সাইকো

লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ০৬:৩৪:৫৭ সন্ধ্যা



প্রথম পর্ব –

-১-

দেশের বাইরের দেশ!

লোকটা সুন্দর কথা বলতে পারে – মানুষকে দলের বিরত্ব গাঁথা শুনিয়ে কাঁদাতে পারে

— ঘরে এসে বউ এর সাথে স্লেভ এর মত আচরণ করতে পারে

— বাচ্চাদের অত্যাচার করতে পারে

— এক সন্ত্রাসীকে ফোন করে ধান্দাবাজির গালগপ্প করতে পারে

— ভাইবোনদের সম্পদ কুক্ষিগত করতে পারে

-২-

মন্ত্রী এক বস্তা টাকা দিয়ে দিল ১৬ বছরের মেয়েকে — ‘মা, আমি পালাচ্ছি — আবার আসব – তুই ড্রাইভারকে নিয়ে খালার বাসায় চলে যা;

৬ই আগস্টের কোন এক বিকেলে ছাদে মেয়েটির বাবা তার ডান-হাত সন্ত্রাসী মজিদের তত্বাবধানে লুকিয়ে – এক গ্লাস মদ সামনে —

সচিবালয়ে ই কত এরকম মাতাল আবেশ কেটেছে মন্ত্রী থাকাকালীন।

মজিদ এখন ইসলামী দলের একটি লোকের সাথে ফোনে ধান্দাবাজির গালগপ্প করছে।

তবে মজিদ ভাবছে কিভাবে স্যারের মেয়েকে ধরা যায় – নিশ্চয়ই স্যার অনেক টাকা (বস্তা ও হতে পারে) দিয়ে মেয়েকে পালাতে বলেছে।

সে কি ওই ১৫-১৬ বছরের মেয়েকে পেলে খুন করবে স্যার এর মেয়েকে?

স্যার বছর খানেক আগে মজিদকে দিয়েই তার বৌকে হত্যা করেছিল – বস্তায় ভরে নদীতে ডুবিয়েছিল।

-৩-

কোন এক মাজার।

পিওর গঞ্জিকা সেবন করে দরবারে একটা সিজদা দিয়ে ৫ মিনিট থাকতে হবে সিজদায় –

গাজা তাতে আবেশ আনে

এমন চিন্তা করতে না করতে দশ বারো জন জিহাদি মাজারে ঢুকে পড়ল —

আব্দুল ওহাবের বীরগাথা স্মরণ করতে করতে গঞ্জিকা সেবকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল – আহা কি অপূর্ব মিল!

পাশে ই কয়েকজন মেয়েমানুষ — এদের কি করা যায়?

কপালে সফেদ কালেমা খচিত নেতা গোছের লোকটির এক মোহো মায়া জড়িয়ে ধরল!

-৪-

গুলশান।

ঠিক এখন বালিশে ব্ল্যাক ম্যাজিক এর তাবিজটি ভরে দিতে হবে

এ মহিলাকে পাগল করে দিতে পারলে কেল্লাফতে

তারপর ছেলেকে বানাতে হবে পাগল

—- একটার পর একটা স্টেপ — খুব কঠিন না

তখন সম্পদ আর কেউ নিতে পারবেনা

টিসি আছে শুক্রবার — শপথের কর্মীদের প্রত্যয় দেশে আল্লাহর আইন কায়েমে প্রদীপ্ত হওয়া — কিছু কর্মী যোগাযোগ ও করতে হবে আগে.

অনেক কাজ বাকি আছে.

শুক্রবারের ট্রেনিং সেশনের আগে বেশ কিছু জনসংযোগ ও বায়তুলমাল ও জোগাড় করতে হবে

হটাৎ ছেলের ফোন – ধুর, আবার টাকা চাচ্ছে বোধ হয়……

দ্বিতীয় পর্ব –

-১-

আপনি রোকন কেন হবেন?

সে বলল: ‘দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হব’

‘আপনি কি আপনার ভাইবোনদের হক আদায় করেছেন? তাদের সম্পত্তি সমান ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন?’

সে এ প্রশ্ন আশা করেনি!

সে শুধু ভাবছে – প্রশ্নকর্তা কেন এ প্রশ্ন করল?

“তুমি বলঃ হে রাজ্যাধিপতি আল্লাহ! …… যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন; আপনারই হাতে রয়েছে কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনিই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান।” (সূরা ইমরান)

-২-

‘আচ্ছা বিদেশের মাটিতে বিএনপি, আলীগের দলের প্রয়োজনীয়তা কি?’

একটা রেস্টুরেন্টে কিছু মানুষ জমা করে প্রোগ্রাম করব – আর পত্রিকায় পাঠাবো – নিজেকে দলের কাছে নেতা হিসেবে প্রমান করতে পারব।

‘আপনার বিসনেস পার্টনার তো লীগের – আর আপনি করেন ধানের শীষ!

ধুর! ওই দুই দলের টপ নেতারাই একজন আরেকজনের বিজনেস পার্টনার – আর আমি তো কোন যদু!

ফার্মগেট সিন্ডিকেট এখনো বাগাতে পারিনাই — মির্জা ফখরুলের এক ডান হাত আমাকে সুযোগ দিচ্ছে না!

-৩-

‘আচ্ছা বিদেশের মাটিতে জামায়াতের প্রয়োজনীয়তা কি?’

কেন দ্বীন প্রতিষ্ঠা!

আপনারা কি এটা পাবলিকলি বলেন? মিডিয়াতে বলতে পারবেন?

তিনি সরু চোখে প্রশ্নকর্তাকে বুঝার চেষ্টা করছেন। কি উত্তর দিবেন?

‘নিশ্চয়ই কোন লীগের দালাল।’

ধরলাম আপনি উত্তর দিতে চাচ্ছেন না! কিন্তু আপনারা ওপেনলি জামায়াতের নামে মিটিং তাহলে করেন না কেন?

সরু চোখের তিনি এখন নিশ্চিত হলেন এবং বললেন – ‘ভারতের দালালি ছাড়েন — ফুটেন!’

-৪-

ইসলামী আন্দোলনের এক পুরাতন পরিবারের

এক প্রজন্ম মেয়েদের অধিকার বঞ্চিত করিয়া ও

ছেলেরা সকল সম্পদ গুনিয়া নিয়া ——

পরের প্রজন্ম আরেক ডিগ্রি বাড়িয়া ভাইদের সম্পত্তি পেট পুড়ে খাইয়া —-

তাহার পর দুই প্রজন্মের দুই কালপ্রিট এক সাথে হইয়া

বৃদ্ধা মাকে অন্যের ঘাড়ে রাখিয়া

দেশ বিদেশে ইসলামী আন্দোলন করিয়া

অশেষ নেকি অর্জন করিল।

তাহারা দেশে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করিবেন এ স্বপ্ন দেখিতে লাগিল।

-৫-

একটি আদর্শ বাদী দলের পতনের আসল লক্ষণ কি জানেন?

আপনি ই বলেন?

যখন সেখানে আপনি এমন কোন নেতা পাবেন না যে সুবিচার করতে দাঁড়াবে নিজ বা দলের স্বার্থের বাইরে গিয়ে।

অর্থাৎ এমন কোন বিচারক পাবেন না যে তার স্বার্থের বাইরে সাহসিকতার সাথে সুবিচার করতে দাঁড়াবে।

উল্টা সেখানকার নেতারা বলবে — ভাই / বোন, ধৈর্য ধরেন! সবুরে মেওয়া ফলে!

-৬-

অন্ধকারের চুল বেয়ে নামে বৃষ্টি

গাড়ি চালাচ্ছি — ব্যাক মিররে কন্যাদের দেখি –

ঘুমিয়ে পড়েছে হটাৎ করেই

ঈদের রাত্রিতে গাড়ি উড়ে চলছে – সাইসাই

আমি কি পরাজিত?

আমি কি বিজিত?

কে যেন বলেছিল – ‘মানুষের মনকে জয় করার মত সাফল্য আর কিছু নাই!’

আমি কি আব্বুকে দেখছি

মানে হচ্ছে পাশে ই বসে আছে!

আব্বুকে কেন দেখছি?

তাকে এত মিস কেন করি?

আমি কি ঘুড়ি উড়াচ্ছি?

ঘুড়ি কাটাকাটি লাগার অপেক্ষায়?

আমি কি ভাবছি বহুপথ নিয়ে?

আল্লাহ বলেছেন: “শপথ বহু পথবিশিষ্ট আসমানের” (যারিয়াত: ৭)

আমরা কয়টা পথ জানি?

বিভিন্ন পথে কি হয়?

এরকম কোন পথের সাথে কি যুলকারনাইনের জানাশোনা ছিল কি?

“অতঃপর সে (যুলকারনাইন) এক পথ অবলম্বন করল।

চলতে চলতে যখন সে সূর্যোদয়ের স্থলে পৌঁছল তখন সে দেখল সেটা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হচ্ছে যাদের জন্য সূর্যতাপ হতে কোন অন্তরাল আমরা সৃষ্টি করিনি;” (কাহাফ: ৮৯-৯০)

এটা কি ব্ল্যাকহোলের কাছাকাছি কোথাও যেখানে নক্ষত্রের সূচনা বা পতন হয়?

কোন গ্রহ? কেমন দেখতে সে গ্রহ?

বৃষ্টি পড়ছে

গাড়ি উড়ে চলছে।

তৃতীয় পর্ব –

-১-

লোকটি সরু চোখে তাকিয়ে আছে।

তার বউয়ের দিকে।

হাতে বেল্ট।

মা বলেছে বৌকে শাসন করতে।

তাই হাতে বেল্ট।

ছেলের মায়ের সাথে বৌয়ের হালকা তর্ক – সেখান থেকে মায়ের শাসন।

লোকটি মা ভক্ত তা কিন্তু না।

লোকটি নির্বোধ।

লোকটির নিজস্ব ভাল মন্দ যাচাই করার গুণ নেই।

লোকটির সাথে তার ছোট বাচ্চার (ক্লাস ৭) কোন কথা নাই – আব্বু বলে সম্বোধন নাই.

কারন বাচ্চার সামনে মা কে অনেক মেরেছে আগে লোকটি।

একবার অজ্ঞান ও করেছে মেরে।

তাই বাচ্চা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে দু:খে।

লোকটি সাথে পশুর কোন তফাৎ আছে কি?

লোকটি কোন প্রফেশনাল কাজ করে তা কিন্তু না.

লোকটি মায়ের ভক্ত।

কিন্তু মা যে লোকটিকে ভালবাসে তা না।

মা লোকটিকে কি পোষা কুকুরের মত ই ব্যবহার করে?

হয়ত মা লোকটিকে ফার্মের মুরগি বানিয়েছে ৩০ বছর

তারপর বিয়ে দিয়েছে।

বৌ টিও বুঝে উঠতে না উঠতে বাচ্চা নিয়ে নিয়েছে।

বৌটি এখন পশুরূপী লোকটির সাথে সংসার করছে।

“আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে।

অতঃপর তাকে নামিয়েছি নীচ থেকে নীচে” (সূরা ত্বীন)

-২-

বৃদ্ধ লোকটির তিন ছেলে।

কঠিন মানুষ তিনি।

এ বাসায় তার আদেশ চলে কেবল।

তার দুই বাচ্চাকে একেবারে অনুগত বাচ্চা বলতে পারলেও একজনকে পারেনি।

তার মেঝো ছেলেটি ড্রাগস্ নেয় দুই দিন পর পর.

দুই ভাই আর বাবা মিলে কড়া শাসন চালায় ওই মেঝো ছেলের উপর।

কয়েকবার রিহ্যাব থেকেও নিয়ে আসা হইসে ছেলেকে।

বৃদ্ধ মানুষটি একটি ইসলামী দলের বিশিষ্ট নেতা।

রূঢ় আচরণের জন্য টপ পজিশন না পেলেও ধান্দাবাজি বিষয়ক কাজে ও লিয়াজোঁ জাতীয় কাজে দক্ষতার জন্য সে আবার ওই দলের আমিরের বিশিষ্ট ডান হাত সে।

অনেকে পছন্দ না করলেও কিছু যায় আসে না।

সবাই আমীরের অন্ধ ভক্ত।

সেই সুবাদে সেও দলের বিশিষ্ট সন্মান-ভোগী ব্যক্তিত্ব।

লোকটি আজ রাতে প্ল্যান করছে মেঝো ছেলেকে কড়া শাসন করবেন।

গাড়িতে ফিরতে ফিরতে ড্রাইভারকে বলল: ‘সালাম, ইনজেকশন নিয়েছো তো — ছেলেকে শক্ত করে ধরে রাতে ইনজেকশন পুশ করতে হবে – তারপর রুম তালাবদ্ধ রাখতে হবে.

“স্যার, রিহ্যাবে নেন। এ কাজ কইরেন না’ – ভয়ার্ত কন্ঠে সালাম বলল।

‘আমি যা বলছি তাই হবে.”

** ** **

তিনি বাথরুমে মুখ ধুচ্ছেন।

আর এক ঘন্টা পরে ছেলের রুমে যাবেন সবাইকে নিয়ে।

শাসন চালাবেন – ইনজেকশন পুশ করবেন।

আধো আলো আধো অন্ধকার পাশের বেড রুম।

বৃদ্ধ বউ থাকে নিচ তলায় ছোট একটি রুমে।

উপরে কদাচিৎ আসার অনুমতি পায় বউ।

হটাৎ তিনি অনুভব করলেন কেউ তার বেড রুমে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছে।

নিঃশব্দ।

চমকে উঠলেন।

তার মেঝোছেলে!

‘বাবা তুমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে কেন?’

ছেলে নিরুত্তর।

ছেলের হাতে কি?

আলোর চিলিক উঠল হাতের ধারালো অস্ত্রে।

বৃদ্ধ লোকটির হটাৎ মনে পড়ছে প্রায় ৩০ বছর আগের কথা.

নিজের বাবার গলায় চাপ দিয়ে ধরে বলেছিল – ‘সাইন দে! আমাকে সব লিখে দে!’

জোর করে আদায় করেছিল বাবার থেকে সব কিছু!

সম্পত্তি নিজের নাম লিখে নেয়ার দিন-শেষে রাতের ঘটনা।

অনেক ঝক্কি নিয়ে অনেক যুদ্ধের পর সম্পত্তি নিজের নাম লিখে নিয়েছিল লোকটি।

সব ভাইবোন দের চির-বঞ্চিত করে।

আজ ৩০ বছর পর কি একই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে?

অথবা আরও কঠোরতর প্রকৃতির কোন প্রতিশোধ?

তার মেঝো ছেলে ধারালো অস্ত্র হাতে বাবার দিকে এগিয়ে আসছে।

“আমার পালনকর্তা ভুল করেন না এবং ভূলেও যান না” (কাসাস: ৫২)

-৩-

মহিলাটি ওঝার মাধ্যমে বান করেছে।

একটি পরিবারের স্বামী আর স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানোর ইচ্ছায়।

মহিলাটি র নামাজের ওয়াক্ত মিস হয়ে যাচ্ছিল ওঝার বেশি সময় লাগাতে!

একটি চিরকুট ছেলের বালিশে ভরে দিতে হবে।

খাবারও ওঝার থেকে পড়ে নিয়েছে।

সে খাবার খাওয়াতে হবে।

খাবার খেলে পেট খারাপ হবে নিশ্চিত – তাতেই কাজ হয় শুরু হবে।

অধার্মিক ছেলে হওয়ায় রক্ষা – ব্ল্যাক ম্যাজিক দ্রুত কাযে করবে।

এ নিয়ে ওই মহিলার তৃতীয় বান মারার প্রক্রিয়া।

উদ্দেশ্য সম্পত্তি নিজের লোকদের আয়ত্বে আনা।

লিফ্ট বেয়ে ফ্লোরে ওই মহিলা ঢুকতে ই দেখে হাতে বেল্ট নিয়ে লোকটি তার বৌয়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে প্রায়।

মহিলাটি মনে মনে খুশি ই হল।

চিৎকার দিয়ে বলল –

‘কি অসভ্য মেয়ে আজকাল। এটি খারাপ আচরণ করে যে স্বামী মারতে বাধ্য হয়।

চিৎকার দিয়ে বলল –

‘থাক বাবা ওকে বেশি মেরোনা’ —

…. মারপিট চলতে থাকে।

** ** ** ** **

মহিলাটি ছাদে চলে যায়।

চাঁদের বাগানে বেলি ফুল ফুটেছে – দারুন গন্ধ।

কি সুন্দর বাতাস।

এত শান্তি।

গুন্ গুন্ করে গান ধরেছে মহিলাটি।

মোবাইলে তখনই একটি মেসেজ এলো —

তার স্বামীর ম্যাসেজ।

‘আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়েছি –

ডিভোর্স লেটার পোস্ট করেছি –

আমি একজনকে বিয়ে ও করেছি;

আমার বাসায় আসায় তোমার নিষেধ এখন থেকে –

জিডি করেছি ইতোমধ্যে!’

সূর্য ডুবে যাচ্ছে।

সাদা মেঘেরা একদিকে ভয়ংকর কালো রং ধারণ করেছে।

থমথমে পরিবেশে রাতের আগমনী বার্তা!

** ** ** ** ** **

“তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল..” (৪২:৩০)

-৪-

তিনি সুন্দর তোপ পড়েছেন – দুধ-সাদা রংয়ের – চমৎকার টুপি – দামি পারফিউম।

তিনি নিজেকে ইসলামী আন্দোলনের নগন্য কর্মী বলেন –

যদিও একেবারে টপ পদে তার অবস্থান।

হয়ত এটা তার অমায়িকতা। এভাবেই কথা বলেন – মধুময় হাসির সাথে।

তিনি আমাকে বললেন: “ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ) বলেছেন,

.

“যেকোনো যুগে তুমি যদি সঠিক ইসলামপন্থী দলটি খুঁজে না পাও, তাহলে চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী এবং ইসলামের পরীক্ষিত শত্রুদের দিকে তাকাও। দেখো, তারা কোন দলটির প্রতি সবচেয়ে বেশি ক্ষিপ্ত।””

আমি তাকে বললাম – “আপনাকে একটি কথা বলি কিছু মনে না করলে।”

বলুন।

আমি ইমাম ইবনে তাইমিয়ার বিরাট ফ্যান। কিন্তু তার এই কথায় একটি বিশেষ দৃষ্টিকোণ আছে! হয়ত ব্যাতিক্রমী বিষয়ও আছে।

‘আপনার দলের প্রতি যদি বিশ্ব মোড়লরা সবচেয়ে ক্ষিপ্ত থাকত, তাহলে আপনার দলের মানুষেরা কি এরকম হাই ফাই লাইফ কি লিড করতে পারতেন?

লাক্সারি গাড়ি কি চালাতে পারতেন?

লাক্সারি বাড়ি কি করতে পারতেন?

সিকিউরিটি ফোর্স আপনাদের প্রতি মুহূর্ত খুঁজত!’

তিনি সরু চোখে তাকিয়ে আছেন।

বললাম: আরেকটা ফ্যালাসি আছে।

আইসিস তো বিশ্ব মোড়ল দের বানানো ক্রিমিনাল তালিকায় টপে — তাহলে আপনি কি ঐদিকে যাবেন? সঠিক দল মনে করে?

তিন নম্বর ফ্যালাসি হল: ‘দল’ করাই তো ইসলামে জায়েজ নয়! এটি বিতর্কিত বিষয়।

তাই আমার কাছে ‘দলের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি জিনিস মনে হয় —

দুইটা হাদিস আমার কাছে খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয়।

কাব ইবন মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত: আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “দুইটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘ একটি ভেড়ার পালকে যা ক্ষতি করতে পারে, তার চেয়েও বেশি ক্ষতি একজন মানুষের ধন-সম্পদ এবং উচ্চ মর্যাদার প্রতি লোভ তার দ্বীনের জন্য করতে পারে।”

সূত্র: সুনান আত-তিরমিযী ২৩৭৬

আর আরেকটি হাদিস হল:

ঈমানদার মানুষ সরল ও ভদ্র হয়। পক্ষান্তরে পাপী মানুষ ধূর্ত ও হীন চরিত্রের হয়’

(তিরমিযী হা/১৯৬৪; মিশকাত হা/৫০৮৫)

এখন চিন্তা করুন:

আপনি ধন-সম্পদ আর ক্ষমতার লোভ মুক্ত, সরল, ভদ্র মানুষ আপনার দলে কয়জন খুঁজে পান?

দল বাদ দিন, আপনি জীবনে খুব ভাল মানুষ কয়জন পেয়েছেন? বিশেষ করে ফিনান্সিয়াল ডিলিংস করার পরও !

অথবা এমন কয়জনকে পেয়েছেন আপনার দলে যারা তাদের সন্তানদের ইসলাম শেখাতে চান একেবারে মাদ্রাসা বা বিশ্ব বিদ্যালয়ে অথবা অন্য কোন ফর্মাল উপায়ে?

নাকি সে তার সন্তান দুনিয়াবী টপ ক্যারিয়ার করুক ও টাকার পাহাড় গড়ুক আর সেটাকে একমাত্র আসল স্বার্থকতা বলেই সন্তুষ্ট থাকতে চায়?

যদি এমন মানুষ না পান, তাহলে এত দলে জনবল নিয়ে কি কোন লাভ হবে?

তিনি বললেন: ‘ভাই আপনি রাখুন। আমার দলে ভাল মানুষ অনেক আছে।

আমরা পূর্ণাঙ্গ ইসলাম অনুসরণ করি – অন্যরা খেদমতে দ্বীন করে – যা পূর্ণ ইসলাম নয়!!

যাই হোক আল্লাহ আমাদের সবার মঙ্গল করুন। আসসালামু আলাইকুম।

** ** ** **

তিনি চলে যাচ্ছেন।

আমি ভাবছি – তিনি হয়ত সঠিকও হতে পারেন।

আমি দোয়া করছি – আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন – সবার ভিন্ন ভিন্ন পথ কবুল করে নিক।

তিনি তো মহীয়ান – তিনি চাইলে সবাইকে ক্ষমা করে দিতে পারেন মুহৃর্তে।

“যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তারা আপনার দাস এবং যদি আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তবে আপনিই পরাক্রান্ত, মহাবিজ্ঞ।

(সূরা মায়িদা: ১১৮)

https://www.facebook.com/manzur.ashraf/

বিষয়: বিবিধ

৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File