জনোমনোকালকাহিনী

লিখেছেন লিখেছেন নুরুন্নাহারশিরীন ১০ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:৫৫:৫৪ রাত

এই লেখাটি ২০০৬-২০০৭-এর ক্রান্তিকালে লিখেছিলাম এবঙ লিখেই জনকন্ঠে পান্ডুলিপিটি জমা দিয়েছিলাম। সেসময় সময়োপযোগী একটি কাজের স্বীকৃতি হিসেবেই তাতক্ষণিক সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তে "চতুরঙ্গ" পাতায় ধারাবাহিক প্রকাশ হয়। এখানে শেয়ার করছি তার কিয়দংশ - আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের স্মরণে। যদিও আমার একান্ত ধারণা - যাঁরা রোজই হৃদয়ে নমস্য - তাঁদেরকে কোনও বিশেষ দিবসে স্মরণ করার প্রয়োজন পড়েনা। সততঃ তাঁরা হৃদয়ে স্মরণার্হ। তবুও নিশ্চয় প্রথামাফিক কিছু নিয়মনীতি থাকে রাষ্ট্রীয় এবঙ দেশাত্মবোধ জনিত বিবিধ দায়ভার। তারই জন্য লিখতে হয়। স্মরণ করতেও হয়ই।

জনতার জন্মের অনেক আগে জন্মেছিলো -

জনতার অভিলাষ - জন্মেছিলো নিয়তি ও ইতিহাস।

জন্ম বড়ো স্বপ্নচারী - সে স্বপ্নের পথ ধরে

জাতিধারা বয় -

বহু ভ্রান্তিক্রান্তি ঘুরে ভাঙা ঘরে সূর্যের

পা পড়বে বলেই ভোর হয়।

আমাদের ভোরগুলি যদি অস্বীকার করি -

যদি সঠিক মাত্রায় হৃদয়ের কথা লিখতে না পারি -

যদি কবিতার নামে যা-তা লিখে পাতা ভর্তি করি -

যদি ঐতিহাসিক সত্যকে মিথ্যা বলি -

তবে তো বেজন্মা আমি !

তবে তো কবন্ধ কলঙ্কই আমি !

যার মানে পাপ হচ্ছে - যার মানে খুন হচ্ছে অভ্রস্বপ্নাদ্য

যেথায় আমার জনোমনোকালঘেরা জাতীয় ঐতিহ্য।

যেথায় আমার ভাষা - আমার শ্যামল রক্তকলা -

আমি কি লুকোতে পারি চিরকালের অমল গন্ধমালা !

না। সত্য ও রক্তাশ্রু লুকোবারতো নয়ই - উপরন্তু -

দিন যত যায় - ততই সে স্পষ্ট হতে স্পষ্ট উথালঢেউ।

আজ লিখতে বসেছি তার কথা -

আজ লিখতে বসেছি স্বপ্নগুলো - রক্তমাখা।

তখন ভারত অবিভক্ত।

তখন নবাব সিরাজদ্দৌলা ষড়যন্ত্র কবলিত।

তখন বাংলার মাঠ নীলচাষে জখমিত।

তথাপি কৃষকসিপাহিজনতা বিদ্রোহের আগুনে দীক্ষিত।

তথাপি সর্বত্র -

"বৃটিশ হটাও মন্ত্রে জনপদ যূথবদ্ধ।

বিদ্রোহের জের ক্রমে -

ভারতবর্ষের জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে - সর্বস্তরে।

একদিকে গান্ধীজী-র অহিংস মন্ত্র -

অন্যদিকে নেতাজী সুভাষচন্দ্র

সঙ্গে কায়েদে আযম ও অন্যান্য।

এলো বৃটিশ কালের সেই সে দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধ।

সেই সঙ্কট কালের ভয়াল বিস্তার - নাতসি বিভতসতা

জের তার ছড়িয়েছে বিহার-উড়িষ্যা -

এবঙ এ বঙ্গে -

বৃটিশবিরোধী আন্দোলনও তুঙ্গে।

প্রাণবাজী অপারেশনে প্রাণ দেন বাংলার বীরকন্যা -

প্রীতিলতা।

ফাঁসি হয় মাস্টার দা' সূর্য সেন-এর।

ফাঁসি হয় ক্ষুদিরামের।

অতঃপর বৃটিশ রাজত্বে বিপর্যস্ততা -

অতঃপর ইংরেজদের আর চায়নি জনতা।

তো, বৃটিশদের অবশেষে -

ভারত ছাড়ার সিদ্ধন্তেই হয় যেতে।

তারা নতি স্বীকারের আগে -

ভারতকে ভাগ করে - মহাচাতুরীর চালে।

অভিন্ন বাংলা বিভাজিত হয়ে -

নব্য দু'দেশের ভাগে পড়ে।

পশ্চিমবাংলা ইন্ডিয়ার আর -

পূর্ববাংলা "পাকিস্তান" নামে নতুন রাষ্ট্রের -

সেইখানে পশ্চিম-পূর্বের ব্যাবধান বিস্তর-দূস্তর ঢের।

এই ইতিহাস উনিশশো সাতচল্লিশের -

এই শুরু আমাদের।

শুরু যে হয়নি ভালো মোটে -

বোঝা গেলো তা - সামান্য দিন যেতে।

পূর্ব-পশ্চিমের মেলবন্ধন কেবল ধর্মজালে

কেবল ভাতৃত্বে বেশিদিন টেকেনি কিছুতে।

অন্ধ বৈষম্যের খড়গে পূর্ববাংলার মানুষ দ্রোহী হয় ক্রমে

ক্রমে বহুবিধ জুলুমের ধারা - ভাষার দূরত্ব -

আন্দোলন পর্যন্ত গড়ালো সেই "বৃটিশ হটাও"-র মতো।

রক্তে ভরলো ঢাকার রাজপথ -

প্রাণ দিলো শফিক, সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত।

এই ইতিহাস উনিশশো বায়ান্ন-র একুশে ফেব্রুয়ারী-র।

এই ফেব্রুয়ারী জনতাকে করলো অনড় সংগ্রামী।

এই বায়ান্ন-র রক্তাক্ত অধ্যায় বেয়ে এলো সেই কাল -

সে এক উত্তাল কাল - ঊনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান।

কালজয়ী সেই গণজোয়ারের মাঝি শেখ মুজিবুর রহমান

ভালোবেসে জনতা খেতাব দিলো - "বঙ্গবন্ধু" -

জনতার একটাই শ্লোগান - "জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।"

বঙ্গবন্ধু আর জনতার দাবী একটাই -

"সাধারণ নির্বাচন চাই।"

পশ্চিমা শাসকজান্তা জনতার চাপে -

নির্বাচন দিলেন তো বটে -

কিন্তু জনতার নিরঙ্কুশ রায়ের পরেও -

পূর্বের নেতার হাতে ক্ষমতা দেননি ছেড়ে।

পশ্চিমের আয়ুব খানের বাড়া -

ইয়াহিয়া-টিক্কা চালালেন অদ্ভুত মহড়া -

খান-সেনাদের অন্যায়ের অন্ধকারে আহা -

লেলিহান পূর্ববাংলা।

জান্তাশাসক আলোচনার নামে প্রহসন -

চালালো এবঙ নেতা বুঝেশুনে জনতার মন -

একাত্তুরের সাতই মার্চ জনসমুদ্রে ঘোষণা করলেন তাঁর

"এবারের সংগ্রাম মুক্তির এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার।"

গর্বে ভরে গেলো বুক স্বাধীনতাকামী জনতার।

নেতার নির্দেশে চললো স্বাধীনতার প্রস্তুতি আর

স্বাধীন একটি সূর্যখচিত সবুজ পতাকার অঙ্গীকার।

অন্যদিকে - পশ্চিমারা গৃহবন্দী করলো নেতাকে -

তাঁর ধানমন্ডির বত্রিশ রোডের বাড়িতে - যে বাড়িকে

বলি - ইতিহাসবাড়ি - বন্দী নেতাকে একনজর দেখতে -

কর্মী-জনতার ভিড় - বাড়ির পাঁচিল ঘিরে -

নেতা দাঁড়াতেন বারান্দায় -

দিতেন অভয়বাণী - দিকনির্দেশনাও।

কিন্তু ভয়ঙ্কর রাত্রি হামলে পড়লো অতর্কিতে এইদেশে

পশ্চিমা সশস্ত্র পিশাচরা ইয়াহিয়ার নির্দেশে -

ঝাঁপিয়ে পড়লো যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক-কামানের গোলা ভরে -

ঘুমন্ত-নিরস্ত্র মানুষের 'পরে।

সেদিন পঁচিশ মার্চ ঊনিশশো একাত্তুর -

দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র -

টেলিগ্রাম করে ছড়িয়ে দিলেন ইথারে-ইথারে -

অতঃপর আত্মসমর্পণ করলেন স্বেচ্ছায় শত্রুর হাতে। জানতেন তাঁকে না পেলে জান্তারা মানুষ মারবে পিষে।

তবু তাঁর মানুষ বাঁচেনি এইদেশে।

সেই রাতে ট্যাঙ্কে পিষে কামানের গোলায় পুড়িয়ে

লক্ষ ঘুমন্ত মানুষ পৈশাচিক উল্লাসে লেলিয়ে

সশস্ত্র হায়েনাদের হেসেছে শাসকজান্তা -

রাজপথেঘরেঅলিগলিহাটবাজারছাত্রাবাসমসজিদেও -

রেহাই পায়নি বাংলার মানুষরা।

সার বেঁধে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে মেরেছে নির্দ্বিধায় -

সেই হত্যাযজ্ঞ নাতসি বিভতসতার অধিক ভয়াবহ -

শিশুনারীবুড়ো নির্বিশেষে হত্যা-ধর্ষকামের হিংস্রতায় -

বাংলার প্রকৃতিসুদ্ধো পৃথিবী স্তম্ভিত।

এ কাহিনী লিখে ফুরোবারই নয় তো -

বাংলা ও বাঙালি নিধনের সে এক বর্বরযজ্ঞ।

সে এক তান্ডবপিষ্ট নগ্ন-মাতৃভূমি -

তান্ডবের যে ছবিতে আজও অগ্নি এ হৃদি - সেকথা বলি

নেহাত গাঁয়ের লোক বাংলাদেশের পাড়াগাঁয়ে বাস।

বাংলা ব্যাতীত অন্য ভাষা জানা নাই যার।

সেকি অপরাধ? সেকি মহাপাপ?

মানবধর্মমতেই অপরাধও না। পাপও না।

অথচ ধর্মীয়জালে ঝুলন্তভাতৃত্ব নামের কলঙ্ক পাকিজান্তা

বেয়নেটে খুঁচিয়েখুঁচিয়ে মারে লোকটারে আহা -

"বাঙ্গাল তুম - ঊর্দু কিঁউ নেহি জানতা?"

এভাবেই লক্ষ বাঙ্গাল উল্লাসে মেরেছিলো পাকিজান্তা।

এইসব দুঃখচিত্র - রক্তাক্ত স্মৃতির অশ্রুকাব্য -

লিখি যদি - মহাকাব্যেরও অধিক হবেই হয়তো।

আমি তখন স্কুলের গন্ডি পেরুইনি এসএসসি-র ছাত্রী -

প্রতারক নয় সেইসব অজস্র ভয়াল স্মৃতি -

পাড়ার ডাক্তার নিত্যহরি বাবু চব্বিশ ঘন্টাই রাখতেন তাঁর দরোজাটি খোলা পাড়ার লোকের জন্য - সেরাতেই

যখন মিলিটারি নামলো শহরে পাড়ার কেউই তাঁর তরে

এগিয়ে যায়নি সামান্য আশ্রয় দিতে -

যে পাড়ায় তাঁর তিন পুরুষের ভিটে -

ফেলে কোথায় যাবেন স্ত্রীপুত্রকন্যাদেরকে নিয়ে !

বাবা দাঁড়ালেন পাশে - "শান্তি কমিটি"-র রক্তচক্ষু চিরে।

বাবার সুনাম ছিলো নির্বিরোধী বলে - হয়তো বা তাই

এ্যাকশন নেয়নি কমিটি আর।

আমাদের সঙ্গে নয়মাস ছিলো ডাক্তারবাবুর পরিবার।

অথচ আমরা বাঁচাতে পারিনি ভিটে তাঁর -

মালামাল হাতিয়ে নিয়েছে "শান্তি কমিটি"র রাজাকার -

মনে এলেই ঘৃণায় জ্বলি।

আজও ঘৃণায় জ্বলি -

মারবার রক্তদৃশ্যে - হরিপদ-হরিদাসীদের -

বাংলা ছাড়া কোথাও কোনও ঠাঁই ছিলোনা যাদের।

সেদিন যখন মসজিদের হুজুর বললেন - পালাও -

মিলিটারি আসছে - হাজার গ্রামবাসি প্রাণভয়ে -

দৌড়ুচ্ছে দিগ্বিদিক - কিছু না বুঝে তারাও -

কন্যা দীপালী উঠোনে মাত্র -

সগর্জনে মিলিটারি ট্রাক ঢুকেছে যমের মতো -

চৌচির জমিন কালো-কালো বুটের ধাক্কায় -

ধূলোরা মুহূর্তে লাল রক্তধারায় -

অজস্র গুলিতে লাশ হরিপদ-হরিদাসী -

আর পালাতে না পারা গ্রামবাসি।

দীপালীকে ধরেবেঁধে নিয়ে গেছে ক্যাম্পে -

যেখানে অনেক দীপালীর আর্তনাদে বাতাস কেঁদেছে।

কেঁদেছে বাংলার মাঠনদীবঙ্গোপসাগরধারা -

বাংলার প্রতিটি গ্রামধূলোবালি জানে সেই ব্যাথা।

আজও হৃদয় দাউদাউ সেইসব জলছবিসনে -

আজও শ্মশানজাগা সাক্ষী চন্দ্রতারা বাংলা বনে-বনে।

আমরা সবাই জানি হায়েনারা চিনতোনা বাংলার পথঘাট

এদেশীয় শয়তানরা চিনিয়েছিলো বলে বাংলা মা শ্মশান।

তো, আজ আমরা কেন শয়তানের বিচার চাইবোনা?

কেন তাদের প্রকাশ্যে "রাজাকার" বলবোনা?

সত্য এই লক্ষ জনতা যখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে -

"জয়বাংলা" বলে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে -

ইথারে বেজেছে বঙ্গবন্ধুর অজর ঘোষণা -

২৬ মার্চ, ২৭ মার্চ জনৈক মেজর পড়লেন সে ঘোষণা -

বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই মেজর জিয়া - দলেদলে মানুষ ছুটেছে

সীমান্তের কাঁটাতার ভেঙেই ওপারে - বাঁচার অপর যুদ্ধে

ভারত দিয়েছে ঠাঁই এক কোটি উদ্বাস্তুকে -

ভারতের ইন্দিরাজী বাঁচিয়েছিলেন সর্বসহায়ক হয়ে।

যে সাহায্য ছাড়া এইদেশ হতোনা স্বাধীন - সত্য এই -

তাঁর কাছে আমাদের স্বাধীনতার অপরিশোধ্য ঋণ।

সত্য এই জাতির সে ক্রান্তিদিনে -

প্রাণপ্রিয় নেতা ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের কন্ডেমসেলে

পশ্চিমারা ভেবেছিলো - নেতা প্রাণভিক্ষা চাইবেন -

নেতার কথাটি ছিলো - আমার মানুষ লড়ছে মুক্তির তরে

আমরা বীরের জাতি হাসতে-হাসতে মরতে জানি।

সত্য এই।

প্রাণপ্রিয় নেতার নামেই হয়েছিলো মুজিবনগর।

হয়েছিলো স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র তখন।

দানবের সঙ্গে লড়েছে অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা -

অকাতরে প্রাণ দিয়ে মুক্ত করেছে বাংলা।

অকাতরে প্রাণ দিয়েছে অনেক ভারতীয় সৈন্য -

এই সত্য কলুষিত করা মানে শয়তানের সনেই সখ্য।

বাংলাদেশ যখন চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পথে -

তখন শত্রুরা বসে এদেশীয় শয়তানদের সাথে।

বাঙালি জাতিকে মেধাশূণ্য করে মরণ কামড় দিতে -

তারা আমাদের বুদ্ধিজীবি হত্যার তালিকা লিখে -

ঊনিশশো একাত্তুর চৌদ্দ ডিসেম্বর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে -

চোখবেঁধে বধ্যভূমি নিয়ে নৃশংস অত্যাচারেই হত্যা করে

হৃদয়ে নমস্যদের।

লোমহর্ষক তান্ডব শেষ হয় তখন - যখন শত্রুদের -

আত্মসমর্পণ ছাড়া পথ নেই আর।

একেএকেই তখন বাংলার গ্রামগঞ্জ মুক্ত অনিবার -

অবশেষে আসে ষোল ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দ অপার।

ঢাকার মাটিতে পাকবাহিনী প্রধান আত্মসমর্পণ করে -

ভারতীয় সেনাপ্রধানের কাছে, মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে

আহ বিজয়ের সে আনন্দদিন -

ভাষায় বর্ণনাতীত।

হ্যাঁ, সেদিন হতে বিশ্ব-মানচিত্রে 'বাংলাদেশ' -

সূর্যখচিত পতাকা উড়িয়ে বিহঙ্গসম এক দেশ -

পেয়েছে স্বাধীনতার ছাড়পত্র।

তখনও মাতৃভূমির শিকড়তলে অশ্রুরক্তচিহ্ন।

তখনও ধ্বংসের 'পরেই দাঁড়িয়ে উতকন্ঠিত প্রহরে

জনতার অপেক্ষা নেতার তরে কবে নেতা আসবেন ঘরে

দাঁড়াবেন তাঁর স্বপ্নসাধের স্বাধীন বাংলার তৃষ্ণার্ত প্রান্তরে।

তখনও বিশ্বের সব দেশ দেয়নি স্বীকৃতি -

পরম মিত্রের মতো ভারত দিয়েছে প্রথম স্বীকৃতি।

পরে রাশিয়া ও আরও কিছু দেশ মিলে -

বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জোর দাবী তুলে।

বিশ্বদাবীর চাপেই পাকিস্তান ফাঁসির সিদ্ধান্ত পালটাতে -

বাধ্য হয়, অবশেষে মুক্তি দেয় বঙ্গবন্ধুকে -

ঊনিশশো বাহাত্তুর দশ জানুয়ারী -

বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে পা রেখে ফেরেন বাড়ি।

সেদিন সমস্ত অশ্রু আনন্দাশ্রু হয়ে -

মিলেছিলো বাংলার জনপদে।

সেদিন সমস্ত অশ্রু নিশ্চয় মিশেছে -

বধ্যভূমি হতে ভূমধ্যসাগরে।

সেদিন প্রাণের আবেগের জের বাতাসে-বাতাসে -

কান্নায় আপ্লুত নেতা একাকার কোটি জনতার সাথে -

কেঁদে বললেন - রবীন্দ্রনাথ,

আপনার -

রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করনি ভুল প্রমাণিতআজ

আমার বাঙালি মানুষ হয়েছে দেখে যান।

(সংক্ষেপিত)

আমার এই লেখাটি আজ আবার লিখতে-লিখতে অশ্রুজলে ভেসেই রক্তবদ্ধ-সত্যবদ্ধ নেতার উচ্চারণ আশ্চর্য উপলব্ধি করতে চেয়ে কান্নার আগুনে পুড়ছি - কই, আজও আমরা কি প্রকৃত মানুষ হয়েছি???

১০ জানুয়ারী ২০১৩ ইং

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File