দাওয়াত ওয়ার্কশপ – ১ (১৫টি মূলনীতির আলোকে বাস্তবে কাউকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার পূর্বে প্ল্যান করুন ও লিপিবদ্ধ করুন)
লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ১৫ এপ্রিল, ২০১৫, ০৮:৪৫:৩২ সকাল
ইসলামী দাওয়াতের কর্মপদ্ধতি মূলত আলোচিত হয়েছে https://islamic0dawah0technique.wordpress.com/ লিঙ্কে। বিনীত নিবেদন রাখব প্রথমে নবী-রাসুল (স) দের জীবনী থেকে মূলনীতি গুলো পড়ে নেয়ার জন্য ঐ লিঙ্কে গিয়ে। অথবা ওয়ার্কশপের গ্রুপ-মেম্বার রা আগে
মূলনীতি গুলো ভালভাবে পড়ে নিবেন ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের পূর্বে।
ঃঃ উদাহরণ ঃঃ
ধরুন, আপনি আপনার সুপারভাইজারকে ইসলামের দাওয়াত দিবেন। তাকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার পূর্বে নিচের তালিকায় প্ল্যান করুন ও লিপিবদ্ধ করুন।
মূলনীতি (পূর্বেই বের করে নেয়া হয়েছিল) | কিভাবে এই মূলনীতি উল্লিখিত সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করবেন লিখে ফেলুন / প্রযোজ্য নয় লিখুন |
১) বিরোধী পক্ষকে যদি তুচ্ছ গুরুত্বহীন পয়েন্টে যুক্তিতর্ক করতে দেখেন তবে সবচেয়ে উত্তম – তর্ক ছেড়ে দেয়া | যদি আগে কখন ও এমন হয়ে থাকে তা লিখে ফেলুন; অথবা প্রযোজ্য নয় লিখতে পারেন। |
২) তর্কের ক্ষেত্রে বুদ্ধি, লজিক আর চিন্তা-ভাবনার দৃষ্টিকোণ থেকে কোন এক বিষয়ে একরোখা নাছরবান্দা ধরনের লোকদের পুরোপুরি অন্য বিষয় দিয়ে লজিক তুলে ধরে আলোচনা/তর্ক শেষ করা | কোন এক বিষয়ে একরোখা নাছরবান্দা ধরনের না হয়ে থাকলে প্রযোজ্য নয় লিখতে পারেন |
৩) সর্বপ্রথমে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা) মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়া শুরুতেই/ দাওয়াতি কাজের সুযোগেই | কিন্তু সে যদি কঠিন নাস্তিক হয় তবে কি তা দরকার আছে? |
৪) দাওয়াতি কাজে আল্লাহ-প্রদত্ত জ্ঞান এবং যোগ্যতার জন্য সকল ক্রেডিট আল্লাহর প্রতি সমর্পণ করা, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, মানুষকে তা বলা এবং শেখানো | |
৫) দাওয়াতি ব্যক্তিকে আন্তরিকভাবে ও ঘনিষ্ঠতার সাথে নরমভাবে অভিভাষণ জানানো | কিভাবে কোন অবস্থায় তা লিখে ফেলতে পারেন |
৬) প্রশ্ন করার মাধ্যমে চিন্তার সুযোগ দেয়া। এটি একটি গুরুত্বপূর্ন দাওয়াত দেয়ার পদ্ধতি যে চিন্তার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে মানুষের মনে মূল বিষয় বা প্রতিপাদ্য বদ্ধমূল করে দেয়া যায়। তাকে চিন্তার ও বলার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে দায়ী (যিনি দাওয়াত দিচ্ছেন) তার নিজের বক্তব্য ও তার সারমর্ম মানুষের কাছে সুন্দর ভাবে পৌছে দিতে পারেন | প্রশ্ন লিখতে পারেন। জটিল প্রশ্ন করার দরকার নেই (মেধা অনুযায়ী) |
৭) মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কর্ম , তার কথা বা উপদেশের থেকে উত্তম | কিভাবে চিন্তা করে লিখুন। আপনার ভাল ডিক যা আপনি দেখাতে পারবেন তা লিখে ফেলুন। |
৮) ইসলামের দাওয়াত যাকে দেয়া হবে তাকে সুবিধাজনক ‘সময়’ ও ‘স্থানে’ দাওয়াত দেয়া অবশ্যই প্রয়োজন। তরিঘরি করে শ্রোতার সুবিধা ও মনের অবস্থা চিন্তা ছাড়া ইসলামের দাওয়াত দেয়া উলু বনে মুক্ত ছড়ানোর মতই অকার্যকর অধিকাংশ সময়ে | আনুমানিক ‘সময়’ ও ‘স্থান’ লিখে ফেলুন |
৯) জাতি/সমাজ যে সকল কাজের মাধ্যমে দ্রুত জাহান্নামে ধাবিত হচ্ছে তথা তাদের যে যে কাজে দুর্বলতা রয়েছে সে সকল ব্যপারেই প্রধানত উপদেশ বা নসিহত করা। অবাস্তব ব্যপার বা যা ঘটেনি তা নিয়ে উপদেশ বা তত্ব কথা বলে সময় নস্ট না করা | ঐ লোকের মুল সমস্যা লিখে ফেলুন |
১০) প্রচলিত রীতিনীতি তথা বাপ দাদাদের ধর্ম পরিত্যগে অপারগতার ক্ষেত্রে যুক্তি | |
১১) ধর্মনিরপেক্ষতা এবং কুফরী কি সমার্থক? – এর যুক্তি | প্রয়োজন কি আছে? যদি আগে আলোচনা না হয়ে থাকে? |
১২) দাওয়াতি কাজের জন্য বড় রকমের স্বার্থত্যাগ বা আত্মত্যাগের মানসিক প্রস্তুতি নেয়া | |
১৩) ভিন্ন দেশের অথবা ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষদের মাঝে দাওয়াহ-মিশন চালানো – তা যত কঠিনই হোক না কেন বা মানুষ যে চরিত্রেরই হোক না কেন | তার চরিত্রের আনুমানিক রূপরেখা লিখতে পারেন - কোন দুর্বলতা উল্লেখ করতে পারেন। |
১৪) আহলে কিতাবধারীদের কাছে সহজ সরলভাবে অতীতের আসমানী কিতাবগুলোর সত্যতা তুলে ধরা | ধার্মিক (অন্য ধর্মের) হলে কোন পয়েন্টে ইসলামের সাথে তার ধর্মের সমতামূলক বিষয় রয়েছে তা লিখতে পারেন। |
১৫) সমাজের প্রতিপত্তিশালী বা মেধাবী লোকদের সামনে দাওয়াত পেশ করা বিশেষ গুরুত্ব /প্রায়রিটি দিয়ে। | তার আনুমানিক অবস্থান (বিশেষত্ব) নোট করতে পারেন প্রায়োরিটি স্থাপনের জন্য। অতিরিক্ত কি কি পদক্ষেপ নিতে পারেন এক্ষেত্রে তা লিখুন। |
ঃঃ সমস্যা (EXERCISE)ঃঃ
(প্রথমত) ৩-৪ জনের গ্রুপ তৈরি করুন।
(দ্বিতীয়ত) প্রত্যেক গ্রুপ নিচের একটি সমস্যা সমাধান করবে নিজেরা শলাপরামর্শ করে ।
(তৃতীয়ত) নির্দিষ্ট সময় পরে প্রত্যেক গ্রুপ তা প্রেসেন্ট করবে (খুব ভাল হয় যদি ঐ চার্টটি ফিল-আপ করে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে প্রজেক্টরে সবাইকে দেখানো যায়) - আলোচনার মাধ্যমে নতুন নতুন বাস্তব আইডিয়া সবাই পাবে।
(১) আপনার একজন প্রতিবেশীকে ইসলামের দাওয়াত দিতে উপরের চার্টে প্ল্যান করুন।
(২) একজন ভিন্ন ধর্মের অথবা ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনীতি-বিদকে ইসলামের দাওয়াত দিতে উপরের চার্টে প্ল্যান করুন।
(৩) আপনার একজন প্রিয় কলিগকে ইসলামের দাওয়াত দিতে উপরের চার্টে প্ল্যান করুন।
--------------------- সুবিধার জন্য নিচে চার্টটি আবার দেয়া হল ---------------------
মূলনীতি | কিভাবে এই মূলনীতি উল্লিখিত সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করবেন লিখে ফেলুন / প্রযোজ্য নয় লিখুন |
১) বিরোধী পক্ষকে যদি তুচ্ছ গুরুত্বহীন পয়েন্টে যুক্তিতর্ক করতে দেখেন তবে সবচেয়ে উত্তম – তর্ক ছেড়ে দেয়া | |
২) তর্কের ক্ষেত্রে বুদ্ধি, লজিক আর চিন্তা-ভাবনার দৃষ্টিকোণ থেকে কোন এক বিষয়ে একরোখা নাছরবান্দা ধরনের লোকদের পুরোপুরি অন্য বিষয় দিয়ে লজিক তুলে ধরে আলোচনা/তর্ক শেষ করা | |
৩) সর্বপ্রথমে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা) মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়া শুরুতেই/ দাওয়াতি কাজের সুযোগেই | |
৪) দাওয়াতি কাজে আল্লাহ-প্রদত্ত জ্ঞান এবং যোগ্যতার জন্য সকল ক্রেডিট আল্লাহর প্রতি সমর্পণ করা, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, মানুষকে তা বলা এবং শেখানো | |
৫) দাওয়াতি ব্যক্তিকে আন্তরিকভাবে ও ঘনিষ্ঠতার সাথে নরমভাবে অভিভাষণ জানানো | |
৬) প্রশ্ন করার মাধ্যমে চিন্তার সুযোগ দেয়া। এটি একটি গুরুত্বপূর্ন দাওয়াত দেয়ার পদ্ধতি যে চিন্তার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে মানুষের মনে মূল বিষয় বা প্রতিপাদ্য বদ্ধমূল করে দেয়া যায়। তাকে চিন্তার ও বলার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে দায়ী (যিনি দাওয়াত দিচ্ছেন) তার নিজের বক্তব্য ও তার সারমর্ম মানুষের কাছে সুন্দর ভাবে পৌছে দিতে পারেন | |
৭) মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কর্ম , তার কথা বা উপদেশের থেকে উত্তম | |
৮) ইসলামের দাওয়াত যাকে দেয়া হবে তাকে সুবিধাজনক ‘সময়’ ও ‘স্থানে’ দাওয়াত দেয়া অবশ্যই প্রয়োজন। তরিঘরি করে শ্রোতার সুবিধা ও মনের অবস্থা চিন্তা ছাড়া ইসলামের দাওয়াত দেয়া উলু বনে মুক্ত ছড়ানোর মতই অকার্যকর অধিকাংশ সময়ে | |
৯) জাতি/সমাজ যে সকল কাজের মাধ্যমে দ্রুত জাহান্নামে ধাবিত হচ্ছে তথা তাদের যে যে কাজে দুর্বলতা রয়েছে সে সকল ব্যপারেই প্রধানত উপদেশ বা নসিহত করা। অবাস্তব ব্যপার বা যা ঘটেনি তা নিয়ে উপদেশ বা তত্ব কথা বলে সময় নস্ট না করা। | |
১০) প্রচলিত রীতিনীতি তথা বাপ দাদাদের ধর্ম পরিত্যগে অপারগতার ক্ষেত্রে যুক্তি | |
১১) ধর্মনিরপেক্ষতা এবং কুফরী কি সমার্থক? – এর যুক্তি | |
১২) দাওয়াতি কাজের জন্য বড় রকমের স্বার্থত্যাগ বা আত্মত্যাগের মানসিক প্রস্তুতি নেয়া | |
১৩) ভিন্ন দেশের অথবা ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষদের মাঝে দাওয়াহ-মিশন চালানো – তা যত কঠিনই হোক না কেন বা মানুষ যে চরিত্রেরই হোক না কেন | |
১৪) আহলে কিতাবধারীদের কাছে সহজ সরলভাবে অতীতের আসমানী কিতাবগুলোর সত্যতা তুলে ধরা | |
১৫) সমাজের প্রতিপত্তিশালী বা মেধাবী লোকদের সামনে দাওয়াত পেশ করা বিশেষ গুরুত্ব /প্রায়রিটি দিয়ে। |
বিষয়: বিবিধ
২০০৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার দাওয়াহ ওয়ার্কশপের মূলনীতিগুলো ভেবে দেখার মত। ধন্যবাদ স্যার আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন