নাস্তিকতা : একটি বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্লেষণ
লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:০২:৫৮ সকাল
নাস্তিকতা নিয়ে আগে একটি ছোট পোস্ট দিয়েছিলাম। ইউনিভার্সিটি অফ এডিলেড-এ রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করার সময় একজন পড়াশুনা-কারী নাস্তিক সহকর্মীর সাথে নিচের কথোপকথন হয়েছিল:
আমি: তোমার কি মনে হয় না এক একটি কোষ এক একটি মানুষ-তুল্য?
নাস্তিক: নাহ, তুমি কম বললে। এক একটা কোষ এক একটা টেররিস্ট। টেররিস্ট মানুষের থেকেও প্রতিভাবান।
আমি: তুমি কি মনে কর এই প্রতিভাবান কোষগুলো এমনিতেই তৈরী হয়েছে?
এটা কোনো যুক্তিজয়ের উপলক্ষ্য ছিল না - ছিল আমার জানার আগ্রহ - বিশেষত এমন একজনের কাছ থেকে যিনি molecular science এ নির্দিস্ট করে ডি,এন,এ, নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা করে যাচ্ছেন। ভদ্র ও সংস্কার-মুক্ত আমার সহকর্মী আর কোনো বিরোধিতা করলেন না যা তার স্ব্ভাবের সাথে খুব একটা যায় না! হয়ত তিনি পরবর্তিতে ভাববেন - নয়তো নির্লিপ্ত সীমাহীন লজিক নিয়ে তিনি আর কথা বাড়াতে চাননি।
মোটামুটি নাস্তিক-সর্দার হিসেবে পরিচিত অক্সফোর্ড-এর রিচার্ড ডকিংস এবং বিশপ রোয়ান উইলিয়ামস এর মধ্যকার বর্তমান সময়ের একটি বিতর্ক বেশ ইন্টারেষ্টিং। 'দা গ্রান্ড ডিসাইন' বইয়ের সূত্র ধরে যখন ডকিংস বিশ্ব-ব্রম্মান্ডের সৌন্দর্য স্বীকার করেন - তখন বিশপ রোয়ান বলেন " তুমি বিশ্ব-ব্রম্মান্ডের সৌন্দর্যকে লিখতেই পারনি ঠিকমত! বিশ্লেষণই করতে পারনি আরও সবিস্তারে - তাহলে মহা-কৌশলীর মহা-কার্যকারণ দেখতে বা কমপক্ষে একটি ছন্দ-মিল পেতে!"
আরেক জায়গায় ডকিংস যখন বিশ্ব-সৃষ্টির "কোনো বিশেষ মুহুর্তে" "অবচেতনার পুরোধা (১০০%) অবস্থানের" বিষয়ে উল্লেখ করেন - তখন উত্তরে বলেন ' সেই মুহুর্তের অবচেতনকে বুঝার জন্য কি একটি 'সচেতন মনের' অবস্থান জরুরি ছিল না?'
দুটো উত্তর ই বৈজ্ঞানিক বা দার্শনিক উপায়ে দেয়া সম্ভব ছিল না ডকিংস-এর! উদার ও ভদ্র ডকিংস কিছুটা স্বীকারও করেন বিষয়টি ।
নাস্তিকতা নিয়ে আমার পোস্ট-টি পুনরায় দিলাম! পোস্টটি নাস্তিকতাকে বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে বিশ্লেষণ করে:
সৃষ্টির দৃষ্টিনন্দিত বস্তুনিচয়ের গহিনে লুক্কায়িত কার্যকারণ অনুসন্ধানে এরা বিরত থাকে। কিন্তু সৃষ্টির অসঙ্গতি খুজতে থেমে থাকে না - 'কেন অসঙ্গতি হলো' - সেই অনুসন্ধান আর করে না -- অথচ শেষ অনুসন্ধানেই যে সুকৌশলির আরেক শক্তিমত্তা উদঘাটিত হতে পারে! অন্যদৃষ্টিতে, সৃষ্টির অসঙ্গতি যে 'স্রষ্টার পক্ষ থেকে পরীক্ষার এক ধরন' হতে পারে এ তত্ত্বকে অকপটে অগ্রাহ্য করে।
অনুসন্ধানী চোখ শুরু থেকেই 'উপসংহার' স্থির করে নেয়! 'নতুন' বৈচিত্র 'সামঞ্জস্যময়' হলেও সব ই তারা অসামঞ্জস্যময় (random) ধরে নেয়। ভুলেও এই নীতি (random নীতি) থেকে এরা বের হয় না - পাছে এক মহাকৌশলি না আবার বিষয়ে ঢুকে পড়ে।
চোখ বন্ধ রাখা এই প্রজাতি আবার মহা- জ্ঞানীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জীবন ও সমাজের চলার ধরন নিরুপন করে!
এইসব নাস্তিকদের প্রতি করুনা হয়।
বিষয়: বিবিধ
১১১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন