কথা বলা আমার বদঅভ্যাস, ক্ষমা করবেন আমি এই অভ্যাসটি ছাড়তে পারছিনা।

লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:৪২:০৫ দুপুর



আপনি হঠাত করে বিএনপি দরদী কেন হয়ে গেলেন ঠিক বুঝা যাচ্ছেনা তবে মির্জা ফকরুলকে সামনে এনে সরকারকে যেই পরামর্শ দিচ্ছেন তাহা সরকার আদৌ গ্রহন করবেন কিনা সন্দেহ আছে। যাই হউক, সাধারণ জ্ঞানে আমরা যতটুকু বুঝি, সরকার নিজেই যুদ্ধাপরাধ বিচার নিয়ে বিপাকে পড়েছে। সারাদেশের এমন কোনো ব্যক্তি নাই যে, যারা স্বচ্চ ন্যায়, আবেগ আক্রোশ/প্রতিশোধ মুক্ত, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ মুক্ত এবং আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রেখে যুদ্ধাপরাধের বিচোরের দাবী করে নাই, এমন কি আজ যারা অভীযুক্ত তরাও যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়েছে এবং তাহাও উল্লেখিত দাবীর আলোকে। শুধু বাংলাদেশে কেন? বহিঃবিশ্ব থেকেও একই তাকিদ দেয়া হয়েছে।

এখন জনগনের কাছে এটি স্পষ্ট ধারণা যে, আওয়ামী লীগ সরকার চার দলীয় জোট ভাঁঙ্গতে ব্যর্থ হয়ে মূলত যুদ্ধাপরাধের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের অপচেষ্টা করেছে। যুদ্ধকালীন সময়ে যারা অপরাধ করেছিলেন এবং যেইসব অপরাধের বিচারের ব্যবস্থা রয়েছে সেইসব অপরাধী শুধু বিএনপি বা জমাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং ঐসব অরাধীরা খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেও রয়েছে এটি বিএনপি সহ সকল সাধারণ জনগনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে অথচ সরকার শুধূমাত্র বিএনপি/জমাতের ভেতরেই যুদ্ধাপরাধী খুঁজে পাচ্ছে আর কোথাও যুদ্ধাপরাধী নাই, সূতরাং এটি শুধু হাঁস্যকরই নয় বরং ভন্ডামী বলিলেও ভূল হবেনা।

প্রসিকিউশনের সমালোচনা করে আপনি আসিফ সাহেব নিজেও বলেছিলেন (দৈনিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চ্যানেল আই) নিজামীদের বিচার করার জন্য এতো স্বাক্ষী ছাবুতের দরকার নাই সেই সময়ের পত্রিকাগুলি ট্রাইব্যুনালে হজির করিলে সব তথ্য পাওয়া যাবে এবং সেইমতে বিচার কাজও সম্পন্ন করা সম্ভব। সেদিন আপনার কথা শুনে আমরা হেঁসেছিলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের কোনো শিক্ষক এই রকম অভীমত কিভাবে দিতে পারেন।

যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে শাহরিয়ার কবির, মুন্তাসির মামুনেরা সহ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ট্রাইব্যুনালের উপর এমন চাপ ছিল যে (ফাঁসির আদেশ দিতেই হবে) ট্রাইব্যুনাল চেয়াম্যান বেচারা ঘাঁড় ফিড়াইতে পাচ্ছিলেনা, স্বাক্ষী ছাবুতের আলোকে বেচারা কিছুই করতে পাচ্ছেন না (সংলাপে মৌলানা সায়ীদির ক্ষেত্রে যাহা বলেছেন)। একজন বিচারক হিসাবে তিনি অবিচার করতে অপরাগ ছিলেন অপর দিকে সরকারের চাপও অসহ্য ছিল ফলে তিনি শুরু থেকেই অত্যান্ত সূকৌশলে পুরা বিচার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে তোলার চেষ্টা করে সফল হয়েছেন এবং যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে সরকারের আসল চেহেরা জনসম্মুখে এবং বহিঃবিশ্বে হাজির করেছেন। বিচারপতি নিজামুল হক সাহেবকে ধন্যবাদ জানাতে হয় এই জন্যই যে, তিনি বিচারকার্য সম্পন্ন না করে স্কাইপে সংলাপের মাধ্যমে সরকারের ও শাহরিয়ার কবিরদের মুখোশ উম্মোচন করেছেন এবং অভীযুক্তরা ন্যায় বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন, সূতরাং যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে বিএনপি জোট নয় বরং সরকার নিজেই নিজের প্রতিপক্ষ, সরকার নিজেই আদালতের কাটগড়ায়।

আরও একটি বিষয় লক্ষ্যনীয়, তুরস্কের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল বাংলাদেশে। বহিঃবিশ্ব থেকে কোনো প্রতিনিধি আসিলে তাহা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতিক্রমে আসেন এবং তাদের যেই যেই এজেন্ডা থাকে সরকারের সহযোগীতায় তাহা বাস্তবায়ীত হয়, সরকারের গোয়েন্দা নজরদারী থাকে, সরকারের সাথে আলাপ আলোচনা হয়। তাহলে স্পষ্ট যে, এটি গোপন কোনো বিষয় ছিলনা বরং সবকিছু সরকারী ভাবেই হয়েছে। প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনায় বাংলাদেশ সরকার সন্তোষ্ট হতে পারে নাই তাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ সরকারের নানা অঙ্গন থেকে প্রতিনিধি দল সহ তুরস্কের কঠোর সমালাচনা করেছে অথচ তুরস্ক বাংলাদেশ সরকারের এইসব সমালোচনা কানেও তোলে নাই, এরপর দেখা গেল আমন্ত্রিত হয়ে সম্প্রতি সৌদি আরবের স্পিকার সাহেব বাংলাদেশ সফর করলেন। স্পিকার সাহেবকে যথাযোগ্য সম্মানের সাথে স্বাগত জানাইলেও তিন/চার দিন সফরের পর বিদায় জানাতে দেখা গেলনা, এমনকি বিদেশী মেহমান চলে যাওয়ার খবরটিও গনমাধ্যমে আসেনাই। সাধারণ মানুষের অনেকে ঠাট্টা মশকারা করে বলেন সৌদি আরবের স্পিকার সাহেব বাংলাদেশে বসতি স্থাপন করেছেন বোধহয়, তা না হলে যাওয়া খবরটি এতই আলোচিত আর ফিরে আসার খবরটি নাই কেন? তাতে বুঝা যায় সৌদি স্পিকার সাহেবের সাথেও আলোচনায় বাংলাদেশ সরকার খুশি হতে পারে নাই তাই বিদেশী মেহমানকে সম্মানের সাথে বিদায় দেয়ার প্রয়োজন মনেকরে নাই। অপর দিকে দেখা গেল আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোড় গলায় জানাইলেন যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে সৌদি সরকারের কোনো চাপ নাই আর এই বিষয়ে স্পিকারের সাথে কোনো আলোচনাই হয় নাই। দিপু মনির ডিপ্লোমেটিক উত্তর! যেই বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয় নাই সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসারও কিছু নাই, সংবাদিকদের মূখ বন্ধ হয়ে গেল। আসলে কি তাই? যদি তাই হয় তাহলে বিদেশী মেহমানকে সম্মানের সাথে বিদায় জানানো হলনা কেন?

---------------

নোটঃ- বাংলাদেশ হচ্ছে ওআইসি সদস্যভূক্ত দেশ, ওআইসর অত্যান্ত প্রভাবশালী দেশ হচ্ছে সৌদি আরব, আর বর্তমানে ওআইসির মহাসচিবের দায়ীত্ব পালন করতেছে তুরস্ক। বাংলাদেশে সফর করেছে তুরস্কের প্রতিনিধি দল এবং সৌদি আরবের স্পিকার এবং উভয় প্রতিনিধির সাথে বাংলাদেশের আচরন আমরা দেখেছি সূতরাং উভয়ের সফরকে হালকা বা তুচ্চ করে দেখার কোনো অবকাশ নাই। আমরা কোন্ দিকে ধাবিত হচ্ছি ভাবতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১০৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File