কবে তোরা মানুষ হবি?
লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৮:০৩:৫৫ রাত
আমার এই কমেন্টটি প্রকাশ করা জন্য বিশেষ অনুরোধ রহিল, এটি কাল্পনিক সাঁজানো নয়।
আজ বাংলাদেশ সময় ১টার পর থেকে এমন একটি সংবাদ খুঁজছিলাম ইন্টারনেটে বসে একটির পর একটি পত্রিকা খোলে, ভাগ্যক্রমে পেয়ে গেলাম আজকের মানবজমিনে। ভাগ্যক্রমে বলছি কারণ সারাদেশে হাজার হাজার চিন্তাই সন্ত্রাসী কান্ড ঘটছে দিবারাত্রি কিন্তু বড় ও উল্লেখযোগ্য না হলে সব খবর সংবাদপত্রে আসে না। তাই ভাবছিলাম যদি কোনো বড় ঘটনার খবর আসে সেখানে কমেনট করার সময় আজ সকাল ১১টায় ঘটে যাওয়া ঘটনাটি তোলে ধরব।
সৌদি আরবে ৫টায় ফজরের আযান দেয় তখন বাংলাদেশে সকাল ৮টা। নামাজের জন্য উঠেই বেগম সাহেবার কাছে ফোন করি প্রতিদিন, খবর নিই আমার ছোট্ট মেয়েটি স্কুলে গেল কিনা, কার সাথে কিভাবে গেল, দুই ছেলে বড় হয়েছে (২৩ এবং ১৭ বছর) এরা কে কোথায়, কলেজে যাচ্ছে কিনা। ফজরের নামাজের পর সাধারনতঃ ঘুমাইনা, কিছুক্ষন কোরান তেলাওয়াত আর হাঁটা চলার পর নিজের হাতের নাস্তা শেষ করে অফিসে রওনা দিই, সকাল ৮টা থেকেই অফিস, এটি আমার প্রতিদেনের রুটিন ওয়ার্ক। আমি একটি প্রতিষ্টিত কোম্পানীতে আইটি ডিপার্টমেন্টের মূল দায়ীত্বে আছি এক যুগেরও বেশী।
বাড়ির পশের কৃষিব্যঙ্কে সেভিংস একাউন্ট আছে যেখানে সাধারণ খরচের টাকা লেনদেন হয় আর আমিও এই একাউন্টেই নিয়মিত টাকা পাঠাই, ২৫ তারিখ টাকা পাঠিয়েছি তাহা গতকাল জমা হয়েছে। প্রতিদিনের মত আজও ফোন করি বেগম সাহেবার কাছে নিয়মিত কথাবার্তার পর আমাকে টাকা জমা হাওয়ার কথা জানায়।
বিশেষ একটি কাজে দুই লক্ষ টাকা তোলে কাজটি সমাধা করতে বলি তাই তারা মা ছেলে তিন জনই ব্যঙ্কে গিয়ে টাকা তোলে। ব্যঙ্ক থেকে আমার বাড়ি সিএনজিতে চড়লে মাত্র ৪ মিনিটের দূরত্ব প্রধান সড়কের উপরই আমার বাড়ি, দিবারাত্রি গাড়ির চলাচল। বেগম সাহেবা অত্যান্ত স্বচেতন তাই ছেলেদেরকেও সাথে নিয়েছে এবং টাকাও তারা তিনজনে ভাগ করে নিয়েছে, বেগম সাহেবার ব্যগে ৭০ হাজার টাকা ছিল। ব্যঙ্ক থেকে কিছুদূর আসার পর (প্রায় আধা কিলোমিটার) পেছন থেকে দুইটি মোট সাইকেলে ৫ চিনতাইকারী এসে তাদের সিএনজির গতিরোধ করে ছোড়া রামদা উচিয়ে বলে তোমরা এইমাত্র টাকা উঠিয়েছ কোনো কথা না বলে টাকা দাও, সহজে টাকা না দিলে কেড়ে নেব আর কেড়ে নেয়ার পদ্ধতি তো ভাল ভাবেই জান। বেগম সাহেবা এবং আমার ছেলেরা জীবনে প্রথমবার কোনো চিনতাইকারীর মূখামূখী হইল, যারা ঝগড়া বিবাদ তো দূরের কথা কারও সাথে উচ্চস্বরে কথাও বলতে শিখে নাই। যাই হউক, টাকা চাইতেছিল এরা টাকা নাই বলছে এর মধ্যেই পেছন থেকে বাস এসে যায় তখন চিনতাইকারীরা ঝাপটা দিয়ে বেগম সাহেবার ব্যাগ ছিনিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় যেখানে ৭০ হাজার টাকা ছিল।
টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে এর জন্য আমি মোটেও চিন্তিত নয়, আল্লাহ তৌফিক দিয়েছেন কামিয়েছি, নছীবে নাই তাই আল্লাহর হকুমেই চলে গেছে। আফসোস শুধু ঐ হতভাগা বাবা মায়ের জন্য যাদের রক্ত থেকে এই ধরণের সন্তান জন্ম নিয়েছে, সন্তান জন্ম দিয়ে সূসন্তান গড়ে তোলার শিক্ষা দিতে পারেন নাই, দেশ এবং জাতী ভবীষ্যত বানাতে পারে নাই, বৃদ্ধ বয়সে কিংবা মারা গেলে ছেলেরা তাদের আর্শিবাদ হাওয়ার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত।
এই সমস্ত সন্তান বাবা মায়ের তো বটেই গোটা দেশ জাতীর অভীশাপ। ৭০ হাজার টাকা ৫ জনে ভাগ করে নিলে কত করে পাবে? তাদের পেছনে যদি আরও কেউ থাকে তারাও কি ভাগ নেবে না? হইতে পারে অভাবের তাড়নায় এই যুবকেরা চিনতাই করতেছে, অন্যকে লুটে নিচ্ছে কিন্তু যাদের কোনো অভাব অনটন নাই, কোটি টাকার গাড়ি ব্যবহার করে, কোটি টাকার ঘরে বসবাস করে তারা কেন দেশ/জাতীকে লুটে? কার বিরোদ্ধে ঘুষ দূর্নীতি লুটপাট, দখলবাজী চাঁদাবাজীর অভীযোগ নাই? কারা এইসব লুটেরাদের পেছনে ঘুর ঘুর করেনা? কারা লুটেরাদেরকে আশ্রয় পশ্রয় দেয়না? যারা দেশ ও জাতীকে স্বপ্ন দেখায় লম্বা লম্ব কথা বলেন তারা কি লুটতরাজের অভীযোগ থেকে মুক্ত??? তারাও যদি লুটেরা হন তাহলে অভাবের তাড়নায় যারা এই ঘৃণ্য জগতকে বেঁচে নিয়েছে তাদের দোষারোপ করব কেন? আমরা স্বাধীন হয়েছি বটে কিন্তু এখনও মানুষ হতে পারি নাই। যেই জাতীর শাসকেরা চোর ডাকাত, লুটেরা সেই জাতীর শাসিতরা ভাল হবে আশা করা যায় কি????????????????
বিষয়: বিবিধ
১৮৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন