ইসলামী দাওয়াতের কর্মপদ্ধতি (৩)

লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ০৫ জুন, ২০১৩, ০৬:৫৫:৫৭ সন্ধ্যা

[তিন]

সিরিয়ান বর্ডারের নিকটে তথা 'মৃত সাগর' থেকে অনতিদূরে মাদয়ান বিন মাদিআন বিন ইব্রাহিম (আ) এর বংশধর তথা মাদয়ান-বাসীরা বসবাস করতেন! নীতি-বিবর্জিত ও লালসায় আসক্ত এই জাতি কালক্রমে শিরক-যুক্ত বিকৃত ধর্মাচারে যুক্ত হল - চারিত্রিক অধপতনের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত থাকল।

ইবনে কাসীর বলেছেন, "মাদয়ান্ বাসীরা অবিশ্বাসী ছিল যারা রাজপথে (highway) ডাকাতি করত। যাত্রীদের ভয় দেখাত এবং চাদা তুলত (এক বর্ণনায় এসেছে ১০% চাদা নিত যেকোন যাত্রির/ব্যবসায়ির বাহিত পন্য মূল্যের) ।

এক ধরনের গাছ পূজা করত। খুবই নিকৃষ্ট চরিত্রের ছিল এই জাতি। পন্য দ্রব্য বন্টনে জালিয়াতি করা, ওজনে কম দেয়া ছিল এদের মজ্জাগত বৈশিষ্ট্য। নেয়ার সময় বেশি নিত অথচ যখন কোন জিনিস বিক্রি করত তখন ত্রুটিপূর্ণ জিনিস দিত অথবা ওজনে কম দিত।

ধংসের হাত থেকে উদ্ধারে দয়াশীল আল্লাহতায়ালা এদের জন্য 'খাতিবুল আম্বিয়া (অত্যন্ত সু-বক্তা)' শো’আয়েব (আ) কে পাঠালেন।

সুরা হুদে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন:

৮৪) আর মাদ্য়ানবাসীদের কাছে আমি তাদের ভাই শো’আয়েবকে পাঠালাম৷ সে বললো : “হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! আল্লাহর বন্দেগী করো৷ তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ নেই৷ আর মাপে ও ওজনে কম করো না৷ আর আমি তোমাদের ভালো অবস্থায় দেখছি কিন্তু আমার ভয় হয় কাল তোমাদের ওপর এমন দিন আসবে যার আযাব সবাইকে ঘেরাও করে ফেলবে৷

(শিক্ষনীয় ১)

নবী-রাসুলদের (স) দাওয়াতে বাস্তবতা লক্ষ্য করুন। জাতি যে সকল কাজের মাধ্যমে দ্রুত জাহান্নামে ধাবিত হচ্ছে তথা তাদের যে যে কাজে দুর্বলতা - রয়েছে নবিগণ সে সকল ব্যপারেই অনবরত উপদেশ দিয়েছেন! অবাস্তব ব্যপার বা যা ঘটেনি তা নিয়ে উপদেশ বা তত্ব কথা বলে তারা সময় নস্ট করতেন না!

জাতির অধপতনে দু:খ ভারাক্রান্ত মহিয়ান নবী শো’আয়েব (আ) উপদেশ দিলেন -

৮৫) আর হে আমার সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা! যথাযথ ইনসাফ সহকারে মাপো ও ওজন করো এবং লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য সামগ্রী কম দিয়ো না৷ আর পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়িয়ে বেড়িয়ো না৷

৮৭) তারা জবাব দিল : “হে শো’আয়েব! তোমার নামায কি তোমাকে একথা শেখায় যে, আমরা এমন সমস্ত মাবুদকে পরিত্যাগ করবো যাদেরকে আমাদের বাপ-দাদারা পূজা করতো ? অথবা নিজেদের ধন-সম্পদ থেকে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী খরচ করার ইখতিয়ার আমাদের থাকবে না ?

৮৭ নং আয়াতে দুইটি বিষয় শিক্ষনীয়। 'শিক্ষনীয় (২) এবং (৩) দিয়ে বিষয়টি সবিস্তারে আলোচিত হবে ইনশাল্লাহ:

(শিক্ষনীয় ২)

শোয়ায়েব (আ) আনীত ইসলাম ধর্মের নামাজ তথা ইবাদতের স্বার্থে ওই ভ্রান্ত জাতি প্রচলিত রীতিনীতি তথা বাপ দাদাদের ধর্ম পরিত্যগে অপারগ ছিল!

নিচে বিষয়টি ব্যখ্যা করি:

আমাদের দৃষ্টিতে সামাজিক রীতিনীতি এবং পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যের (আমি আমার পিতামাতাকে যা করতে দেখেছি ...) অনুসরনের উদাহরণ:

(i) আজীবন এভাবে ইসলাম দেখে এসেছি বাসায় এবং অনুসরণ করেছি - এখন তুমি বলছ আরেক কথা! আমি গোড়া নই!

(ii) আজীবন এইসব ইসলামী দলকে ঘৃনা করে এসেছি .. ছোটকাল থেকে এই দল সম্পর্কে ভালো কিছুই শুনি নাই - সবাইকে শুধু গালি দিতেই শুনেছি !

(iii) এই অনুষ্ঠান চিরকাল করেছি -- ছোটকাল থেকে সবাইকে করতে দেখেছি -- এখন বলছ এসব ইসলামের দৃষ্টিতে ঠিক কাজ না!

অথচ স্রষ্টার দৃষ্টিতে :

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, এসো সেই বিধানের দিকে যা আল্লাহ নাযিল করেছেন এবং এসো রসূলের দিকে, কখন তারা জবাব দেয়, আমাদের বাপ-দাদাকে যে পথে পেয়েছি সে পথই আমাদের জন্য যথেষ্ট৷ তারা কি নিজেদের বাপ-দাদারই অনুসরণ করে চলবে, যদিও তারা কিছুই জানতো না এবং সঠিক পথও তাদের জন্য ছিল না ?

(৫:১০৪)

তারা যখন কোন অশ্লিল কাজ করে তখন বলে, আমাদের বাপ-দাদারদেকে আমরা এভাবেই করতে দেখেছি এবং আল্লাহই আমাদের এমনটি করার হুকুম দিয়েছেন৷ তাদেরকে বলে দাও আল্লাহ কখনো নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার হুকুম দেন না৷

(৭:২৮)

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার আনুগত্য করো তখন তারা বলে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে যে রীতির ওপর পেয়েছি তার আনুগত্য করবো৷ শয়তান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত আগুনের দিকেও আহ্বান করতে থাকে তবুও কি তারা তারই আনুগত্য করবে ?

(৩১:২১)

যে ঈমানদারগণ! তোমাদের বাপ ও ভাইয়েরা যদি ঈমানের ওপর কুফরীকে প্রাধান্য দেয় তাহলে তাদেরকেও নিজেদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না৷ তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তারাই জালেম ৷

(৯:২৩)

তোমরা কখনো এমন দেখতে পারে না যে, যারা আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান পোষণ করে তারা এমন লোকদের ভাল বাসছে যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করেছে৷ তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র অথবা ভাই অথবা গোষ্ঠীভুক্ত হলেও তাতে কিছু এসে যায় না৷ আল্লাহ এসব লোকদের হৃদয়-মনে ঈমান বদ্ধমুল করে দিয়েছেন এবং নিজের পক্ষ থেকে একটি ‘রূহ’ দান করে তাদের শক্তি যুগিয়েছেন৷ তিনি তাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে৷ তারা সেখানে চিরদিন অবস্থান করবে৷ আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে৷ তারা আল্লাহর দলের লোক৷ জেনে রেখো আল্লাহর দলের লোকেরাই সফলকাম৷

(৫৮:২২)

(শিক্ষনীয় ৩)

শোয়ায়েব (আ) আনীত "ইসলাম ধর্মের" সাথে "ধন-সম্পদ থেকে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী খরচ করার ইখতিয়ার" তথা অন্য কথায় জীবন-যাপনের (তথা ধন-সম্পদ যার মূল চালিকা শক্তি) বা অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি ইত্যাদির কি সম্পর্ক তা ওই জাতি বুঝতে পারত না!

ভাল করে লক্ষ্য করুন: এটা কি ওই বিভ্রান্ত জাতির একান্ত -কাম্য 'ধর্ম-নিরপেক্ষতারই' পরিচায়ক নয়? যেখানে তারা ধর্ম থেকে জীবন-সংসার (তথা ধন-সম্পদ যার মূল চালিকা শক্তি) কে আলাদা করতে চেয়েছিল??

বিষয়টি পরিস্কার করতে আমরা একটি প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারি: ধর্মনিরপেক্ষতা এবং কুফরী কি সমার্থক? শোয়ায়েব (আ) এর অধপতিত জাতির মত আমরাও কি ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রতিষ্ঠা করতে প্রাণপাত যাচ্ছি একই ভাবে?

(i)

ধর্মনিরপেক্ষতা এমন একটি ধারণা যা সরকারকে অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে পৃথক করে দেয়।

"একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশ্বাস থেকে আলাদা করে দেয়।"

একটি আইনগত বিষয় যা নৈতিক বিচারকে এমন ভাবে তৈরী করে যা ধর্মীয় সংস্কার, পারলৌকিক পুরস্কার বা সাস্তি থেকে পৃথক করে দেয়।"

(সূত্র: http://en.wikipedia.org/wiki/Secularism)

এই সংজ্ঞা গুলোর মূল কথা হল ধর্মনিরপেক্ষতা এমন একটি মতবাদ যা দ্বারা ইসলামকে(যা পরিপূর্ণ জীবণ ব্যবস্থা) রাষ্ট্র,আইন ও সামাজিক নৈতিকতা হতে মুক্ত রাখা এবং মানুষের জীবনের ব্যক্তিগত বিষয় হিসাবে সীমাদ্ধ রাখা।

এখন দেখুন কুরআন এ ব্যপারে কি নির্দেশনা দিয়েছে --

أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ

يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُون

তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই।কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। ২:৮৫)

وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী আইন পরিচালনা করে না, তারাই কাফের। (৫:৪৪)

وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম।(৫:৪৫)

وَلْيَحْكُمْ أَهْلُ الْإِنْجِيلِ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فِيهِ ۚ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ

যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ

হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

অতএব চিন্তা করুন - ধর্মনিরপেক্ষতা এবং কুফরী কি একই বিষয় নয়? তাই মুসলিম হবেন না ধর্মনিরপেক্ষ / কাফির হবেন?

(ii)

"দ্বীন" শব্দের চারটি অর্থ কোরআনের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়

১-শক্তি, আধিপত্য

২- দাসত্ব, আনুগত্য

৩- কর্মফল, প্রতিফল

৪- আইন, বিধান, ব্যবস্থা

এই চতুর্থ অর্থ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা, তাদের মূল বক্তব্যই হল কুরআন ঠিক আছে, ধর্ম ঠিক আছে। কুরআন আর ধর্ম নিজ নিজ জায়গায় ঠিক থাকবে, আর আইন, বিধান, ব্যবস্থা এগুলো মানুষ তৈরি করবে।

কিন্তু কুরআন দ্বীন শব্দের আওতার মধ্যে দেশের ব্যাবস্থা, আইন, বিধান সবগুলোকেই নিজের করে নেয়। সূরা নূরের ২ নং আয়াত, আল্লাহ বলেন, ব্যভিচারী-ব্যভিচারিনী উভয়কে একশ করে বেত্রাঘাত করো। আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে তোমরা যেন তাদের উপর দয়া না করো। এখানে বেত্রাঘাত করা হচ্ছে রাষ্ট্রের আইন। একে "দ্বীন" শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। আর আল্লাহ নির্ধারিত এই দ্বীন বা আইনের প্রয়োগের ব্যাপারে কোন ধরণের অবাঞ্ছিত দয়া না করার জন্য আল্লাহ হুশিয়ার করে দিয়েছেন।

ব্যবস্থা, বিধান, আইন অর্থে আল্লাহর নির্দেশ হল:

আর এমনি করে আমরা ইউসূফের জন্য পথ বের করেছি। বাদশার দ্বীনে (আইনে) তার ভাইকে পাকড়াও করা তার জন্য বৈধ ছিলনা। সূরা ইউসূফঃ ৭৬

শাসন কর্তৃত্ব আল্লাহ ছাড়া আর কারো নয়, তারই নির্দেশে তিনি ব্যাতিত আর কারো ইবাদাত করোনা। ইহাই সত্য সঠিক দ্বীন। সূরা ইউসূফঃ ৪০

তারা কি এমন শরীক বানিয়ে বসেছে, যারা তাদের জন্য দ্বীনের ব্যাপারে এমন সব আইন বিধান রচনা করেছে, আল্লাহ যার অনুমতি দেননি, দেননি কোন হুকুমে। সূরা আশ শূরাঃ২১

= সারমর্ম =

[১] বাস্তব জাতীয় সমস্যা নিয়ে ইসলামের দাওয়াত দেয়া নবীগনের বৈশিষ্ট ছিল।

[২] ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক (i) সামাজিক রীতিনীতি না বদলানো (যা শিরক অথবা কুফরীতে পরিচালিত করে) এবং (ii) ধর্ম-নিরপেক্ষতা সমাজ জীবনে জিইয়ে রাখার সমস্যা (যা কুফরীর সমার্থক) মানব ইতিহাসে আবহমানকাল ধরে চলে এসেছে। শোয়ায়েব (আ) এর জাতির এই দুইটি সমস্যা ছিল এবং ওই জাতির এই দুই বিষয়ে প্রশ্নও আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে উত্থাপন করেছেন। দায়ীর এ দুই বিষয়ে ইসলামের বক্তব্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা এবং লোকজনকে অবহিত করা কর্তব্য।

== পরবর্তী ঘটনা ==

আল্লাহ তায়ালা সুরা আরাফে বলেন,

৯০) তার সম্প্রদায়ের প্রধানরা, যারা তার কথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল, পরস্পরকে বললোঃ “যদি তোমরা শোআইবের আনুগত্য মেনে নাও, তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে৷”

৯১) কিন্তু সহসা একটি প্রলয়ংকারী বিপদ তাদেরকে পাকড়াও করে এবং তারা নিজেদের ঘরের মধ্য মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে,

৯২) যারা শোআইবকে মিথ্যা বলেছিল তারা এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় যেন সেই সব গৃহে কোনদিন তার বসবাসই করতো না৷ শোআইবকে যারা মিথ্যা বলেছিল অবশেষে তারা ধ্বংস হয়ে যায়৷

দাওয়াতি কাজে প্রানান্ত প্রচেষ্টা কারী দয়ার নবী শোয়ায়েব (আ) কি বলেছিলেন?

"আর শোআইব একথা বলতে বলতে তাদের জনপদ থেকে বের হয়ে যায়-“হে আমাদর জাতির লোকেরা! আমি আমার রবের বাণী তোমাদের কাছে পৌছিয়ে দিয়েছে এবং তোমাদের কল্যাণ কামনার হক আদায় করেছি৷ এখন আমি এমন জাতির জন্য দুঃখ করবো কেন,যারা সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করে?" (আয়াত ৯৩)

(শিক্ষনীয় বিষয়) এটাই হল একজন সফল 'দায়ীর' একমাত্র চিন্তা! তিনি কি তার দায়িত্ব ঠিক মত পালন করতে পেরেছেন? তিনি কি সবাইকে আল্লাহর বাণী পৌছে দিতে পেরেছেন? পরকালে আল্লাহর দরবারে তিনি কি জবাব দিতে পারবেন? এই আত্ম-সমালোচনা একজন দায়ী করে থাকেন নিরত। (i) দায়িত্বশীলতা আর (ii) আল্লাহ ভীতির তথা পরকালের জবাবদিহিতার ভয় একজন দায়ীকে প্রতিনিয়তই চিন্তামগ্ন এবং কর্ম-তত্পর রাখে!

মহিয়ান নবী শোয়ায়েব (আ) এর দাওয়াতি জীবন আমাদের আত্ম্সমালোচনা- নির্ভর দায়ীর ভূমিকার অংশগ্রহনে উত্সাহ দিক -মহান আল্লাহর কাছে সেই দোয়াই করছি। আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৫৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File