলাম কাজটা? চিন্তিত কন্ঠে বলে রামীনা!
ভাবী, সাপ কেমন লাগে আপনার কাছে? পর্যবেক্ষনের দৃষ্টিতে রামীনার দিকে তাকিয়ে নাঈমা জিজ্ঞেস করলো।
কেনো? ভয়ার্ত গলায় একবার টেবিলের নিচটা ভালোকরে দেখে নিয়ে নিশ্চিত হলো যে নিচে কিছু নেই। তারপর বললো, একথা কেন বললেন? চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে বেচারীর মুহূর্তের মধ্যে!
ভয় পাওয়া কিছু নেই বোন, আমার বাসায় নেই সেই প্রানী! দেখুন সাপ -এই ভয়ংকর প্রানীটিকে আমরা কতো ভয় পাই, হাত দিয়ে স্পর্শ করা দূরের কথা ভালো করে দৃষ্টি পর্যন্ত দিতে চাই না, আর তাকে দুধ কলা দিয় পোষার তো প্রশ্ন ই ওঠেনা তাই না?
উপর নিচ মাথা দোলালেন রামীনা!
যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে আল্লাহ'র রহমতের ফেরেশতাগন প্রবেশ করন না, যে ঘরে রহমতের ফেরেশতাগন থাকেন না সেই ঘর শয়তানের নিরাপদ আস্তনাতে পরিনত হয়। দেখেন শয়তান কিন্তু সাপের চাইতেও ভয়ংকর, সাপ কি করবে আমাদের কামড় দিবে, বড়জোর আমাদের এর বিষ ক্রিয়ায় ইহকালীন মৃত্যু হতে পারে কিন্তু শয়তান আমাদের জাহান্নামে নিয়ে ছাড়বে, সে আমাদের প্রকাশ্য সবচাইতে বড় শত্রু ! তাই আমি কখনো চাই না শয়তানের অবাধ বিচরন ক্ষেত্রে পরিনত করতে আমার ঘরটিকে। বরং আল্লাহ'র রহমতের ফেরেশতাগন যেনো কোন বাধার সম্মুখীন না হন সে ব্যাপারেই সচেতন থাকার চেস্টা করি! তাই কোন ছবি রাখি না!
ভাবী, আমি তো কখনো এভাবে ভেবে দেখিনি! আমি আজ গিয়েই ছবি গুলো নামিয়ে ফেলব! অনুতপ্ত কন্ঠে মীনা বললেন।
দেখুন সারাদিনের বহির্মুখী কর্মব্যস্ততা শেষে প্রতিটি মানুষ অধীর আগ্রহে যেখানে ফিরে আসতে চায় সে স্থানটি হলো আপন নীড়! আদরের সন্তানরা খুনসুটি করতে করতে ঘরে ফিরবে, ক্লান্ত-ঘর্মাক্ত প্রিয়জন আসবে, খাবারের টেবিলে ঘরোয়া আয়োজনে একে অপরকে খুঁজে নিবে,নির্বিঘ্নে ইবাদাতে নিয়োজিত থাকবে, নিশ্ছিদ্র রাতের বেলায় দিনের সমস্ত কোলাহলকে পিছু ফেলে নিজের বিছানায় পরম নিশ্চিন্তে ঘুমের অতল গহীনে গা এলিয়ে দিবে....এ নির্মল আনন্দ শুধু নিজ গৃহেই লাভ করা সম্ভব। এজন্যই তো বলে "Home sweet Home" কিন্তু
আমরা যারা মুসলিম আমাদের নীড় শুধু বসবাসের একটি স্থান মাত্র নয় বরং মুসলিম সমাজের একটি মূল একক হলো মুসলিম পরিবার! এই মুসলিম পরিবার শুধু কিছু মুসলিমের সংখ্যাগত সমস্টির নাম নয় বরং এর মধ্যকার পরিবেশ বা মূল্যবোধ এর নাম! তাই প্রতিটি মানুষ চায় তার ঘরটি হোক এক টুকরো সুখের নীড়- আনন্দের কুটির আর এটা আল্লাহ'র নির্দেশ মেনে চলে এবং রাসুল সা: এর সুন্নাহ গুলো অনুসরন করেই লাভ করা সম্ভব!
মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন রামীনা কথাগুলো! নিজের ভিতর জ্ঞান চর্চার তীব্র অনুভূতি অনুধাবন করলেন তিনি ! দুজনে মিলে কথা বলতে বলতে কখন যে চা ঠান্ডা হয় গেছে কারোই সে খেয়াল নেই! নাঈমা এবার উঠলেন ঠান্ডা হয়ে যাওয়া চা গরম করে আনার জন্য........
বিষয়: বিবিধ
১৭৭৬ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই এখন জ্ঞান চর্চা থেকে অনেক দুরে। বিশেষ করে নারিরা বেশি। একসময় বাংলা ভাষা্য় সব ধরনেরই বই এর প্রধান পাঠক ছিলেন গৃহিনিরা। আর এখন তারা ব্যাস্ত থাকেন সিরিয়ালে।
আপনার মূল্যবান উপলব্ধির জন্য আন্তরিক শুকরিয়া
যাক গল্পটি অসম্ভব ভাল লেগেছে, একটানে পড়ে নিলাম। তবে কবে যে এই সুখের নীড়ে পা দেব, সে ভাবনায় চুল পেকে একাকার!
এই দোআ বেশি বেশি পড়েন ভাই, চুল পকে গলো কিন্তু সমস্যা আছে
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا“ হে আমাদের রব ! আমাদের নিজেদের স্ত্রীদের ও নিজেদের সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম৷”
(আল-ফুরকান ৭৪)
খুব ভাল লাগল; আল্লাহ্ আপনাকে আরও বেশী বেশী লিখার তাওফিক দিক।
আপনার দোআয় আমাদের শামিল রাখবেন
সত্যি অসম্ভব সুন্দর বলেছেন। শুধু নিজের ঘর নয় পুরো পৃথিবীটাকেই একটি ঘর বানিয়ে একে অপরের সাথে চলতে হবে। সেটা যেকোনো বিষয়েই হোক না কেনো।
শুকরিয়া ভাই আপনাকে, আপনার মূল্যবান উপলব্ধিটুকু রেখে যাওয়ার জন্য! শুভকামনা রইলো
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো
অসাধারন মন্তব্যটির জন্য আপুকে আবারো শুকরিয়া!
যাজাকিল্লাহু খাইর।
মা শা আল্লাহ্
মন্তব্য করতে লগইন করুন