নাস্তিকতা (৪): সচেতনতা
লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ০৭ নভেম্বর, ২০১৪, ০৪:০৪:২০ রাত
"এরা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করছে৷ বলে দাও, এ রূহ আমার রবের হুকুমে আসে কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছো৷" (১৭:৮৫)
** **
কবি আল্লামা ইকবাল বলেছিলেন: "শতাব্দী ধরে প্রাচ্যের অনুভুতি ও জ্ঞান একটি প্রশ্ন ছুড়েছে: স্রষ্টার অস্তিত্ব আদৌ আছে কিনা?
আমি একটি নতুন প্রশ্ন ছুড়তে চাই প্রাচ্যের প্রতি: মানুষের অস্তিত্ব আছে কিনা?"
** **
১) সারাংশ:
(ক) সচেতনতা (Consciousness) কে বস্তুবাদী দর্শন (materialism) দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না;
(খ) সচেতনতা পদার্থের কোন ফলাফল (প্রোডাক্ট) নয় বা পদার্থ থেকে উদ্ভব নয়;
(গ) সচেতনতা (Consciousness) আস্তিকতা দিয়ে ই কেবল ব্যাখ্যা করা যায়।
২) বস্তুবাদীরা (Materialists) প্রানান্ত সংগ্রাম করছে 'সচেতনতা' বুঝতে গিয়ে!:
> "কিন্তু এখানে একটি সমস্যা আছে। ব্রেইন কিভাবে বায়োইলেক্ট্রিকাল কার্যকলাপ কে সাবজেক্টিভ অবস্থাতে পরিনত করে, কিভাবে আলোকচ্ছটা (ফোটন) পানিতে পতিত হয়ে জাদুর মত চিত্রাভ নীলাভ-সবুজ পান্নার পাহাড়ের মত দৃষ্টিভ্রম তৈরী করে - তা আসলেই একটি ধাঁধা!
স্নায়ুতন্ত্রের (নার্ভাস সিস্টেমের) সাথে সচেতনতার (Consciousness) কি রকম সম্পর্ক, তার প্রকৃতি কি - তা এক বিষ্ময়, বুঝার বাইরের মত বিষয় এবং এক উত্তপ্ত বিতর্ক!"
[Christof Koch. Consciousness: Confession of a Romantic Reductionist. MIT Press. 2012, p. 23.]
> "একজনের সচেতনতা এবং উপলব্ধির অভিগ্গতাকে 'স্ব-অবস্থান' বলা যায়। কিভাবে একটি বিশেষ গোছানো বস্তু 'স্ব-অবস্থানে' বিরাজমান তা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বিশ্লেষনে অক্ষম। অথচ এ বিষয়টি অন্য সকল জ্ঞানের দৃষ্টি ভঙ্গিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় হিসেবে বিবেচিত।"
[Christof Koch. Consciousness: Confession of a Romantic Reductionist. MIT Press. 2012, p.24.]
৩) সচেতনতার “সবচেয়ে কঠিন সমস্যা” [Hard Problem] (বুঝার ক্ষেত্রে):
সচেতনতাকে বিশ্লেষন করতে সবচেয়ে কঠিন সমস্যা হল: অভিগ্গতা (এক্সপেরিয়েন্স) কে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? যখন আমরা চিন্তা করি ও উপলব্ধি করি, একটি ধারাবাহিক দ্রুত তথ্য প্রসেসিং চলে এটা যেমন সত্য তেমনি এর একটি সাবজেক্টিভ দিক (ব্যক্তি-বিশেষের বোধ)ও থাকবে তাও বাদ দেয়ার যুক্তি নেই! নাগেল (১৯৭৪) এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি সচেতন অর্গানিজমের উপস্থিতি ধারনা করেছেন। এই সাবজেক্টিভ দিক টি হল ব্যাক্তিবিশেষের অভিগ্গতা। যখন আমরা কোন কিছু দেখি (উদাহরন স্বরূপ), আমরা একটি দৃষ্টিলব্ধ অনুভুতি পাই: অনুভূত রক্তাভ অবস্থা, কিংবা আলো ও অন্ধকারের অভিগ্গতা, বা ফিজিকাল বস্তুর গভীরতা, ইত্যাদি! এছাড়াও তার শব্দ কেমন, তার গন্ধ কেমন, শারীরিক অনুভুতি যেমন ব্যাথা, অর্গাজম, মনের মাঝে ওই বস্তুর কি রকম চিত্র ফুটে উঠছে, বিভিন্ন রকম অনুভুতির গুণাগুণ কি রকম, ধারাবাহিক সচেতন অনুভুতির অভিগ্গতা ই বা কেমন? এ সকল অবস্থা (state) কে একীভূত করে এমন আরেকটি বিষয় বা অবস্থাও বিদ্যমান। এ সকল কিছুই হল অভিগ্গতার অবস্থা।
যদি কোন সমস্যাকে "সচেতনতার সবচেয়ে কঠিন সমস্যা" হিসেবে উল্লেখ করা যায়, তবে উপরের একীভূত বিষয়টিই হল সেটি। সেই 'সচেতনতার' কেন্দ্রীয় অবস্থায় 'একটি অর্গানিজম' বা 'একটি মানসিক অবস্থা' কে সচেতন বলা যাবে যদি তার মত আরেকটি কিছু ওই অবস্থায় উপস্থিত থেকে থাকে (তুলনামূলক বিচার করার পর সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য)!"
[David Chalmers. The Character of Consciousness. Oxford University Press. 2010, p. 5.]
৩.১) প্রফেসর টরিন আলটার "ফিজিকাল ব্রেইনের কার্যক্রম কিভাবে সচেতনতার অভিগ্গতা উত্পন্ন করে" তার বিশ্লেষনে বলেছেন:
"এই যে আমি টাইপ করছি, আমার ব্রেইনের কগনিটিভ সিস্টেম দৃশ্যমান ও শ্রুতিময় তথ্য প্রসেসিং করে যাচ্ছে। এই প্রসেসিং এক ধারাবাহিক ঘটনার সচেতনতার সমণ্বয়ে গঠিত, যেমন শ্রুতিময় অভিগ্গ্তা যেমন 'টেপ-টেপ-টেপ' কিবোর্ডের শব্দসমূহ, দৃশ্যমান অভিগ্গতা যে মনিটরে কিওয়ার্ড ভেসে উঠা। কিভাবে ব্রেইনের কার্যকলাপ এ অভিগ্গতা উত্পন্ন করে? কেন এ বিশেষ কয়টি ই অভিগ্গতা, কেন অন্যান্যরা নয়? কেন একটি ফিজিকাল ঘটনা (যেমন, ব্রেইনের কোন বিশেষ অংশের পালস পরিবর্তন) সচেতনতার অভিগ্গতাকে অনুসরণ করছে? এ সকল সমস্যার সম্মিলিত সেট (Set)ই সচেতনার সবচেয়ে দূরহ সমস্যা। এমনকি সকল সহযোগী কার্যকলাপ এবং পারদর্শিতাকে ব্যাখ্যা করা গেলেও একজন অবশ্যই শেষ পর্যন্ত এ প্রশ্ন যৌক্তিকভাবেই করবেন যে, কেন এমন একটি বিষয় বিদ্যমান থাকে যা একদিকে টাইপ করার সাথে সাথে অন্য দিকে কম্পিউটার স্ক্রিনে বর্ণগুলোর ভেসে উঠাকে আশা করে?"
[The Oxford Companion to Consciousness. Edited by Tim Bayne, Axel Cleeremans and Patrick Wilken. Oxford University Press. Paperback edition. 2014, p340.]
৩.২) বস্তুবাদীরা একটি স্ট্রবেরি খাওয়ার সময় ব্রেইনের কোন অঞ্চলে প্রভাব পড়ে তা নির্ণয় করতে পারে। কিন্তু তারা নির্ণয় করতে পারে না বা পরীক্ষা করতে অক্ষম যে, স্ট্রবেরি খেতে কেমন লাগে আপনার কাছে? অর্থাত তারা ব্যাখ্যা করতে অক্ষম কেন একটি নির্দিস্ট ব্রেইন প্রসেস সাবজেক্টিভ অভিগ্গতা ঘটিয়ে থাকে!
ব্যক্তিগত সাবজেক্টিভ সচেতনতার অভিগ্গতা বস্তুবাদী ফ্রেমওয়ার্ক এর বাইরের বিষয় বলে গণ্য।
৩.৩) উদাহরন: গাড়ি এবং ড্রাইভার:
ব্রেইন যদি গাড়ি হয়, তবে সচেতনতা হল তার ড্রাইভার। গাড়ি যেমনি ড্রাইভার ছাড়া চলবে না তেমনি ড্রাইভারও গাড়ি স্টার্ট দিতে পারবে না বা চালাতে পারবে না যদি গাড়ি নষ্ট থাকে। লক্ষ্যনীয় যে, তারা উভয়েই ভিন্ন জিনিস এবং স্বাধীন পরস্পর থেকে কোন না কোনভাবে।
প্রফেসর এডওয়ার্ড ফেসার বলেন:
"অভিগ্গতার একটি সুসঙ্গত তাত্পর্য অথবা অর্থ আছে। আবার সে তাত্পর্য অথবা অর্থ একটি একক ব্যক্তির অভিগ্গতার সাথেই জড়িত। আপনি শুধু আকার, আকৃতি, গঠন বিন্যাস, বর্ণ, ইত্যাদি কে আলাদা উপাদান হিসেবে জানতেই যে শুধু সক্ষম তা নয়, বরং এ উপাদানগুলোকে একটি 'বই' বা 'জ্ঞানের আধার' আকারে জানতে সক্ষম। পরন্তু কেবল আপনি ই এ বইটি সম্পর্কে জানেন। অথচ সে জানার পেছনে অসংখ্য নিউরাল ঘটনার প্রত্যেকে কোন না কোনভাবে বইটির কেবল একটি মাত্র অবস্থা সম্পর্কে সচেতন!”
[Edward Feser. The Philosophy of Mind. OneWorld. 2006, p. 138.]
৪) অতএব, কিছু মৌলিক পয়েন্ট:
> সচেতন অবস্থাকে বিজ্ঞানের ভাষা দিয়ে বুঝা অসম্ভব।
> আপনি যদি পদার্থের বাইরে আর সব কিছু অস্বীকার করেন, বিশ্ব ব্রম্মান্ডের ইতিহাস যদি কেবল পদার্থসমূহের বিভিন্ন রকম বিন্যাস সমাবেশের উপস্থিতি ই হয়, তবে আপনি 'সচেতনতা' উপলব্ধি করতে পারবেন না।
> আপনি যদি সকল ব্যাখ্যা 'পদার্থ' দিয়ে শুরু করেন, তবে আপনি 'মন' (mind) কে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না।
> যদি 'সচেতনতা থেকে থাকে আর সেটা যদি 'পদার্থের' বাইরের কিছু হয়ে থাকে, তবে আপনি কখন ই তার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাবেন না। (কারণ বিজ্ঞান শুধুমাত্র পদার্থ সংক্রান্ত বিষয় ই ব্যাখ্যা করে থাকে)
৫) ভুল বায়োলজিকাল পরীক্ষা (experimentations) সমূহ (সচেতনতা বুঝার জন্য):
এক্ষেত্রে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল যা বস্তুবাদীরা করে থাকেঃ
(ক) বিজ্ঞানের বাইরে বলে পরিত্যাগ করাঃ অনেকে স্বীকার করেন যে, সচেতনতা বিষয়টি বর্তমানে ব্যাখ্যা করা অনেক কঠিন। তাই বিজ্ঞানের ডোমেইনে না বলে বিষয়টিকে উড়িয়ে দেয়।
(খ) সচেতনতার কঠিন সমস্যাকে অস্বীকার করাঃ এ তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের ধরতে হবে যে, আমরা একেক জন জীবন্ত লাশ। মুক্ত ইচ্ছা আর আকাঙ্খার অধিকারী মানুষ এক একটি বায়োলজিকাল মেশিনের মত যেখানে কোন সাবজেক্টিভ অভিগ্গতা নেই!
(গ) সাবজেক্টিভ অভিগ্গতা ব্রেইনের নিউরাল প্রসেসের ফলাফল কেবল! : কিন্তু এ ও যাদুমন্ত্রের মত শোনায়! অভিগ্গতা কোন এক্সপ্লেনেশন বা ব্যাখ্যা ছাড়াই আবির্ভুত হচ্ছে যেন! অতএব, সেই মৌলিক প্রশ্ন: "কিভাবে ওই নিউরাল প্রসেস অভিগ্গতার জন্ম দেয় তার কখন ই উত্তর মিলবে না এ ধরনের পরীক্ষায়!
(ঘ) অভিগ্গতার স্ট্রাকচার বা গঠনকে বর্ননা করে: কিন্তু এ কৌশল কখনই বর্ননা করে না যে, সর্বপ্রথম অভিগ্গতা কিভাবে অর্জিত হল?
(উ) অভিগ্গতার অন্তর্নিহিত ভিত্তিকে আলাদা করা: এক্ষেত্রে অভিগ্গতার নিউরাল ভিত্তিকে কিছু নিউরাল প্রসেসের বিশ্লেষণ থেকে আলাদা করা হয়। কিন্তু এ ধরনের কৌশল
ব্যখ্যা করতে অক্ষম যে: কেন এবং কিভাবে অভিগ্গতা ওই সকল প্রসেস থেকে উদ্ভুত হয়?
৫.১) ফ্রান্সিস ক্রিক এবং ক্রিস্টফ কচ এর সচেতনতার নিউরোবায়োলজিক্যাল থিওরি: কিছু কিছু নিউরাল দোদুল্যমানতা (Neural oscillation) ব্রেইনের সেরেব্রাল কর্টেক্সে জাগ্রত হয়। তারা বলেন যে, এ ধরনের দোদুল্যমানতা সচেতনতার ভিত্তি স্বরূপ। কারন তারা অনুমান করেন যে, ওই ধরনের নিউরাল কম্পন সজাগ হওয়া বা সচেতন হওয়া বিশেষ করে দৃশ্যমান সচেতনতার (Visual awareness) সাথে সম্পর্কযুক্ত।
৫.১.১) এ তত্ত্বের ত্রুটিসমূহ: সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: কেন নিউরাল দোদুল্যমানতা (Neural oscillation) সাবজেক্টিভ অভিগ্গ্তার জন্ম দেয়? কিভাবে, শুধুমাত্র নিউরলোজিকাল ঘটনা দেখে ই এর অন্তর্নিহিত কার্যকারন সম্পর্কে উপসংহার টানতে পারি? - তা এ তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে অক্ষম।
এ দুইটি বড় প্রশ্ন বাদ দিলেও ওই তত্ত্বের এক পুরোধা ক্রিস্টফ কচ সরাসরি স্বীকার করেছেন: "বেশ, ভুলে যান সচেয়ে কঠিন অবস্থা যা হল: সাবজেক্টিভ অনুভুতি! কারন এর আসলেই কোন বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা নেই! নেই সমাধান! সাবজেক্টিভ অবস্থা যেমন, মনের ভ্রম, ব্যথা, সুখ, কোন এক রং দেখা, গোলাপের সুঘ্রান নেয়া, ইত্যাদির বাখ্যা বিশ্লেষন পদার্থবিজ্ঞানের তত্ব (যা অনু-পরমানুর বা নিউরনের বিশ্লেষনের মাধ্যমে কার্যশীল) থেকে সাবজেক্টিভ পর্যায়ের ব্যাখ্যার মধ্যে এক বিরাট ব্যবধান তৈরী করে!"
[http://discovermagazine.com/1992/nov/whatisconsciousn149]
প্রফেসর ডেভিড চাল্মের্স এ প্রসঙ্গে বলেন:
"যদি 'সচেতনতার' প্রতিটি ব্যবহারিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বা কগনিটিভ কার্যকলাপ বিশ্লেষন করা সম্ভব হয়, তারপর ও একটি রহস্য থাকবে: কেন ওই সকল কার্যকলাপের দক্ষতা সচেতন অভিগ্গতার ফলশ্রুতি? এটি একটি এমনই ধাঁধা যা সচেতনতার কঠিন সমস্যাকে আর ও কঠিনতর করেছে!"
[http://philosophyfaculty.ucsd.edu/faculty/rarneson/Courses/chalmersphil1.pdf]
৬) মননের দার্শনিক প্রেক্ষাপটে 'সচেতনতাকে' ব্যাখ্যা করার প্রয়াস সমূহঃ
৬,১) টাইপ-১ বস্তুবাদী (monistic materialism):
> এ তত্বের মূল হল: সব কিছু ই 'পদার্থের' সমন্বয়।
> ব্রেইন হল নিউরনের সমন্বয় যা অন্তর্নিহিত ফিজিকাল ও কেমিকাল প্রসেসের ফলশ্রুতি। অতএব, এসকল জটিল প্রসেস বিশ্লেষন করলে ই সচেতনতার অবস্থা ব্যাখ্যা করা যাবে।
> সচেতনতা হল কেবল বিভ্রম মাত্র! এরা সচেতনতার কঠিন সমস্যাকে অগ্রাহ্য করে।
৬.১.১) এর ত্রুটি: প্রফেসর চাল্মের্স বলেন: "টাইপ-১ বস্তুবাদী ধারনার বৈশিষ্ট্য হল: এ তত্ত্বে সচেতনতার ধারে কাছের যেকোন কার্যকলাপের বিশ্লেষন করার কোন যোগ্যতা নেই। অথচ ওই সকল বিশ্লেষনই আসলে সকল কিছুর বিশ্লেষন - পরন্তু যার বিশ্লেষন আসলেই প্রয়োজন সচেতনার উপলব্ধির জন্যই।"
[David Chalmers. The Character of Consciousness. Oxford University Press. 2010, p. 111]
৬.১.২) এথেইস্ট দানিয়েল দেনেট-এর 'সচেতনতার ব্যাখ্যা এবং ত্রুটি:
এটি টাইপ-১ এর সমার্থক।
"দানিয়েল দেনেট এর তত্ব প্রবলভাবে সমালোচিত কারন এটি সচেতনতাকে এমনভাবে পুন:বিশ্লেষন করে যা কেবল একটি ভিন্নতর ধারনা ই দেয় কোন বিশ্লেষন ছাড়া। তার 'Consciousness explained' বইতে যে সচেতনতা বুঝানো হয়েছে তা মূলত Consciousness explained away!
সচেতনতার অভিগ্গতা যা অধিকাংশ মানুষ বুঝার ক্ষেত্রে উত্তর খুঁজে পেতে চায় সাবজেক্টিভিটির বিশ্লেষন কিংবা এক্ষেত্রে অভিগ্গতার দক্ষতার সম্পর্ক ইত্যাদি - দেনেট এ সব মূল প্রশ্নকে 'বিভ্রম' আখ্যা দিয়ে বাতিল ঘোষনা করেছেন!"
[Antti Revonsuo. Consciousness: The Science of Subjectivity. Psychology Press. 2010, pp. 180-181.]
৬,২) টাইপ-২ বস্তুবাদিতা:
> এক ধরনের জানার শুন্যস্থান যার নাম 'এপিস্টেমিক গাপ' (epistemic gap)। এপিস্টেমিক গাপ বিদ্যমান - ফিজিকাল ঘটনা এবং সাবজেক্টিভ অভিগ্গতা (সঞ্চারণ, রং দেখা, শব্দ শোনা, অনুভুতি বা ইমোশন, সংবেদন, শরীরের অনুভুতি, ইত্যাদি) র বিশ্লেষনের মাঝে। অর্থাত তারা এখানে একটি পৃথকীকরন দাড় করাচ্ছে (১০০% বস্তুবাদী দর্শন থেকে সরে এসে)।
তবে টাইপ-২ বস্তুবাদিতা তত্ত্ব অনুযায়ী এই শুন্যস্থান টি (gap) বিশ্লেষন করা যাবে বস্তুবাদী দর্শন দিয়ে! কারন ব্রেইনের কার্ক্কলাপের সাথে সচেতনতার কিছু অভিগ্গতা সম্পর্কযুক্ত।
৬.২.১) এর ত্রুটি: এটা একেবারে অযৌক্তিক যে, এরা বস্তুবাদিতাকে সত্য ধরে নিচ্ছে কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই! আরও বুঝাচ্ছে যে একটি মৌলিক সূত্র কার্যশীল যা সচেতনতার সাথে পদার্থকে যুক্ত করছে! - কোন কারন, বিশ্লেষন ছাড়াই!
অথচ,পদার্থ থেকে সচেতনতা পুরো ভিন্ন।
৬,৩) টাইপ-৩ বস্তুবাদিতা:
> এক ধরনের জানার গভীর (deep) শুন্যস্থান যার নাম 'এপিস্টেমিক গাপ' (epistemic gap) বিদ্যমান। এপিস্টেমিক গাপ ফিজিকাল ঘটনা এবং সাবজেক্টিভ অভিগ্গতার বিশ্লেষনের মাঝে অবস্থিত এ তত্ত্ব অনুযায়ী।
তবে এ তত্ত্ব বলে যে, এই শুন্যস্থান টি (gap) শেষ হবে বা বিদূরিত হবে বৈজ্ঞানিক জানার উত্কর্ষতার সাথে সাথে!
৬.৩.১) এর ত্রুটি: এটাও কোন ব্যাখ্যা হল না। এটা এক ধরনের "শূন্যস্থানের সায়েন্স" এর মত ই ভুল ধারনা! এটা পরোক্ষভাবে বলে যে, আমরা ধরে নিচ্ছি বস্তুবাদিতা পুরোপুরি সত্য। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের কোন ধারনা নাই যে কিভাবে সচেতনতা বস্তু বা matter এর সাথে জড়িত! কিভাবে সচেতনতা পদার্থ (matter) থেকে উদ্ভুত হয়েছে!
৬.৩.১.১) একই ধরনের উক্তি করেছেন জে পি মরল্যান্ড, "আমাদের কোন ই ধারনা নাই যে, কিভাবে সচেতনতা অবচেতন পদার্থ থেকে উদ্ভব হল?"
[J. P. Moreland. “The Argument from Consciousness” in The Blackwell Companion to Natural Theology. Edited by William Lane Craig and J. P. Moreland. 2009. p. 340.]
৬.৪) টাইপ-D দ্বৈতবাদ (dualism):
> যদি ও সচেতনতা এবং ব্রেইন পুরোপুরি আলাদা কিন্তু কোনভাবে এরা খুব বেশি মিথষ্ক্রিয় (interative);
> 'বিষ্ময়কর ঘটনা' হল ফিজিকাল অবস্থার ফলশ্রুতি! আবার, ফিজিকাল অবস্থা হল 'বিষ্ময়কর ঘটনা'র ফলশ্রুতি!
> ফিজিকাল ও কোয়ান্টাম মেকানিক্স থেকে ধারনা নেয়া হয় এ তত্বে!
৬.৪.১) এর ত্রুটি: কিভাবে সচেতনতা এক অবচেতন পদার্থ (matter) থেকে উদ্ভুত হয়েছে তার কোন ব্যাখ্যা এ তত্ব দেয় না। কিভাবে এরা সম্পর্কযুক্ত তাও বিশ্লেষন করেনা!
৬.৫) টাইপ-E দ্বৈতবাদ (Epiphenomenalism):
>'বিষ্ময়কর ঘটনা' ফিজিকাল অবস্থা থেকে পুরোপুরি ভিন্ন;
> ৬,৫ (ক) - ফিজিকাল অবস্থা 'বিষ্ময়কর ঘটনা' ঘটায়; কিন্তু এর উল্টো ঘটনা ঘটে না (অর্থাত 'বিষ্ময়কর ঘটনা' ফিজিকাল অবস্থার পূর্বশর্ত হয় না)।
> বিয়োগ-বোধক তত্বের সূচনা করে। যেমন: কোন সংবেদন যেমন: হাতে ব্যথা অনুভূত হওয়া (জ্বলন্ত আগুনে হাত নেয়ার দরুন), হাত ওই আগুন থেকে সরিয়ে নেয়ার সাথে কোন ই সম্পর্ক রাখে না!
৬.৫.১) এর ত্রুটি:
(ক) সচেতনতার পর্যাপ্ত বিশ্লেষন দেয় না!
(খ) সকল কিছু ই দুর্ঘটনা যেন এ তত্বে! যেমন: আগুনে হাত দেয়ার জন্য এক বালকের হাতে ব্যথা অনুভূত হল| বালকটি হাত সরিয়ে নিল। এ তত্ব অনুসারে, বালকটি হাত সরিয়ে নিল দৈব-দুর্ঘটনাতেই কেবল! যার সাথে ব্যথার কোন ই সম্পর্ক নেই! [৬,৫ (ক) অনুযায়ী ]
৬.৬) টাইপ-F "প্রপঞ্চই সত্তা" (Phenomenalism / Panpsychism):
> সকল বস্তুর (ফিজিকাল সিস্টেম) এক ধরনের 'সাবজেক্টিভ সচেতনতা' রয়েছে। যেমন, ইলেকট্রন, প্রোটন এদের ও 'সচেতনতা' তথা 'প্রাণ' রয়েছে এ তত্ত্ব অনুযায়ী!
> সচেতনতা বিশ্ব ব্রম্মান্ডের অন্তনিহিত বৈশিস্ট! যার বিশ্ব ব্রম্মান্ডের কার্যকারনে মুখ্য ভুমিকা রয়েছে।
৬.৬.১) এর ত্রুটি: সচেতনতার পর্যাপ্ত বিশ্লেষন দেয় না! কিভাবে সচেতনতা এক অবচেতন পদার্থ (matter) থেকে উদ্ভুত হয়েছে তার কোন ব্যাখ্যা এ তত্ব দেয় না। ধরি, সচেতনতা সর্বত্র রয়েছে। সেক্ষেত্রে বলতে পারি, এ তত্ব অনুযায়ী সচেতনতাকে প্রসেস করার মত 'আমি'(I) বা জীবন্ত এনটিটি নেই!
কিভাবে একটি বস্তুর দলা সচেতনতাকে ধারন করে তাতে ও এরা নিরুত্তর!
৭) মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থার অভিজ্ঞতা (Near-Death Experience)
ডঃ পিম ভ্যান লমেল বলেন, “অনেক রিপোর্ট আসে যা একটি বিস্তারিত এবং পরিষ্কার সচেতনতার বর্ণনা দেয় মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থায়। তখন ব্রেইনের কার্যকলাপ হয়ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অতএব সেক্ষেত্রে সচেতনতা কিভাবে ব্রেইনের ফিজিক্যাল কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কযুক্ত তা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এ আমাদের জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে ও সাধারণ বুঝার বাইরে এক ভিন্নতর ধারনা দেয়!”
[Consciousness Beyond Life: The Science of the Near-Death Experience. HaperOne. 2010, p. 310.]
৭,১) এক্সপেরিমেন্টঃ বস্তুবাদিতা মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থার অভিজ্ঞতা (Near-Death Experience) ব্যাখ্যা করতে অক্ষমঃ
“একটি সাম্প্রতিক সময়ের সাক্ষাত্কারে যা ৯৩ জন মানুষের মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থার অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া হয়েছিল। ৪৩% মানুষের মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থায় থেকেও রহস্যময় সচেতনতার বিবরণ দিয়েছেন। অর্থাৎ তারা অচেতনাবস্থায়
(coma) থেকেও পার্শ্ববর্তী পরিবেশের কোন ব্যক্তির খবর বা অবস্থা দেখতে পারেন বা বুঝতে পারেন (!) যা ঐ স্বাধীন ব্যক্তির স্বীকারোক্তি থেকে প্রমাণিত হয়েছে। ৪৩% মানুষের মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থায় থেকেও রহস্যময় সচেতনতার বিবরণ দিয়েছেন যা পরীক্ষা করার জন্য স্বাধীন অন্য কোন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি স্বীকারোক্তির জন্য। আর ১৪% ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা থেকেই তথ্য নেয়া হয়েছে (অন্য কারো ভেরিফিকেশন ছাড়াই)।
সাক্ষাত্কারের পর দেখা গেছে, ৮৮% জন সম্পূর্ণ সত্য ছিল তাদের তথ্যে (অর্থাৎ অচেতনাবস্থা (coma) অবস্থায় থেকেও ঠিক সেই সময়ে অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বা বস্তুর ক্ষেত্রে ঘটিত কোন ঘটনার এমন বর্ণনা দিয়েছেন যা পুরোপুরি সত্য ছিল)। ১০% এর ক্ষেত্রে কিছু ভুল ছিল। আর ৩% পুরোপুরি ভুল ছিল।”
[J. M. Holden. Veridical Perception in Near-Death Experiences. In J. M. Holden, B. Greyson, and D. James, eds., The Handbook of Near-Death Experiences. 2009, pp. 185-211.]
৭,১,১) এ ধরনের মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থার অভিজ্ঞতার ব্যাখ্যা বস্তুবাদী দর্শন করতে শতভাগ ব্যর্থ।
৮) সচেতনতা কিভাবে শুরু হল?
প্রফেসর মরল্যান্ড বলেন: "আমাদের প্রাকৃতিক বিশ্বের ধারণা কখন ই এ ধারনা দেয় না যে, একটি সচেতনতা উদ্ভব হয়ে গেল এ প্রাকৃতিক বিশ্ব থেকে! অচেতন পদার্থের বিভিন্ন রকম বিন্যাস-সমাবেশ থেকে কদাচিত ধারনা করা ও অযৌক্তিক যে, অচেতন পদার্থ থেকে সচেতনতা শুরু হয়েছে!"
[J. P. Moreland. Consciousness and the Existence of God: A Theistic Argument. Routledge. 2008, p. 35.]
৯) সচেতনতা কিভাবে ফিজিকাল বিশ্বে প্রবেশ করল?
প্রফেসর চার্লস টালিয়াফেরো বলেন, "শুধুমাত্র আস্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে সচেতনতার বিশ্লেষন করতে কোন চালাকির আশ্রয় নিতে হয় না; সচেতনতা স্রষ্টার এক বিমূর্ত অলৌকিক কাজ বিশেষ। সচেতনতা ফিজিকাল নিসর্গ থেকে উদ্ভুত হয়েছে স্রষ্টার ইচ্ছা আর ক্ষমতা বলেই! যার ফলশ্রুতি হল একটি অনুভূত ফিজিকাল উপাদান (বস্তুনিচয়) আর অনুভুতির বাইরের উপাদান (যেমন সচেতনতা) এর সহাবস্থান ও সম্পর্ক! পদার্থ, শক্তি, সচেতনতা, স্থান-সময়ের সূত্রসমূহ, সব কিছুর উত্পত্তি এক অলৌকিক সত্ত্বার ইচ্ছা আর ক্ষমতা বলেই!
[Charles Taliaferro. Naturalism and the Mind in Naturalism: A Critical Analysis. Edited by William Lane Craig and J. P. Moreland. Routledge. 2006, pp. 148-9.]
প্রফেসর চার্লস টালিয়াফেরো বলেন,
"মৌলিক বস্তুবাদী কসমোলজির দৃষ্টিভঙ্গিতে সচেতনতার উদ্ভব আসলেই একটি আশ্চর্জ ঘটনা! এটা এমনই যেন, বস্তুবাদী রা সচেতনতার ব্যাখ্যায় বলল, একটি মিরাকল (অলৌকিক ঘটনা) ঘটেছে! কি দ্বৈত আচরণ!
অথচ আস্তিকতার দৃষ্টিভঙ্গিতে সচেতনতার উদ্ভব যেন সকল প্রাকৃতিক বাস্তবতার সাথে একনিষ্ঠ ভাবে মিশে রয়েছে। পশুপাখির সৃষ্টি এবং মানুষের সচেতনতা কোন অসংলগ্ন অলৌকিক ঘটনা নয়; বরঞ্চ বাস্তবতার অন্তর্নিহিত কাঠামোর ই একটি প্রতিফলন যেন!"
[Charles Taliaferro. Naturalism and the Mind in Naturalism: A Critical Analysis. Edited by William Lane Craig and J. P. Moreland. Routledge. 2006, pp. 150.]
১০) ফিজিকাল ও নন-ফিজিকাল বস্তুর মাঝে সম্পর্ক ও যোগসূত্র:
স্রষ্টার (GOD's) ইচ্ছা আর ক্ষমতা মূলত ফিজিকাল ও নন-ফিজিকাল বস্তুর মাঝে সম্পর্ক ও যোগসূত্র আনতে সক্ষম হয়েছে। শুরুতে যদি কেবল পদার্থ ই থাকত, তবে সচেতনতা কখন ই উত্পত্তি লাভ করত না! বরঞ্চ সবার শুরুতে এক ধরনের সচেতনতা ছিল (স্রস্টার) যা ফিজিকাল বিশ্ব তৈরী করেছিল। এরপর পর্যায়ক্রমে নন-ফিজিকাল মানসিক অবস্থা এবং ফিজিকাল ব্রেইনের মাঝে যোগসূত্র তৈরী হয়েছিল।
১১) সাবজেক্টিভ অভিগ্গ্তাকে ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা: আস্তিকতা সাবজেক্টিভ অভিগ্গ্তাকে সহজভাবে ও যৌক্তিক উপায়ে ব্যাখ্যা করে। এ তত্ব বলে যে, আমাদের একটি অনুভুতি আছে, যা স্বাদ গ্রহন, শোনা, দেখা, সংবেদন, ইত্যাদির সচেতনতা জাগ্রত করে। যেহেতু বিশ্ব ব্রম্ম্যান্ড এক চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন, ফলে এটা সহজে ই ব্যাখ্যা করে যে, তিনি ই সাবজেক্টিভ অবস্থা ও অনুভুতি দান করেছেন।
১২) সকল যুক্তির সারাংশ:
(ক) সাবজেক্টিভ সচেতন অভিগ্গতা সবচেয়ে ভাল ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে আস্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে।
(খ) সাবজেক্টিভ সচেতন অভিগ্গতা বস্তুবাদী কিংবা অন্যান্য ইহ-জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বুঝা অসম্ভব!
১৩) ইসলামের ব্যাখ্যা:
আল্লাহ তায়ালা বলেন: "তারা কি কখনো নিজেদের মধ্যে চিন্তা- ভাবনা করেনি ?" (৩০:৮)
১৩.১) সচেতনতা কি সর্বত্র?:
> এমন কোন পরিস্কার উদাহরন নেই যা প্রমাণ করে যে, সচেতনতা সাবজেক্টিভ অভিগ্গতার বাইরে বা একটি জীবিত এনটিটি র বাহিরে অবস্থান করতে পারে।
উদাহরন: 'ব্যথার অনুভুতি' কোন প্রানের উপস্থিতি বা চিন্তার উপস্থিতি ভিন্ন কি ব্যাখ্যা করা সম্ভব?
১৩.২) স্রষ্টা বলেন যে, আমরা এ বিষয়টি কখন ই বুঝব না! :
আল্লাহ তায়ালা বলেন, "এরা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করছে৷ বলে দাও, এ রূহ আমার রবের হুকুমে আসে কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছো৷" (১৭:৮৫)
এ আয়াতটি সচেতনতার পরিচয় তথা আত্মা সম্পর্কেই জানাচ্ছে! প্রকৃত পক্ষে এ আয়াতটি বুঝায় যে, একটি নন-ফিজিকাল উপাদান রয়েছে যা এ শরীরকে সচল রাখে - যা আত্মা (soul) বা সচেতনতা (consciousness) হিসেবে পরিচিত!
** **
EXERCISE:
বিশ্ব ব্রম্মান্ডের সূচনা-লগ্নে randomly পদার্থের অবচেতন অবস্থা থেকে সচেতনতা তৈরির প্রক্রিয়া কে নাস্তিকদের সামনে কিভাবে উত্থাপন করতে পারবেন?
ইঙ্গিত: কোন সময়-অক্ষে (time line) অবচেতন অবস্থা আর সচেতন অবস্থার ব্যপ্তিকে (range) বসালে/আঁকলে, প্রশ্ন হতে পারে, কোন বিশেষ সময়কালের অবচেতন অবস্থাকে বুঝার জন্য কি তখন এক সচেতন মননের (conscious mind) প্রয়োজন থাকবে না? তাছাড়া কোন অবস্থাকাল যে ১০০% অবচেতন অবস্থায় আছে - সেটা কে বিচার করবে?
এ লজিকে সবসময়ই বা চিরন্তন একটি সচেতন এনটিটি (conscious entity) উপস্থিত থাকতে হবে অসীমকাল ধরে।
"আল্লাহ এমন এক চিরঞ্জীব ও চিরন্তন সত্তা তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। ..." (২:২৫৫)
বিষয়: বিবিধ
১৩২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন