জোট সরকারের তিন ভূল :- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৫:৪১:১০ বিকাল

মির্জা ফখরুল সাহেব যথার্থই বলেছেন। দল এবং সরকার পরিচালনায় ব্যর্থ হলে জনগন ঘুরে দাঁড়ায় এটিই স্বাভাবীক। একজন সাধারণ নাগরীক হিসাবে বলতে পারি, বিএনপি দল পরিচালনায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ১. তৃতীয় চতূর্থ সারির নেতা কর্মীকে যথাযত মূল্যায়ন না করা। ২. স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির অতুলনীয় সমর্থক রয়েছেন অথচ স্থানীয় নেতারা তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন না, মূল্যায়ন করেন না। ৩. শীর্ষ নেতারা স্থানীয় নেতাদের কর্মকান্ড তদারকী করেন না। ৪. দলে ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা শুবিধা ভূগী নেতাদেরকে চিহৃত করে তাদেরকে সত্যিকার অর্থে দলের নেতাকর্মী বানাতে ব্যর্থ হাওয়া। ৫. গ্রাম পর্যায়ের লোকেরা অল্পতেই খুশি হয় কিন্তু বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যায়ের সাধারণ মানুষকে মূল্যায়ন করার জন্য স্থানীয় নেতা কর্মীকে দিক নির্দেশনা না দেয়া এবং নেতাদের কর্মকান্ডের হিসাব নিকাশ না নেয়া। ৬. স্থানীয় নেতাদের মধ্যে যেইসব কোন্দল দেখা দেয় তাহা যথা সময়ে সমাধানের ব্যবস্থা না করা। ৭. সমাজের ভাল মানুষ তাকেই বলে, যিনি অন্যকে সাহার্য্য সহযোগীতা করেন, অন্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকেন, নিতি আদর্শের গন্ডিতেই থাকেন, সামর্থের অভাবে আর্থীক সাহার্য্য করতে না পারিলেও অন্তত যোগাযোগ রক্ষা করে ভাল পরামর্শ দিয়ে নিতি আদর্শ মূল্যবোধ এবং দৈনন্দিন কর্মকান্ডে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে উসাহিত করা যায়, মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়া যায়, এতে গনমানুষ এবং দল উভয়েই উপকৃত হয়। গনমানুষের জন্য দলের পক্ষ থেকে এই ধরণের কোনো কর্ম পরিকল্পনা বিএনপির ছিলনা।

রাষ্ট্র পরিচালনায়ও বিএনপির চরম ব্যর্থতা ছিল ১. সারাদেশে গন মানুষের কিছু মৌলিক সমস্যা আছে, বিএনপি জোট সরকার ঐসব মৌলিক সমস্যাদি চিহৃত করে সমাধানের পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২. জনগনের মধ্যে বৈশম্য দূর করে সমান্তরাল করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহন না করা। ৩. বর্তমান যুগে বিদ্যুতের সাথে মানুষের জীবনাচর অঙ্গাআঙ্গী ভাবে জড়িত জোট সরকার বিদ্যুত ব্যবস্থাপনায় চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। ৪. জোট সরকারের শুরুর দিকে আইন শৃঙ্খঁলার কিছুটা উন্নত হলেও শেষের দিকে চরম অবনতি হয়েছে সরকার সামাল দিতে পারে নাই। ৫. স্থানীয় প্রশাসনে ঘুষ দূর্নীতির প্রসার ঘটেছিল তাহা দূর করাতো দূরের কথা উচ্চ পর্যায়ে যেইসব ঘূষ দূর্নীতি হয়েছে তারও শক্ত হাতে দমন করতে পারে নাই। ৬. জাতীয় ভাবে উন্নয়নের বড় কোনো পরিকল্পনা জোট সরকার নেয় নাই যদিও বা আপামর জনগোষ্টি জাতীয় ভাবে কি উন্নয়ন হচ্ছে না হচ্ছে তার খবর রাখেন না বরং নিজেরা কতটুকু শান্তিতে আছে তাকেই প্রধান্য দিয়ে থাকেন। ৭. নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানী, সরবরাহ নিশ্চ্যিত এবং উতপাদন বিষয়ে জোট সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল। ৮. সরকারী ব্যবস্থাপনায় জাতীয় সম্পদের শুবিধা ভোগীরা (বিশেষ করে বিদ্যুত/গ্যস ব্যবহারে) সমান্তরাল হতে পারেনা, বিদ্যুত উতপাদন কিছুটা বৃদ্ধি করলেও তাহা কোটিপতিদের দখলে চলে যায় অর্থাত তাদের ব্যবহারও বৃদ্ধি পায়, শ্রেনী বিন্যাস করে জোট সরকার জাতীয় সম্পদ বিতরন ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছিল। যেমন: কোনো কোটিপতি যেই দামে বিদ্যুত ব্যবহার করবে সেই একই দামে একজন কৃষক, শ্রমীক, গৃহস্থলী, ভেন চালক বিদ্যুত ব্যবহার করবে তাহা যৌক্তিক নয়। একই ভাবে যেইসব এলাকায় গ্যাস লাইন আছে (মহানগরী সমুহ তো বটেই) তারা ২৪ ঘন্টা গ্যাস ব্যবহার করে মাসিক মূল্য আদায় করে চার থেকে সাড়ে চার শত টাকা আর যারা গ্যাস লাইন এখনও পায় নাই বা পাবে নিশ্চ্যিত নয় তারা ১২/১৩ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেন ১৫/১৮ শত টাকায়, দেশের বেশীরভাগ জনগোষ্টী জাতীয় সম্পদ গ্যাস থেকে বঞ্চিত রয়েছে। জোট সরকার এইসব বঞ্চিত মানুষ গুলির দিকে নজর দেয় নাই। আরও অনেক ব্যর্থতা আছে সেই জোট সরকারের তবে বর্তমান সরকারের তুলনায় হাজার গুন কম।

---------------

বতর্মান সরকার শুধু ব্যর্থই হয় নাই একই সাথে চরম লুটপাট এবং গোটা জাতীর মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি করে বিশেষ এক শ্রেনীর ঘরে ফায়দা তোলে দেয়ার চেষ্টা করেছে। বর্তমান সরকার ধর্মপ্রাণ মানুষের হৃদয়ে কূঠারাঘাত করেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাঁসিনা বুঝতে অক্ষম হয়েছেন যে, মানুষ জীবনের চাইতে তার ধর্মকে বেশী ভাল বাসেন, মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে কিন্তু কখনও ঈমান দিতে রাজী হয়না। বর্তমান সরকার মানুষের ঈমান আকিদার উপর চরম আঘাত করেছে। সরকার এখানেই শেষ করে নাই, দেশ বারণ্য আলেম ওলামাকে অপদস্থ করার জন্য খোদ প্রধানমন্ত্রীও মাঠে নেমেছেন। জনগন যাদেরকে যুগ যুগ ধরে বর্জন করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী তাদেরকেই মাথার তাজ বানিয়েছেন। বর্তমান সরকার দলমত নির্বিশেষে জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার যেই মহত কাজ তাহা ধ্বংস করেছে। বর্তমান সরকার নিজেরা আজীবন ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা করেছে যাহা জাতী পছন্দ করেন না। সাধারন মানুষ মনেকরে বর্তমান সরকার কিছু বিশেষ শ্রেনীকে খুশি করার জন্য বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এমন সব পদক্ষেপ নিয়েছে যার কারণে পাড়া মহল্লায়ও বিভক্তির ছড়িয়ে পড়েছে এবং মারামারি হানাহনীর বিস্তৃতি ঘটেছে অথচ ঐ বিশেষ শ্রেনীটি জনগন কতৃক বর্জিত।

মোদ্দা কথা হইল (আমার নিজের বিশ্লেষণ):- যেই জাতী আইন শৃঙ্খঁলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় এবং দেশ মাতৃকার জন্য ঐক্যবদ্ধ নয় এবং বিভক্ত হয়ে মারামারি হানাহনীতে লিপ্ত থাকে সেই জাতীর প্রকৃত উন্নতি কখনও সম্ভব নয়। সেই জাতীর দেশ-মাতৃকার সম্পদ লুটে নেয়ার জন্য তৃতীয় কোনো শক্তি দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসে, চেপে বসে গোটা জাতীর উপর। ক্ষণিকের জণ্য উপকৃত হয় মীর জাফরেরা এক পর্যায়ে তারা ধ্বংস হয়ে যায় স্বীয় মুনিবের ছোবলে।

বিষয়: বিবিধ

১০৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File