কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?
লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ২৩ মে, ২০১৭, ০৬:৫৩:৩৭ সকাল
মুফতি জিয়াদ সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষ পীড়িত অঞ্চলে ত্রাণকাজ শেষে ফিরে আসলেন মেলবোর্ন জুমার খুৎবার কয়েক ঘন্টা আগে।
বলা শুরু করলেন:
"আমি সোমালিয়ার এমন অঞ্চলে গিয়েছি যেখানে লাইন দিয়ে হাজারো ডাবল বেড-সাইজের ছাপড়া ঘর; শুকনো বাকলের ঘর - পলিথিন ব্যাগের চাল; একঘরে ৬-৮ জনের পরিবার।
আমি সিরিয়ার ত্রাণ কাজে গিয়েছি - সেখানে একটি তাঁবুর পরিবারের কমপক্ষে কিছু না কিছু সামগ্রী ছিল! কিন্তু সোমালিয়ায় দেখলাম ওই হাজারো পরিবার গুলোর কিছু নাই - একটি জিনিসও না - পড়ার জুতা, বিছানা, বালিশ, কিছু না - ৩০ - ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় বালি-মাটির উপর ঘুম - চিন্তার অতীত।
এক মুখ পানি পেলেই তৃপ্তি - যেখানে উট পর্যন্ত পানির অভাবে কাঁদতে থাকে!
শুনলাম ইউ,এন, ইত্যাদি ফ্যান্সি প্রতিষ্ঠানের সুটেড বুটেড লোকেরা কয়েকদিন আগে এখানেই কনফারেন্স করল - 'কিভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করা যায়' - লেটেস্ট মডেলের গাড়ি হাঁকিয়ে এসে দাপাদাপির মাধ্যমে অনেক আলোচনা করল - ৬ সাইড ডিশ দিয়ে ডিনার সারলো! একি সাথে কনফারেন্স এর পাশে ই এক সিপ্ পানির জন্য এই মানুষদের হাহাকারও চলল। শুনলাম এদের ডোনেশন এর ৩০ ভাগ ও পীড়িত দের কাছে যায় না - সিংহভাগ সিস্টেম আর শাসকের পকেটে চলে যায়। এই মানুষগুলো কোন ফ্যান্সি প্রতিষ্ঠানের কোন ত্রাণ কখন ও পায়নি - এদের ই স্বীকারোক্তি - অজানা মুসলিম কোন দল কালে-ভদ্রে এদের কাছে এসেছে সাহায্য নিয়ে!
এই মানুষগুলোর কোন পার্থিব সামগ্রী নাই - কিন্তু হৃদয় মাঝে কোরআন আছে! স্
কুল শুরু করার আগে তারা কোরআনের হাফেজ হয় - তারপর অন্য পড়াশোনা শুরু করে!
তাই, এত অনাহারের মাঝেও এদের মুখে হাসি - সামান্য একটি বাচ্চাদের জন্য নেয়া বেলুন পেয়ে ৯০ বছরের দাদিমা নাতির সেই বেলুন সাজিয়ে রেখেছে কয়েকদিন! কোন কিছু নাই - তবু এদের মুখে হাসি বিলীন হয়নি।"
আর আমরা!?
এই মানুষগুলোর সাথেই একদিন আমরা স্রষ্টার সামনে দাঁড়াবো।
** ** ** **
বৃষ্টির রাত। ক্লাস শেষে আমার বড় মেয়ে-পাখি উড়ে আসল গাড়ির কাছে।
'তাজয়ীদ সহ সূরা কাহাফ মুখস্থ পাশ করলাম' - তৃপ্তির হাসি।
কাল থেকে মাই ফেবারেট আর-রহমান শুরু করব ইনশাল্লাহ। পাখি সুরেলা কণ্ঠে আরবীতে বলল -
"অতএব, তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?"
বিষয়: বিবিধ
১১৭১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন