নাস্তিকতা (৫): নৈতিকতা
লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ১০ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:০৫:৩২ দুপুর
১) সারাংশ:
> নৈতিকতা অর্জন যদি উদ্দেশ্য হয়, তবে তা স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রয়োজনীয়তা দেখায়।
> একজন নিরপরাধ ৫ বছরের শিশুকে হত্যা করা কি নৈতিকভাবে ভুল? যদি তাই ই হয়, তবে স্রষ্টা অবশ্যই থাকবেন।
১.১) এ আলোচনায় আমরা বলছি না যে:
> আপনি একজন নাস্তিক হয়েও নৈতিকতা আর ভাল ব্যবহার দেখাতে পারবেন না;
> আপনার শুধুমাত্র স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন থাকলেই নৈতিক ব্যবহার দেখাতে পারবেন; যেমন- নিরপরাধকে রক্ষা করা, দরিদ্রকে খাওয়ানো, ইত্যাদি।
> শুধুমাত্র বিশ্বাসী হলেই আপনি ভাল ব্যবহার অর্জন করতে পারবেন।
১.২) এ আলোচনায় আমরা যা বলছি তা হল:
> যদি স্রষ্টা (GOD) না থাকে, তবে উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মান থাকতে পারেনা;
> নৈতিক মান, যেমন- "বিনোদনের উদ্দেশে নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করা ভূল", "নিরপরাধ মানুষকে ডিফেন্ড বা রক্ষা করা ভাল কাজ" - এগুলো শুধুমাত্রই সামাজিক নিয়ম বলেই বিবেচিত হবে যদি স্রষ্টার উপস্থিতি অগ্রাহ্য করা হয়।
২) কেন স্রষ্টা (GOD)র উপস্থিতি ছাড়া উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মান থাকতে পারেনা?:
> স্রষ্টার উপস্থিতি ভিন্ন "উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মান" (objective moral values) থাকতে পারেনা। স্রষ্টা এমন ই এক বিশ্বাস ও সত্য যা মানুষের নিজস্বতাকে অতিক্রম করে যায়;
> অন্যান্য যেসকল ভিত্তিমূল উদ্দেশ্য মূলক নৈতিক মান কে ব্যখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে:
(ক) বায়োলজি (খ) সামাজিক চাপ (গ) নৈতিকতার বাস্তবতা
৩) 'উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মান' বলতে কি বুঝায়?
এমন ই নৈতিক মূল্যমান যা -
> কোন ফ্যাক্ট বা ঘটনাকে বিচার করার জন্য যে ব্যক্তিগত অনুভুতি বা মতামত তার দ্বারা পক্ষপাতদুষ্ট হয় না;
> অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আকুল কোন মনের চাওয়া দিয়ে প্রভাবিত হয় না|
৩.১) উদাহরন:
> সারা বিশ্ব যদি সম্মত হয় যে, মৃত ব্যক্তি ভক্ষন করা একটি ভাল কাজ, উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মানের দৃষ্টিকোণ থেকে এ কাজটি তারপর ও অনৈতিক!
> সারা বিশ্ব যদি সম্মত হয় যে, কোন নির্দোষ ব্যক্তিকে খুন করা ঠিক, উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মানের দৃষ্টিকোণ থেকে এ কাজটি তারপর ও অনৈতিক ও ঘৃণ্য কাজ বলে বিবেচিত!
> সারা বিশ্ব যদি সম্মত হয় যে, আফ্রিকার সাথে ন্যয় নীতিবর্জিত ব্যবসায়িক চুক্তি স্থাপন করা যাবে, উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মানের দৃষ্টিকোণ থেকে এ কাজটি তারপরও অনৈতিক ও ভূল!
৩.২) থীয়লোজি-এর প্রফেসর ইয়ান মার্খাম বলেন, "'উচিত" এই শব্দের গভীরে একটি নৈতিক ফ্যাক্ট কাজ করে যা আমাদের জীবন ও বিশ্ব কে অতিক্রম করে। ... নৈতিক ভাষার অন্তর্নিহিত চরিত্র কোন কিছু বিশ্বজনীন এবং বহিরাগত বলেই বোঝায়।"
[Against Atheism: Why Dawkins, Hitchens, and Harris are Fundamentally Wrong. Wiley- Blackwell. 2010, p. 34.]
৩,৩ ) একজন নাস্তিকের অবস্থান:
Ethics: Inventing Right and Wrong গ্রন্থে জে, এল, মাকাই সাহসিকতার সাথে বলেন: "কোন উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মূল্যমান বলে কিছু নাই... এমন দাবী যে, কোন নৈতিক মূল্যমান উদ্দেশ্যমূলক নয় - এর অর্থ শুধু নৈতিক ভালোত্বকে গ্রহণ করাই নয় (যা সমীকরণ অনুযায়ী নৈতিক মানকে ই বুঝায়) বরঞ্চ অন্যান্য বিষয়কেও গ্রহণযোগ্য বুঝায় যাদের শিথিলভাবে নৈতিক মান বা অনৈতিক মান - ভাল বা খারাপ কার্যকলাপ, দায়িত্ব, খারাপ কাজ ইত্যাদি কেও বুঝায়।"
৪ ) স্রষ্টা ছাড়া উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মূল্যমান নেই:
ফিলোসফার প্রফেসর ইয়ান মার্খাম উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মূল্যমান এর ব্যখ্যায় বলেন: "বিশ্ববিধাতা রহস্যময় "উচিত" (এমনটি করা উচিত!) শব্দটি আমাদের জীবনের মাঝে গভীরভাবে অনপ্রবেশ করে দিয়েছেন। বিশ্ববিধাতা বলছেন নৈতিক দাবির বিশ্বজনীন প্রকৃতি কি হতে পারে! যেহেতু বিশ্ববিধাতা এ পৃথিবীর বাহিরে আছেন, বিশ্ববিধাতা, স্রষ্টা হিসেবে বিশ্বজনীন নির্দেশই দিয়েছেন।
[Against Atheism: Why Dawkins, Hitchens, and Harris are Fundamentally Wrong. Wiley-Blackwell. 2010, p. 3]
৫) অন্যান্য মতবাদ সমূহ:
৫.১) জীববিদ্যা (biology):
চার্লস ডারউইন একটি লক্ষনীয় এবং 'চরমপন্থী উদাহরন" দিয়েছেন নৈতিকতার ভিত্তিমূলকে জীব বিদ্যা বা প্রাকৃতিক নির্বাচন দিয়ে ব্যখ্যা করতে গিয়ে:
"মানুষ যদি একেবারে একই রকম পরিবেশে প্রতিপালিত হয় যেখানে মৌমাছি লালিত হয়, তবে নি:সন্দেহে বলা যায় যে, আমাদের অবিবাহিত মেয়েরা, কর্মঠ মৌমাছির মত, ভাবত ভাইদের হত্যা করা একটি পবিত্র কাজ। মায়েরা তাদের উর্বর (fertile) মেয়েদের হত্যা করতে প্রচেষ্টা চালাত। কেউ ই এ ব্যপারে হস্তক্ষেপ করার চিন্তা করত না।"
[Charles Darwin. The Descent of Man and Selection in Relation to Sex. Second Edition. New York. 1882, p. 99.]
৫.১.১) লক্ষ্য করুন: বায়োলজির মাধ্যমে উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মূল্যমান কে কিভাবে চিত্রায়িত করা হয়?:
"নৈতিকতা একটি বায়োলজিকাল অভিযোজনের মতই যা একটি হাত, পা বা দাতের চেয়ে কম কিছু নয়। ... আমি বাহবা দেই যখন কেউ বলে যে, প্রতিবেশীকে ভালবাস যেভাবে নিজকে ভালবাস। তারা ভাবে যে, তারা তাদের অবস্থানের উপরে বা নিচে নির্দেশ করছে। ... এমন যেকোন উদাহরন অবশ্যই কোন ভিত্তির উপর দাড়িয়ে নেই। নৈতিকতা একটি উপায় মাত্রই আত্মরক্ষা আর জীবনধারা সংরক্ষনের জন্যই। এর চেয়ে আর কোন গভীর অর্থ বের করা অলীক, অবাস্তব।"
[Michael Ruse. Evolutionary Theory and Christian Ethics, in The Darwinian Paradigm (London: Routledge, 1989), pp. 262, 268-9.]
স্বঘোসিত নাস্তিক ডানিয়েল ডেনেট 'মানুষের অধিকার' (যা নৈতিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক) কে ডারউইনিজ্মের প্রেক্ষাপটে "বাগাড়ম্বরপূর্ণ বিষয়ের উপরে অর্থহীনতা" বলে অভিহিত করেছেন।
[Daniel Dennet. Darwin's Dangerous Idea. Simon & Schuster. 1995, p.507.]
৫.২) প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural selection) কি উদ্দেশ্যমুলক নৈতিকতার মূল্যমান এর ভিত্তি হতে পারে?
প্রাকৃতিক নির্বাচন কেবল নৈতিক নিয়ম নির্বাচনের সামর্থ্য দিতে পারে। দার্শনিক ফিলিপ কিচার সমাথক ধারনায় দিয়েছেন:
"প্রাকৃতিক নির্বাচন আমাদের সামর্থ দিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক অবস্থানের প্রেক্ষাপটকে মূল্যায়ন করতে এবং সে অনুযায়ী নৈতিক সূত্র প্রণয়নে সামর্থবান করতে।"
[Cited from “The Moral Argument” by Mark D. Linville in The Blackwell Companion to Natural Theology. Ed. William Lane Craig and J. P. Moreland. Wiley-Blackwell. 2009, p. 400.]
অতএব, বিশ্বজনীন নৈতিক মূল্যমান ব্যখ্যা করতে এ তত্ব সক্ষম নয়।
৫.৩) সামাজিক চাপ (Social pressure) কি উদ্দেশ্যমুলক নৈতিকতার মূল্যমান এর ভিত্তি হতে পারে?
সামাজিক চাপ সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব, কার্যকলাপ, সম্মতির উপর নির্ভর করে। চিন্তা করুন: জার্মানির নাজি কর্তৃক ৬ মিলিয়ন ইহুদি হত্যা করার সামাজিক সম্মতি কে কিভাবে বিবেচনা করবেন? এ সম্মিলিত সামাজিক সিদ্ধান্ত কি নৈতিক ছিল? তা কি প্রকৃতই উদ্দেশ্যমুলক নৈতিকতার মূল্যমান কে চিরন্তন ব্যখ্যা করতে সক্ষম?
৫.৪) আর কোন বিকল্প আছে কিনা?
কোন কোন নাস্তিক ফিলোসফারের দৃষ্টিতে উদ্দেশ্যমুলক নৈতিকতার মূল্যমান এর উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু তা মানুষের মতামত বা বিবর্তনের ধারনার উপর নির্ভরশীল নয়। একে 'বাস্তব নৈতিকতা' আখ্যা দেন তারা।
কিন্তু এর কিছু সমস্যা আছে। উদাহরনস্বরুপ, এ তত্ব অনুযায়ী 'সুবিচার সব সময়েই বিদ্যমান' - এর অর্থ তার তাত্পর্য ই বা কি? অথবা উদ্দেশ্যমুলক নৈতিকতার মূল্যমান আবহমানকাল ধরে বিদ্যমান - এটা ও বা কিভাবে সত্য?
আবার, 'বাস্তব নৈতিকতা' তত্ব অনুযায়ী, নৈতিক কাজ বা নৈতিক দায়িত্ব কোনই অর্থ বহন করেনা সুক্ষ্ণ দৃষ্টিতে। কিভাবে বিচার, দয়া, সহ্যশক্তি, ইত্যাদি নৈতিক দায়িত্ববোধের পূর্বশর্ত হয় তা পরিস্কার নয়? আমি কেন ই বা এমন কোন দায়িত্ববোধ কে গুরুত্বপূর্ন ভাববো? কে অথবা কি ঐসকল দায়িত্ববোধ স্থাপন করলেন/করল?
৬) ইউথায়ফ্র- এর উভয়সঙ্কট যুক্তি (প্লেটো ও একই রকম যুক্তি দিয়েছিলেন):
"এটা কি ভাল এজন্য যে, স্রষ্টা তা নির্দেশ দিয়েছেন? নাকি এটা ভাল এজন্য যে, স্রষ্টার নির্দেশ মাত্রই ভাল?"
এর উত্তরে প্রফেসর সাব্বির আখতার বলেন: "এর একটি তৃতীয় বিকল্প আছে: একজন নৈতিকভাবে স্থায়ী প্রভূ - যা বিভিন্ন ঐশিগ্রন্থে দেখা যায়। যিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান এবং ইচ্ছামত তার মন পরিবর্তন করেন না সমবেদনার ভালোত্ব কে বিবেচনা করতে কিংবা যৌন অসদাচরণ এর খারাপ দিককে বিবেচনা করতে। এমনতর প্রভূ অবশ্যই ভাল নির্দেশ দিবেন কারন তার চরিত্র এবং প্রকৃতি ই ভাল।"
[Shabbir Akhtar. The Qur’an and the Secular Mind: A Philosophy of Islam. Routledge.2008, p.99.]
"এথিক্সের সমসাময়িক লেখকেরা যারা নৈতিক ভাল বা খারাপ বা নৈতিক দায়িত্ব সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন 'ধর্মের' রেফারেন্স ছাড়াই, তারা কেবল হালকা বাতাসে বুদ্ধিবৃত্তিক জাল বুনে যাচ্ছেন - তারা কেবল তা (নৈতিক ভাল বা খারাপ বা নৈতিক দায়িত্ববোধ ধর্মের অনুশাসন ছাড়া) উল্লেখ ই করে যাচ্ছেন কোন তাত্পর্য বুঝা বা ব্যখ্যা করা ছাড়াই।"
[Richard Taylor, Ethics, Faith, and Reason (Englewood Cliffs, N.J.: Prentice-Hall, 1985), p. 7.]
৬.১) একটি ভুল ধারনা:
ড: ভিক্টর স্তেঞ্জার বলেন, "এম্পিরিকাল তথ্য-উপাত্ত থেকে আমরা দেখি যে, প্রভু কখন ই সাধারনভাবে গ্রহণযোগ্য মানবিক নৈতিকতা এবং মূল্যমানের উত্স হতে পারে না। যদি তাই ই হত, তবে আমরা দেখতাম যে, অনেক উন্নতমানের নৈতিক আচরণ বিশ্বাসীদের মাঝে রয়েছে অবিশ্বাসীদের তুলনায়।"
[God: The Failed Hypothesis – How Science Shows That God Does Not Exist. Prometheus Books. 2007, p. 210.]
প্রথমত: এই তথ্য উপাত্ত কোন অঞ্চল, পরিস্থিতি, সামাজিক অবস্থানে নেয়া তা এক বিরাট প্রশ্ন। তাছাড়া যেকোন মূল্যবোধের তাত্পর্য সেই মূল্যবোধের অনুসারীদের জীবনপ্রণালী দেখে মূল্যবোধ সম্পর্কে ধারনা করা কি আদৌ যুক্তির মাঝে পড়ে?
৭) ইসলামিক ভিত্তি: উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মূল্যমানের (ভাল / খারাপ)
> "যদি তাদের কোন কল্যাণ হয় তাহলে তারা বলে, এতো আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে৷ আর কোন ক্ষতি হলে বলে, এটা হয়েছে তোমার বদৌলতে৷ বলে দাও, সবকিছুই হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে ৷ লোকদের কী হয়েছে, কোন কথাই তারা বোঝে না৷" (৪: ৭৮)
> "অথচ আল্লাহই তোমাদেরকেও সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যা করো তাও৷" (৩৭: ৯৬)
>"আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনিই সবকিছুর রক্ষক৷" (৩৯: ৬২)
এ আয়াতগুলো থেকে বুঝায় যে, ভাল এবং খারাপের প্রকৃতি উদ্দেশ্যমুলক।
৭.১) ইবনে তাইমিয়া বলেন, "প্রভু আদেশ করেন বা নিষেধ করেন তার জ্ঞানের ভিত্তিতে - যা কেবল তার বান্দাহদের উপকারের জন্যই বিবৃত।"
[তাহসিন আল আকল]
৭.২) প্রভু নির্ভূল:
"আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই৷ অদৃশ্য ও প্রকাশ্য সবকিছুই তিনি জানেন৷ তিনিই রহমান ও রহীম৷ আল্লাহ-ই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই৷ তিনি বাদশাহ, অতীব পবিত্র, পূর্ণাঙ্গ শান্তি, নিরাপত্তাদানকারী, হিফাযতকারী, সবার ওপর বিজয়ী, শক্তি বলে নিজের নির্দেশ কার্যকরী করতে সক্ষম ৷ এবং সবার চেয়ে বড় হয়েই বিরাজমান থাকতে সক্ষম৷ আল্লাহ সেই সব শিরক থেকে পবিত্র যা লোকেরা করে থাকে ৷ সেই পরম সত্তা তো আল্লাহ-ই যিনি সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের র্নিদেশ দানকারী এবং সেই অনুপাতে রূপদানকারী৷ উত্তম নামসমূহ তাঁর-ই৷ আসমান ও যমীনের সবকিছু তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা করে চলেছে৷ তিনি পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী৷" (৫৯: ২২-২৪)
৭.৩) উদ্দেশ্যমুলক নৈতিক মূল্যমানের (ভাল / খারাপ) ব্যখ্যায় অন্যান্য কোন মতবাদের ভিত্তি ই নেই:
জন মার্ক রেনল্ডস বলেন, "নৈতিকতা বিশ্লেষনে নব্য সেকুলারিস্টরা সব সময় প্রতারনা করছে প্রতি পদক্ষেপে। তারা বিশ্বাস/মনে করে যে, তারা ঠিক কাজ করছে।কিন্তু সেই মূল্যমানকে কোন ভিত্তির সাথে কখন ই সংযোগ করেনা।"
[http://www.civitate.org/2007/05/atheism-ranting-the-pity-and-poverty-of-modern-anti-theism/]
৭.৪) নৈতিক অণুপ্রেরণা:
> "আর যে ব্যক্তি আমার “যিকির (উপদেশমালা) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য হবে দুনিয়ায় সংকীর্ণ জীবন এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে উঠাবো অন্ধ করে৷"
(২০:১২৪)
> "যদি কেউ গোপনে সাদ্কা ও দান –খয়রাতের উপদেশ দেয় অথবা কোন সৎকাজের জন্য বা জনগণের পারস্পারিক বিষয়ের সংশোধন ও সংস্কার সাধনের উদ্দেশ্যে কাউকে কিছু বলে, তাহলে অবশ্য এটি ভালো কথা৷ আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে কেউ এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তাকে আমি বিরাট পুরস্কার দান করবো৷"
(৪:১১৪)
>"তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছেঃ মদও জুয়ার ব্যাপারে নির্দেশ কি? বলে দাওঃ ঐ দু’টির মধ্যে বিরাট ক্ষতিকর বিষয় রয়েছে যদিও লোকদের জন্য তাতে কিছুটা উপকারিতাও আছে, কিন্তু তাদের উপকারিতার চেয়ে গোনাহ অনেক বেশী ৷" (২:২১৯)
> "হে ঈমানদারগণ ! এ মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শরসমূহ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য শয়তানী কার্যকালাপ ৷ এগুলো থেকে দূরে থাকো, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করবে৷" (৫: ৯০)
> "আর মানুষের মধ্যে এমনও কেউ আছে, যে এক কিনারায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর বন্দেগী করে, যদি তাতে তার উপকার হয় তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে যায় আর যদি কোনো বিপদ আসে তাহলে পিছনের দিকে ফিরে যায় তার দুনিয়াও গেলো এবং আখেরাতও৷ এ হচ্ছে সুস্পষ্ট ক্ষতি৷" (২২:১১)
EXERCISE
স্রস্টাকে অস্বীকার করলে কিংবা পরকালের পুরস্কার বা শাস্তিকে অগ্রাহ্য করলে আপনি এ পৃথিবীতে আদৌ ভাল কাজ কেন করবেন? অথবা ক্ষেত্র বিশেষেই (সুযোগসন্ধানী হয়ে) বা কেন ভাল কাজ কেন করবেন?
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন