"আওয়ামী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে"
লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ১৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:২৫:৫৭ বিকাল
আগে বলে রাখছি, বাংলাদেশে দুই জোটের বাহিরে তৃতীয় একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক জোট থাকা একান্ত প্রয়োজন তবে এই জোট রাজধানী ঢাকা কিংবা টিভির পর্দা তথা মিডিয়া ভিত্তিক নয়। সারাদেশে তাদের কার্যক্রম থাকতে হবে, সেই হিসাবে নেতা কর্মী থাকতে হবে, দেশ ও জাতীর জন্য গ্রহনযোগ্য দিক নির্দেশনাও থাকতে হবে।
------------------
আমরা জানি যে, আওয়ামী লীগ যেই কোনো মূল্যে একটি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের একাংশ এরশাদ সাহেবকে (তিনি স্বপ্ন দেখিলেও) বিরোধী দল বানালে সেই নির্বাচন দেশে বিদেশ গ্রহনযোগ্যতা পাবেনা মোটামুটি দেশের প্রধান বিরোধী দল বা জোটকে বাদ দিলে নির্বাচন কোথাও গ্রহনযোগ্য হবেনা।
একতরফা নির্বাচনের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে বিপাকে পড়েছে হাঁসিনা সরকার। জনাব কাদের সিদ্দিকী সাহেবে নিজের ইমেজের বদৌলতে কিছু ভোট পাইলেও বড় দুই জোটের ধাক্কা ধাক্কিতে সূষ্ট নির্বাচনেও জয়লাভ করবেন কিনা সন্দেহ আছে। জানাব ড. কামাল হোসেন, জনাব বি. চৌধুরী, জনাব আ স ম আব্দুর রব এবং জনাব কাদের সিদ্দিকী সাহেবেরা অবশ্যই জাতীয় নেতা বটে কিন্তু উনারা স্ব স্ব দলের আলোকে নির্বাচন করলে ওয়ার্ড কমিশনারও হতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে।
আগত নির্বাচনকে গ্রহনযোগ্য করার জন্য (একক ভাবে এরশাদকে দিয়ে হচ্ছেনা) বিএনপি জোটের বিপরীতে আরেকটি জোট দাঁড় করাতে পারলে আওয়ামী লীগের একতরফা নিরর্বাচনকে দেশে বিদেশে গ্রহনযোগ্য করার জন্য অন্তত একটি শ্লোগান তৈরী করা যায়, আওয়ামী লীগ এখন সেই পথেই হাঁটছে। অপর দিকে যারা ওয়ার্ড কমিশনার হাওয়ার স্বপ্নও দেখেন না তারা মহান সংসদের সদস্য হয়ে সরকারের প্রধান বিরোধী দল হবেন জোটগত ভাবে। এই ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের ছাড় (এক তৃতীয়াংশ আসনে ছাড় দিয়ে) দুই তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে অর্থাত আওয়ামী লীগ ক্ষমাতায় থেকেই গেল।
সারাদেশের জনগনের নিশ্চ্যিত বিশ্বাস আছে জানাব ড. কামাল হোসেন, জনাব বি. চৌধুরী, জনাব আ স ম আব্দুর রব এবং জনাব কাদের সিদ্দিকী সাহেবেরা স্ব স্ব দলের আলোকে নির্বাচন করে কখনও জয়ী হতে পারবেন না। এইক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাথে হাত মিলিয়ে যদি এমপি ও সংসদে প্রধান বিরোধী দল হাওয়া যায় মন্দ কি! বর্তমান প্রধান বিরোধী জোট নির্বাচনে না থাকিলেও গৃহপালিত জোট দিয়ে নির্বাচন করে সেই নির্বাচনকে গ্রহনযোগ্য করে তোলা কঠিন হবেনা কারণ এই জোট এক তৃতীয়াংশ আসন পাবে।
আর যেহেতু একজোট সরকার গঠন করবে এবং আরেক জোট গৃহপালিত হলেও প্রধান বিরোধী দল থাকবে সেহেতু বিএনপি জোট নির্বাচন বাঞ্চাল করা বা সরকারের বিরোদ্ধে দাঁড়ানো সহজ হবেনা। কারণ সরকার ও বিরোধী জোট এক ও অভীন্ন তথা পরিকল্পিত, তারা সরকার টিকে রাখা এবং বিরোধী দলে টিকে থাকার জন্য এক হয়ে যাবে। বর্তমানে এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকা এবং যারা ওয়ার্ড কমিশনারও হতে পারবেন না তারা নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার সহজ সরল অঙ্ক। এখানে সংসাদের প্রধান বিরোধী জোট থেকে প্রধান বিরোধী নেতা কে হবেন তাহা নিয়ে একটু মত পার্থক্য দেখা দিতে পারে কারণ প্রত্যেকেই স্ব স্ব দলের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং সকলেই জাতীয় নেতা।
দুঃখ জনক হলেও সত্য যে, জানাব ড. কামাল হোসেন, জনাব বি. চৌধুরী, জনাব আ স ম আব্দুর রব এবং জনাব কাদের সিদ্দিকী সাহেবেরা যেই ভাবে বর্তমান সরকারের কর্মকান্ডের সমালোচনা করতে দেখা যায় তাদের আসল চেহেরার সাথে ঐ সমালোচনার মিল নাই। তারা বরং বিএনপিকে বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচনের বৈধতা দেয়ার জন্য এবং ক্ষমতার লোভে এরাশাদকে নিয়ে গৃহপালিত জোট হচ্ছেন।
দেখা যাক, জানাব ড. কামাল হোসেন, জনাব বি. চৌধুরী, জনাব আ স ম আব্দুর রব এবং জনাব কাদের সিদ্দিকী সাহেবেদের নিয়ে আওয়ামী লীগের এই রাজনৈতিক খেলার জবাব বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট কিভাবে দিবে।
কর্ণেল অলি সাহেব হাঁসিনার সর্বদলীয় সরকারে যাচ্ছেন না জানিয়ে দিয়েছেন। তাতে বুঝা যায় সর্বদলীয় সরকারে যোগ দেয়ার জন্য অলি সাবেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। হইতে পারে বর্তমান আন্দোলন এবং ১৮ দলীয় জোটকে ছিন্নবিন্ন করার জন্য সরকার আরও অনেককে একই ভাবে অনুরোধ করেছে বা নানা লোভ লালসা দিয়ে নতুন গৃহপালিত জোটে যোগ দেয়ার আবেদন নিবেদন করেছে।
চট্টগ্রামের সন্তান হিসাবে জনাব অলি সাবেকে অনুরোধ করব, আপনি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এলাকায় যেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তাহা আগের অবস্থায় নাই। আপনি ক্ষমাতায় ছিলেন বলেই এই জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছিলেন কিন্তু ক্ষমতার বাহিরে থেকে এমপি হয়েও আগের সেই জনপ্রিয়তাকে ধরে রাখতে পারেন নাই। একব্যক্তি আজীবন মন্ত্রী হবেন তেমনটি নয় কিন্তু আজীবন জনপ্রিয় থাকতে পারেন।
আপনি বিএনপি ত্যাগ করে আশাকরি ইতিমধ্যে তাহা অনুধাবন করেছেন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক খেলাও ভাল ভাবে বুঝেন। আপনার একটি বাক্য সারাদেশের বার বার উচ্চারিত হয়, আপনি বলেছিলেন "বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ না হয়ে সংসদে আওয়ামী লীগের চামচা গিরী করা অনেক ভাল" আমরা জানিনা আওয়ামী লীগের চামচা গিরী করে আপনার এলাকার জনগনের জন্য কি আনতে পেরেছেন। তবে আমরা দেখছি এলাকায় আপনার জনপ্রিয়তার মধ্যে আওয়ামী লীগ ভাগ বসিয়েছে।
আপনাকে পরামর্শ দেয়ার মত যোগ্যতা আমার নেই তারপরেও বলতে চাই সামনের দিকে যাইতে চাইলে অতীত থেকে যেমন শিক্ষা নিতে হয় ঠিক আগামীর দিকে তাকিয়ে অতীতের অনেক কিছু (ত্যাগ) ছাড়ও দিতে হয়। গৃহপালিত জোটে যোগ দিলে আওয়ামী লীগের ভাড়াটিয়া তবলা বাদক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না। বাদলে ভাষায় চট্টগ্রামে আপনারা দুই বেয়াদপ আছেন (সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন), যদি সাহস থাকে আমাদের সমাজে বেয়াদপ কাকে বলে বাদল সাহেবদেরকে বুঝিয়ে দেন।
বিষয়: বিবিধ
১৫১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন