৬ই মার্চ হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কেন!
লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ০২ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:০৫:১০ বিকাল
হেফাজত এবং ইসলাম দুইটি শব্দ দিয়ে একটি বাক্য "হেফাজতে ইসলাম"। অত্যান্ত অর্থবহ এই বাক্যটিকে বুঝতে হবে ঈমানের গভীরতা থেকে। আমরা যারা মুসলমান তারা সকলেই বিশ্বাস করি হায়াত এবং মৃত্যু আল্লাহর হাতে, কখন হায়াত শেষ হবে মৃত্যু আসবে তাহা কেউ জানিনা, মৃত্যুর পর থেকেই "বরযক" অর্থাত কবর জগতে (মৃত্যুর পরবর্তী সময়কালকে বরযকী হায়াত বলা হয়) আমাদের ইহকালের বিশ্বাস ও যাবতীয় কর্মকান্ডের আলোকে আমাদের সাথে আচরন হবে। এটি বিশ্বাস করি বলেই আমরা মুসলমান, ঈমানদার।
আল্লাহপাক প্রত্যেক ঈমাদারের জন্য জান্নাত নিশ্চ্যিত করেছেন। অর্থাত যার বিন্দুমাত্র ঈমান আছে সে এক পর্যায়ে আল্লাহর করুনায় জান্নাত পাবেই। যাদের ঈমান নাই তারা বেদ্বীন, পবিত্র কোরানে বেদ্বীনের ঠিকানা সরসরি জাহান্নাম নিশ্চ্যেত করেছেন। ঈমানদারেরাও দলে দলে জাহান্নামে যাবে ইহকালের পাপচারের কারণে, তবে ইহকালে কৃত পাপের শাস্তি ভোগ করে এক পর্যায়ে ঈমানের বদৌলতে আল্লাহর করুনায় জান্নাতে যাবে। তাহলে পবিত্র কোরান মতে ইহকালের পাপাচারের শাস্তি ভোগ করে হলেও জান্নাত পাওয়ার একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে "ঈমান"। আবার ইহকালে পাপাচার করিলেও আল্লাহ করুনা করিলে কোনো না কোনো উচিলায় আল্লাহ বান্দাঁকে জান্নাত দান করিতে পারেন এটি সম্পূর্ণ আল্লাহর এখতেয়ার, করুনার উপর নির্ভশীল তবে শর্ত হচ্ছে "ঈমান" থাকতে হবে।
ঈমানদারের ঘরে জন্ম নিলে বা মুসলমান সমাজে বসবাস করিলেই কেউ মুসলমান বা ঈমান ওয়ালা হয়ে যায়না, মুসলমান তথা ঈমান ওয়ালা হাওয়ার জন্য শর্ত রয়েছে। এইসব শর্তগুলি থেকে বিচ্যুতি ঘটিলে কিংবা অস্বীকার করিলে তখন ঈমানের দিক থেকে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এমনকি ঈমান হারাও হয়ে যায়। মুসলমানের ঘরে জন্ম নেয়া বা মুসলমান সমাজে বসবাস কারী কেউ যদি নিজের অজান্তেই ঈমানের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয় কিংবা ঈমান হারা হয়ে যায় তখন কিন্তু তার জন্য জাহান্নাম নিশ্চ্যিত হয়ে যায়।
তাহলে প্রত্যেককে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে মুক্ত এবং জান্নাত পাওয়ার আশায় ইহকালের যাবতীয় পাপচার থেকে মুক্ত থাকতে হবে এবং ইহকালে পাপাচার করিলেও আল্লাহর করুনায় জান্নাত পাওয়ার আশায় প্রত্যেক মুসলমান অন্তত স্বীয় ঈমানকে ধরে রাখতে হবে আর এজন্য নিজের মধ্যে দ্বীনে ইসলামকে "হেফাজত" করতে হবে। "হেফাজত" আরবী শব্দ যার অভীধানিক অর্থ হচ্ছে নিরাপদ রাখা, সংরক্ষন করা। "হেফাজতে ইসলামের" মূল মর্মবানী হচ্ছে নিজের মধ্যে দ্বীনে ইসলামকে নিরাপদে রাখ, সংরক্ষন কর। নিজের মধ্যে কেন দ্বীনে ইসলামকে হেফাজত বা সংরক্ষন করতে হবে তাহা সূরু থেকেই বলেছি।
হেফাজতে ইসলামের মূল লক্ষ্য উদ্দিশ্য হচ্ছে কোনো মুসলমান ভাইবোন যেন জাহান্নামের উপকরণ না হয় এবং জান্নাত যেন সকলেরই নছীব হয়। দেশের হক্কানী আলেম ওলামারা লক্ষ্য করেছেন যে, মুসলমান প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিশেষ এক শ্রেনীর দ্বারা নানা ভাবে, নানা কৌশলে প্রভাবিত হয়ে নিজের ঈমান আকিদার দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং কোনো কোনো বাক্য বচণের কারণে স্বীয় "ঈমান" থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে। অথচ দুনিয়াবী কর্মকান্ডের সাথে ঈমান আকিদা কোনো ভাবেই সাংঘর্ষীক নয় কোনো ভাবেই বাঁধা নয় তাহলে কেন মুসলমান সন্তান সন্ততী নানা ভাবে নানা কৌশলে প্রভাবিত হয়ে নিজেকে জাহান্নামের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে?
"সত কাজের আদেশ অসত কাজে নিষেধ" করা দুনিয়ার প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়ীত্ব বিশষ করে আলেম ওলামা সমাজের জন্য কর্তব্যও কারণ তারা কেয়ামতের ময়দানে জিজ্ঞাসিত হইবেন যে, তোমাকে তো কোরান হাদিসের ইলম দিয়ে ছিলাম তুমি সেই ইলমকে কোথায় কিভাবে চর্চা বা ব্যবহার করেছে? যারা ভূল পথে যাচ্ছিল তাদেরকে সজাগ সতর্ক করেছ কি? (আল-হাদিস)।
দেশের আলেম ওলামাগন তাদের ঈমানী দায়ীত্ব পালনের মধ্যমে নিজের অজান্তে যারা নাস্তিক মুরতাদ হয়ে যাচ্ছে তাদেরকে সতর্ক করা এবং যাদের প্ররোচনায় নাস্তিকী মুরতাদী কর্মকান্ড হচ্ছে তাদেরকেও রোধ করা এবং একই সাথে যেহেতু আমরা একটি দেশের শাসন তান্ত্রিক পদ্ধতিতে বসবাস করি সেহেতু দেশের আইন বিধানে যেইসব সাংঘর্ষীক বিষয় আছে তাহা সংশোধন বা বাতিল করা সহ আগামীতে যাতে এমনটি না হয় সেই ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্রে কোনো নিতিমালা প্রনয়ন হইলে তাহা রাষ্টের বিধি বিধান হিসাবে সকলের উপর প্রয়োগ হইবে এখন রাষ্ট্রের বিধি বিধান যদি দ্বীনের সাথে সাংঘর্ষীক হয় এবং সরকার যদি আইন দ্ধারা জনগনের উপর প্রয়োগ করে তাহলে ফলাফল কি দাড়াইল? ১. দেশে বিধি বিধান মারা বা না মানার বিশৃঙ্খলা/অরাজগতা। ২. দ্বীনের সাথে সাংঘর্ষীক বিধি বিধান অনুসরন করিলে বা মানিলে নিজেকে জাহান্নামের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সূতরাং হেফাজতে ইসলামের এই ডাকে সারা দেয়া প্রত্যেক ঈমানদারের কর্তব্য।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন